৫ জানুয়ারী পরবর্তী বাংলাদেশ ।
লিখেছেন লিখেছেন বিডি বিবেক ০৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:২০:০২ রাত
১৪৬ টি আসনে সরাসরি ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। সত্যিকার অর্থে এতে জনগনের কোনো ভোটের দরকার হবে না। প্রতিকেন্দ্রে ১০০/২০০ জন নির্বাচিত ভোটা, আর্মি- RAB - BGB - পুলিশ প্রহরায় নির্ভয়ে ভোট দেবেন। প্রত্যেকের দায়িত্ব হবে ভোট দিয়ে এসে আবার লাইন এ দাড়ানো, যাতে লাইন সবসময় বড় দেখায়। যদিও নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক থাকছে না, তাতে কি? আমাদের BTV , ৭১ TV সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়া ১৬ কোটি জনগনকে দেখাবে - নির্বাচন কত সুন্দর, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে। দেশের ৫২/৫৪ শতাংশ ভোটার ভোট দেবে না এই নির্বাচনে। ৪৬/৪৮ শতাংশ ভোটারের নির্বাচনী এলাকাতে ভোট হবে। শুধুমাত্র অন্ধ আওয়ামিলিগার এবং টাকাতে কিনা কিছু মাস্তান ছাড়া কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবার কথা নয়।
সে যাই হোক, আমার এই লিখাটি আসলে ভয় থেকে। দেশের জন্যে ভয়, দেশের মানুষের জন্যে ভয় সর্বোপরি দেশের অপরিনামদর্শী রাজনীতি আর অর্থনীতির জন্যে ভয়।
শেখ হাসিনা নির্বাচন করবেনই। নির্বাচনে কে জিতবেন - সেটি শিশুতোষ প্রশ্ন। শেখ হাসিনার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন, নির্বাচন পরবর্তিতে যতদিন সম্ভব ক্ষমতা ধরে রাখতে। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্যে তিনি যা যা কুটকৌশল আছে সবই প্রয়োগ করবেন। শেখ হাসিনার প্রয়োগ করা কুটকৌশলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কৌশলগুলো ইন্ডিয়ান র' এর দেয়া। স্বাভাবিকভাবে, র' এর দেয়া কৌশলগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং রাজনীতি ধংসের কৌশল।
আসাদুজ্জামান নুর সহ আরো অনেক আওয়ামিলিগ নেতার মাধ্যমে আওয়ামিলিগ ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে যে, ৫ তারিখের পরে জামাত শিবির নিধন হবে। শিক্ষিত লোকের মুখে মুর্খের শব্দ উচ্চারণ - নিধন। একটি সভ্য সমাজে তার নেতাদের মুখে নাগরিকদের নিধনের পরিকল্পনা!
মত প্রকাশের অধিকার না থাকলে তাকে স্বাধীন দেশ বলা যায় না। গণতন্ত্রে যে কেউ যে কোনো মতের হতে পারে। গণতান্ত্রিকভাবে মত প্রকাশের অধিকার সকলের আছে। গণতান্ত্রিক দেশের মানুষ যে কেউ যে কোনো দল বা মতে বিশ্বাসী হতে পারে। আমি আওয়ামিলিগ, বি এন পি, জাতীয় পার্টি, জামাত, কমিউনিস্ট পার্টি যে কোনো মতের হতে পারি। সভ্য মানুষ কখনো অন্যের মত প্রকাশের অধিকার হরণ করতে পারেনা।
যা বলছিলাম - আমি বাস্তব কারণে বিশ্বাস করি, বর্তমানে BNP একটি অকার্যকর দল। খালেদা জিয়া 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি'র ডাকে আসলে কতজন সমর্থক যান বাজি রেখে পল্টনে গিয়েছেন? আমি জানি আওয়ামিলিগ সকল রাষ্ট্রীয় বিহিনীসহ ভাড়া করা বাহিনী দিয়ে কঠিন বাধা দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট, প্রেস ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্লজ্জ হামলা তার প্রমান। কিন্তু দেশ রক্ষা যেখানে উদ্দেশ্য সেখানে শক্ত সাড়া আসবে, সেটিই কাম্য। তা কি হয়েছিলো?
৫/৬ জানুয়ারী থেকে আওয়ামিলিগ নামবে ক্ষমতা দখলে রাখার যুদ্ধে আর বি এন পি, জামাত-শিবির, হেফাজত নামবে অস্তিত্ব রাখার লড়াইয়ে। বিরুধী দলের ভাংচুর, জালাও পোড়াও আর সরকারী দলের জেল, হত্যা, গুম অনেক গুন বেড়ে যাবে।শেখ হাসিনা জামাত নেতাদের ফাসি কার্যকর এবং জামাত-শিবির নিষিদ্ধ করার চেষ্টা চালাবে। মানুষ অতিষ্ট হয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনবে, কখন স্বৈরাচারের পতন ঘটে। ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি এটা এরশাদের মত স্বৈরাচার নয়। এক নুর হোসেনের মৃত্যু, এরশাদের পতনের কারণ হয়েছিল। কিন্তু হাজার লোক ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছে কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার এখনো ক্ষমতা হারায়নি। আমার ভয় হচ্ছে দেশে সত্যিকার অর্থে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে।
পোশাক শিল্প ৪০ শতাংশ (প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার) রপ্তানি ইতিমধ্যে হারিয়েছে, যা বেড়ে ৬০ শতাংশে দাড়াবে কয়েক মাসের মধ্যে। অনন্য শিল্পেও হাহাকার। কৃষক একদিকে নামমাত্র মূল্যে কৃষিদ্রব্য বিক্রি করছে, অনেকে তাও পারছে না। অন্যদিকে আগুন দামেও নগরের মানুষ খাদ্যদ্রব্য পাচ্ছে না। পোলট্রি এবং ডেইরি শিল্পের মালিকদের অবস্থা আমরা দেখেছি। তাছাড়া আমাদের শ্রমিক আজ কাজ পাচ্ছে না। কাজে নিয়জিত শ্রমিক ঠিকমত মুজুরী পাচ্ছে না। এতে চুরি-ডাকাতি, ব্যাঙ্কলুট বেড়ে যাবে। আমাদের প্রবাসীদের টাকা হয়ত দুর্ভিক্ষ রোধ করবে, কিন্তু প্রচ্ছন্ন দুর্ভিক্ষ আমাদের পেয়ে বসবে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন