আওয়ামী লীগের রাজনীতি শেষ স্বৈরাচারের শুরু

লিখেছেন লিখেছেন tohid57 ১৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৫০:২৭ সকাল

আওয়ামী লীগের

রাজনীতি শেষ

স্বৈরাচারের শুরু

মা হ মু দা ড লি

« আগের সংবাদ পরের সংবাদ»

আল্লাহকে সব বলে দেব—

মারা যাওয়ার কয়েক মুহূর্ত

আগে শিশুটি বলেছিল। মাত্র ৩

বছরের শিশুটি বুঝেছিল সিরিয়ার

স্বৈরশাসকের বিচার করতে একমাত্র

আল্লাহ তায়ালাই পারেন। তাই

সরকারি হামলায় মৃত্যুপথযাত্রী ওই

শিশুটির নালিশ বিশ্বের

কোটি হৃদয়ে রক্ত ঝরেছে।

স্বৈরশাসক সিরিয়া সরকারের হৃদয়

না কাঁদলেও কেঁদেছিল কোনো এক

সাংবাদিকের হৃদয়। তাই আমরা ওই

সাংবাদিকের মাধ্যমেই এমন

রক্তঝরা কান্নার আওয়াজ

শুনতে পেয়েছি। যোজন যোজন

দূরে থাকা মানবাধিকারের জন্য,

গণতন্ত্রের জন্য, ন্যায়ের পক্ষে লড়াই

করা ওই সাংবাদিককে জানাই

লাখো সালাম। এসব

সাংবাদিককে দেখে হৃদয়

কেঁদে ওঠে বাংলাদেশের

চাটুকার সাংবাদিকতায়

যারা প্র্যাকটিস করছেন তাদের

জন্য। ঘৃণা বোধ করছি আমাদের

নিজেদের নিয়ে ও কেন আমরা এমন

মানবাধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের

জন্য লড়াই করতে পারছি না! লজ্জিত

হচ্ছি তখন যখন জাতিসংঘের

প্রতিনিধিরাও চাটুকার

সাংবাদিকদের প্রতি আঙুল

তুলে বলে যান যে, এদেশের

সাংবাদিকরা পক্ষপাতদুষ্ট। অথচ

সেই কথাটিও চরম দলবাজ

সাংবাদিকরা উল্টো ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।

আমি যেমন তারানকোর এই

উক্তিটি বাংলা পত্রিকায়

দেখে জেনেছি। আমার মনে হয়,

দলবাজ সাংবাদিকরা হয়তো আমার

মতো ভালো ইংরেজি জানেন না।

তাই তারানকোর ওই

উক্তিটি নিয়েও

অপব্যাখ্যা দেয়ার

মতো আরেকটি লজ্জাজনক ঘটনা।

যে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ চরম

সঙ্কটের মুখে, মায়ের বুক

থেকে কিশোর

ছেলেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে এদেশের

দলবাজ র্যাব-পুলিশ, মায়ের

কোলে থাকা শিশুুটি গুলিবিদ্ধ

হচ্ছে, খুন হচ্ছে, অপহরণ হচ্ছে,

মসজিদে নামাজের

কাতারে দাঁড়ানো মুসুল্লিরাও আজ

নিরাপদ নন, নিরাপদ নন

কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন

করতে যাওয়া সাধারণ মানুষও। অথচ এ

নিয়ে সেই

আমরা সাংবাদিকরা কেন

স্বৈরাচারের পক্ষে যুক্তি-সর্মথন

দিয়ে যাব! কেন

বলতে পারছি না পুলিশকে—

আপনারা যাদের ওপর

নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছেন,

তারাও এদেশের নাগরিক।

একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক

হয়ে শুধু বিরোধী দলকে সর্মথন করায়

তাদের বেঁচে থাকার অধিকারটুকু

যখন সরকার কেড়ে নিচ্ছে, তখন সেই

সব চেতনাধারী সাংবাদিকের

চেতনা কোথায় গেল? অথচ

বিরোধী দল

সহিংসতা চালাচ্ছে বলতে বলতে তারা কেউ

কেউ আবার প্রত্যক্ষভাবে নিজেরাই

আরও উস্কানি দিচ্ছে।

কোনো সাংবাদিক বলছেন—আইন

প্রয়োজনে নিজেরাই

হাতে তুলে নেবেন!

কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ!

আপনাদের কি মনে হয় দেশের

সাধারণ মানুষ আপনাদের এ

অন্যায়কে মেনে নিচ্ছে?

মেনে যে নেয়নি তা তো দেখেছেন।

দেশের আপামর জনসাধারণ

জানে যে শেখ হাসিনা মাত্র

২-৪টি মিডিয়া আর ২-৪ জন

সাংবাদিকের কাঁধের ওপর ভর

করে অবৈধভাবে সম্পূর্ণ

অগণতান্ত্রিক পন্থায়

ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে বসেছে। কিন্তু

বাংলাদেশর প্রতিটি নাগরিক ৫

জানুয়ারির একতরফা প্রহসনের

নির্বাচনে ভোট

কেন্দ্রে না গিয়ে নীরব বিল্পব

দেখিয়েছেন।

আপনারা যারা মুক্তিযুদ্ধের

চেতনাধারী, যারা মুক্তিযুদ্ধের

চেতনার দোহাই দিচ্ছেন

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, তাদের

নাকটা কিন্তু কেটে দিয়েছে ওই

নীরব প্রতিবাদের মাধ্যমে। সব

মিলিয়ে ৫ ভাগ ভোটও

দেয়নি দেশের প্রতিবাদী মানুষ।

সমগ্র দেশ খালেদা জিয়ার

আহ্বানে নিরব বিল্পব

দেখিয়ে গণতন্ত্রের প্রতি তাদের

দায়িত্ব পালন করেছেন।

অপরদিকে আওয়ামী লীগ

বিপজ্জনকভাবে বিপন্ন।

আওয়ামী লীগের ভেতরে ঘুণ

ধরে শেষ পর্যন্ত অস্তিত্ব চরম সঙ্কটের

মধ্যে পড়েছে। অথচ দিন

শেষে অবস্থা নিজেদের দলের ধস

নামার মতো অনিবার্য হার

দেখে উল্টো বিরোধী দলের

প্রতি বিষোদগার শুরু করলেন

আওয়ামী লীগ নেতারা।

আওয়ামী লীগের আর জাসদের

নেতারা ইলেকশন কমিশনে যাওয়ার

পর ভোটারশূন্য

কেন্দ্রগুলোতে কাগজে-

কলমে সংখ্যা বসিয়ে দিয়ে লাখ

লাখ ভোট

পড়েছে দেখানো হয়েছে। তাও

কিন্তু ম্লান করে দিয়েছে পরের

দিন বিশ্ব গণমাধ্যম।

সরাসরি গণমাধ্যমগুলো বলে দিয়েছে,

জাল ভোটে কলঙ্কিত নির্বাচন,

ভোটারের মূল্যহ্রাস কিংবা ভোট

না দিযে নীরব বিপ্লব। বিশ্ব

মিডিয়ায় এবং বাংলাদেশের

বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভোটের

যে চিত্র

চলে এসেছে তাতে সারা দেশে মাত্র

৫ ভাগ ভোট পড়েছে।

ফেমা বলেছে, ১০ ভাগের কম ভোট

পড়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয়

দৈনিকগুলো বলেছে, ৩৯

থেকে ৪৭টি কেন্দ্রে কোনো ভোটই

পড়েনি। এছাড়াও বিক্ষুব্ধ

জনতা দেশের প্রায় অর্ধশত জেলায় ২

শতাধিক ভোট

কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। বহু

স্থানে ব্যালট পেপারে আগুন

দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ ভোটের

আগের রাত থেকে ভোট শেষ

হওয়া পর্যন্ত সহিংসতায় অন্তত ২৭ জন

নিহত হয়েছেন। এদের বেশিরভাগই

বিএনপি-জামায়াতের

নেতাকর্মী এবং তারা পুলিশের

গুলিতে নিহত হয়েছেন।

গণপ্রতিরোধের মুখে ৬ শতাধিক

কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত

করা হয়েছে। ব্যালট বাক্স

না পৌঁছানোর কারণে গাইবান্ধার

চারটি আসনের শতাধিক

কেন্দ্রে বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোটই শুরু

করা যায়নি। একই

ঘটনা ঘটেছে দেশের আরও বহু

স্থানে।

সবচেয়ে লজ্জাজনক এবং দুঃখজনক

হচ্ছে, সরকার যে মিডিয়াগুলোর

কাঁধের ওপর ভর

করে নেচে বেড়াচ্ছে, তাদের

নিয়ে মতবিনিময়

করে আস্ফাালনের হাসি হাসলেন

শেখ হাসিনা। যা হলো শেষ পর্যন্ত

স্বৈরশাসকের জয় হলো, জনমতের নয়।

জনমতকে স্বীকার

না করে যেভাবে জগদ্দল পাথরের

মতো চেপে বসেছে তা আরও

ভয়াবহ! দেশের মানুষকে নিজের

স্বাৈরাচারী ভাবমূর্তি তুলে ধরছেন।

আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ

হাসিনা ভুলে যাননি যে,

বাংলাদেশের মানুষ সব সময়

প্রতিবাদী। তাই জনগণের ভয়ে তার

স্বাৈরচারী ধর্ম শুরু হলো।

গত জুলাই মাসে আমি বঙ্গবীর

কাদের সিদ্দিকীর

কাছে গিয়েছিলাম আমার

একটা প্রোগ্রামে তাকে প্রধান

অতিথি হিসেবে ইনভাইট করার জন্য।

তখন তিনি আমাকে কথায় কথায়

বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনার

রাজনীতি অনেক আগেই শেষ

হয়েছে। তিনি যদি বঙ্গবন্ধুর

কন্যা না হতেন

তাহলে তিনি একটা পৌরসভার

চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্যতাও

রাখেন না।’ ৫ জানুয়ারির

নির্বাচনের দিন বঙ্গবীর কাদের

সিদ্দিকীর কথার প্রমাণ পেলাম।

এরপরও দেশের মানুষ ভেবেছিলেন,

হয়তো শেখ হাসিনার

লজ্জাবোধে এবার কিছু একটা হবে।

হয়েছেও তাই। ৫ জাুনয়ারির

একতরফা নির্বাচনে যখন

আওয়ামী লীগের

মতো একটা গণতান্ত্রিক দলকে জনগণ

সাপোর্ট দিল না তখন

রাজনীতি শেষ

করে চূড়ান্তভাবে স্বৈরাচারের পথ

বেছে নিলেন শেখ হাসিনা।

নির্বাচন-

পরবর্তীতে রিবোধী দলকে আরও

বেশি কোণঠাসা এবং জনগণের

সামনে ভিলেন প্রমাণ

করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। তাই

নতুন করে শুরু হলো সংখ্যালঘু

নির্যাতন। সরকারের রুপার

শৃঙ্খলে আবদ্ধ সেই সব সাংবাদিক,

মিডিয়া স্বৈরাচারী সরকারের

সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংখ্যালঘুদের

রাজনৈতিক হাতিয়ার

হিসেবে ব্যবহার করছেন। সরকার

কর্তৃক সংখ্যালঘু তোষণ, নিপীড়ন

করে বিরোধী দলের ওপর

চাপিয়ে দিচ্ছে। আর সেই সব

গৃহহারা, অনাহারি সংখ্যালঘুর

কান্না দেখে আস্ফাালনের,

বিজয়ের হাসি কাঁধ

ঝুলিয়ে হাসছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের

সংবিধানে সবাইকে সুস্থভাবে বাঁচার

অধিকার দিয়েছে। কিন্তু শেখ

হাসিনা যে সংবিধানের দোহাই

দিয়েছিলেন তাতে আজ

মনে হচ্ছে তা শুধু নিজের জন্যই, জনগণ

বা গণতন্ত্রের জন্য নয়।

যে মুক্তিযুদ্ধের দোহাই

তিনি দিচ্ছেন,

যে চেতনাকে ঘিরে মুক্তিযুদ্ধ

হয়েছিল, আজ সেই চেতনাকে শেখ

হাসিনা মুঠোর

মধ্যে টুঁটি চেপে ধরেছেন। সেই

জনপ্রতিনিধিত্ব কোথায়? গত এক

মাসে গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচন

চেয়ে যে বিরোধী দল আন্দোলন

করেছে, সেই বিরোধী দলের দেড়শ’

মানুষকে খুন করেছে সরকারের

দলবাজ র্যাব-পুলিশ। গণতন্ত্রের

পরিবর্তে এখন দলতন্ত্র। কেন আজ

বিরোধী দল আক্রান্ত? শেখ

হাসিনার মন্ত্রী-এমপিরা এবং তার

দলবাজ র্যাব-পুলিশ

কর্মকর্তারা নিজেদের হাতে আইন

তুলে নিয়ে যাকে পারছে খুন করছে,

যে কথা বলছে তাকে আটক করছে।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে,

খালেদা জিয়াকে পর্যন্ত

গৃহবন্দি করে রেখেছে শেখ

হাসিনা। শেখ হাসিনা ইউরোপ

বা ভারতের যে গণতন্ত্রের দোহাই

দিয়েছেন, দলীয়

সরকারে অধীনে নির্বাচন

দিয়েছেন। শেখ হাসিনার

চর্চা করা এই গণতেন্ত্রর

সঙ্গে বহির্বিশ্বের গণতন্ত্রের মিল

নেই। বহির্বিশ্বে যাদের

বিরুদ্ধে অগণতান্ত্রিকতার

অভিযোগের আঙুল তুলেছে জনগণ,

সেই সব স্বৈরাচার আজ কেউ নেই।

অনেকেরই পতন হয়েছে জনগণের

হাতে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর

দিকে চোখ রাখুন একবার।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক

সিনাওয়াত্রা গণতন্ত্র রক্ষায় সংসদ

স্থগিত করে নির্বাচন দেয়ার

উদ্যোগ নিয়েছেন। তিউনিশিয়ার

প্রধানমন্ত্রী আলি লারায়েধ

রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য

পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

কিন্তু শেখ হাসিনা (দুঃখিত

যে মাননীয়

প্রধানমন্ত্রী বলতে পারছি না।)

কেমন গণতন্ত্রের চর্চা করছেন?

ক্ষমতায় থাকার জন্য আজ শেখ

হাসিনা কতটা মানসিকভাবে উন্মত্ত।

যদি আজ গণতন্ত্রকে অস্বীকার

করে শেখ

হাসিনা এভাবে স্বৈরাচারী পথেই

চলতে থাকেন তাহলে সেই অপরাধ

ক্ষমার অযোগ্য হয়ে উঠবে। দলমত

নির্বিশেষে আজ সাধারণ মানুষ

নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

অর্থনীতি, ধর্ম, সমাজ-

সংস্কৃতিতে পর্যন্ত শেখ

হাসিনা বিভাজন

সৃষ্টি করে রেখেছেন। তার

স্বৈরাচারী আঙ্গিনায় অন্তহীন

ক্ষমতালিপ্সা ও হিংসা-দ্বেষ

বেড়েই চলছে।

বিষয়: রাজনীতি

৯৪২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

161980
১৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশ এখন সঠিক হাতে , সঠিক পথে চলছে ।

জননেত্রীকে আবারও বাংলাদেশের হাল ধরার জন্য প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাই টুমরো ব্লগের পক্ষ থেকে ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File