হাওয়াভবন নয় সুধাসদন
লিখেছেন লিখেছেন হাসনাতের ব্লগ ২৫ মার্চ, ২০১৬, ০৩:১৮:২১ রাত
বাংলাদেশে প্রিন্ট বা ইেলক্ট্রনিক যে কোন মিডিয়াতেই হাওয়াভবন কেন্দ্রিক দুর্নীতি গাথা প্রচারিত হয় বিরামহীন ভাবে। কলাম লেখক লিখতে লিখতে কলমের কালি শেষ করে ফেলেন কিন্তু হাওয়া ভবনের দুর্নীতির ফিরিস্তি শেষ হয়না। ব্লগারের আনকাট ছুরিকাঘাতে আহত হোন কথিত দুর্নীতির বরপুত্র।চেতনায় মোহাচ্ছন্ন টকশো সেলিব্রেটি মুখে ফেনা তোলে জোট আমলে সংগঠিত দুর্নীতির পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন। তাদের লেখা বা আলোচনায় স্থানপায় সাবেক আমলের তার কেলেংকারি (বিদ্যুত), সার কেলেংকারী, ঘুষ, কমিশন আর নিয়োগ বাণিজ্যে হাওয়া ভবন কর্তৄক আশির্বাদপুষ্ট কর্মচারী কেন্দ্রিক দুর্নীতি ও ক্ষমতা অপব্যবহারের কেচ্ছা-কাহিনী। হালের এসব ফরমায়েশী বুদ্ধিজীবি বিগত দিনে ঘটে যাওয়া কর্মকান্ড নিয়ে যতটা সরব, তার বিপরীতে ভোটারবিহীন, অবৈধ, নৈতিক ও আন্তর্জাতিক সমর্থন বিহীন সুধাসদন কেন্দ্রিক মহাজোট সরকারের দুর্নীতি নিয়ে ততটাই নীরব।
মতিআলো আর বাম কেন্দ্রিক বুদ্ধিফেরিওয়ালা হাওয়াভবন সংস্লিষ্ট বায়োবীয় দুর্নীতির কল্পরূপ প্রচারে সিদ্ধহস্ত হলেও চেতনার গভীর আধারে ঘটেযাওয়া চুরি-ডাকাতি, লুটপাট, দলীয়করন, গণতন্ত্রহরণ, খুন, ধর্ষন কিছুই দেখতে পায়না। হাওয়াভবনের বকেয়া অনৈতিক নির্দেশ মান্যবরের নিকট বিচারযোগ্য অপরাধ বিবেচিত হলেও হালআমলের পুকুরচুরি উনাদের ভাবনায় পাখনা মেলেনা। ৭১ এ পাকবাহিনীর তল্পিবাহক মতদৈততার পাপে ফাঁসির মঞ্চে জীবন দেয়। আর বিরোধী রাজনীতিকের অঙ্গবাহিত রক্ত নদীতে তৃপ্তি স্নানে গাত্র ভেজায় তরুণ শাহাবাগী। অথচ নির্দেশদাতা ইমাম-আশিকরা চেতনাজীবি সরকারের নীতিনির্ধারক হয়ে চক্ষু রাঙায় বিচারের আওতায় আসেনা।যুদ্ধাপরাধী ব্যাক্তি ও তাদের উত্তরাধীকার নব্য রাজাকার সামাজিক ভাবে বয়কট হোক, এমন স্লোগান জোরদার থকলেও যুদ্ধাপরাধী বেয়াই হলে জাতি হয় আহলাদে আত্মহারা। নীতি, আদর্শ ও বিশ্বাস ভেদে সম্মুখ সমরনায়ক পাকিচরের তকমা পেলে কিংবা তারকা মানের পাকবন্ধু ভোলপাল্টে নিজ গাড়ীতে লাল-সবুজের পতাকা উড়ালেও মুরগি কবির আর জাফরষাড়দের কিছুই আসেযায়না।
মাগুরার উপনির্বাচন গণতন্ত্রের মুখে কলঙ্কের তিলক পরায়, তবে সারাদেশে আজ মাগুরা গণতন্ত্রের প্লাবন ডাকলেও চেতনা প্রজন্মের কিছু যায় আসেনা। বাকশালী গণতন্ত্রে সবকিছুই জায়েজ। তাইতো সংবিধান রক্ষার দোহাই দিয়েই সংবিধান ধর্ষিত হয়, ভোট-ভ্যাট ছাড়াই এমপি বনেযায় পাতিনেতা, অবৈধ সংসদের অনির্বাচিত স্পিকার বগলদাবা করে নেয় আন্তর্জাতিক সনদ। আর সরকার প্রধানেরতো কথাই নেই। চারদিকে ডিগ্রী আর গণতন্ত্রের ছড়াছড়ি-এমন গণতন্ত্রের মানষকণ্যা তারেই বলাযায়।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পারোনা, বিনেপয়সায় সার দিতে পারোনা, ঘরেঘরে চাকুরী দিতে পারোনা তবে কি অধিকার আছে তোমার ক্ষমতায় থাকবার? তাইতো চারদলীয় জোট বিরোধী কোরাস বেজেউঠে সর্বত্র-বিদায় নিতে হবে তাড়াতাড়ি। সুযোগ করে দিতেহবে সেই জনদরদী সরকারকে, যারা ঘড়েঘড়ে চাকুরী, বিনেপয়সায় সার, দশটাকা সের চাল খাইয়ে সোনার বাংলায় সোনা ফলাবে। অপপ্রচারে বিভ্রান্ত ভোটার, দেশী কুচক্রী আর আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মিলীত শক্তির নিকট পরাজিত হয় জোট সরকার।
আজ চারদলীয় জোট ক্ষমতায় নেই। নেই হাওয়াভবন কিংবা তারেক রহমান।স্বাভাবিক ভাবেই আশা করাযায় বাংলাদেশ আজ সুখের সাগরে ভাসছে। কেউ আর দুর্নীতি করেনা, যুবক-যুবতির প্রেমকরার সময়ও নেই, ওরা হাল সরকারের চাকুরীতে ব্যাস্ত। বিনেপয়সার সারে উৎপাদিত চালে ভূরিভূজন করে কৃষককূল সুখনিদ্রায় মগ্ন। আবুলরা পদ্মাসেতু হজম করেও মেরুদন্ড্ বিহীন দুদকের ক্লীনম্যান। শেয়ারবাজার দুইদফা সাফাই হবার পরও দরবেশ বাবা পুতপবিত্র। ডেসটিনির অথৈ সাগরে বেকার যুবকের স্বপ্ন নিমজ্জিত হলেও চেতনার মন্ত্রফুঁতে হারুনরা নিস্কৃতি পায়। সোনালী ব্যাংক সাফা হোক ক্ষতি নেই, চেয়াম্যান পদোন্নতি পেয়ে হয় গভর্নর।
হাওয়াভবন কেন্দ্রিক দুর্নীতির অভিযোগ এখন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। কিন্তু সরকার উপযোক্ত প্রমান হাজির করতে পারেনি তারেক রহমানকে আদালতে দুর্নীতিবাজ প্রমান করতে না পারলেও সরকার তার বিরদ্ধে আনীত অভিযোগ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ব্যাবহার করছে প্রতিদিন। আর হাওয়াভবনের দুর্নীতির ডামাঢোলে চাপাদেয়া হচ্ছে ব্যাংকলুট, শেয়ারবাজারলুট সহ দুর্নীতি ও কেলেংকারী। দেশে কোটি টাকা ব্যতনের আইটি বিজ্ঞানী থাকার পরও রাজকোষ হ্যাক হয়। গভর্নর চাকুরী হারালেও এমন ঘটনায় তথাকথিত আইটি বিশেষজ্ঞের হয়না কিছুই।
দেশ আজ চাণক্যনীতির কূটকৌশলে পরাভূত, জনগণ দিশেহারা। তাইতো একদিনে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা হত্যাকান্ডের শিকার হলেও সামরিক বা বেসামরিক কোন প্রেনীই প্রতিবাদ করেনা। বিনাভোটের সরকার প্রধান কাকের কর্কষ কন্ঠে কুকিলের ভানকরে সরকারী সাফল্যের ফিরিস্তি দেয়, আমজনতা তার কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেনা। শেয়ারবাজারে পুঁজি হারানো বেকার যুবক নিজঘড়ে ফ্যানের সাথে দড়ি ঝুলিয়ে ইহকাল সাঙ্গ করে, তবু তার পরিণতির জন্য দায়ী সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেনা। টাইবাধা ডেসটিনির উদ্দমী যুবক সব হারেও প্রতিবাদের ঝড় তোলেনা। ছাত্রলীগ-যুবলীগের সম্মিলিত দখলবাজীর বিরোধীতা করে এমন শক্তি দেশে নেই। ৭১ এ সাহায্যকারী প্রতিবেশীর প্রতিনিয়ত অত্যাচারে নিজ মাতৃভূমি নাকাল হলেও যোগপথ আন্দোলন হয়না-এটি জাতির জন্য হতাশাজনক। হাওয়াভবন হাওয়ায় মিলিয়ে গেলেও তার বিরোদ্ধে কুকির্তির অভিযোগ গুলো আজও ফেরি হয়ে বেড়ায় চেতনাজীবিদের মুখেমুখে। আর ১৬ কোটি মানুষের আশা, ভরসা আর স্বপ্ন চুরি করেও সুধাসদন পার পেয়েযায় চেতনার কল্যাণে।
বিষয়: রাজনীতি
১৭৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন