শিবির সম্পর্কে আমার ধারনার অতিত ও বর্তমান

লিখেছেন লিখেছেন বাংলায় কথা বলি ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:৫৯:৫৮ রাত





তখন আমি পড়া লেখা করতাম হেফজ খানাই। মোটামুটি ভালোই পড়াশুনা চলছে। আমার এক Rolling on the Floorজন শিক্ষক ছিলেন যার কাছে আমি হাফেজি শেষ করলাম। তার নাম বলতে চাচ্ছিনা। কারন এখনো আমি তাকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু মজার Whew!ব্যাপার হল তিনি কখনো জামায়াত বা শিবির কিছুই করেনি। সে অন্য এ ^Happy^কটি দল করত। সব সময় উপদেশ দিতেন কখনো শিবির করবেনা। কোনো ভালো মানুষ কখনো শিবির করেনা। ওরা লেবাস ^Happy^ধারি শয়তান। ওরা মানুষকে ভ্রান্তির পথে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ তা বুঝেনা! তাদের উপরের দিক দেখে মানুষ আকৃষ্ট হয়। ইত্যাদি ইত্যাদি আরো কত কি!!!! তো সেখান থেকেই জানি যে আসলে শিবির খুব খারাপ একটি দল। তাদের দেখলে কথা বলা যাবেনা, তাদের কোনো কথা শুনা যাবেনা। তাদেরকে সব সময় পাশ কেটে চলতে হবে। ইত্যাদি।

দেখতে দেখতে আমার হাফেজি পড়া শেষ। এখন চলে আসব সেখান থেকে! আসার সময় আমার শিক্ষক আমাকে বললেন কখনো শিবির করবিনা। এদের কাছ থেকে দূরে থাকবি। রাজনিতিও করবিনা। যদিও রাজনিতি করছ তবে শিবির ছাড়া অন্য কোনো দল করবি।

সেখান থেকেই শপথ নিলাম আমি কখনো শিবির করবোনা। সব সময় ^Happy^ নামাজ রোজা করব, আল্লাহ কে ডাকব, যিকির করব, আর এভাবেই নিজের জিবনটাকে কাটিয়ে দিব।!

তারপর বাড়িতে আসলাম। এসে ভালোই কাটছিল আমার দিন গুলো। কিন্তু একি বাড়িতে এসে দেখি আমার বড় ভাই শিবির করে, তাকে যখন আমি বললাম ভাইয়া আপনি শিবির কেন করেন? তখন সে আমাকে বলল একজন জান্নাত উপযোগি মানুষ হওয়ার জন্য!!!

আমি তাকে বললাম জান্নাত উপযোগি মানুষ হতে হলে শিবির করতে হবে?

শিবির না করে কি জান্নাতে যাওয়া যাবেনা?

জান্নাতে যেতে হলে কি মানুষ খুন করতে হবে?

রাজনিতি করতে হবে?

সে আমাকে বলল দেখ, শিবির না করলে জান্নাতে যাওয়া যাবেনা আমি এটা বলবনা। তবে আমি যদি শিবিরের চেয়ে ভালো কোনো ইসলামি দল পাই তবে আমি শিবির ছেড়ে দিয়ে সেই দল করব। এবং তাদের সাথে একসাথ হয়ে কাজ করব। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত আমি শিবিরের সাথেই থাকবো। আর শিবির মানুষ খুনের রাজনিতি করেনা। এটা তোর ভুল ধারনা। আর রাজনিতি করা ফরজ! কুরআন হাদিস অর্থ সহ পড় তাহলেই বুঝবি।

তারপর আমি তাকে কিছুই বলিনি।

কিছু দিন পর একটি আলিয়া মাদ্রাসাই ভর্তি হই। এবং ভালো ভাবেই পড়া শুনা শুরু করি। কিন্তু হঠাৎ একদিন আমাদের বাড়িতে একজন শিবিরের দায়িত্বশীল কে দেখতে পাই। সে আমাকে সালাম দিয়ে বলল ভাইয়া আপনি ভালো আছেন? আপনার বড় ভাই কোথায়? আমি বললাম সেতো ঘরেই আছে। আপনি ঘরে যান।

তারপর থেকে উনি আমাকে দেখলে সুন্দর সুন্দর কথা বলত, নামাজ নিয়মিত পড়ার জন্য বলত, ভালো ভাবে পড়া শুনা করার জন্য বলত, ভালো মানুষ হওয়ার জন্য বলত ইত্যাদি অনেক উপদেশ দিত।

আর আমি মনে মনে ভাবতাম আমার হুজুরের কথাতো সঠিক!! তারা উপরে দিয়ে অনেক ভালো! কিন্তু তাদের ভিতর টা অনেক খারাপ!! ইত্যাদি ইত্যাদি।

হঠাৎ একদিন উনি আমাকে একটি ইসলামি বই দেয়, এবং বলে এই ভালো করে পড়বেন। কিন্তু আমি না পড়ে কয়েকদিন পর বলতাম পড়া শেষ।

কিছু দিন পর কিভাবে যেন কর্মি হয়ে গেলাম! অর্থাৎ নিজের অজান্তেই উনার সাথে প্রোগ্রামে গেলাম কুরআন পড়লাম, কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলাম আর কর্মি হয়ে গেলাম।

তখন তারা আমাকে রিপোর্ট বই, ইসলামিক বই, আর একটা তাফসির দিল। আর আমিও তা পড়া শুরু করি।

কিন্তু আমার মাথার ভিতর ছিল তারা খারাপ, রগ কাঁটা, অস্রের প্রশিক্ষন দেয় ইত্যাদি। কিছু দিন পর হঠাৎ দায়িত্বশীল আমাকে বলল আপনার একটা প্রশিক্ষন প্রোগ্রাম আছে আগামি কাল সকাল ৯টায়। আমি সাথে সাথে ভাবলাম প্রশিক্ষন প্রোগ্রাম?? তার মানে আমাকে অস্রের প্রশিক্ষন দিবে?? তবে এবার তাদের মুখোশ খুলে যাবে! আমি যাবো, তবে তাদের সব কিছু ফাঁস করে দিব। দায়িত্বশীল আমাকে বললেন যে খাতা/ডায়েরি ও কলম নিয়ে আসবেন। আমি যথা সময়ে প্রোগ্রামে গেলাম। কিন্তু একি? এটাতো অস্রের প্রশিক্ষন নয়? এরা আমাকে দারসে কুরআন, দারসে হাদিস, বই নোট ইত্যাদি করিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিলো? তখন মনে মনে ধারনা করলাম না আমি যা ভাবলাম তা আসলে ভূল ধারনা। কিন্তু তার পরেও ভূল ধরার জন্য আরো কিছু প্রোগ্রামে গেলাম। কিন্তু না! কোথাও অস্রের প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছেনা!! সেই থেকে আজ প্রায় ৪বছর ইসলামি ছাত্র শিবিরের সাথে কাজ করে যাচ্ছি। কখনো অস্রের প্রশিক্ষন পাইনি! বরং পেয়েছি সবচেয়ে বড় অস্রের প্রশিক্ষন আর তা হল “কুরআন এবং হাদিসের প্রশিক্ষন ^Happy^”

আজ দেশের এই কঠিন মুহূর্তেও ছাত্র শিবির আমাকে অস্রের প্রশিক্ষন না দিয়ে কুরআনের প্রশিক্ষন দিয়ে যাচ্ছে। আর ছাত্র শিবির আমাকে নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে একজন সৎ আল্লাহভিরু ইমানদার মুত্তাকি বানানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। আল্লাহর কাছে সব সময় প্রার্থনা করি হে আল্লাহ!! আপনি আমাকে একজন সৎ, খোদাভিরু, এবং যোগ্য একজন মানুষ হিসেবে তৈরি ^Happy^করে পরকালিন মুক্তি এবং ইহকালিন শান্তির তাওফিক দান করুন। আর যতদিন বেচে থাকি যেন ইসলামের পথে অবিচল থাকতে পারি। আল্লাহ আমা Cheerকে সেই তাওফিক দিন, এবং ইসলামি ছাত্র শিবির ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি যেন দ্বীন প্রতিষ্ঠার চুড়ান্ত লক্ষে পৌঁছতে পারে আল্লাহর কাছে এই দোয়াটুকু করি। (আল্লাহ আমাকে যেন তার দ্বীনের জন্য কবুল করেন। (আমীন)

^Happy^ ^Happy^ ^Happy^ ^Happy^ ^Happy^ ^Happy^^Happy^ ^Happy^ ^Happy^

বিষয়: রাজনীতি

১৭৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File