ইসলামে নারীর অধিকার ও নারী শিক্ষা নিয়ে একটা তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষন ধর্মী লেখা ৷

লিখেছেন লিখেছেন সাইয়েদ মাহফুজ খন্দকার ০৯ মার্চ, ২০১৪, ০৭:৪৩:০৮ সকাল

নারী পুরুষ দুজনেই মহান আল্লাহর সৃষ্টি, সৃষ্টিগত ভাবে কিছুটা ভিন্যতা থাকলেও আল্লাহর বান্দা/বন্দী হিসেব সম্মান ও অধিকারের ক্ষেত্রে দুজনেই সমান ৷ আল্লাহর মনোনিত ধর্ম ইসলামের মধ্যে নারী এবং পুরুষের সমান সম্মান এবং উত্তম অধিকার রয়েছে ৷ ইসলামে কারো অধিকার বেশি কারো অধিকার কম এমন প্রশ্ন তুলার কোনো অবকাশ নেই ৷ যখন থেকে দুনিয়ার জমিনে ইসলাম এসেছে তখন থেকেই নারী পুরুষের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে ৷

ইসলামে নারীর মতামত (মাসোয়ারা) দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে ১৪০০'শ বছর আগে ৷ বর্তমান দুনিয়ায় যে ভোটের প্রচলন চলছে এটাও এক প্রকার মতামত দেয়ার মত, যেমন ভোটের মাধ্যমে ভোটার মতামত দেয় যে আমি উমক কে আমির (নেতা) হিসেবে দেখতে চাই ৷ এই মতামত দেয়ার অধিকার ইসলাম নারীদেরকে পুরুষের সমান মর্যাদায় দিয়েছে ৷ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মুল মুমিনিনদের সাথে পরামর্শ করতেন, তেনাদের মতামত নিতেন ৷

১৮০০'শ শতাব্দীর আগে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মে কিংবা অন্য কোনো রাষ্ট্রে মহিলাদের মতামত বা ভোট দেয়ার অধিকার ছিলনা ৷

নারীকে শর্তযুক্তভাবে ভোটাধিকার বা মতামত দেয়ার অধিকার দেয়া হয় ১৮৬২ সালে সুইডেনে এবং ১৮৬৯ সালে ব্রিটেনে। নিউজিল্যান্ডই প্রথম ১৮৯৩ সালে ভোটাধিকার দেয়। ১৯০১ সালে অস্ট্রেলিয়া, ১৯০৬ সালে ফিনল্যান্ড, ১৯১৮ সালে জার্মানি, ১৯২০ সালে ফেডারেল আইন পাসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সবগুলো অঙ্গরাজ্য, ১৯২৮ সালে ব্রিটেন, ১৯৪৭ সালে জাপান, ১৯৪৯ সালে চীন, ১৯৫০ সালে ভারত ও কানাডার নারীরা ভোটাধিকার বা মতামত দেয়ার অধিকার পায়। দক্ষিণ আফ্রিকার কালো নারীরা ভোটাধিকার বা মতামত দেয়ার অধিকার পেয়েছে ১৯৯৪ সালে।

আর ইসলাম এই অধিকার দিয়েছে ১৪০০'শ বছর আগে ৷

ইসলামে শুধু নারীদের মতামত দেয়ার অধিকার দিয়েছে তাই নয়, ইসলামে নারীদের শিক্ষার অধিকারও নিশ্চিত করেছে সেই ১৪০০'শ বছর আগে ৷ ইসলামের প্রথম যোগের নারীরা ছিলেন উচ্চ শিক্ষিতা, ইসলামের অন্যতম প্রধান মুহাদ্দিসা হলেন উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়িশা (রাঃ) তিনি ছিলেন একজন নারী ৷

মুসলিম নারীরা কখনই অশিক্ষিত ছিলেননা, মুসলিম নারীরা অবশ্যই কোরয়ান পড়তে জানেন, যে আরবীয় নারীরা কোরয়ান পড়তে জানেন তারা অবশ্যই আরবি শিক্ষায় শিক্ষিতা নারী ৷

আমাদের এই উপমহাদেশে মুগল আমলে অন্যতম প্রধান ভাষা ছিল আরবি, তত্কালীন সময় ৯৯ ভাগ মুসলিম নারী আরবিতে কোরয়ান পড়তে জানতেন, তার মানে ওনারা আরবি শিক্ষায় শিক্ষিতা ছিলেন ৷ এছাড়াও অনেক মুসলিম নারী রাষ্ট্রীয় ভাষা ফার্সি ও উর্দুতেও সমান পারদর্শী ছিলেন ৷ সম্রাট বাবরের মেয়ে হুমায়ুনের বোন গুলবদন বেগম ১৫০০'শ শতাব্দিতে 'হুমায়ুন নামা' নামে সম্রাট হুমায়ুনের জীবনী লিখেছিলেন, যা আজো পঠিত হচ্ছে ৷

এমন আরো হাজার উধাহরন আছে ৷ এক কথায় ইসলাম নারীদের যেমন অধিকার দিয়েছে অন্য কোনো ধর্ম, অন্য কোনো মতবাদ কিংবা অন্য লোক নারীদের এমন উত্তম অধিকার দেয়নি এবং দিতেও পারবেনা ৷ তাই যে সকল লোক নারীর অধিকার আদায়ের পথে ইসলামকে বাধা হিসেবে প্রমান করতে চায় তারা হয়ত মুর্খ ইতিহাস সমন্ধে বেখবর নয়তো জেনে বুজে ইসলামের বিরদ্ধে ষড়যন্ত্রকরি ৷ তাই আসুন আমরা যুক্তি প্রমান সহকারে তাদের প্রতিহত করি ৷ আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন ইনশা আল্লাহ ৷

বিষয়: বিবিধ

১১৪১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

189203
০৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৯:৫৫
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : জাজাকাল্লাহুল খাইরান, অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট, ধন্যবাদ।
189241
০৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:০৭
সজল আহমেদ লিখেছেন : যাযাকাল্লাহু খাইরান।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File