কষ্ট ও কামনা........(বিয়ে)
লিখেছেন লিখেছেন সালাহ ১২ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৫২:৩০ দুপুর
আপনাদের জমজমাট বিয়ের আসরে , আমার লিখা খানিকে পাঠক কিভাবে গ্রহন করে , জানিনা । তবে এটি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বেদনার কাহিনী । আপনাদের সাথে শেয়ার করে মনটাকে একটু হালকা করার প্রত্যয় নিয়ে লিখতে বসা । প্রতিযোগিতায় জিততে হয়ত পারব না , কিন্তু মনটাকেতো অন্তত হালকা করতে পারব ।
বিয়ের বয়স হয়েছে কিছুদিন আগেই । কিন্তু ,উপযুক্ত পাত্রী না পাওয়াতে সেদিকে তেমন একটা আগ্রহ ছিল না । হঠাৎ , একদিন ফেসবুক খুলে একটা লিখা দেখে স্থির হয়ে গেলাম । প্রথমে পুরো লিখাটা পড়লাম , কিন্তু পুরো বুঝে উঠতে সক্ষম হলাম না । অবশ্য তিন চার বার পড়ার পর বুঝে উঠলাম । আর ভাবলাম যে ফেস বুকে আমার আল্লাহ এবং তাঁর প্রিয় রাসুল সঃ কে গালি দেয়া হয় । সে ফেসবুকে এত ভাল লিখার মত মানুষও আছে । আমি প্রথমে তাকে বন্ধু হবার আমন্ত্রন জানালাম । পরদিন দেখলাম সে আমার আমন্ত্রন গ্রহন করল । পরে , তার আরো কয়েকটা লিখা দেখে আমারও লিখার প্রচন্ড একটা আগ্রহ তৈরি হল । কিন্তু আমি বাংলা লিখতে জানি না । যাহোক , তার সহযোগিতায় অবশেষে লিখতে সক্ষম হলাম ।
একদিন ভাবলাম এই বেচারা এত সুন্দর করে লিখতে জানে ।আমার উপকারও করেছে । তাকে যদি জীবনে সাথী হিসেবে পাই , মনে হয় মন্দ হবে না । যাহোক , একদিন তাকে বন্ধুর নাম করে প্রস্তাব দিয়ে বসলাম ।প্রস্তাব পাওয়ার পর সে সরাসরি না করেনি । সে বলেছে ভেবে দেখবে । সে অবশ্য কিছু মনে করবেন না , বলে বলে আমার ব্যাপারে কিছু তথ্য জেনে নিয়েছিল । আর আমিও যখনি সুযোগ পেতাম , তাকে মনে করানোর চেষ্টা করতাম । আমরা কিন্তু , আপনার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছি ।
আমি অবশ্য ইতিমধ্যে তাকে বিভিন্ন ভাবে রাজি করানোর চেষ্টা করেছি । তার পছন্দ , অপছন্দ ইত্যাদি জানার চেষ্টা করেছি ।আমি অবশ্য চুড়ান্ত নিশ্চিত হওয়া ছাড়াই কল্পনা শুরু করে দিয়েছিলাম । তাকে কিভাবে বরন করা যায় । গোল্ড না ডায়মন্ড , কোন রঙ্গের শাড়ী বেশি মানানসই সে চিন্তাও আমি করতেছিলাম । তাকে যখন দেখতে যাব কি কি প্রশ্ন করব , আমিইবা তার প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিতে পারি সে চিন্তাও করতেছিলাম । কিন্তু জানার প্রয়োজন বোধ করিনি , যদি তাকে আমি না পাই , তাহলে কি হবে ।
হঠাৎ , একটি সকাল আমার সামনে এসে ধরা দিল । এক বন্ধু আমাকে দেশ থেকে ফোন দিয়েছে । আমি সাথে সাথে কেটে কল বেক করি । কিন্তু , তার কথা শুনে আমার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেল , মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ল । চতুর্দিক অন্ধকার দেখতে পেলাম । সাথে সাথে শুয়ে গেলাম । কিন্তু ঘুম আসছিল না । কিছুতেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারছিলাম না । বিদেশ আসার পর এই প্রথম কাঁদলাম । চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি বেরোতে লাগল । খাওয়া দাওয়া কিছুতেই মন বসছিল না । ভেবেছিলাম , দু - তিন দিন গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে ।
কিন্তু তিন চারদিনের মাথায় হঠাৎ , তরকারি রান্না করতে গিয়ে ডান হাত পুড়িয়ে ফেললাম । পরের দিন ,আবার বাম হাত পুড়িয়ে ফেললাম ।এক - দু মাস পর অবশ্য আমার হাত ভাল হয়েছে । কিন্তু মনের মাঝে যে আঘাত পেয়েছিলাম , আজও তা মুছে যায়নি । যখনি পাশে কেউ থাকে না , তখন সেই হারানো বস্তুটি আমায় কষ্ট দেয় । ভীষণ কষ্ট ! যা প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই । প্রিয় কবি নজরুল ইসলাম জীবিত থাকলে হয়ত , দুঃখ ভুলার জন্য একটা কবিতা লিখে আমাকে উপহার দিতেন ।
তবে আমি যতটুকু জানতে পেরেছি , মেয়েটির বিয়ে এক সুপাত্রের সাথে হয়েছে । তার শাশুড়ীও খুব ভাল মানুষ । আমি হারিয়েছি তাতে কি - সেতো ভালো একটা ঘরে যেতে পেরেছে । আল্লাহর কাছে কামনা , আল্লাহ যেন ওর দাম্পত্য জীবনকে সুখে ভরিয়ে রাখেন । যন্ত্রণা যে কত খারাপ ! তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি । আমার সেই স্বপ্নের মানুষটার জীবনে যেন যন্ত্রণা নামক কাল সাপটা না আসে মহান বন্ধু ও স্রষ্টার কাছে সেই কামনাই রইল.........
বিষয়: বিয়ের গল্প
১৪৮৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন