আওয়ামি কূটচালে বিপর্যস্ত সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়

লিখেছেন লিখেছেন হাসনাতের ব্লগ ১৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৩১:৫৪ দুপুর



।।ব্যারিস্টার হাসনাত তালুকদার।।

গত ৫ জানুয়ারীর ভোটার ও প্রার্থীবিহীন তথাকথিত সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার আসন ভাগাভাগির নির্বাচনে, আওয়ামিলীগ ২৩২টি আসন ভাগে পাওয়ার পর পরই নূতন করে সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন শুরু হয়। সংখ্যা লঘুদের বসত বাড়িতে ভাংচুর,অগ্নীসংযোগ,দোকানপাট লুট, মন্দির ভাংচুর, মারধোর, ধর্ষন সবই চলতে থাকে সমান তালে। আর আওয়ামী সামিয়ানায় আশ্রিত মিডিয়া কর্নধারদের কাঁঠাল পাতায় পোষ্য ছাগল মিডিয়া কর্মীরা ম্যা ম্যা করে প্রচার করতে থাকে এগুলো জামাত শিবিরের কাজ। সরকারও পরিকল্পনা মাফিক বলতে থাকে আঠার দলের নেতা কর্মীরাই দেশ অস্থিতিশীল করতে সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের উপর এসব আক্রমন চালাচ্ছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আলোচনা সমালোচনা ভুলে দেশবাসী মূহুর্তেই সংখ্যা লঘু সম্প্রদায় সংক্রান্ত আলোচনায় ব্রতী হয়। সরকার মিডিয়ায় সংখ্যা লঘু সমপ্রদায়ের উপর আক্রমনের বিষয়টিকে এমন ভাবে প্রচার করে যাতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একতরফা নির্বাচন থেকে সাম্প্রদায়িক আক্রমনের দিকে তাদের দৃষ্টি ফেড়ায়।

প্রাথমিক ভাবে সরকার কিছুটা সাফল্য পেলেও কিছু সৎ মিডিয়া কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, সুশীল সমাজ এবং ভূক্তভোগী মানুষের মুখে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ হলে সরকারের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ডঃ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও নির্যাতিত মানুষের সাথে কথা বলে জানান, সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার সাথে জামাত শিবির জড়িত-এটি একটি সরকারী ভাষণ এবং এটি বিশ্বাস করার কোন কারন নেই। বরং এসব ঘটনার সাথে সরকারী দলের প্রভাবশালী লোকজন জড়িত বলে তিনি প্রমান পান। সিরাজগঞ্জের সাঁথিয়ায় সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের উপর পরিচালিত হামলায় শামছুল হক টুকুর লোকজন জড়িত থাকার বিষয়েও তিনি নিশ্চিত হন। মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর রমেশ গুপ্ত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর পরিচালিত অমানবিক নির্যাতনে জামাত শিবিরের তুলনায় অনেক বেশী আওয়ামিলীগের লোকজন জড়িত। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ নেতা সুব্রত চৌধুর বিবিসিকে বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমনে জামাত শিবির জড়িত, এটি একটি শ্লোগান, প্রকৃত পক্ষে অসংখ্য নির্যাতনের সাথে আওয়ামিলীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী জড়িত। একই সংগঠনের নেতা দীনবন্ধু রায় সংখ্যা লঘু নির্যাতন নিয়ে সরকারকে কোন প্রকার রাজনৈতিক খেলা থেকে বিরত থাকার দাবী জানান। প্রশাসনে সরকারের আস্থাভাজন বলে পরিচিত জেলা প্রশাসক কতৃক পরিচালিত অনুসন্ধানেও যশোর, সাতক্ষিরা, দিনাজপুর, বগুড়া, কুষ্টিয়ার সংখ্যা লঘু সম্প্রদায় নির্যাতনে স্থানীয় আওয়ামিলীগ নেতাদেরকেই পরোক্ষ ভাবে দায়ী করা হয়। মানবাধিকার নেত্রী খুশী কবিরের মতে, সংখ্যা লঘু সম্প্রদায় নির্যাতনে আওয়ামিলীগ সুবিধা জনক অবস্থানে থাকে। ফেসবুকের স্ট্যাটাসে একজন লিখেছেন, সংখ্যা লঘুরা দেশে থাকলে আওয়ামিলীগ ভোট পায় আর বিদেশ গেলে জমি পায়।

সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়কে সব সময় বুঝানো হয় বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এলে অবস্থা আরও খারাপ হবে। আর আওয়ামিলীগই একমাত্র দল যারা তাদের সুরক্ষা দিতে পারে। এই তথা কথিত সুরক্ষার আশায়ই স্বাধীনতার পর থেকেই সংখ্য লঘু সম্প্রদায় আওয়ামিলীগের ঘড়ের ঝাড়ু হিসাবে ব্যাবহার হয়ে আসছে। প্রকৃত পক্ষে হিন্দু সম্পত্তি দখল আর লুটপাটে আওয়ামিলীগ নেতা-কর্মীরাই অগ্রগামী। এবার যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তার মূলত কয়েকটি কারন খুজে পাওয়া যায়। এক, কেন তারা দল বেধে একতরফা নির্বাচনে ভোট দিতে গেলনা। দুই, এই নির্যাতনের দায় ভার আঠার দলের উপর চাপানো এবং নিজেদেরকে একচ্ছত্র রক্ষাকর্তা প্রতিষ্ঠা করা। তিন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নির্বাচন কেন্দ্রিক দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুড়িয়ে দেয়া। সরকারের কূটচালের বিরোদ্ধে সরব হয়ে প্রতিটি অনাকাংখিত হামলার বিচার চেয়ে সবাই এগিয়ে আসবে, না যুগের পর যুগ আওয়ামিলীগের খেলার ঘুটি হিসেবে ব্যবহার হতে থাকবে, সে সিদ্ধান্ত ভূক্তভোগী সম্প্রদায়কেই নিতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১৮৬৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

162056
১৩ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৫২
হতভাগা লিখেছেন : এটা হিন্দুরা নিজেরাই করাচ্ছে ।

বৃহত্তর ও দীর্ঘস্থায়ী সুবিধা পাবার জন্য তারা এখনকার ক্ষুদ্র ও স্বল্পমেয়াদি ক্ষতি স্বীকার করে নিচ্ছে ।

তারা নিজের নাক কেটে বাংলাদেশের যাত্রাকে ভঙ্গ করাচ্ছে ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File