জীবনের শঙ্কা নিয়েই সংসার চালাতে রাস্তায় কামাল হোসেন তালুকদার,

লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত বাতাসে ০৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:৫৯:৪৩ সকাল

বিরোধী দলের হরতাল-

অবরোধে সাম্প্রতিক

মাসগুলোতে ভাংচুর,

অগ্নিসংযোগ, হাত ও পেট্রোল

বোমায় প্রতিনিয়ত চালক ও

যাত্রীরা মৃত্যুর মুখে পড়লেও

থেমে নেই পথচলা। পরিবারের খরচ

যোগাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই

তারা রাস্তায় ঘুরিয়ে চলছেন

গাড়ির চাকা।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের

তফসিল ঘোষণার পর গত ২৬ নভেম্বর

থেকে বিরোধী দলের

কর্মসূচিতে সহিংসতায় প্রায় দুই

শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত

৫ জানুয়ারি নির্বাচন হলেও শেষ

হয়নি হরতাল-অবরোধ,

এখনো পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হচ্ছেন

গাড়ির চালক, তার সহকারী ও

যাত্রীরা।

তারপরেও অনেকের মনে নির্বাচন

শেষে রাজনৈতিক সহিংসতার

অবসানের আশা। শিগগিরই এই

অচলাবস্থার

নিরসনে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে আশা করছেন

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্ত

ব্যক্তিরা।

এসব বিষয় নিয়ে কয়েক জন

শ্রমজীবীর সঙ্গে কথা হয়

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর

ডটকমের।

মনির

হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন দুজনই

অটো-রিকশা চালক।

রাজধানীতে গাড়ি চালান তারা।

স্ত্রী এবং ছয় বছর ও দুই মাস

বয়সী দুই ছেলে-

মেয়ে নিয়ে মনিরের সংসার।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার পশ্চিম

মিঠাখালীর মনির পরিবার

নিয়ে ঢাকায় থাকেন মেরুল

বাড্ডায়।

দেলোয়ারের বাড়িও একই জেলায়,

থাকেন রামপুরায়।

মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এলাকায় কথা হয় মনির হোসেনের

সঙ্গে।

বিরোধী দলের অবরোধ ও

হরতালে কেন গাড়ি চালাচ্ছেন

জানতে চাইলে তিনি বলেন,

ঢাকায় স্ত্রী ও দুধের দুই

বাচ্চা রয়েছে, গ্রামে বৃদ্ধ

মা রয়েছেন। তাদের ভরণ-পোষন

দিতে হচ্ছে।

“বাসা ভাড়া সাড়ে তিন হাজার

টাকা ছাড়াও মাসে অন্তত ১৫

হাজার টাকা লাগে আমার।

মনে ভয় রয়েছে, কিন্তু বের

না হয়ে তো আর পারছি না-

সংসারতো চালাতে হবে,”

দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন মনির।

মনিরের মতো একই কথা বলেন

দেলোয়ার।

ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালানোর

বিষয়ে মিরপুর-গুলিস্তান রুটের

শিকড় পরিবহনের বাসের চালক

মো. মান্নান মিয়া বলেন,

“সংসার আছে তো ভাই। তাই সব

ভয়কে দূর করে রাস্তায়

গাড়ি নামিয়েছি।”

ওই বাসের

যাত্রী মাহবুবুল হক বলেন, “ভাই,

কত ধৈর্য্য ধরবো? তাই

নির্বাচনের পর আর সহ্য হচ্ছে না-

বের হলাম।”

চকবাজার থেকে বিভিন্ন

মালামাল কিনে মিরপুর এলাকায়

ফেরি করে বিক্রি করে সংসার

চালান তিনি।

নির্বাচনের পর মাহবুবুলের

মতো অনেকেই

ভয়কে দূরে ঠেলে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন

বলে মনে করছেন মহানগর পুলিশের

উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান

মোহাম্মদ রেজওয়ান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর

ডটকমকে তিনি বলেন, নির্বাচনের

পর দুই দিন ধরে রাস্তায় গাড়ির

চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত

পুলিশ সুপার (পূর্ব) আশফিকুর

রহমান আক্তার বলেন, হরতাল-

অবরোধের মধ্যেই মহাসড়কে কিছু

ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলছে। আর

পুলিশি পাহারায় কিছু বাসও

চলাচল করছে।

মঙ্গলবার

চট্টগ্রাম থেকে পুলিশি পাহারায়

কয়েকটি বাস ঢাকায় আসার

কথা রয়েছে বলেও জানান এই

কর্মকর্তা।

নির্বাচনের পর দেশবাসীর

মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু

করেছে বলে মনে করছেন পুলিশের

মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ

খন্দকার।

মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ

হাসপাতাল

চত্বরে সাংবাদিকদের

তিনি বলেন, “নির্বাচনের পর

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর

পাশাপাশি জনগণও রাস্তায়

নেমে এসেছেন।

এভাবে চলতে থাকলে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসবে।”

নির্বাচনের পর সোম ও মঙ্গলবার

রাজধানীতে আগের তুলনায়

বেশি সংখ্যায় যানবাহন চলাচল

করতে দেখা গেছে। কোথাও

কোথাও যানজটও তৈরি হয়।

বুধবার

সকালে রাজধানীতে গণপরিবহনের

পাশাপাশি ব্যক্তিগত

গাড়ি নিয়েও বেরিয়েছেন

অনেকে।

বিষয়: বিবিধ

১১৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File