সত্য প্রবাহ সাজানো মিথ্যা কে ঢেকে দিতে পারে না।
লিখেছেন লিখেছেন উম্মে হাবিব ০৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৪৮:১১ রাত
সত্য প্রবাহ সাজানো মিথ্যা কে ঢেকে দিতে পারে না।
“প্রতিদিন মাথায় ওড়না সরায়ে চুলে তেল না দিয়ে চুল ছেড়ে সুন্দর জামা পরে সেজে গুজে পড়তে আসবে আমার কাছে। সবার আগে এসে আমার পাশের চেয়ারে বসবে,সবার ছুটি হলেও তুমি পরে যাবা,মনে থাকে যেন।”
একজন গৃহশিক্ষক ৩ছাত্র৫ছাত্রীর মধ্যে এক ছাত্রীকে খুব ভালবাসে।তাই অন্য সবার চেয়ে এই ছাত্রীকে খুব আদরযত্ন সহকারে জ্ঞান দিতে থাকে।আশা ছিল তাতে হয়ত ছাত্রীর মনটা জয় করা যাবে।তাই শিক্ষক ভালবাসার দাবী নিয়ে উপরের কথা গুলো ক্ষোভ আর দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে বললেন। কারন এর আগে অনেক বার চলে বলে কলে কৌশলে নিরেট পাষান মনের মেয়েটির হৃদয় টা জয় করেতে হেন চেষ্টা নেই যা তিনি করেন নাই।ভালবাসার সাগরে ঘর বাধার সুফল য়ার মেয়েটি রাজি না হলে সেই ব্যার্থতার কুফল কিভাবে ভোগ করতে হবে তার বর্ননা দিয়ে ভয় লাগাতেও দ্বিধাবোধ করেননি।
মেয়েটি ছিল ইসলামী পরিবারে লালিত পালিত ও আল্লাহ ভীরু প্রকৃতির একজন মায়ের কঠিন শাসন এর মাঝে বড় হওয়া।তাই শিক্ষকের রূঢ় ব্যবহার হামকি ধমকি কোন ফল হল না। বরং সাহসী ও দুরান্তপনা স্বভাবের মেয়ে শিক্ষকের কুমতলবের আদেশ তার মনোপুত না হওয়াতে সে তার মা কে সব জানাতে বাধ্য হলো ।মা যেই ভাবে পর্দা করে যেতে বলল সেই ভাবেই সবার পরে গিয়ে বসল ।এতে শিক্ষকের ভালবাসার স্বপ্নে বিভোর মনে ফাগুনের আগুন কয়েক শত ডিগ্রী ফারেনহাইটে বৃদ্ধি পেল।তাই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বিনাপরাধী ছাত্রী কে রিমান্ডের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হলো।তাতেও তিনি ভালবাসার অপমানের বর্নবিহীন বেদনা ভুলতে না পেরে ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করার প্রানপন চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন।
কারন কেউ যখন কাউকে মন থেকে ভালবাসে, অথবা কাউকে যদি মন থেকে ভালো লাগে তবে তা তাকে পাবার জন্য পাগল পারা হয়ে উঠে ।তার মন কখনই সহজে তাকে পাবার আশা ছেড়ে দিতে পারে না। অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করেও যখন কাউকে একতরফাভাবে ভালবাসতে হয়, তখন তো সেই ভালবাসা অপরদিক থেকে পাবার জন্য মন আরো বেশি মরিয়া হয়ে উঠে!!আশা ছেড়ে দেওয়ার তো প্রশ্নই উঠেনা ।এটা সবাই না বুঝলেও মেয়েটির হবুস্বামী ঠিকই শিক্ষকের মনের ব্যাথা বুঝতে পারে।তাই পরে জিদের বসে হউক বা হতাশার দহনে হোক একদিন বউ সাজা পাষানী ছাত্রীকে সামনে পেয়ে বললেল“সাত ছেলের মা হলেও আমি তোমাকে ছাড়বো না”।ছাত্রী এখন আলহামদুলিল্লাহ ৫ ছেলের মা হয়ে গেছেন।কিন্তু আল্লাহর হুকুমে তিনি কিছুই করতে পারেন নাই সেই ছাত্রীর।কারন অসত কাজে শয়তান সহযোগি থাকে আর সৎ কাজে আল্লাহর রহমত থাকে।যত গর্জে তত বর্ষে না।
আপনারা ভাবছেন, কি বলতে গিয়ে কি যে বলছি, মনে হয় আজ মাথাটাই খারাপ হয়ে গেছে।সত্যি বলছি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থ্যা দেখে শুধু আমার একা নয় আমার ৬মাস বয়সের শিশুর কান্না করে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকে যে, আমার মনে হয় জিজ্ঞাসা করছে “ আমরা কোন দেশে আছি আর এই দেশে এই সব কি নাটক আর সিনেমা শুরু হয়েছে ?বিনাপরাধে মানুষকে ধরার আগেই তার রায় লিখা হয়ে বিচারকের হাতে জমা হয়ে যায়।আবার ২ মাস আগে নির্বাচন না হতেই কে কোন আসনে এমপি হয়ে সংসদে আসবে তার নাম ও ফলাফলের তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা হয়ে যায়। ভোট কেন্দ্রে ভোট না দিয়েই পাস হয়ে যায় ।
১৯৭১ সাল থেকে আওয়ামীলিগের কাছে জামাত শিবির বন্ধু না হলেও শত্রু ছিল না।যার ফলে জামায়াতের প্রবীন নেতাদের জন্য একটা মামলাও দেন নাই।১৯৯৬ সালে উপরের শিক্ষক ছাত্রীর ভালবাসার মত জামায়াত শিবিরকে ভালবেসেই ফেলেন। স্বৈরাচার এরশাদ ও ১৯৯৬ সালে আন্দোলনের সময় এই ভালবাসা আরো গাড় আকার ধারন করেন।তাই নিজেদের স্বার্থে অনারা এই জামায়াত শিবিরকে সাথে বসে অনেক বৈঠকও করেছিলেন।কিন্তু বেয়াড়া ছাত্রীর মত ভালবাসা শিক্ষাতে গিয়ে ব্যার্থ হন।অনাদের ভালবাসার দাবীতে যখন ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপে জামাত শিবির রাজি হন নাই তখনই ওনারা ঐ শিক্ষকের ছাত্রির উপর নির্যাতনের মত মত লগি বৈঠা দিয়ে ২৮ অক্টোবরের ২০০৬ সাপের মত নিরাপরাধ জামায়াত শিবির কে মেরে তাদের লাশের উপর নৃত্য করতেও বিবেকে বাধা দেয় নাই।২০০৮ থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে নিরস্ত্র প্রবীন নবীন সকল নেতা কর্মীদের উপর হত্যা গুম খুন জেল জুলুম চালিয়ে জামায়াত শিবির কে বহি বিশ্বের নিকট সন্ত্রাসী জঙ্গী হিসাবে চিন্নিত করার জন্য নিজেরা আকাম কুকাম করে দেশের ভাব মুর্তি নষ্ট করে চলেছে। সবাই নিজের ্স্বাধীন দেশে নিজের ঘরে মিনি কারাগারের মত কপাট বন্ধ করে হাতে পায়ে মুখে শিকল পরা কতক্ষণ ঘরে বন্দী হয়ে থাকা যায়? পাখি স্বাধীন ভাবে উড়তে পারে তার মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে কিন্তু আমরা পারি না ।মায়েরা গ্র্যাজুয়েট স্বামী নন গ্র্যাজুয়েট ছেলেমেয়ে কাউকে বাইরে যেতে না দেওয়ার একমাত্র কারণ দেশের বর্তমান অবস্থা। এমনকি মসজিদেও যেতে দেন না।যদি দাড়ি টুপি দেখে জামাত শিবির বলে তুলে নিয়ে যান।
মুসলমানরা জঙ্গি সন্ত্রাসী ননঃ
আজ বাংলাদেশে সত্য প্রবাহের মাঝে কনকনে শীতের মাঝে মিথ্যা অপবাদ আর মিথ্যার জয়জয় গানের বিপক্ষে অবস্থ্যান নিয়ে কিছু জানা বা আজানা চিরসত্য তুলে ধরছি।
মুসলমানদের সন্ত্রাসী,মৌলবাদ, জঙ্গী, আলকায়দা ,রাজাকার,স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি যুদ্ধপরাধী ইত্যাদি বলে গালাগাল করা হয় আর তা বিদেশিদের বুঝানো হয়। চিলে কান নিয়েছে বলে চিলের পিছে যারা দৌড়ানোর অভ্যাস তারা অন্যদের কাছে শুনে মন থেকে নয় স্বভাবের দোষে এইসব বলে মনের অভিমান দূর করেন আর শান্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলেন।
আচ্ছা আপনারা আপনাদের বিবেকে দিয়ে বিবেচনা করে উত্তর বলেন,
***দ্বিতীয় যুদ্ধ কারা করেছিলো মুসলমানরা না আপনারা,?
***অস্ট্রিলিয়ায় প্রায় ২০ মিলিয়ন আদিম অধিবাসীদের কে কারা মেরেছিল?
***নাগাসকি হিরোসিমায় পারমানবিক বোমা কারা মেরেছিল?
***সাউথ আমেরিকার প্রায় ৫০ মিলিয়ান ইণ্ডিনিয়ানদের কারা মেরেছিল?
***প্রায় ১৮০ মিলিয়ন আফ্রিকার মানুষ কে কারা ক্রীতদাস হিসাবে নিয়ে ৮৮% কে মেরে ফেলে আর বাকিদের কে জীবিত আটলান্টিক মহাসাগরে নিক্ষেপ করা হয়েছিল?
***বর্তমানে কারা ইরাক ফিলিস্তিন আফগানিস্তান সিরিয়া মিশরে বার্মা কাস্মির সহ অনেক দেশের নিস্পাপ শিশু নারী ও শান্তি প্রিয় মুসলমানদের নির্বচারে হত্যা করে চলছে ?
মুখে বৃদ্ধাঙ্গুল ডুকায়ে চুপ করে আসেন কেন ? বলেন কারা করেছিলো? সেখানেও কি সন্ত্রাসী,মৌলবাদ, জঙ্গী, আলকায়দা ,রাজাকার,স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি যুদ্ধপরাধী আছেন ?
শুনেন এর একটাও মুসলমানরা করেন নাই।এর থেকে প্রামানিত হয় যে মুসলমানরা এই সব কোন সন্তাসী কাজে জড়িত নয়।তাদের অপরাধ তারা আল্লাহকে ভালবাসে , আল্লাহর রাসুল কে ভাল বাসে।কোরান ও সুন্নাহ কে ভালবাসে ।মুসলমানরা একে অন্যকে নিজের শরীলের অঙ্গের মত ভালবাসে।আল্লাহর জমিনে ইসলাম কায়েম করতে চায় ।
আপনারা কোন অপরাধ করলে তা হয় দুর্ঘটনা বা ক্রাইম।আর একই অপরাধ মুসলমানরা করলে তারা হয়ে যায় সন্ত্রাসী,মৌলবাদ, জঙ্গী, আলকায়দা ,রাজাকার,স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি যুদ্ধপরাধী ।নন হত্যা করে খোলা আকাশের নিচে দিব্বি আরামে ঘুরে রেড়ায় ।আর মুসলমান হত্যা না করেও তাদের ফাসির কাষ্টে ঝুলতে হয় ।
ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবঃ
বাংলাদেশ সহ অনেক বাংলাভাষাভাষীরা অনেকে আমরা নিজেকে মুসলমান বলে দাবী করলেও ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষায় আমাদের অনেক গলদ রয়ে গেছে। ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব সকল অশান্তির মুল।
একজন জার্মান পন্ডিতকে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ আর ইসলামের উপর প্রশ্ন করা হলে তিনি চমতকার ভাবে জানান, “যারা অন্তর থেকে ঈমান আনেন , আল্লাহকে ভয় করেন ,আখিরাত কে বিশ্বাস করে তারা কখন সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদ হতে পারে না”
“আর যারা নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করে এবং সন্ত্রাসী কাজ করে,অন্যায় ছাড়া কারো কারো জীবন নিয়ে নেয়।তারা মুসলিম না।শুধু মাত্র ইসলামের আলোকে নাম , লেবাস দিয়ে ইসলাম ধর্ম মডেল হিসাবে সাজিয়ে ব্যবহার করে আর অন্যের কাছে তা বিক্রির জন্য উপস্থাপন করে”।
সত্য প্রবাহ সাজানো মিথ্যা কে ঢেকে দিতে পারবে না।
কারন তার আড়ালেই সুর্য্য হাসে।
লেখিকা
উম্মে হাবীব
বিষয়: বিবিধ
২৬১৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তারপরও এরকম দীর্ঘ যুক্তির উপস্তনার মাধম্যে যে সাহশিকতার পরিচয় দিলেন এর জন্য ধন্যবাদ সহ -- এগিয়ে আসবেন লেখার মাধ্যমে এই কামনা করছি --
মন্তব্য করতে লগইন করুন