ক্রিড়া নির্বাচকদের হতে হবে নিরপেক্ষ

লিখেছেন লিখেছেন রবিউল করিম বাবু ১০ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৪৩:২২ সকাল

বাংলাদেশে যখন ফুটবলের জোয়ার ছিল তখন আমাদের পঞ্চগড়ের মত ছোট্র জেলা শহরেও ফুটবল নিয়ে আয়োজন ছিল ব্যাপক। কিছুদিন পরপরই একেকটা বড় বড় গোল্ডকাপ টুর্ণামেন্টে হাজার হাজার দর্শক হতো মাঠে। খেলায় অংশ নিত দেশের বিভিন্ন ফুটবল একাদশ। এছাড়াও স্থানীয় পাড়া মহল্লা, স্কুল বা ক্লাব ভিত্তিক ফুটবল লীগগুলোও হতো বেশ জমজমাট। ফলে ভালো মাঠগুলো থাকতো সব ফুটবলারদের দখলে। এজন্য আমরা ক্রিকেটাররা একপ্রকার অসহায় ছিলাম। সরকারীভাবে জেলা ক্রিড়া সংস্থার পক্ষ থেকেও ক্রিকেট নিয়ে তেমন লীগ টুর্ণামেন্টের আয়োজন ছিলনা। তবে আমরা নিজেরাই আশেপাশের ক্লাব মহল্লায় চিঠি দিয়ে টুকটাক ক্রিকেট লীগের আয়োজন করতাম আর তাকিয়ে থাকতাম সরকারীভাবে আমাদের জন্য কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় কিনা। তখন আমার বয়স ছিল ১৫/১৬। একদিন জানলাম সরকারীভাবে মোট ৫ জন করে দেশের প্রতিটি জেলা থেকে অনুর্ধ ষোল বছর বয়সি ক্রিকেটারদের ঢাকায় পাঠানো হবে প্রশিক্ষনের জন্য। তবে এই এতো ক্রিকেটারদের মধ্যে কারা হবে সেই সৌভাগ্যবান পাঁচজন তা নির্ধারন করবেন জেলা ক্রিড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক। আমাদের পঞ্চগড়ের সাধারন সম্পাদক ছিলেন সাইখুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি। যিনি মোটামোটি ফুটবল বুঝলেও ক্রিকেটে কত বলে এক ওভার হয় তাও ঠিকমতো বুঝতেননা! তো আমরা প্রশিক্ষনে যাওয়ার আশায় বাছাই পর্বে অনেকেই অংশ নিলাম। এই অনেকের মধ্যে ছয় সাতজন ছিলেন যারা পড়াশোনা শেষ করে চাকরী করেন বা বিয়েও করেছেন। অর্থ্যাৎ তাদের বয়স প্রায় চব্বিশ এর উপরে। উল্লেখ্য তারা ছিলেন সম্পাদক সাইখুল ইসলামের সূপরিচিত ও ঘনিষ্ট! বাছাই পর্ব শেষে ঘোষনা হলো অনুর্ধ ষোল প্রশিক্ষনে যাবে ওই বয়স্ক সাতজনের মধ্যে পাঁচজন!! আমরা মন খারাপ করে বাসায় চলে গেলাম। এই অনিয়মের একটা বড় কারন ছিল ক্রিকেটের সীমাদ্ধতা। তখন ফুটবলের ব্যাপকতার কারনে উর্ধতন সবার নজরদারী ছিল বলে ফুটবলে এরকম অনিয়মের সুযোগ কম ছিল,, এখন যেমন ফুটবলের ওই জায়গাটা দখল করেছে ক্রিকেট। এখন আকরাম খান পদত্যাগ করলে, বা আশরাফুল তামিমের মত কেউ বাদ পড়লে একজন সমর্থক থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাই তদারকি করেন। আমাদের ক্রিকেট এখন এমন পর্যায়ে পৌছে যেখানে অনিয়মের মাধ্যমে আর কোন অযোগ্য খেলোয়াড় আসার সুযোগ নেই। দেশের ফুটবলকেও আগে এই অবস্থান পর্যন্ত পৌছে দিতে হবে। এজন্য শুধু বিশ্বকাপের সময় ব্রাজিল আর্জেন্টিনার পতাকা ওড়ালেই চলবেনা বা শুধু কোচের উপর ব্যর্থতার দায় চাপানো যাবেনা। খেলোয়াড়দের মধ্যে যোগ্যতা ও দক্ষতার অভাব থাকলে কোচের তেমন কিছু করার থাকেনা। আবার মফস্বলের একজন সম্ভাবনাময় প্রতিভাবান খেলোয়াড় ভালো কোচিং ও সুযোগের অভাবে বেশিদুর যেতে পারেনা। তাই নিরপেক্ষতা বজায় রেখে তৃণমূল পর্যায়ে নজর দিতে হবে এবং এই কাজে অবশ্যই অভিজ্ঞ সাবেক খেলোয়াড়দের সম্পৃক্ত করতে হবে। ভালো খেলোয়াড় ও কোচের সমন্বয়ে তবেই বাংলাদেশ ফুটবল এগিয়ে যাবে স্বয়ংক্রীয়ভাবে।।

রবিউল করিম বাবু,

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File