অনেকেই বলে নাবী (সাঃ) এর উপর দুরুদ পেশ করা বিদআত। এর সত্যতা কতটুকু?
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের প্রতিফলন ০৯ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৪:৩১:৫২ বিকাল
মহান আল্লাহ্ বলেন-
"নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দুরুদ এবং তাঁর প্রতি সালাম পেশ কর। (সুরা আল আহযাবঃ ৫৬)
উক্ত আয়াত থেকে একথা স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে- নাবী (সাঃ) এর উপর দুরুদ এবং তাঁর প্রতি সালাম পেশ করা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একটি আদেশ।
অর্থাৎ এটি নিঃসন্দেহে একটি ইবাদাত।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- ঈমানদারগণ তথা আমরা কিভাবে নাবীর উপর দুরুদ, সালাম পেশ করব?
সকল ইবাদাতের শর্ত দুটি।
১. একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য করতে হবে।
২. রাসুল (সাঃ) এর দেখানো পদ্ধতিতে করতে হবে।
এখন কথা হচ্ছে- যখন এই আয়াত নাযিল হল- "ইয়া আয়্যুহাল্লাযীনা আমানূ ছল্লূ আলাইহি ওয়া সাল্লিমূ তাসলীমা " (সুরা আল আহযাব-৫৬) তখন এই আয়াত তো নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উপরই নাযিল হয়েছে।
তিনি কি এই আয়াত সাহাবীদের নিকট তিনি পেশ করেছেন নাকি করেন নি?
- অবশ্যই করেছেন।
তখন কি সাহাবারা নিজেরদের খেয়াল খুশি মত নাবীর উপর দুরুদ-সালাম পেশ করেছেন নাকি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছ থেকে দুরুদ শিখে নিয়েছেন?
- অবশ্যই নাবী (সাঃ) কাছ থেকে শিখে নিয়েছেন।
যেহেতু সালাত ও সালাম পেশ করা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একটি আদেশ অতএব অবশ্যই সালাত ও সালাম পেশ করা একটি ইবাদাত। আর সকল ইবাদাতের পদ্ধতি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছ থেকেই নিতে হবে। নিজের ইচ্ছা মত বানিয়ে নিলে তা কোনমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যেমন- আল্লাহ্ পাক আদেশ করেছে- "আকিমুস সালাহ"। তাই সালাত কায়েম করা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একটি আদেশ অতএব অবশ্যই সালাত কায়েম করা একটি ইবাদাত। কিন্তু এখন যদি কেউ সালাতের পদ্ধতি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছ থেকে না নিয়ে নিজের ইচ্ছা মত আদায় করে তবে কি হবে?
তাই নাবীর প্রতি দুরুদ সালাম পেশ করা একটি ইবাদাত এবং এই ইবাদাতের পদ্ধতি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছ থেকেই নিতে হবে। এবং নতুন করে কেউ দুরুদ আবিষ্কার করলে তা অবশ্যই বিদআত হবে।
তাই নাবীর প্রতি দুরুদ পাঠ করার সবচেয়ে উত্তম দুরুদে ইব্রাহীম- আল্লাহহুম্মা সাল্লিয়্যালা মুহাম্মাদ ওয়ালা আলিহী.............. আল্লাহহুম্মা বারিক আ'লা মুহাম্মাদ........ ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ পর্যন্ত।
এছাড়া সহিহ হাদিসে যে সমস্ত দুরুদ পাওয়া যায় সেগুলো নাবীর প্রতি পাঠ করা উচিৎ।
অতএব অন্য সমস্ত মানুষের বানানো দুরুদ, যেমন- "আল্লাহুম্মা ছল্লি 'আলা সাইয়্যিদিনা ওয়া নাবিয়্যিনা ওয়া শাফীয়িনা ওয়া হাবীবিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদ।", দুরুদে লাকী, দুরুদে হাজারী, দুরুদে মাহী, দুরুদে তাজ, দুরুদে তোনাজ্জিনা ইত্যাদি সব-ই বিদআতি দুরুদ। এবং এই সমস্ত দুরুদে নাবী (সাঃ) এর প্রশংসা এত অতিরিক্ত করা হয়েছে যে আল্লাহ্র সাথে নাবীকে অংশীদার করে দেয়া হয়েছে।
তাই আমরা মানুষের বানানো দুরুদ অথবা নিজের মনগড়া পদ্ধতিতে রাসুল (সাঃ) এর প্রতি দুরুদ পেশ না করে, যে সমস্ত দুরুদ সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত সেই সমস্ত দুরুদ-ই পাঠ করব ইনশাল্লাহ। ওয়ামা তৌফিক ইল্লা বিল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
৩২৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন