বাংলাদেশ তোমার পরাধীনতা আসন্ন !
লিখেছেন লিখেছেন হাসনাতের ব্লগ ২৫ জানুয়ারি, ২০১৪, ০১:৪৮:০৩ দুপুর
।। ব্যারিস্টার হাসনাত তালুকদার।।
বলা হয়ে থাকে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি ১৯৭১ সালে জন্ম লাভ করেছিল। মুক্তি যুদ্ধের দলিল অনুযায়ী পাক বাহিনীর হাতে ৩০ লক্ষ লোক শহীদ এবং দুই লক্ষ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছিল। ৩০ লক্ষ শহীদের সংখ্যা নিয়ে গবেষক মহলে কানাঘুসা থাকলেও অন্তত ৩ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছিল এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু পাকিদের বন্ধন মুক্ত বাংলাদেশী জাতি স্বতন্ত্র দেশ হয়ে বিশ্ব মানচিত্রে টিকে থাকবে না, হায়দ্রাবাদ, কাশ্মীর বা সিকিমের ভাগ্য বরণ করে ভরতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হবে সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কথায় আছে কোন জাতিকে যদি তুমি ধ্বংস করতে চাও তবে তার চিন্তা শক্তিকে আগে ধ্বংস করো। বাংলাদেশ নিয়ে আমরা বাংলাদেশীরা বা ভারতীয়রা আমাদের বাংলাদেশ নিয়ে কি ভাবছে সে বিষয়ে খেয়াল করলেই বাংলাদেশের ভবিষ্যত আন্দাজ করা যায়।
কর্মস্থলে পালাম ক্রান্তি নামক এক ভারতীয় নাগরিকের সাথে আমার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। প্রায়শই একসাথে লাঞ্চ খেতেখেতে তার সাথে আমার কথা হয়। এমনই একদিন লাঞ্চ টাইম আড্ডায় তার কাছে শুনলাম, বাংলাদেশ সহ পুরু দক্ষিন এশিয়াই মহা ভারতের অংশ ছিল। আমি তাকে বললাম,বাংলা,বিহার,উড়িশ্যা যখন স্বাধীনতা হারায়, তখনও এই দেশ মহা ভারতের অংশ ছিলনা। গত হাজার বছরের অধিক সময় ঘাটলেও দিল্লীর অধীন্থ একক মহাভারত রাজ্যের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়না। বরং আদি কালের ভারতীয় উপমহাদেশ আরো অধিক টুকরুতে বিভক্ত ছিল। কাজেই তোমরা কখনোই আমাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেনা। আমার কথা শুনে পালাম তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল। সে আমাকে আক্রমন করে বলল, তুমি কোন ইতিহাস জাননা। স্বরনাতীত কাল থেকেই মহাভারত একটি একক রাজ্য ছিল এবং সেই মহাভারতে তোমাদের বাংলাদেশও অন্তর্ভূক্ত ছিল।
মি মনুজ নামে এক ভারতীয় বৃদ্ধ যিনি আমার সহকর্মীর পরিচিত, তিনি একদিন আমাদের অফিসে আসলেন। বয়সে অনেক সিনিয়র হবার সুযোগ নিয়ে একাই বকবক করে আমাদের জ্ঞান দান করছিলেন। জ্ঞান দানের এক পর্যায়ে তিনি জানালে, তার কাছে তথ্য আছে আগামী ৩০/৩৫ বছরের ভেতর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তখন বাংলাদেশ নামক কোন ভূ-খন্ড পৃথিবীর মানচিত্রে থাকবেনা। এরপর তিনি মামা বাড়ির আবদার পেশ করে বললেন, বাংলাদেশের উচিত এখনই ভারতের সাথে একিভূত হওয়া, যাতে ভবিষ্যতের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাত্তয়া যায়। বৃদ্ধ সম্রাজ্যবাদী ন্যাড়া কুকুর এভাবে খুলাখুলি তার মত পেশ করল।
এবার আসি বাংলাদেশী প্রসঙ্গে। আমার পরিচিত এক ভদ্রলোক, নাম কায়সার, যিনি রাজশাহী ইউনি থেকে মাস্টার্স করে এখন যুক্তরাজ্য প্রবাসী। তার পিতা একজন আওয়ামী সমর্থক সাবেক আমলা। তার নিজেরও চেতনা শক্তি টনটনে। তাকে একদিন সরকারের অস্বাভাবিক ভারত প্রেমী আচরন গুলো পেশ করে প্রশ্ন করলাম, এভাবে চলতে থাকলে দেশটাতো একদিন সিকিম হয়ে যাবে, আপনি কি তাই চান? চেতনক্রান্ত যুবক আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে বলল, দেশটা সিকিম হোক তবু ভাল।
আমার বিদ্যাপিঠ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র ভাই শামছুল আলম। ফেসবুকে খুবই সরব এবং সে ফেসবুকে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ বার চেতনা বটি বিতরন করে। একদিন তার স্টেটাসে দেখলাম পাকিস্থানের রাজাকার হওয়ার চেয়ে ভারতীয় দালাল হওয়া উত্তম। তিনি রাজাকার ঘৃণা করলেও সানন্দে ভারতীয় দালাল হতে রাজী, আর এই হল আমাদের দেশ প্রেম।
এমন অসংখ্য উদাহরন আমার জানা আছে। লেখার কলেবর চিন্তা করে কেবল চারটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করলাম।
যে দেশ সীমান্তে তার নাগরিক পাখির মত হত্যা করলেও প্রতিবাদ করেনা, নিজ দেশের নদী হত্যা করে প্রতিবেশীর সেবা করে, নিজের সীপোর্ট, রিভারপোরট, রাস্তা-ঘাট বিলীন করে প্রতিবেশীর সেবা দেয় বিনা মাশুলে,ন্যায্য প্রাপ্য করিডোর,পানির হিস্যা কিছুই জোড়ালো ভাবে চাইতে পারেনা বা চায়না,নাগরির সমাজ পরাধীনতা রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করে, সেই দেশ দীর্ঘ কাল স্বাধীন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না। বাংলাদেশ যে ভাবে চলছে তার গতিপথ পরিবর্তন না হলে বাংলাদেশ নামক দেশটাও টিকবেনা। আমার কষ্ট কেবল তাদের জন্য,যারা বুকের রক্ত দিয়েছিল,ইজ্জত দিয়েছিল, পঙ্গুত্ব বরণ করেছিল একটি পতাকার জন্য, একটি মানচিত্রের জন্য, তারাতো দিল্লীর দাসত্ব চায়নি। তাদেরকে আমরা কি দিলাম?
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ পিলাচ পিলাচ
মখা কে?
তার বিয়াই কে?
নাসিম কে?
ইমরান কে?
সাহরিয়া কবির কে?
তোমার ঘাড়ে স্বৈরাচার
তোমার কোলে রাজাকার
তুমি স্বাধীনতার দাবীদার
তাই তুমি নব্য রাজাকার
-না তারা তা চাননি।
ভারত কখনও একক রাষ্ট্র ছিল না। তা মহাভারত পরলেই বুঝা যায়। ভারতকে প্রথম একীভূত করেছিল মুসলিম শাসন।
আর এদেশের ভারতীয় রাজাকারদের উদ্দেশ্য চিরস্থায়ী ক্ষমতায় থাকা আর ইসলামকে খেজুরতলায় পাঠানো।
অটঃ ভাই আপনি এত কম লেখেন কেন?
মন্তব্য করতে লগইন করুন