অপাংক্তেয় আমলনামা - মলিন সোনামুখ
লিখেছেন লিখেছেন সালাহ ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:৪১:৫৬ সকাল
আপনি যদি কাউকে প্রশ্ন করেন , দেশের সবচেয়ে গৌরবের অধিকারী কোণ রাজনৈতিক দল । উত্তর আসবে আওয়ামিলীগ । স্বাধীনতায় কোণ দলের অংশগ্রহন বেশি , উত্তর হবে আওয়ামিলীগ ; নেতৃত্বদানকারী দল , আওয়াজ উঠবে আওয়ামিলীগ । সেই দলের নেত্রী হিসেবে এক সম্মানের আসনে আরোহন করেছিলেন গনতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা । তাছাড়া গত পাঁচ বছরে তিনি যে কাজ করেছিলেন , তাও কিন্তু গত সরকারের তুলনায় কোণ অংশেই কম নয় ; বরং প্রশংসার দাবি করতেই পারে । কিন্তু দলের মন্ত্রী - এম পি , ছাত্রলীগ ও চামচাদের কিছু অপকর্মের কারনে আমার প্রধানমন্ত্রীর সেই সোনামুখখানি একটু অমলিন হবার পথে ।
আমি সেই অপকর্মের কিছু ঘটনাপ্রবাহ উল্লেখ করার চেষ্টা করব । গত কয়েকদিন আগে ফেসবুকে মানবতার মহান শিক্ষক ও সরবশ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ হজরত মোহাম্মদ সঃ কে কটূক্তির প্রতিবাদে জনসাধারন পাবনাতে যে ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছিল । যদিও কোণ violence কে আমি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করিনা । সেই ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী ব্যক্তিটি হলেন আমাদের কালো মানিক শামসুল হক টুকু সাহেব । উনি ঘটনার মাত্র দশ মাইলের মধ্যে থাকলেও হিন্দু জনসাধারনকে রক্ষা করার জন্য বিন্দুমাত্র চিন্তাও করেননি । বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের কর্ণধার অধ্যাপক আবু সাইদ সাহেব ওনাকে ডাকার পরও উনি একটু response করেননি । আসলে উনি হয়ত এটাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জামাতিদের উপর এর দোষ চাপাতে চেয়েছেন , কিন্তু আধুনিক যুগে এসব সম্ভব নয় উনি এটা বুঝতেই চাননি । এর মাধ্যমে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ইমেজকে খাট করা হয়েছে কিনা সে বিচারের ভার আপনাদের উপর ।
মন্ত্রীরা সারা বছর উল্টাপাল্টা কিছু বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ধার্মিক ইমেজকে অনেকটা কলুষিত করেছে ।এক মন্ত্রী বলেন , নবী সঃ ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ , কেউ বলেন , নবী সঃ মূর্তিপূজার জন্য কাবা শরীফের অর্ধেক জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন , কেউ আবার বলেন , আরব মেয়েরা বালি ঝড় থেকে রক্ষা পেতে হিজাব ব্যবহার করেন , কেউ আবার মাদ্রাসা ছাত্র কমানোর তদবির করেন , কেউ আবার আওয়াজ দেন মেয়েরা কুৎসিত চেহারা ঢাকার জন্য হিজাব করেন , কেউ আবার ধর্মের শেষ চেহারা মুছে ফেলার উষ্মা দেখান , কেউ আবার বলেন আল্লাহর আইন দিয়ে কোণ উন্নতি হবে না সহ ইসলাম বিদ্বেষী থাবা বাবাকে শহীদ উপাধি দান ও শাহবাগের অবাঞ্ছিত কর্মকাণ্ড ,মা - বাবা , ভাই হারা মেয়ে শেখ হাসিনার সোনা মুখকে কতটূকু অমলিন করেছে ভেবে দেখবেন ।
বিশ্বজিতকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করল ছাত্রলীগের কিছু বখে যাওয়া তরুন । অথচ প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রনালয় থেকে জানানো হল এটা ছাত্রলীগের নয় শিবিরের কাজ । এর মাধ্যমে যে কতটা খাট করা হয়েছে গনতন্ত্রের মানসকন্যাকে তা বোঝানোর ভাষা আমার জানা নেই । দেশবাসী এখন ভাবতেই পারেন , আসলে সব অপকর্ম মনে হয় ছাত্রলীগ করে শিবিরের পোলাদের উপর দোষ চাপায় । মিডিয়ার যুগে এসব সম্ভব নয় । এসব জানার পরও এই বিবৃতি দানের কারন হল , প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হলেন , নুহুল আলম লেনিন । উনি সম্পূর্ণ বাম ধারার একজন ভদ্র লোক । ওনার উদ্দেশ্য হল এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে গনবিচ্ছিন্ন করার খায়েশ পূর্ণ করা ।
ওনারা জানেন আগে যেভাবে আমরা ছাত্রলীগের রগ কাটাকে শিবিরের উপর চাপিয়ে দিতে পারতাম এখন উদার মিডিয়ার যুগে এটা করা অসম্ভব , কারন এখন মিডিয়াতে জামাত - শিবিরের একটা সরব উপস্থিতি রয়েছে । মন্দিরের পুরোহিতের পায়ের রগ কাটার দোষ চাপানো হয়েছিলো শিবিরের উপর কিন্তু পুরোহিত নিজে- স্থানীয় আওয়ামিলীগ , তার পায়ের রগ কেটেছে বলে জবানবন্দিতে সাফ জানিয়ে দেন । বগুড়াতে শহীদ মিনার ভাঙ্গতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ল যুবলীগ নেতা , বিভিন্ন মন্দিরের জায়গা যবর দখল , হিন্দুদের ঘর বাড়িতে হামলার সাথে কারা জড়িত সবই মিডিয়ার মাধ্যমে বেরিয়ে আসছে । এর পরও কেন ওরা শিবিরের পোলাদের উপর দোষ চাপায় - কারন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী বাংলার প্রধানমন্ত্রীর সোনা মুখখানিকে মলিন করে দেয়া ।
চলার পথে যদি কাপড়ে কাঁটা বিদে বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে সে কাঁটা উপড়ে এগিয়ে যাওয়া , যদি তা না পারা যায় তাহলে কাপড়ের সে অংশটিকে ছিঁড়ে এগিয়ে যাওয়াই হবে আকলবানের কাজ । তাই আবার যখন প্রধানমন্ত্রী সরকার গঠন করবেন এই কাঁটাগুলো উপড়ে ফেলে চলার পথকে মসৃণ করবেন এই শুভ কামনায় .................................
বিষয়: রাজনীতি
৯৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন