"কি লাভ হলো এদের দেশের জন্য এত কস্ট করে" :
লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত বাতাসে ২০ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৯:০৮:১৭ সকাল
‘দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, ওরা আমায়
ভারত যেতে বলে’
......
দেশকে হানাদার মুক্ত করতে কিশোর
বয়সে ছুটে গিয়েছিলেন যুদ্ধে, এরপর তিন
দশক ধরে সীমান্তের অতন্দ্র
প্রহরী হিসেবে কাজে লাগান সমরের
অভিজ্ঞতা। নির্বাচন ঘিরে সাম্প্রদায়িক
সন্ত্রাসে আক্রান্ত হন কর্নাইয়ের সেই
মুক্তিযোদ্ধা, যার ভিতর
থেকে বেরিয়ে এসেছে ক্ষোভ আর হতাশার
কথা।
এরপরেও তার কণ্ঠে জীবনের শেষ মুহূর্ত
পর্যন্ত এ দেশের মাটিতেই থেকে যাওয়ার
প্রতিজ্ঞা। দুর্বৃত্তের হুমকির
জবাবে তার পাল্টা প্রশ্ন,
“দেশকে স্বাধীন কইরলাম, পাহারা দিলাম,
ভারত যাবো কেন?”
গত ৫ জানুয়ারির ভোটের দিন
সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত
দিনাজপুরের কর্নাইয়ের
বাসিন্দা কালী বিলাস রায় রোববার
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে জানান তার প্রতিক্রিয়া।
আক্রান্ত এলাকামুখী জাগরণকর্মীদের
এগিয়ে নিতে সকালে দিনাজপুর
শিল্পকলা একাডেমীতে আসেন
মুক্তিযোদ্ধা কালী বিলাস। সেখানেই
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের
সঙ্গে কথা হয় তার।
একাত্তরের যুদ্ধজয়ী এই বীর
কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে শোনান নিজ
জীবনের গল্প।
“তখন আমি চাঁদগঞ্জ হাই স্কুলে ক্লাস
টেনে পড়তাম। দেশের জন্য যুদ্ধের ডাক
আসলো। এপ্রিল মাসে আমি যুদ্ধে বাইর
হইয়া যাই। শিলিগুড়ির পানিঘাটায়
ট্রেনিং নিয়া দেশে ফিরি। সেই সময়
দিনাজপুর-বগুড়া-রংপুরের অনেকখানে যুদ্ধ
করি। এরমধ্যে আমার বাড়ি থেকে ২০-২৫
কিলোমিটার দূরের মনপুর ব্রিজ দখল
করতে ৬-৭ দিন যুদ্ধ করা লাইগছে।”
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন
হওয়ার পর
সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিডিআরে যোগ দেন
তিনি। ৩০ বছর সীমান্ত
পাহারা দিয়ে ফেরেন ঘরে। কিন্তু সেই
ঘরে হায়েনার ছোবলে হতবাক
কালী বিলাস।
তিনি বলেন, “যুদ্ধ কইরলাম, দেশ স্বাধীন
হইলো, এরপর গেলাম বিডিআরে। ৩০ বছর
দেশ পাহারা দিছি। কার
থেকে দেশরে পাহারা দিছি? এহন
মালদইয়ারা খাস জমিতে থাইক্কা আমার
বাড়ি হামলা করে। কত্তো বড় সাহস?”
হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন,
“দেখি দরজায় কোপাচ্ছে। দেখেই
মাথাডা গরম হইয়ে গেল। বললাম,
কোপাচ্ছ কেন?
“বললো, বিডিআর এদেশে কী করিস,
ভারত যেতে পারিস না?”
এ সময় যুদ্ধের ময়দানে শত্রু খতমের
দুর্বিনীত
ইচ্ছা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে কালী বিলাসের
মধ্যে। পরক্ষণেই বুঝতে পারেন
বাস্তবতা।
“পাশেই রড ছিল, একবার মনে হইছিল,
তা ঠুকিয়ে দেই। কিন্তু
তাইলেতো আমারেও বাইবার দিবো না।
হাজার মানুষ আসি হামলা করছিল।
মনকে বুঝায়া ঠাণ্ড করি,”
কথা বলতে বলতেই গণজাগরণ মঞ্চের
কর্মীদের সঙ্গী হতে সামনে ছুটে যান এই
মুক্তিযোদ্ধা।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এ কারণেই মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত এবং মিথ্যুকরা ফায়দা লুটে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন