আপনার সন্তানকে মাস্টার/হুজুরের কাছে পড়াতে দিয়ে ঠিক মতো খেয়াল রাখছেন তো???
লিখেছেন লিখেছেন তাহমিদ ইব্রাহীম ২১ জানুয়ারি, ২০১৪, ০১:২৬:৫২ দুপুর
আস-সালামু আলাইকুম। আমি এখানে তিনটি ঘটনা বলব এবং এই সম্পর্কে সামান্য আলোচনা ও মা-বাবাদের কিছু পরামর্শ দিব। আশা করি এটা মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
ঘটনা-১ ঃ হাফিজি মাদ্রাসায় পড়ার সময় একদিন দেখি, এক কোণে এক ছাত্রের সাথে আকাম করছে এক শিক্ষক! যে আকামটি করার কাররে লুত (আঃ) এর সম্প্রদায়য়ের উপর আল্লাহর গজব নাযিল হয়েছিল। তখন আমি শিক্ষকের এই জঘণ্য কাজটি অন্যদেরকেও দেখালাম। অতঃপর কমিটিকে খবর দিয়ে ঐই শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করালাম।
ঘটনা-২ ঃ এক কুলাঙ্গার হাফিজ উপজেলার সবচেয়ে বড় মসজিদে তারাবীহ সলাত পড়াত। সলাত শেষে লজিং মাষ্টারের মেয়েকে পড়ানোর অযুহাতে প্রতিদিন ধর্ষন করত। এই ছেলেটিই রিক্সায় তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে আকাম-কুকাম করত। বর্তমান অবস্থা জানিনা।
ঘটনা-৩ ঃ একজন মসজিদের ইমাম (হাফিজ) প্রতিদিন বিনা অযুতে ফরজ সলাত পড়াত। যদিও এখন আর সে ইমামতি করে না। চরিত্রটা একদম খ্রিষ্টান পাদ্রী ও হিন্দু ঋষিদের মত।
উপরের তিনটি ঘটনার একটিতেও এক বিন্দু মিথ্যা নেই। নিজের দেখা বাস্তব অভিজ্ঞতা।
আমি হাফিজদের উজ্জল লুন্ঠন করতে এই পোস্ট দেই নি। কারণ আমি নিজেও হিফজ শেষ করেছি। অন্যদের কাছে সত্যকে জানাতে এবং সতর্ক থাকতে এই পোষ্ট দিয়েছি।
অনেক সরলমনা মানুষকে দেখেছি, নিজেদের প্রাপ্তবয়স্কা যুবতী মেয়েকে কুরআন শেখানোর জন্য মক্তবে দেয়। অথবা ঘরে হুজুর এনে পড়ায়। তারা মনে করেন যে, হুজুর মানেই হল আল্লাহর ওলী। তাই তারা তাদের মেয়ে এবং হুজুরের কোন খোজ খবর রাখে না। অথচ পর্দার অন্তরালে কত কিছু হয়...!
অনেকে খতম পড়িয়ে হুজুরদের টাকা দেয়, অথচ অনেক খতমই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যদিও হুজুর দিয়ে প্রচলিত খতমের নিয়মটি ইসলামে নেই। এটি একটি জঘণ্য বিদ’আত।
মনে রাখবেন, ফরিদ উদ্দীন মাসুদও একজন আলেম। কিন্তু কোন শ্রেণীর? সে নাস্তিকের জানাযা পড়িয়েছিল। অথচ যে ব্যক্তি শির্ক বা কুফুরী অবস্থায় মারা যায় তার জানাযা পড়ানো ইসলামে হারাম।
শেষকথা ঃ এমন অনেক শার্ট প্যান্ট পরিহিত যুবক আছে যারা শেষ রাতে নিজের বিছানা থেকে পিঠকে আলাদা করে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ক্বিয়ামরত এবং সিজদারত (অর্থাৎ তাহাজ্জুদ সলাত আদায় করে) থাকে। তারা আল্লাহর বিধানকে মেনে চলে। তারা কুরআন পড়ে, সহীহ+হাসান হাদীসের উপর আমল করে। পর্দা করে, নারী দেখলে চক্ষু নিচে করে। যারা আল্লাহর ভয়ে নিজেকে সকল প্রকার ফিতনা হতে রক্ষা করতে চায়। কিন্তু তারা আলেম নয়।
আবার এমন অনেক পাঞ্জাবী-টুপি পড়া ব্যক্তি/হুজুর/আলেম আছে যারা সপ্তাহে ১/২/৩ দিন সিনামা হলে গিয়ে অশ্লিল ছবি দেখে। অন্য নারীকে দেখলে তাদের শরীর ঠিক থাকে না। তারা চলে যায় নোংরা কাজ করতে। যুবতী মেয়েকে পড়ানোর নামে পটিয়ে থাকে অতঃপর তার সাথে ধর্ষণ কাজে লিপ্ত থাকে। মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে চলে জঘণ্য জেনা। অথচ সহজ সরল মা-বাবারা এই সকল ব্যক্তি/হুজুর/আলেমের হাতে তাদের ছেলে-মেয়েকে পড়ানোর জন্য দিয়ে নিশ্চিন্তে নিজের কাজে চলে যায়।
আমি এখানে পাঞ্জাবী-টুপিকে অপমান করছি না। আমি নিজেও সবসময় পাঞ্জাবী-পায়জামা পড়ে থাকি। আর হুজুরদের অপমান করার জন্যও এটা বলিনি।
আমি বলতে চাচ্ছি যাতে করে মা-বাবারা তাদের সন্তানের দিকে সবসময় খেয়াল রাখে। যাতে সন্তানকে এমন জঘণ্য হুজুরের কাছে ছেড়ে দিয়ে শিয়ালের কাছে মুরগি বাঘা দেওয়ার অবস্থা না হয়। আর একটি কথা, সব হুজুর সমান নয়। আমি যে সকল জঘণ্য হুজুরদের কথা এখানে বলছি তাদের সংখ্যা তেমন বেশি নয়। কিন্তু কোন হুজুর ভাল আর কোন হুজুর খারাপ তা তো ঘটনা না ঘটলে বুঝা যাবে না। তাই যখন আপনার সন্তানকে কোন হুজুর/মাষ্টারের কাছে পড়তে দিবেন তখন তাদের প্রতি নজর রাখবেন।
আর একটি কথা মনে রাখবেন- “তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি) হল অন্তরের ব্যাপার!! কোন বিশেষ পোষাকে কারো তাকওয়া বুঝা যায় না। তাই পোষাক দিয়ে কাউকে বিবেচনা না করে চরিত্র দিয়ে বিবেচনা করুন।”
By: Mustofa Kamal
বিষয়: বিবিধ
২৩৪৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে তিনটি ঘটনাই এক শ্রেণীর। যে শ্রেণীরাও মানুষ, তাদের দ্বারা ভুল হতে পারে। তবে লেখক কেন শুধু এক শ্রেণীর ঘটনা বর্ণনা করেছেন, তা তিনি ভাল জানেন।
তবে এ শ্রেণীর অপকর্ম অন্যদের তুলনায় অনেক কম। তবে তা প্রকাশ পায় বেশী বা প্রচার পায় বেশী বা প্রচার করা হয় বেশী বা ঘৃণা করা হয় বেশী। কেননা চেয়ারম্যানের বাড়ীতে প্রতিদিন মাংস রান্না হয় বিধায় সে বাড়ীর সদস্যদের মাংসের প্রতি এত আগ্রহ থাকে না, যে আগ্রহ না থাকে একজন অভাবীর বাড়ীতে মাংস রান্না হলে। কেননা সে বাড়ীতে মাংস রান্নার ঘটনা বিরল।
তবে গৃহ শিক্ষক দ্বারা যে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে তা গণনা করে শেষ করার মত নয়। তার জন্য দায়ী কি শুধু গৃহ শিক্ষক একাই।
যদি গৃহ শিক্ষককে ২৫% দোষ দেই। তবে ৬০% দিব অভিভাবককে আর ১৫% দিব সেই শিক্ষার্থিকে।
আবার ১০০% দোষ দেব আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রক্ষা করুন। আমীন
আল্লাহ আমাদেরকে এদের সঙ্গী হবার তাওফিক দিন আমিন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন