...একজন বিদেশির "ত" কে "ট" তে রুপান্তর করার জন্য চেষ্টা আর আমরা বাংলা ভাষাকে হিংলিশ বানানোর চেষ্টা....
লিখেছেন লিখেছেন আকাশদেখি ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৯:১৮:২১ রাত
সেদিন টাউন হল মোড়ের (ময়মনসিংহ) ডাচ বাংলা এটিএম বুথ এর কাছে দাঁড়িয়ে এক বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলাম... হঠাৎ একটা কথা কানে আসলো, আমি টাউন হল মোড়ে। কথাটা শুনে আমি লোকটার দিকে তাকালাম, লোকটা একজন বিদেশি এবং মোবাইল ফোনে কথা বলছে। এত সুন্দর তার বাংলা উচ্চারণ... আমি তো পুরা অবাক হয়ে গেছি।
তার বাংলা উচ্চারণ-ই আমাকে তার কাছে টেনে নিয়ে যায়। এবং বলি আপনার সাথে আমি একটু কথা বলতে পারি?
বিদেশি বলল অবশ্যই
আমি বললাম আসলে আপনার বাংলা উচ্চারণ শুনেই কিন্তু আপনার সাথে কথা বলতে এসেছি..
-তাই.. এই তো চেষ্তা করছি
আমি বললাম চেষ্তা না চেষ্টা হি হি
- yes চেষ্তা করছি বলেই ও আবার হাসা শুরু করল
-আপনি কত দিন যাবৎ বাংলাদেশে আছেন?
-দিন মানে কি কত বছর?
-হুম হুম বছর
-এইতো ৪ বছর হবে।
-আপনার দেশ
-ইতালি, আপনি কি ময়মনসিংহে থাকেন?
-হ্যা ময়মনসিংহে থাকি। এখানে কোথায় থাকেন আপনি
-সার্কেট হাউস এর পাশেই থাকি আর প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করি।
-ভালো... আসলে আপনার বাংলা উচ্চারণের জন্য আমি কথা বলতে চাইছিলাম. এত সুন্দর উচ্চারণ আমি শুনিনি বিদেশিদের কাছ থেকে
আবার সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বলল চেষ্তা করছি.. ও ছরি চেষ্তা (এবার ট এর কাছাকছি তার উচ্চারণ হল) আবার জোরে হাসল. পরে বলল আমার হাতে সময় নেই এক জায়গায় যেতে হবে...o k .. পরে আর একদিন দেখা হবে।
পরে ও হ্যান্ডসেক করে চলে গেল...
আমি তার চলে যাওয়া দেখতে থাকলাম আর ভাবতে থাকলাম একজন বিদেশি তার "ত" টাকে "ট" তে রুপান্তর করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে আর আমরা বাংলা ভাষাকে হিংলিশ (হিন্দি আর ইংলিশ) বানানোর চেষ্টা করছি...
বিষয়: বিবিধ
১২৭৯ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত হল, ইন্ডিভিজ্যুয়াল বাংগালী স্বজ্ঞানে, স্বতঃস্ফুর্তভাবে কিংবা বাংলাকে হেয় করতে - হিংলিশকে আলিংগন করছেন না।
বরং আমাদের পুরো সমাজ ব্যবস্থা, পারস্পরিক যোগাযোগের স্ট্যান্ডার্ড (মাত্রা) ও সে সাথে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্র - ইন্ডিভিজ্যুয়াল বাংগালীকে বাধ্য করছে অবচেতন মনে হিংলিশকে আয়ত্ব করতে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ভাষা চর্চা যত না ব্যক্তিগত সচেতনতার বিষয় - তার চেয়ে বেশী প্রয়োজনীয়তার বিষয়, খাপ খাওয়ানোর বিষয়। যার জন্য আমরা দেখি - গ্রাম থেকে শহরে আসা ছেলেমেয়েরা অতি অল্পসময়ে তাদের স্থানীয় উচ্চারন ছেড়ে শহুরে উচ্চারন অনুসরন করতে। আর চাকরি বাকরি হতে শুরু করে প্রভাব প্রতিপত্তির মাপকাঠি হিসাবে যখন ইংরেজী কিংবা হিন্দীর প্রয়োজন হয় - তখন সেটাও আমরা বাধ্য হয়ে আত্বস্থ করি। যার জন্য আমরা দেখি মাত্রা ছাড়া লোকেরা মন্ত্রী হলে বাংলিশ বলতে বাধ্য হয়, আর আজকের বাংলাদেশে হিংলিশ হতে বাধ্য হচ্ছে।
সুতরাং রাষ্ট্র ও সমাজকে ঠিক করতে হবে তারা এ ব্যাপারে কোন কাজ করবে কি করবে না, রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ করবে কি করবেনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন