বাংলাদেশের অপহৃত গণতন্ত্র,ধিকৃত প্রধানমন্ত্রী লন্ডনের রাস্তায় পঁচা ডিমে অভিসিক্ত
লিখেছেন লিখেছেন হাসনাতের ব্লগ ২৩ জুলাই, ২০১৪, ০৬:৩১:১৯ সন্ধ্যা
।। ব্যারিস্টার হাসনাত তালুকদার ।।
এঙ্গলো সেক্সন ও এঙ্গলো নরমেন যুগে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায় রাজা কতৃক নিয়োগকৃত ন্যাইটদের বসবাস ছিল। বিভিন্ন যুদ্ধে তারা রাজার পক্ষে লড়াই করত। এসব ন্যাইটের অধীনে আবার অনেক প্রজার বসবাস ছিল। যুদ্ধ ক্ষেত্রে জয় লাভের জন্য রাজা এসব ন্যাইটের বাহুবলের উপর নির্ভরশীল ছিল। কাজেই সাধারন জনগনের বিপরীতে ন্যাইটদের ক্ষমতা ছিল অপরিসীম। জনগণ কোন অন্যায় করলে ন্যাইট তাকে শাস্তি দিতে পারত। জেল জুলুমতো বটেই অপরাধীর মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত কার্যকর করার ক্ষমতা ছিল এই ন্যাইটদেরই হাতে।
জনসাধারন কোন অপরাধ করলে অপরাধের ধরন ভেদে বিভিন্ন রকম শাস্তির বিধান ছিল। কোন অপরাধী যদি নিরীহ জনসাধারনের ধনসম্পদ চুরি করত তবে তাকে একটি বিশেষ পদ্ধতিতে শাস্তি দিত। কাঠের তৈরী এক ধরনের বিশেষ যন্ত্রের নাম স্টোক্স। এই স্টোক্সে অপরাধীর দুই হাত এবং দুই পা বিপরীত দিকে আটকে রাখা হতো। ঘারটা এমন ভাবে আটকে রাখা হতো যাতে জনগন দূর থেকে তার মুখ দেখতে পারত। অপরাধীকে স্টোক্সে আটকে রেখে ডিম এবং টমেটো ছুড়ে মারার জন্য সাধারন জনগণকে আহবান জানানো হতো। অপরাধীর চুরি-চামারিতে ত্যাক্ত-বিরক্ত জনগণ মনের আনন্দে অপরাধীর মুখ লক্ষ্য করে পচাঁ ডিম ও টমেটো ছুড়ে মারত। এ পদ্ধতিতে শাস্তি পাওয়ায় অপরাধী খুবই অসম্মানিত বোধ করত এবং নিজেকে শোধরে নিয়ে ভাল হয়ে যাবার প্রতিজ্ঞা করত। তবে সাধারণ জনগণ অপরাধীকে এমন সাজা প্রদান করতে পেরে খুবই আনন্দ্ পেত।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসছি। অনেক আশার প্রদ্বীপ জ্বালিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বার শেখ হাসিনার সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছিল। কিন্তু দলীয় নেতা-কর্মীর জঙ্গী সন্ত্রাস আর উলঙ্গ দুর্নীতির ঝড়ে দেশবাসীর আশার প্রদ্বীপ এক ফুৎকারেই নিভে যায়। জনগণ বুঝতে পারে হলমার্ক,ডেসটিনি আর পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় দুর্নিতির পেছনে শীর্ষ নেতৃত্বের হাত না থাকলে এমন বড় দুর্নিতি করা কারো পক্ষে সম্ভব ছিল না। জনগণ যা কিছুই ভাবুক সরকারের বড় বড় নেতারা বিপুল উৎসাহে লুটপাট করছে। আর লুটের টাকার পাহাড় এমনই বিশালকায় হয়ে দাড়িয়েছে যা এখন বাংলাদেশের সমস্ত ব্যাংক উৎরে সুইস ব্যাংক পর্যন্ত ভরে গেছে। জনগণ বাধ্য হয়ে ভাবল মেয়াদ শেষে যখন নির্বাচন আসবে, তখন সরকারকে মজা দেখাবে। কিন্তু অতি চালাক সরকার সিটি কর্পোরেশনের ফলাফল থেকেই তাদের করনীয় নির্ধারন করে নিয়ে এক তরফা নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়। আর তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েই সরকার দমন-পীড়নের মাত্রা বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। ফলে দেশের মাটিতে দাড়িয়ে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা হারিয়ে নিস্বঃপ্রায় বিরোধীদল।
২২ জুলাই ২০১৪, শেখ হাসিনা গার্লস সামিটে যোগ দিতে ইংল্যান্ড এসেছেন। সম্মেলনটি বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে যতই গুরুত্বহীন হোক এটি তার কাছে খুবই গুরুত্ব পূর্ন। কারন ৫ই জানুয়রীর একতরফা নির্বাচনের পর কোটনৈতিক ভাবে কোনঠাসা হাসিনা সরকার যে কোন ছল-ছুতায়ই পশ্চিমা কোন দেশ সফরে ব্যাকুল। তবে তার এই সফর কোন ভাবেই সুখকর হয়নি। প্রথমতঃ তার এই সফরে বাংলাদেশের জনগনের লাভ-ক্ষতি প্রশ্ন সাপেক্ষ। দ্বিতীয়তঃ তিনি এবার লন্ডনের উন্মুক্ত রাস্তায় ডিম থেরাপির মুখোমুখি হয়েছেন। বাংলাদেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষ মনে করে শেখ হাসিনার সরকারটি ভোটার বিহীন নির্বাচনে নির্বাচিত একটি সরকার যার কোন নৈতিক ভিত্তি নেই। তারা আরো মনে করে এই সরকারটি অবৈধ এবং এটি জনক্যানমূলক কাজের পরিবর্তে জনগণের সম্পদ চুরিতে ব্যাস্ত। আর ইংল্যান্ডে যেহেতু একদা চোরকে শাস্তি দিতে পচাঁ ডিম এবং টমেটো ছোড়ার প্রচলন ছিল, বিলেত প্রবাসী বঙ্গ সন্তানেরা তাই সেই পদ্ধতিটিই মনের আনন্দে প্রয়োগ করেন শেখ হাসিনার উপর।
মধ্যযুগের চোরেরা পঁচাডিম ও টমেটো থেরাপি পেয়ে খুবই লজ্জিত হতো। তাই স্টোক্সে আটক চোরকে যখন সাধারন জনগন পচাডিম আর টমেটো ছুড়ত, অপমানিত চোর ভাবত এবার স্টোক্স থেকে যদি ছাড়া পাই সারা জীবনের জন্য ভাল হয়ে যাব। পঁচা ডিম খাবার পর শেখ হাসিনার বর্তমান অনুভূতি কি, জানতে বড়ই ইচ্ছে করে। অপমানিত শেখ হাসিনা কি মধ্য যুগের চোরদের মতো প্রতিজ্ঞা করে বলবেন, এবার দেশে ফিড়ে নেই, চিরতরে ভাল হয়ে যাব। ঘুস-কমিশন খাবনা, জনগনের সম্পদ চুরি করবনা, জনমতের প্রতি শ্রদ্বা দেখিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিব। নাকি সেই চোরের চেয়েও নির্লজ্জ ভাবে বলবেন ডিম ছোড়, টমেটো ছোড় বা পরিধেয় বস্র খুলে নাও, আমার আপত্তি নাই।আমি ক্ষমতা আকরেই থাকতে চাই কারন জনগণের সম্পদ চুরিতেই আমি মজা পাই।
বিষয়: বিবিধ
১৯৫৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পোষ্ট-টা ডাবল হয়ে গেছে।
আমার ভুলটি ধরিয়ে দেবার জন্য বুড়া মিয়াকে ধন্যবাদ ।
মানির মান পাহাড় সমান ,
হাজারও ডিম , টমেটোতে যায় না তার সন্মান
মন্তব্য করতে লগইন করুন