প্রসঙ্গ: সিলেট সদর উপজেলা নির্বাচন ও ইলিয়াস পত্নী
লিখেছেন লিখেছেন জিনান মামনি ২৪ মার্চ, ২০১৪, ০১:৫৩:১১ দুপুর
সিলেটের রাজনীতির পরিচিত মুখ, শহীদ জিয়ার পরীক্ষিত সৈনিক আবুল কাহের শামীমকে যখন সদর উপজেলা থেকে বিএনপি'র প্রার্থী ঘোষণা করা হয় তখন অনেকেই এই সিদ্বান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। বিশেষ করে বিগত ৫ বছরে আশফাক আহমদের অবাধ দুর্ণীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও আওয়ামীলীগ'র দলীয় কোন্দলের কারনে আশফাক ছিলেন দলের ভিতরেই অনেকটা কোনঠাসা।
কিন্তু কোন্দল ও কামড়াকামড়িতে যে বিএনপি সেরা সেটা প্রমাণ করতেই যেনো সিলেট সদরকে বেছে নিয়েছিলেন বিএনপি'রই কতিপয় নেতা। দল নয় তাদের কাছে যে টাকা-টাই মুখ্য তা বুঝাতে শাহ জামাল নুরুল হুদার কাছে পানির দরে বিক্রী হয়েছেন অনেকেই। সিলেট নগরীতে ফ্ল্যাট পাবার লোভ সামলাতে না পারা ঐ নেতারাই বিএনপি নেত্রীকে ভুল বুঝিয়ে আবুল কাহের শামীমের মতো নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করান আর নুরুল হুদাকে বিএনপি'র প্রার্থী ঘোষণা করান। যার সাথে দলের কোন সম্পর্ক নেই, বিএনপি'র তৃণমূল কর্মীরা যাকে চিনেই না, সর্বোপরী সাধারণ ভোটাররা যার নাম এর আগে শুনেইনি তিনিই কি-না বিএনপি'র মতো একটি বিশাল দলের সমর্থন পেয়ে যান টাকার বিনিময়ে! সত্যিই স্যালুকাস!!! রাজনীতিতে আসলেই শেষ কথা বলে কিছু নেই।
সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে তখনই যখন দেখী 'ভারাটিয়া' ঔই নেতার পক্ষ নিয়ে প্রচারণায় নামেন বিএনপি'র গুম হয়ে যাওয়া জনপ্রিয় নেতা এম ইলিয়াস আলীর পত্নী তাহসিনা রুশদি লুনা। আমাদের অন্তত একটি বিষয়ে ধারণা থাকা দরকার এম ইলিয়াস আলী আর লুনা কিন্তু এক নন। ইলীয়াস আলী ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি করে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এ পর্যায়ে আসতে পেরেছিলেন। তার জীবন ছিলো সংগ্রামের। তার অবর্তমানে বিশ্বনাথ-বালাগন্জসহ সিলেটের বিএনপিতে লুনার একটি প্রভাব আছে ঠিকই কিন্তু এ ও সত্য যে, সিলেট আর বিশ্বনাথকে এক পাল্লায় মাপা ঠিক হবেনা। বিশ্বনাথ ইলিয়াস আলীর জন্মস্হান হওয়ায় সেখানকার সাধারণ মানুষ তাদের সন্তানতুল্য ইলিয়াস আলীর জন্য যেকোন কিছু করতেই রাজী। সেখানে আবেগ বেশী কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সিলেটে এসে ঘরের ছেলেকে বাদ দিয়ে বিদেশ থেকে লোক এনে নির্বাচন করবেন আর সেখানে সাধারণ মানুষ ইলিয়াস পত্নীর আবেগ তাড়িত বক্তব্য শুনে ভোটের বন্যা বইয়ে দিবে, তা চিন্তা করাটা একটু আকাশ-কুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। নির্বাচনের আগে নুরুল হুদার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে যে প্রচারণা চালানো হয়েছিলো আজ কোথায় গেলো সেই গণজোয়ার? যে গণজোয়ারের কথা বলে প্রথমে বিএনপি থেকে সসমর্থন দিয়ে পরবর্তীতে আবুল কাহের শামীমকে বহিষ্কার করে শাহ জামাল নূরুল হুদাকে দলীয় সমর্থন দেওয়া হলো সেই হুদা ভোট পেয়েছেন মাত্র ১৮৫৩৯ ভোট। আর বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কাহের শামীম পেয়েছেন ৩০৩৩৯ ভোট। এই বুঝি গণজোয়ারের নতুন সংঙ্গা!
হ্যা তাহসিনা রুশদি লুনা যদি আবুল কাহের শামীমের পক্ষ নিয়ে প্রচারণায় নামতেন তাহলে অবশ্যই অনেক অনেক ভোটের ব্যবধানে তিনি বিজয়ী হতেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। সেক্ষেত্রে সিলেট বিএনপি'তে লুনার প্রভাব বাড়তো বই কমতো না।
কাথায় আছে মানুষ 'ঠেকে শিখে'।
রাজনীতি এমন একটি পিচ্ছিজায়গা যেখানে পা ফেলতে হয় খুবই সাবধানে। এই কন্ঠকাকীর্ণ ও বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হলে ইলিয়াস পত্নী লুনাকে আরো সাবধান হতে হবে। নিজের আশপাশে থাকা দালাদের চিনতে হবে। তা না হলে ইলিয়াস আলীর নাম ভাঙ্গিয়ে বেশী দিন ঠিকা যাবে বলে মনে হয়না।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যে গণজোয়ারের কথা বলে প্রথমে বিএনপি থেকে সসমর্থন দিয়ে পরবর্তীতে আবুল কাহের শামীমকে বহিষ্কার করে শাহ জামাল নূরুল হুদাকে দলীয় সমর্থন দেওয়া হলো সেই হুদা ভোট পেয়েছেন মাত্র ১৮৫৩৯ ভোট। আর বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কাহের শামীম পেয়েছেন ৩০৩৩৯ ভোট। এই বুঝি গণজোয়ারের নতুন সংঙ্গা! \
মন্তব্য করতে লগইন করুন