জেগে উঠো!
লিখেছেন লিখেছেন ইসতিয়াক ২৩ মে, ২০১৪, ১২:০৬:১৫ রাত
আজকে ইসলাম নিয়ে মুসলিমরা যে ধরনের অন্যায়,অত্যাচার অপবাদ সহ্য করে মূলত এটা কোন নতুন কিছু নয়। পূর্ববতী রাসূল,রাসূল (সঃ) তাঁর সাহাবী এবং অন্যান্য একনিষ্ঠ মুসলমানরা যে বাস্তবতা সহ্য করেছিল এটা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। নবুওয়াতের পর ইসলামের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়ার জন্য জরুরী বৈঠকে বসে কাফির চিন্তাবিদরা। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত, এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ওলীদ বিন মুগীরার আমন্ত্রনে। খাওয়াদাওয়ার পর তারা পরস্পর বলবলি করতে লাগল এই মোহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে তোমাদের ধারন কি?
তখন কেউ বললো,জাদুকর।
কেউ বললো,না তিনি জাদুকর নয়।
আবার কেউ বললো,জ্যোতিষী।
কেউ বললো,না,জ্যোতিষী ন
কেউ বললো,কবি।
আবার কেউ বললো,না কবি নয়।
কেউ বললো,বরঞ্চ প্রাচীনকাল থেকে বংশানুক্রমে চলে আসা এটা একটা জাদুমন্ত্র।
অতপর সবাই একমত হলো যে,মোহাম্মদ (সঃ) কর্তৃক প্রচারিত বাণী বংশানুক্রমে প্রাপ্ত একটা জাদুমন্ত্র।
কাফেরদের এই সমাবেশ ও তাদের অভিব্যক্তি এই মতামতের কথা জানতে পেরে রসুল (সঃ) ভীষণ মর্মাহত হলেন এবং বিমর্ষ অবস্থায় কম্বল মুড়ি দিয়ে শুইয়ে রইলেন এমতাবস্থায় নাযিল হয় সূরা মুদ্দাসিরের প্রাথমিক কয়েকটি আয়াত।
হে কম্বলাচ্ছাদিত!
ওঠো!সতর্ক করো।
তোমার প্রভূর শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষনা করো।
অত্যন্ত শক্তিশালী ভাষায় আল্লাহর এ আহবান রাসূল (সঃ) এর হৃদয় জগতে এক অন্যরকম শিহরন তৈরি করে। স্বভাবতই যে একটা কঠিন এবং বিপ্লবী মিশন নিয়ে রাসূল (সঃ) কে পাঠানো হয়েছে তার জন্য প্রয়োজন মানসিক প্রস্তুতি। আসমান ও জমীনের স্রষ্টার পক্ষ হতে এরকম আহবানের চেয়ে আর কিইবা মানসিক দৃঢ়তার জন্য অধিক কার্যকর হতে পারে!? মূলত এই আহবানে আল্লাহ সুবাহানাহুওয়াতাআলা দাওয়াত ও তাবলীগের অতীব গুরুত্বপূর্ন কাজ তাঁর দায়িত্বে ন্যস্ত করেছেন এবং তাঁর ঘুম,ভীরুতা ও জড়তা কাটিয়ে উঠে জেহাদ,সংগ্রাম ও কঠোর সাধনায় আত্মনিয়োগে উদ্বুগ্ধ করেছেন।
আজকে শয়তান কুফফারদের এবং তাদের অপতৎপরতাকে আমাদের চোখে শক্তিশালী হিসেবে দেখাচ্ছে। ফলে আমাদের মধ্যেও কাজ করছে একধরনের ভীরুতা ও জড়তা। মুসলমানরা দিন দিন হয়ে উঠছে তন্দ্রা অনেক ক্ষেত্রেই নিদ্রায় আচ্ছন্ন। কিন্তু আজ কি এ ভীরুতা ও নিদ্রার সময় আছে? আল্লাহ যেমন সাড়ে চৌদ্দশ বছর আগে মহানবী (সঃ) কে ডেকে এই নিদ্রা ভাঙতে বলেছেন আজও তেমনি সেই জীবন্ত আহবান জীবন্ত কোরআনে সংরক্ষিত আছে। কোরাআনে আছে ঈসা (আঃ) এর একটা মোজেজা ছিল তিনি বলতেন ‘কুম বিইজনিল্লাহ’ অমনিই মৃত মানুষ জীবিত হয়ে উঠত। আজ মুসলমানরা আধ্যাত্মিকভাবে মৃতপ্রায়। নবী রাসূল দের ডিপার্টমেন্ট রাসূল (সঃ) আসার সাথে সাথেই বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু কোরআন তো এখনো সংরক্ষিত আছে ।এই জীবন্ত কোরআনের সংস্পর্শে আবার জেগে উঠুক প্রতিটি মুসলিমের মৃতপ্রায় আত্মা। আল্লামা ইকবাল এই আহবান জানিয়েই ‘যরবে কালীম’ এ লিখেছেন-
বদলে গেছে যদিও জাহান অনেকখানি
তবু জেগে উঠ আল্লাহর হুকুমে।
রয়েছে জমিন,আগের আকাশ,
জেগে উঠ আল্লাহর হুকুমে।
কাজী নজরুল তাঁর ‘সত্যবাণী’ প্রবন্ধ শুরু করছেন ‘ ইসলাম জাগো! মুসলিম জাগো! এক আল্লাহ তোমার উপাস্য’ এই শ্লোগান জানিয়ে তিনি আরো লিখেছেন-
‘ইসলাম ঘুমাইবার ধর্ম নয়।মুসলিম শির নত করিবার জাতি নয়’
তারপরো কি মুসলিমরা ঘুমাবে? আজ হাই তোলারও সময় নেই। চোখ কচলানোর সময় নেই। মুসলমানদের একান্ত প্রয়োজন প্রকৃত জাগরন। ময়দান আজ অপেক্ষায় মুসলমানদের। হাত ছাড়া হয়ে যাওয়া এই ময়দানকে পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রস্তুতির সময় তো এখনই। আল্লাহ সদা প্রস্তুত তার রহমত এবং গায়েবী সাহায্য করার জন্য। আল্লাহর ফেরেশতারা প্রস্তুত আমাদের সহায়তার জন্য। দোয়া করা শুরু করে দিয়েছে প্রতিটি পশুপাখি, জীবজন্তু। আর জমীন প্রস্তুত আমাদের বিজয়ের মাল্য পরিয়ে আল্লাহর প্রশংসাগীত গাওয়ার জন্য।
জেগে উঠো! মুসলিম!
জেগে উঠো।
লেখক: মুজাহিদ রাসেল
http://idrf-bd.com
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৪০৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জেগে উঠো।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে কবুল করেন। আমীন ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন