দেখব - কেমনে আমায় তালাক দাও !
লিখেছেন লিখেছেন সালাহ ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০১:২৮:৫২ রাত
এক ধনীর দুলালীকে তার অভিভাবকরা এক প্রকার জোর করে বিয়ে দিল এক সওদাগর পুত্রের কাছে । বিয়ের সময় দুলালী চিন্তিত মনে অভিভাবকদের বলল , যদি আপনাদের জামাই আমাকে তালাক দেয় ! উত্তরে অভিভাবকরা বললেন দেখব - জামাই কেমনে তালাক দেয় । মোটামুটি তার সংসার ভালই কাটছিল । দুই জোড়া ছেলে - মেয়েও হল তাদের । কিন্তু হঠাত সওদাগর পুত্র ছোট বেলার সাথীর প্রেমে পড়ে যায় , আর অমনি নেমে আসে ধনীর দুলালীর কপালে দুর্যোগের ঘনঘটা , এক দিন তরকারীতে লবন কম হয়তো , আর এক দিন তরকারীতে ঝাল বেশি হয় । এক দিন শরীর থেকে গন্ধ আসেতো , আর এক দিন ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে । এক দিন মেকাপ বেশী করেতো , আর এক দিন খানা বেশি খায় । এক দিন জোরে হাটেতো , আর এক দিন আসতে হাঁটে । এক দিন কথা বেশি বলেতো , আর এক দিন কথা কম বলে । এক দিন গোমরাহ মুখোতো , আর এক দিন বেশি হাসে ইত্যকার নানান অভিযোগে ধনী কন্যার কান ঝালাফালা করে ফেলেছে তার প্রানপ্রিয় মান্যবর ।সব যে মিথ্যা তা কিন্তু নয় , তার কিছু বদ স্বভাবও ছিল, জনসমাজে প্রকাশ করতে চাই না ।
এই যখন অবস্থা যুবকটি একদিন চিন্তিত মনে হাঁটতে বেরোলো , আনমনে হাঁটছে আর ভাবছে বউকে কিভাবে তালাক দেয়া যায় । কিন্তু কোন কূলকিনারা খুজে পাচ্ছে না । হঠাৎ তার ছোট বেলার প্রেমিকা এসে হাজির । প্রেমিকাকে দেখে সে বহুত চিন্তায় পড়ে গেল । প্রেমিকা তাকে গলা জড়িয়ে ধরে কত যে গল্প শোনালো তার ইয়ত্তা নেই , ছেলেটাও দারুন উপভোগ করল । অবশেষে মেয়েটা বলল , ডার্লিং তুমি কবে তোমার বউকে তালাক দিবা নয়তো আমি তোমাকে ছেড়ে দেব । ছেলেটি বলল , ময়না পাখি আমাকে আর কয়টা মাস সময় দাও । তোমাকে আমি না ফেলে জানে মরে যাব ! কিন্তু সে ৭ দিনের মধ্যে তালাক দেয়ার আল্টিমেটাম দিল ; অন্যথায় সে তাকে ছেড়ে চলে যাবার কড়া হুমকি দিল । কি আর করা । ছোট বেলার সাথীর আল্টিমেটাম তার উপর অবাধ্য বউয়ের ঝামেলা সব মিলিয়ে যুবকটি ঘরে ফিরে চিন্তিত মনে বসে রইল ।
প্রানপ্রিয় মান্যবরকে চিন্তা যুক্ত দেখে বধু এসে সোহাগ ভরা হাতে শাড়ীর আচল দিয়ে স্বামীর কপালের ঘাম মুছতে যাবে । অমনি স্বামী তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল । অথচ স্ত্রীর হাতে কপালের ঘাম মোছার যে কি অনুভূতি তা বিবাহিত লোক মাত্রই বলতে পারবেন । তবুও যুবকটি অত্যন্ত কর্কশ ভাষায় গালি দিতে দিতে বলল , তোমার বাপ আমাকে কি দিয়েছে ফার্নিচার , ফ্রিজ , সোপা , নাকি লাড্ডু দিয়েছে । তার উপর তোমার মত লজ্জাহীন নারীর সাথে ঘর করে আমার জীবনটা শেষ - বলতে বলতে তার চুল ধরে মারা আরম্ভ করল । এতে বউ কাঁদতে কাঁদতে বলল , আপনি কি আমাকে তালাক দিবেন ? তখন যুবকটি বলল , তুই মাইরের ডঙ্গেও বুঝসনা , আমি যে তোরে তালাক দিমু । আর অমনি তালাক তালাক বলে পাঁচ বছরের সংসারের কবর রচনা করল । ধনী ললনাকে চিরদিনের জন্য স্বামী সংসার থেকে চলে যেতে হল বাপের সংসারে । অভিভাবকদেরও কিছু করার নেই মেয়ের ব্যবহারে তারাও বিরক্ত ।
গ্রামের সেই বধুটীর অবস্থাকে যদি আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী ও গনতন্ত্রের মানসকন্যার সাথে মিলাই । তাহলে আমরা একটা বিষয়ে মিল খুঁজে পাই । ১/১১ এর বড় অভিভাবক ইন্ডিয়া , যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশীয় মীরজাফর মইন ও ফকীর উদ্দিনের মাধ্যমে বাবা- মা হারা ও আমাদের কলিজার টুকরা শেখ হাসিনাকে বঙ্গভবনে তুলে দেন । ভালবাসার ঘরে প্রবেশের পর , একের পর এক বিরক্তিকর কর্মকাণ্ডের ফলে বিরক্ত হয়ে জনগন তাকে তালাক দেয়ার ফুরসত খুঁজতে থাকে অবশ্য ইতিমধ্যে জনগন বেগম জিয়ার প্রেমে পড়ে যায় । আপনাদের অবগতির জন্য পাঁচ বছর ঘর করা বধুর অল্প কিছু কুকর্ম তুলে ধরছি ।
ঠান্ডা মাথায় দেশের গর্ব ও জাতির সূর্য সন্তান সেনা অফিসার গুলোকে অত্যন্ত জঘন্য কায়দায় দুনিয়া থেকে না ফেরার দেশে পাঠানোর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন , শেয়ার বাজারে আমার মত কোটি বিনিয়োগকারীকে কপর্দকশূন্য করন , পদ্মা সেতুর নকশা প্রনয়নের আগে দশ শতাংশ ঘুষ গ্রহন ,চেতনাখোরের সত্তর লাখ টাকা নিয়ে হাতেনাতে ধরা খাওয়া , বিশ্বজিতকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা , রানা প্লাজাতে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় গরিব মা - বোনদের আগুনে ঝলসে দেয়া , শহীদ মিনার ভাঙ্গতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খাওয়া , পেট্রোল বোমা বানাতে গিয়ে যুবলীগ নেতার শরীর ঝলসে যাওয়া , আপন বোনের উপর হামলা চালাতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতার লিঙ্গ বিচ্ছেদ , আওয়ামী লীগ এম পি প্রার্থীর বিরুদ্ধে আপন মেয়ের শ্লীলতাহানীর অভিযোগ ,দেহ ব্যবসায় নিয়ে ইডেনে ছাত্রলীগের মারামারি , স্কাইপে কেলেঙ্কারীর মাধ্যমে জুডিশিয়াল কিলিং , তার উপর বেগম জিয়ার প্রেম সব মিলিয়ে জনগন প্রানপ্রিয় হাসিনাকে তালাকের চিন্তায় অটল ।
তার উপর শেখ হাসিনার মা দুর্গা তত্ত্বে বিশ্বাস , আরবী মেয়েরা বালি ঝড় থেকে রক্ষা পেতে হিজাব পরিধান , সাজেদা বেগমের ইসলামের শেষ চিহ্ন মুছে ফেলা , ব্রাম্মন স্ত্রীর স্বামী আশরাফ সাহেবের তথাকথিত আল্লাহর আইন দিয়ে কোন উন্নতি না হওয়ার উষ্মা দেখানো , মইনুদ্দিন খান বাদলের রাসূলকে সঃ ধর্ম নিরপেক্ষতার অপবাদ , দিপু মনির সমকামিতা , শাহজাহান খানের নবীর সঃ বিরুদ্ধে কুৎসার জবাবে জুতা বৃষ্টি উপভোগ , জয়ের দশ বছরের মধ্যে হিন্দু প্রধানমন্ত্রী কামনা ,বোরখা বিক্রি বন্ধকরন , ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর রাসূলের সঃ মূর্তি পূজার জন্য মসজিদের অর্ধেক জায়গা ছেড়ে দেয়া সহ আওয়ামী নেতাদের চরম ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব ও হিফাজত - জামায়াতের উপর গনহত্যার কারনে জনগন যখন প্রেয়সী হাসিনাকে সেই স্বেচ্ছাচারী বধূর মত প্রতিরোধ শুরু করেছেন তখন হাসিনা সেই বধূর মত আমাকে কি আপনারা তালাক দেবেন এর বদলে হুঙ্কার দিচ্ছেন শালার জনগন দেখব - কেমনে আমায় তালাক দাও ! এই এক জায়গায়ই তফাত কারন তার শক্তিশালী অভিভাবক ইন্ডিয়া - তবে অতিষ্ট জনগনের তালাক দানের প্রক্রিয়াটুকু দেখার জন্য চিন্তিত মনে সুদূর ডুবাইতে ............।।
বিষয়: রাজনীতি
১৩৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন