বিরোধীদলের আন্দোলন সফল হয়েছে, সফল হয়নি

লিখেছেন লিখেছেন হাসনাতের ব্লগ ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০১:২২:১৯ দুপুর



।। ব্যারিস্টার হাসনাত তালুকদার ।।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং তার অধীনে একটি অবাধ,সুষ্ঠও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষঠানের দাবী নিয়ে আঠার দলীয় জোট আন্দোলন করেছিল। তারা আশা করেছিল তাদের দাবীর কাছে সরকার মাথানত করতে বাধ্য হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা মেনে নেবে। আন্দোলনের চাপ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ দুটিকেই বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে সরকার, দলীয় সরকারের অধীনে একটি যেনতেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে নতুন ভাবে সরকার গঠন করে। সেই থেকে বিরোধীদলের আন্দোলনের ব্যার্থতা এবং সরকারের কূট-কৌশলের সফলতা নিয়ে এক শ্রেনীর আলোচক মুখে ফেনা তোলছে। তারা বলছে সরকার বিরোধী দলের আন্দোলন যথার্থ ভাবেই মোকাবেলা করেছে এবং বিরোধীদলের আন্দোলন ব্যার্থ হয়ছে। আর সে কারনেই নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে বিরোধীদলের আন্দোলন সত্যিই সফল বা ব্যার্থ হয়েছে কি না ?

বিরোধীদলের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা ছিলনা, যে কারনে এটি একটি ব্যার্থ আন্দোলনে পতিত হয়েছে, এমন দাবী মেনে নিতে নারাজ বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি নেতা ওসমান ফারুক ও খন্দকার মোশারফ হোসেনও এমন দাবী প্রত্যাখ্যান করেছেন। জামায়াত সহ জোটের অন্যান্য দলের নেতারাও একই কথা বলছেন। অপরদিকে ৫ই জানুয়ারীর ভোটারবিহীন নির্বাচনে নজীরবিহীন বিজয়ের মধ্যদিয়ে তৃতীয় বারের মত প্রধান মন্ত্রী হবার গর্বে নতুন করে গর্ভবতী শেখ হাসিনা। আর অবৈধ নির্বাচনে জন্ম নেওয়া অবৈধ সাংসদ, অবৈধ মন্ত্রী আমু, তোফায়েল, নাসিম, কাদেররা তাদের কূট-কৌশলে বিরোধীদলের আন্দোলন দমনের সাফল্য উৎযাপনে ব্যাস্ত। তাদের দাবী বিরোধীদলের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা ছিলনা এবং সে কারনেই সরকার পতনের মত অবসথান তারা করতে পারেনি। তাদের দাবী, জনগনের স্বতঃস্ফোর্ত সমর্থন নিয়েই তারা আগামী পাঁচ বৎসরের জন্য ক্ষমতায় এসেছে।

বিরোধীদলের আন্দোলনের যে তীব্রতা ছিল সেটা ৮৬, ৯০, ৯৬ বা ২০০৬ এর আন্দোলনের চেয়েও অনেক বেশী। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপও এ ক্ষেত্রে অনেক বেশী ছিল। কিন্তু তার পরও ভারত দাদার নেংটা খেলার জোরে তাদের আশ্রীত সরকার সাময়িক ভাবে টিকে যায়। সেটাও সম্ভব হতনা যদি না লক্ষ লক্ষ তৃনমূল নেতা-কর্মীকে মাঠে এতিম করে বিএনপির তথাকথিত ম্যাসলম্যানরা গা ঢাকা দিত, যদি না লবিংয়ে ব্যাস্ত না থেকে তাদের নেতারা সংগঠিত শিবির কর্মীদের শক্তি ব্যাবহারে আরো কৌশলী হত। বিরোধীদলের কতিপয় ভুলের কারনে চুড়ান্ত বিজয় অর্জন সম্ভব হয় নাই এবং সরকারও এখন পর্যন্ত টিকে আছে। তবে কতিপয় ভুল সিদ্ধান্ত বা নেতাদের স্বার্থপর আচরনের পরও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের অর্জনকে ছোট করে দেখবার কারন নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে, আন্দোলন সফল হয়েছে বলেই ১৫৩ আসনে প্রার্থী খরায় বাকশালীরা নির্বাচন করতে পারে নাই, আন্দোলন সফল হয়েছে বলেই বাকী আসন গুলোতে ৫/১০ পার্সেন্ট ভোটার ভোট কেন্দ্রে গেছেন। আন্দোলন সফল হয়েছে বলেই বাকশালীদের প্রকৃত রুপ আবারও দেশবাসী দেখতে পেয়েছে,আন্দোলন সফল হয়েছে বলেই ইইউ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কমনওয়েল্থ কেউই নির্বাচন পর্যবেক্ষন করেনাই এবং এখনও হাসিনা সরকারকে স্বাগতম জানায় নাই।

ভারতের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে কোন রকমে টিকে থাকা বাকশালী চ্যালারা বিরোধীদলের আন্দোলনকে যতই খাট করে দেখার চেষ্টা করোক, যত চিৎকার করোক লাভ নেই। ভয় পেলে ভীরু কাপুরুষরা গলায় জোর দিয়ে যেমন ভয় তারানোর চেষ্টা করে আমু-তোফায়েলরাও তাই করছে।বিরোধীদলের আন্দোলন নিয়ে সরকার ভীত এবং চিন্তিত সেটি তাদের আচরনেই স্পষ্ট।

বিষয়: রাজনীতি

১২৪১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

172910
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৩৫
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো পিলাচ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File