হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতা ও বাঁচার অধিকার পূনরূদ্ধারে প্রয়োজন সিপাহী-জনতার বিপ্লব
লিখেছেন লিখেছেন বিবেকের কষ্ঠিপাথর ০৭ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:২১:২২ সকাল
আবুলের দূর্নীতিতে পদ্মা সেতুতে যখন বিশ্বব্যাংক বিনিয়োগ প্রত্যাহার করলো হাসিনা (যাকে আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী বলতে লজ্জ্বা লাগে) বললো আবুল দেশপ্রেমিক। টিপাইমুখ বাঁধ দিয়ে যখন ভারত আমাদেরকে মারতে চাচ্ছে তখন হাসিনার সরকার বলে টিপাইমুখ বাঁধ দেশের ক্ষতি করবে না। শেয়ারবাজারে ৩২ লাখ বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে যখন পথে বসেছে তখন সে সরকার বলেছে শেয়ারবাজার হচ্ছে জুয়াখেলা, এতে যে কেউ হারতেই পারে। হলমার্ক যখন ৪০০০ কোটি টাকা জালিয়াতি করে নিয়ে গেল তখন বেশরম সরকার বললো এটা বড় অংক নয়। সাভারে যখন ভবন ধ্বসে কয়েক হাজার গার্মেন্টস কর্মী মারা গেল তখন দায়িত্বজ্ঞানহীন সরকার বললো জামায়াত-শিবির স্তম্ভ ধরে নাড়াচাড়া করার কারনেই ভবন ধ্বস হয়েছে। যেই সত্য বলার চেষ্টা করেছে তাকে গুম করে ফেলা হয়েছে, না হয় চিরতরে পঙ্গু করে চৌদ্দ শিকে অন্তরীন করা হয়েছে। হাজার হাজার আলেম হত্যা করা হয়েছে রাতের আঁধারে। পুলিশের নির্বিচার গুলি চলছে। সীমান্তে শত শত মানুষ হত্যা করছে ভারত। সরকারের কোন প্রতিবাদ নেই। পৃথিবীর কোথাও এমন স্বাধীন দেশ আছে বলে আমার জানা নেই যে দেশের মানুষ অন্য দেশ এসে মেরে যায় আর সে দেশের সরকার প্রতিবাদের পরিবর্তে তাদের খুন হওয়া মানুষদের বলে চোরাচালানী। আরো কত! বলে শেষ হবে না। যেখানেই দেশের বিপর্যয় সেখানে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে হয় সেটা বিপর্যয় নয়, অথবা সেটা বিরোধী জামায়াত-শিবিরের কাজ।
এভাবেই হাজার হাজার মানুষের রক্তের উপর দিয়ে দেশ চলেছে গত ৫ বছর। যাদের লজ্জ্বা আছে তারা দোষ স্বীকার করেন, আর যাদের সর্বনিম্ম লজ্জ্বাটুকুও নেই তারা দোষ স্বীকার ও করেন না। এরকম বেহায়া সরকার হিটলার ও ছিল না। সব যদি বিরোধীদলই করেন তবে আপনারা কেন সরকার সেজে বসে আছেন? ক্ষমতা ছেড়ে কেন বিরোধীজোটের কাছে অর্পন করেন না? সর্বশেষ ৫ ই জুনের প্রহসনের নির্বাচনে তাই কমপক্ষে ৯৫% জনগন ভোট বর্জন করে লালকার্ড দেখিয়েছে আওয়ামীলীগকে। সেখানেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (BAL) জনগনের ভোটকে তথ্যসন্ত্রাসের মাধ্যমে বেলিনের মত ফুলিয়ে ৪০, ৫০% বানাচ্ছে। সবাই সব বুঝে এবং সেটা তারা ব্যালটে বুঝিয়ে দিয়েছে। মানুষ বেহায়া হয়, তাও কি এমন!
মুলার বলেন, "যে ভুল করে সে মানুষ, যে ভুল করে অনুশোচনা করে সে ভাল মানুষ আর যে ভুল স্বীকার করে না সে শয়তান।"
শয়তান কখনো সুপথে আসেনা। তাহলে এ শয়তান সরকার থেকে জনগনের পরিত্রানের উপায় কি?
ক্ষমা? না, কারন শয়তান তো ক্ষমা চায় না। সুতরাং তাকে ক্ষমা যে করে সে ও শয়তান।
তার মত তাকে চলতে দেয়া? না, কারণ তার মত তাকে চলতে দিলে সে আমাদেরকেও শেষ করে দিবে। ইতিমধ্যে দেশকে বিশ্ব থেকে সে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।
তাহলে কি?
কি?
?
?
?
একবার এক মোটরসাইকেলচালককে ট্রাফিক থামার সিগনাল দিয়ে বললো আপনার গাড়ির লাইট নাই, থামুন। সে না থেমে বললো স্যার, আমার গাড়ির ব্রেক ও নাই। ওই ট্রাফিকের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা! আপনারা বলুন এমন ব্রেকহীন গাড়ি থামবে কিভাবে?
?
?
এক্সিডেন্ট। হ্যাঁ, কেবল এক্সিডেন্টেই তা থামতে পারে, যেমন থেমেছিল ৭৫ এ।
একটাই পথ তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া। বিরোধী শক্তি তাই তেলমাখানো আন্দোলন যতদিন করবে ততদিন এদেশের মানুষ দূর্ভোগে থাকবে। বাংলাদেশ বাদে পৃথিবীর সকল কোর্ট রাজনৈতিক প্রশ্নের (ডক্ট্রিন অফ পলিটিক্যাল কোশচেন) বিচার করেনা। সে বিচার হাসিনা করেছে। খালেদা বা নপুংসক সেনাবাহিনী সে ডালিমদেরদের রক্ষা করেনি। তাই সেনাবাহিনী আগের মত এগিয়ে আসবে তা বলা মুশকিল। তবে সেখানে একটা ভুল ছিল কারন তা সিপাহী জনতার একত্রিত প্রয়াস ছিলনা যদিও জনগনের সমর্থন সেখানে ছিল। সিপাহি জনতার সম্মিলিত প্রয়াস না থাকলে তা পরিগিনিত হয় ক্যু হিসেবে আর সম্মিলিত প্রয়াস থাকলে তা পরিগনিত হয় বিপ্লব হিসেবে। সিপাহী-জনতার সম্মিলিত প্রয়াস ই তাই তৃতীয় বিশ্বের দূর্বল দেশগুলোকে পরাধীনতা ও সহিংসতা থেকে রক্ষা করতে পারে। সিপাহী-জনতার সম্মিলিত প্রয়াস সবসময় সফল হয়েছে, যেমন হয়েছে ৭১ এ, বা ৭৫ এর ৭ ই নভেম্বরে। সেনাবাহিনী যদি এগিয়ে না আসে তখন জনগনের স্বৈরাচারের জুলুম থেকে নিষ্কৃতির উপায় কি?
তখন জনগনকেই সে রকম বাহিনী তৈরী করতে হয়, যদিও সেটা দীর্ঘমেয়াদী। যেমন হয়েছিল ৭১ এ। তখন অত্যাচারের কেন্দ্রে ছিল পশ্চিম পাকিস্তান, এখন আওয়ামী লীগ ও ভারত। পার্থক্য এই যা। আগে গনপ্রশাসনে পাকিস্তানীরা ছিল ৫৫% এখন কৌটা ৫৫%। সেই বৈষম্য তো একই। আরেকটু খুলে বলি।
কয়দিন আগে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘স্বাধীন’ বাংলাদেশ দেখতে চায় চীন' ( http://mzamin.com/details.php?mzamin=NDQz&sMQ=%3D )। ১৯৭১ সালের ভারত বাংলাদেশ সাত দফা মৈত্রি চুক্তিতে বলা হয় বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করবে ভারত। ১৯৭১ ভারত সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে যে সাহায্য করেছিলো তা বাংলাদশের স্বাধীনতার জন্যে নয়। বরং তা ক) তাঁদের চির শত্রু পাকিস্তানকে দুর্বল এবং খ) দক্ষিণ এশিয়ায় তাঁদের আঞ্চলিক আধিপত্যকে(Regional Hegemony) প্রতিষ্ঠিত করতেই এই লোক দেখানো সাহায্য করেছিলো। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা ভারতের সাহায্য নিয়েছিলাম 'স্বাধীন' হওয়ার জন্য, পরাধীন (সে ভারতের কাছে বা পকিস্তনের কাছে) হওয়ার জন্য নয়। ভারত স্পষ্টতই আমাদেরকে পরাধীনতার শৃংখলে বেঁধে ফেলেছে এবং আর স্বাধীন হতে দিবে না। গত ৭ বছর আগে ভারতের সেনা প্রধান বললেন, বাংলাদেশকে আর ভারতের রাডারের বাইরে যেতে দেয়া হবে না। এ সরকারের যদি এদেশের জনগনের প্রতি সামান্য আনুগত্য থাকত তাহলে এ নির্বাচনের পর ক্ষমতা ছেড়ে দিত। তার আনুগত্য ভারতের প্রতি। সে ক্ষমতা ছাড়বে না কারন কেবল ভারত তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমি এ সম্পর্কে আরো লিখেছি আমার আগের লেখায়।
স্বাধীনতা মানে বাঁচার স্বাধীনতা। মরে গেলে তো কেউ স্বাধীনতা খোঁজেনা। কিন্তু যখন জীবনের নিরাপত্তাই থাকেনা, তখন মানুষ পৃথিবীতে যতদিন আছে ততদিন তো বাঁচার উপায় খুঁজবেই। সে যেহেতু স্বৈরাচারে হাতে মরবেই, তখন মেরেই মরার চেষ্টা করবে। এটাই দুনিয়ার চিরন্তন নীতি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধেও তাই ঘটেছে। এখন আবার মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তাইতো বলে মুক্তিযুদ্ধ বার বার আসে এ লগনে।
ব্রেকছাড়া সরকারের পতনে বিএনপির এমন কর্মসূচি হবে না। গনপিটুনি কর্মসূচী দিন এ গনবিচ্ছিন্ন সরকারের বিরূদ্ধে। দিন অসহযোগ। ইসরাইলকেও এ সরকার হার মানিয়েছে। ইসরাইল তো নিজের দেশের মানুষের উপর গুলি চালায় না।
আমার টাকা দিয়ে কেনা বুলেটে আমার বুক ছিন্নভিন্ন হতে পারে না।
বিষয়: বিবিধ
১৩১৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন