পুলিশের পর্নো দর্শন..কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন লিখেছেন ডাক্তার রিফাত ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:৪৯:০১ রাত



হাসপাতালে জেলখানার রোগীদের সাথে প্রায়ই দেখা যায় ২/৩জন পুলিশ।সেদিন দুই পুলিশ অফিসার তাদের ডিউটিরত আমাদের ওয়ার্ডে। ফ্রেন্ড রোগী দেখতে গিয়েছে।হঠাৎ করেই ফ্রেন্ডের দৃষ্ট পড়ল দুই পুলিশের একজনের হাতে থাকা মোবাইলের স্ক্রীনে।ও একরকম আঁতকে উঠে।নিশ্চয়ই সবাই অনুমান করে নিয়েছেন কি দেখছিলেন আমাদের মহামান্য নিরাপত্তারক্ষী!!

যার কাছেই হয়তো কোন নারী যাবে ধর্ষনের বিচার চাইতে কিংবা কোন মা-বোন যাবে তাদের ইজ্জত রক্ষার দাবী নিয়ে সে পুলিশ হাসপাতালের ওয়ার্ডের মত গুরুত্বপূর্ন জায়গায় যখন পর্নো ক্লিপ দেখে তখন স্বভাবতই আমাদের দেশের পুলিশের মানসিক বিকৃতির নগ্নতা স্পষ্ট চোখে পড়ে।

পুলিশের কামুক এবং ধর্ষক চরিত্র এখন হরহামেশাই প্রকাশ পাচ্ছে।কখনো আদালত প্রাঙ্গনে কখনো রাস্তায় নারী পিকেটারদের শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেওয়ার মাধ্যমে।এ নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।কিন্তু,রাষ্ট্রীয় ভাবে এর প্রতিকারের বিন্দুমাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।

দোষ কি শুধু পুলিশের?কেন রাষ্ট্রের জনগনকে নিরাপত্তা দেওয়া,অবাধ যৌনতার বিরুদ্ধে যাদের কাজ তারা কেন পাবলিক প্লেসেও নিজেদের মানসিক বিকৃতি ঢেকে রাখতে পারছেনা?কারণ,পর্নোগ্রাফির ব্যাপকতা।

পুলিশ এ সমাজেরই অংশ। পুলিশ আলাদা কোনো গ্রহের বাসিন্দা নয়। সুতরাং সমাজ যখন কলুষিত হবে; সাইবার ক্রাইমের মতো অশ্লীলতায় সমাজ ভরে যাবে তখন শুধু পুলিশ কেন? খোদ বিচারক পর্যন্ত কলুষযুক্ত হতে বাধ্য। শিশু থেকে শুরু করে উঠতি বয়সের কিশোর,বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীরা এমিনকি ধনাঢ্য গৃহবধূ, স্কুল-কলেজ ছাত্রী ও টিনএজ তরুণীরাও আজ এই ভাইরাসে সংক্রমিত।যা মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়েছে প্রযুক্তির নব নব আবিষ্কারের দরুন!

সেই খুপরি ঘর(সাইবার ক্যাফে) থেকে মাল্টিমিডিয়া মোবাইলের কল্যানে(যেখানে রয়েছে ফ্রী ওয়াইফাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোম্পানির ফ্রী এমবি সুবিধা) পর্নোগ্রাফি এতটাই বিস্তার লাভ করেছে যে রাস্তাঘাটে,শপিং মল,রেস্তোরাগুলোতে মানুষ অবাদে দেখছে।

মাসখানেক আগে একটি গবেষণায় দেখা গেছে,শুধু ঢাকা শহরের বিভিন্ন সাইবার ক্যাফে থেকে প্রতি মাসে ৩ কোটি টাকার পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ।আর এন্ড্রয়েড আর ওয়াইফাইয়ের ব্যবহারে এই সংখ্যা কয়েকমাসের ব্যবধানে কোথায় গিয়ে পৌছেছে সে হিসেব কষতে ডিজিটাল ক্যালকুলেটর লাগবে।

“ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে” এই কবিতার সাথে আমরা সেই ছোটবেলা থেকেই সুপরিচিত।যার মূল প্রতিপাদ্য শিশুরাই আগামি দিনের জাতির কান্ডারি,জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে উন্নতির দিকে।কিন্তু,দুখঃজনক হলেও সত্য আজ পর্নোছবির দর্শকদের ৭৭ শতাংশই জাতির এই ভবিষ্যত কান্ডারি শিশু বয়স পেরোনো কিশোররা।

ইন্টারনেট একদিকে শিশু-কিশোরদের দিচ্ছে জ্ঞানের অবারিত দরজা অন্যদিকে ইন্টারনেটের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে আসছে হাজার হাজার পর্ণোগ্রাফী ওয়েব সাইটের মতো সমাজ ও নৈতিকতা ধ্বংসকারী দানব।প্রতিরোধের জন্য একটি আইনও আছে।যা অন্য সমস্ত আইনের মতই মরিচা পরে আজ জং ধরে গেছে।

“পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২”-যাতে বলা আছে, যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোন অশ্লীল বই, সাময়িকী, ভাস্কর্য, কল্পমূর্তি, মূর্তি, কার্টুন বা লিফলেট, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি, অশ্লীল সংলাপ, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য যা চলচ্চিত্র, ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজ্যুয়াল চিত্র, স্থির চিত্র, গ্রাফিকস বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণকৃত ও প্রদর্শনযোগ্য এবং যা কোন শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই তার সবই পর্নোগ্রাফি। এসব পর্নোগ্রাফি উৎপাদন, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, বহন, সরবরাহ, ক্রয়, বিক্রয়, ধারণ বা প্রদর্শন করা যাবে না।

যারা এ আইন মানবে না তাদের দুই থেকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ভোগ করতে হবে।“অথচ যারা আইনের প্রয়োগ করবে সেই আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীই আজ এই দোষে দুষ্ট।আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে মুনাফালোভিরা।দেদারছে চোখের সামনে পর্নো আইনকে লংঘন করে নিয়মিত ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ আগ্রাসন থেকে বাঁচাতেই হবে সমাজকে।আর এটা প্রচিলিত ধারার বিচারে প্রতিহত করা সম্ভব নয়।আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি পরিবার ও সামাজিকভাবে সবাইকে সচেতন হতে হবে।সন্তানদের ইসলামি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে মা-বাবাকে দায়িত্বশীল হতে হবে।কারণ,ইসলাম এমন একটি পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা যেখানে অশ্লীলতার বিন্দুমাত্র স্থান নেই।

প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য,কাছের অথবা দূরের সকল অন্যায় ও পাপাচারের বিরুদ্ধে তাকওয়া তথা আল্লাহর ভয় হলো অতন্দ্রপ্রহরী,প্রতিরোধক দুর্গ।কোন আইনই যার কাছে দাড়াঁতে পারবে না।

“হে ঈমানদাররা,আল্লাহকে ভয় করো।আর প্রত্যেকেই যেন লক্ষ রাখে, সে আগামীকালের জন্য কি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।আল্লাহকে ভয় করতে থাক।আল্লাহ নিশ্চিতভাবেই তোমাদের সেই সব কাজ সম্পর্কে অবহিত যা তোমরা করে থাক।তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা আল্লাহকে ভুলে যাওয়ার কারণে আল্লাহ তাদের নিজেদেরকেই ভুলিয়ে দিয়েছেন।তারাই ফাসেক।(সুরা হাশরঃ১৮-১৯)”

বিষয়: বিবিধ

১৯৮৯ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

175264
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৫৪
পলাশ৭৫ লিখেছেন : Love Struck Love Struck Love Struck
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০০
128485
ডাক্তার রিফাত লিখেছেন : Surprised
175269
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০০
বিন হারুন লিখেছেন : তাই বলেই-তো পুলিশ, দেশের জনগণের কাছে এতো প্রিয় Winking
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০১
128487
ডাক্তার রিফাত লিখেছেন : :Thinking
175273
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০৩
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আজ যদি পুলিশের উচ্চপদে ঈমানদার ব্যাক্তিরা নিয়োগ থাকত তাহলে দেশের মধ্যে শান্তির পায়রা উড়ে বেড়াত
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:০৭
128525
ডাক্তার রিফাত লিখেছেন : সহমত Happy
175279
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:১০
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : দুঃখজনক ঘটনা। কোথায় যাচ্ছে দেশ Sad
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৩৮
128532
ডাক্তার রিফাত লিখেছেন : Waiting Waiting
175280
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:১২
হতভাগা লিখেছেন : হয়ত এটা পুলিশের ডিউটিরই একটি অংশ । এতে বাধা দিতে গেলে রাষ্ট্রীয় কাজে বাধা দানে গ্রেফতার হতে হবে ।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৩৯
128533
ডাক্তার রিফাত লিখেছেন : হু।
175296
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:১৭
ভালো পোলা লিখেছেন : আপ্নারা পারলে ঐ ব্যাটা পারবেনা ক্যান?????
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৪২
128536
ডাক্তার রিফাত লিখেছেন : সেটাই আমি বলেছি ।পুলিশ এ সমাজেরই অংশ। পুলিশ আলাদা কোনো গ্রহের বাসিন্দা নয়। সুতরাং সমাজ যখন কলুষিত হবে। সাইবার ক্রাইমের মতো অশ্লীলতায় সমাজ ভরে যাবে তখন শুধু পুলিশ কেন? খোদ বিচারক পর্যন্ত কলুষযুক্ত হতে বাধ্য।
175317
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৪:৪৩
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৩
128822
ডাক্তার রিফাত লিখেছেন : Thumbs Up Thumbs Up
175378
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:১৯
জাগো মানুস জাগো লিখেছেন : very dangerous situation going on.
dish culture,available digital mobile destroy our generations.
Actually pornography such a thing that it attract the people who have not enough taqwa.May allah increase our iman & fearness of allah.
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১২
128819
ডাক্তার রিফাত লিখেছেন : yes u r right...
201335
০১ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:০৮
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : চেতনার পরিবর্তন দরকার।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File