শিশির,সাকিব ও বাংলাদেশের আইনের শাসন
লিখেছেন লিখেছেন হাসনাতের ব্লগ ১৯ জুন, ২০১৪, ০৪:২১:০৩ বিকাল
।। ব্যারিস্টার হাসনাত তালুকদার।।
ইভটিজিং বাংলাদেশের সমাজ ব্যাবস্থায় এক ভয়ানক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এই ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অনেক মেয়ের জীবন বিপন্ন হয়েছে। কোন একটি বড় ঘটনা ঘটেগেলে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাময়িক দাপাদাপি, মিডিয়ার ছুটাছুটি সাময়িক বৃদ্ধি পেলেও এই ব্যাধিকে সমূলে উৎপাটন করার জন্য যে সামাজিক সচেতনতা দরকার সেটা থেকে আমরা এখনো কয়েক দশক পিছিয়ে আছি। আর সেজন্যই ইভটিজিং আমাদের মা-বোন-কণ্যাদের জীবন বিপন্ন করেও এখনও টিকে আছে। গত সপ্তাহে ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেটম্যাচ উপভোগ করতে এসে ভিআইপি গ্যালারিতে অবস্থানরত বিশ্বের এক নাম্বার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সহধর্মিনী শিশির কতিপয় বখাটে যুবক কতৃক ইভটিজংয়ের শিকার হন। বিষয়টি জানার পর সাকিব বিসিবির সহায়তায় উক্ত যুবকদের উপর নিজের ঝাল মেটান। বিষয়টি সেখানেই থেমে থাকেনি। গত ১৬ই জুন তাদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইন যদি তার নিজস্ব গতিতে চলে তবে আশা করা যায় বখাটে যুবকটি তার প্রাপ্য কর্মফল ভোগ করবে। তার সাজা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র, সমাজ এবং ঐ বখাটের অবিভাবক সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে ভুক্তভূগী আমার অনাত্মীয়, এই ভেবে দূরে থাকার সুজোগ নেই।
বখাটে যুবকটির প্রতি আমার কোন অনুকম্পা নেই। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্বের এক নাম্বার ক্রিকেটার সাকিব যা করলেন, সেটা আমাকে হতবাক ও বিশ্মিত করেছে।সেলিব্রেটিরা যুব সমাজের অনুকরনীয়-অনুসরীয় ব্যাক্তি। সাকিব একজন তারকা সেলিব্রেটি সন্দেহ নেই। কিন্তু সাকিব যখন অনএয়ারে লিঙ্গ প্রদর্শন করে ষোল কোটি বাংলাদেশীকে টিজ করে, তখন ঐ বখাটে আর বিশ্বের এক নাম্বার তকমাধারীর মধ্যে কোন পার্থক্য থাকেনা। সেই সাকিব যখন বউয়ের অপমান সইতে না পেরে ইভটিজারের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তখন সে নিজেও আইন ভঙ্গকারী সাব্যস্ত হতে বাধ্য। কেউ একজন অপরাধ করলেই তার গায়ে হাত উঠাবার ক্ষমতা আইন কাউকেই দেয়নি, তা ব্যাক্তিটি বিশ্বের যত নাম্বারই হোন। বখাটে ইভটিজার এবং সাকিব দুজনেই দুটি অপরাধ করেছেন। আইন অনুযায়ী দুজনকেই বিচারের মুখূমুখি করতে হবে। মনে রাখতে হবে আইনের চোখে আমরা সবাই সমান। আর বাংলাদেশে আইনের শাসন নেই বলেই বখাটেরা ইভটিজংয়ের সাহস পায়, সাকিবরা ক্ষেপে গেলেই যে কারো গায়ে হাত তোলার সাহস পায়-কিন্তু আইনকি তাদের সেই অধিকার দিয়েছে?
বিষয়: বিবিধ
১২৯১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সে সাকিব হোক আর সেই হোক ।
সাকিবরা একটা নিয়মের মধ্যে থাকে ফলে তারা বেমক্কা কিছু করলে শাস্তি পায় । কিন্তু এসব ইভটিজিং যারা করে তারা তাদের পেছনে শক্ত ব্যাক আপ আছে বলেই এসব করে । তাও আবার সাকিব , জলিলের স্ত্রীদের । ব্যাপারটা একটু অনুধাবন করলেই বুঝবেন ।
সাকিবরা জানে যদি এদেরকে আইনের হাতে তুলে দেয় , আইনই তাদেরকে জামিন দিয়ে বের করে আনবে ।
বাংলাদেশের আইনের শাসনের প্রতি দেশের সর্বোচ্চ লেবেলের মানুষেরও বিশ্বাস নেই বলেই তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয় ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন