কতটুকুন পার্থক্য স্ত্রী আর পতিতার মাঝে
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নীল৫৬ ৩১ মে, ২০১৪, ১২:০১:১৩ রাত
স্ত্রী অতি আপনজন আর পতিতা চরম ঘৃণিত । কিন্তু এই সম্পর্ক দুটোকে যদি তুলনা করা যায়, তাহলে কি ঘটে দেখি?
১. আপনি বিয়ের আগে দেন মোহর দেন স্ত্রীকে ভোগ করার পূর্বেই , আর পতিতাকেও পূর্বে স্থিরীকৃত অর্থ দিতে হয়
২. পতিতা আপনার সাথে চুক্তি শেষে অন্য যে কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, স্ত্রীও আপনার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে অন্যের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে
৩. স্ত্রী আপনার সন্তানের জন্ম দিবে ও তাকে লালনপালন করবে, পতিতা জন্ম দিলেও আপনি স্বীকার করবেন না ।
মা হিসেবে সেও সেই সন্তানকে লালন পালন করবে ।
৪. স্ত্রী আপনাকে ভালবাসবে, যদিও সবক্ষেত্রে নাও হতে পারে; পতিতা আপনাকে ভালোবাসবেনা কারণ সে জানে আপনি তাকে শুধু ভোগ করবেন, ভালোবাসবেন না ।
৫.স্ত্রীর সম্পর্কটা দীর্ঘস্থায়ী যদিও ভেঙ্গে যেতে পারে. আর পতিতার সম্পর্ক রাতে শুরু রাতেই শেষ ।
৬. বিয়ে করতে সাক্ষী লাগে, এইখানে লাগে না .
অনেক মিল থাকা সত্তেও কেন এত ঘৃণা? কারণ কেউ অল্প সময়ের জন্য আর কেউ দীর্ঘ সময়ের জন্য ?
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৯ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কারো বা মা।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, অতি উচ্চ নৈতিকতার মানদন্ড স্থাপনকারী ধর্ম হিসেবে ইসলাম-ও কিন্তু এক সময় এক ধরণের পতিতাবৃত্তি (যুদ্ধক্ষেত্রের বন্দিনী নারী ও ক্রীতদাসী) চালু রেখেছিলো । আমরা সুবিধামতো মুত'আ বিয়ের জন্য শিয়াদের দায়ী করি কিন্তু মহানবীর (সাঃ) সময়ে তো সুন্নীরা (বা বলতে পারেন, শিয়া-সুন্নী উভয়ে মিলে) মুত'আ বিয়ে উপভোগ করেছে ! এমনকি খোদ সৌদী আরবে মুত'আ বিয়ের আদলে 'মিসইয়ার' নামক এক যৌন-সম্ভোগ প্রথা (গোপনে নয়) চালু আছে - এর উপর আবার মক্কা, জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মামে আরো কিছু নতুন প্রথা (যেমন, মিছফার, দোখাল) গোপনে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে যা পতিতাবৃত্তির-ই (পারিবারিক দায়-দায়িত্ববিহীন) নামান্তর । এতিম মেয়েদের ব্যাপারে-ও তারা প্রায় ঐ রকম এক ধরণের ব্যবস্থা সরকারীভাব-ই বজায় রেখেছে । অনেক সৌদী পুরুষরা সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে বাহরাইনে যেয়ে ক্ষণিকের মজা লুটে আসছে!
এবার কিছু সংশোধনীঃ
অবস্থা অনুসারে (যেমন, সুতীব্র দাম্পত্য কলহের ক্ষেত্রে) স্ত্রী-ও অতি ঘৃণিত জন বলে পরিগণিত হয়ে যেতে পারে এবং পতিতা সেখানে সাময়িকভাবে দেহ-মনের স্বস্তিপ্রদায়িকা মনে হতে পারে । আবার ভোগ করা হোক বা না-হোক, দুই ক্ষেত্রে-ই কিন্তু মূল্য পরিশোধ করতে হয় !!!
১নং পয়েন্টের ব্যাপারেঃ মোহরানা সব সময়-ই বিয়ের আগে পুরোপুরি আদায় করা হয় না । আবার স্ত্রী চাইলে তা পুরোপুরি বা আংশিক মাফ-ও করে দিতে পারে । পতিতা-কে যেখানে নগদ মূল্যে পরিশোধ করতে হয় মোহরানার ক্ষেত্রে কিন্তু সেটা নানা রকম (নীচের উল্লেখিত হাদীসগুলো দ্রষ্টব্য) ভাবে থাকে ।
ইসলাম অনেক কিছু অত্যন্ত চাঁছা-ছোলা ভাষায় বর্ণনা করেছে যেটা বেশীর ভাগ সময়-ই বেশীর ভাগ ইসলামপ্রিয় ব্যক্তিরা খোলামেলা ভাষায় বর্ণনা করতে সংকোচ বোধ করেন বিশেষ করে ইসলাম পাশ্চাত্যের তুলনায় মুসলিম নারীদের-কে যে কতো অধিকার দিয়েছে তা বর্ণনার করার সময় । শুনতে শ্রুতিকটু লাগবে বলে তারা মোহরানার প্রকৃত উদ্দেশ্য যে যৌন সুখ উপভোগ করার বিনিময়ে সেটা না বলে এটাকে মুসলিম মহিলাদের ভবিষ্যতে দুর্বিপাকের ক্ষেত্রে (অর্থাৎ তালাক) আর্থিক রক্ষাকবচ বলে চালিয়ে দেন যা কুরআন-হাদীসের দলীল দিয়ে প্রমাণিত সত্য কথা নয় ।
আবার কুরআন-হাদীসের কথাগুলো বিভিন্নভাবে অনুবাদ করে-ও অনেক কিছু এড়িয়ে যাওয়া হয়। যেমন,
মোহরানা আসলে এক ধরণের সদকাঃ
وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا [٤:٤]
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। (সুরা নিছাঃ ৪) [মা'রেফুল কোরআন]
এখানে অনুবাদ হওয়া উচিত ছিলো, "তোমাদের স্ত্রীদের মোহরানা তাদের-কে সদকা স্বরূপ দাও ...”
মোহরানার উদ্দেশ্যঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "(বিবাহে) যে শর্ত সর্বপ্রথম পূরণীয় তা হচ্ছে ঐটা যা (অর্থাৎ মোহরানা) দিয়ে গুপ্তাঙ্গ বৈধ করা হয়েছে ।” (বর্ণনায়ঃ ওকবাহ বিন আমের -- বুখারী, মুসলিম)
মোহরানা কোনো সময় হতে পারে অতি নগণ্যঃ
বনু ফাজারা সম্প্রদায়ের কোনো স্ত্রীলোক-কে এক জোড়া জুতার বিনিময়ে বিয়ে দেয়া হয়েছিলো । রসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, "তুমি কি তোমার দেহ এবং সম্পদের পরিবর্তে এক জোড়া জুতা পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছো ? স্ত্রীলোকটি বললো, "হ্যাঁ ।” তারপর তাকে তিনি অনুমতি দিলেন । (বর্ণনায়ঃ আমের বিন রাবিয়া -- তিরমিজী)
মোহরানা কোনো সময় হতে পারে অতি উচ্চমূল্যেরঃ
আবদুল্লাহ বিন জাহশের স্ত্রী ছিলো উম্মে হাবিবাহ । সে (আবদুল্লাহ) হাবসী দেশে মৃত্যুবরণ করে, (তখন) নাজ্জাসী তাকে রাসুলুল্লাহ-(সাঃ)-এর নিকট বিয়ে দিলো । মোহরানা ছিলো ৪,০০০ দিরহাম । তারপর সে তাকে শোহরাবিলের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট প্রেরণ করলো । (বর্ণনায়ঃ উম্মে হাবিবাহ -- আবু দাউদ, নাসায়ী)
মোহরানা কোনো সময় হতে পারে অপার্থিব জিনিষঃ
উম্মে সুলাইম-কে আবু তালহা বিয়ে করেছিলো । তাদের মোহরানা ছিলো ইসলাম । উম্মে সুলাইম আবু তালহার পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করেছিলো । তাকে সে বিয়ে করতে ইচ্ছা প্রকাশ করলে, সে বললোঃ 'আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি, তুমি যদি তা করো, তবে তোমাকে বিয়ে করবো । অতঃপর সে ইসলাম গ্রহণ করলো এবং তাদের মধ্যে এটাই ছিলো মোহরানা । (বর্ণনায়ঃ হযরত আনাস -- নাসায়ী)
দুঃখিত ! মন্তব্য পোষ্টের চেয়ে বড় হয়ে গেলো !
ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন