নতুন বছরে কল্যাণকর কিছুর প্রত্যাশায়.........
লিখেছেন লিখেছেন সিরাজুম মুনিরা রুমি ০৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:০১:০০ রাত
আজকাল কেন জানি এক অজানা আতংক ভর করেছে আমার উপর। সারাক্ষণ এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করে। কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারি না। এমন কি রাতে ঘুমও হয় না। কি সব দুঃস্বপ্ন দেখি। দেশ থেকে কোন ফোন এলে বা নিজে ফোন করলে এই অস্থিরতা আরো বেড়ে যায়। আমার মনে হয় এই অনুভুতি আরো অনেকের মধ্যে বিদ্যমান। জানি না আল্লাহ্ কবে এই অস্থিরতা দূর করে দিবেন!!
কিন্তু না, এভাবে চলতে দেয়া যাবে না। গেল বছরটায় অনেক অপুরনীয় ক্ষতি হয়ে গেছে আমাদের দেশটার। কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের জন্য পুরো জাতি আজ বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তারা খুব সফলতার সাথে কাজটা করতে পেরেছে। মানুষের ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ বা ভিন্ন আইডিওলজি থাকতেই পারে কিন্তু সেটা আজ চরম তিক্ততার পর্যায়ে চলে গেছে। একজন আওয়ামী লীগ করলেই যেমন নাস্তিক হতে পারে না ঠিক তেমনি ইসলাম পালন করলেও রাজাকার হয়ে যায় না। খুব অবাক লাগে যখন দেখি বহুদিনের পুরোনো বন্ধুত্ব ভেঙে যাচ্ছে, ভাই বোনকে সহ্য করতে পারছে না, বাবা ছেলেক দেখতে পারে না। নাস্তিক-আস্তিক!! এই ইস্যু নিয়ে কত নিরপরাধ মানুষের প্রাণ গেল, কত মানুষ পঙ্গু হল, কত মানুষ আশ্রয়হীন হল। জেল জুলুম অত্যাচার সব যেন বেড়েই চলেছে।
এই বিভক্তি জনিত সমস্যাটা প্রকট হচ্ছে তরুণ সমাজের মধ্যে বেশিমাত্রায়। দিন দিন যেন এর বিষক্রিয়া আরো বেড়ে চলেছে। কুচক্রী মহলের কথা অনুযায়ী একদল হচ্ছে মুক্তি যুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আর অন্যদল বিরোধী শক্তি। কি ভয়ানক তাদের এই বিভাজন!!! আমরা তো সবাই এখন বাংলাদেশের সন্তান। কিভাবে একটা স্বাধীন দেশের সন্তান হয়ে স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে এসেও এইভাবে বিভক্ত হচ্ছি!! এই কুচক্রী মহল তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব কাজ খুব টেকনিক্যালি করে যাচ্ছে। আর আমরা আমাদের বিবেক বুদ্ধি কাজে না লাগিয়ে তাদের পথকে সুগম করে দিচ্ছি।
আমার মনে হয় কিছু বিবেক বোধহীন মানুষ ছাড়া সবাই আমরা আমাদের দেশের তথা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার কল্যাণ চাই। আমরা অন্তত এই একটা পয়েন্টে তো সবাই এক যে দেশ আমাদের সবার। তাহলে আমরা কেন আমাদের নিজেদের মধ্যে এই ভয়ানক বিষক্রিয়া টেনে আনছি? এত সম্ভাবনার দেশটা দিনে দিনে কিছু হাতে গোনা অমানুষের হাতে বন্দী হয়ে যাচ্ছে। আমার তো মনে হয় এর জন্য আমরা নিজেরাও দায়ী। জাতি হিসেবে প্রচন্ড অলস আমরা। দেশের জন্য আমাদের যা কিছু করা দরকার তার কতটুকু করছি? শুধু সারাক্ষন অন্যের সমালোচনা করতেই বেশী ব্যস্ত। কিন্তু এসব থেকে বের হয়ে আসার জন্য সমাধানের পথ আমরা খুঁজি না। খুব কমন একটা কথা “নাহ এদেশ দিয়ে আর কিচ্ছু হবে না” যারা বিদেশে আছে তাদের অনেকেই বলতে দেখি “নাহ আর দেশে ফিরে যাব না” ।
কিন্তু না আমাদের এই কনসেপ্ট থেকে বের হয়ে আসা দরকার। নতুন এই বছরে আমরা আসুন প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হই ভাল কিছুর জন্য। নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে যা মানুষের জন্য কল্যাণকর, আপনি আপনার অবস্থান থেকে কাজ করে যান। স্বাধীনভাবে কাজের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে অনেক অনেক বাধার সম্মুক্ষীণ হতে হয় জানি, তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখেন নিজের মেধা বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই কাজ করছেন। এক্ষেত্রে যারা দেশের বাইরে থাকেন তারা খুব ভাল ভুমিকা রাখতে পারেন। বাইরের সবার অনেক ব্যস্ততা তারপরেও সপ্তাহের সাত দিনের ১৬৮ ঘণ্টার মধ্যে ২ ঘণ্টা সময় বের করা মনে হয় খুব একটা কঠিন কাজ না। আপনার জানার ঘাটতি থাকলে আপনি অযথা তর্ক না করে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানার চেষ্টা করুণ। সর্বোপরি নিজের বিবেক কে কাজে লাগান। আমরা যারা মুসলিম তারা প্রতি কাজে আল্লাহকে স্বরণ রাখার চেষ্টা করি। আমরা আমদের মত চেষ্টা চালিয়ে যাই, দেখবেন আল্লাহ্ একদিন একদিন ঠিকই মুক্তি দিয়ে দিবেন ইনশা’আল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৮ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন