যদি মন কাঁদে, তুমি চলে এসো !!
লিখেছেন লিখেছেন ইমরোজ ১৭ নভেম্বর, ২০১৪, ০৮:১৬:০৪ রাত
তুমি এ প্রজন্মের টগবগে তরুন/ তরুণী আর সে পোড় খাওয়া জীবনের সায়ানহে পৌঁছা এক প্রৌঢ় ব্যক্তি ।
তোমাকে দেখে সে খুব আগ্রহ ভরা কণ্ঠে বললঃ তুমি কি জান, আজ আমাদের সবার রাজনৈতিক গুরু মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী? ১৮৮০ সালে ১২ ফেব্র“য়ারি সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে এক অতি সাধারন পরিবারে তার জন্ম ।
তুমি বললেঃ রিয়েলি ?? ইস দেট লুঙ্গিওালা ওল্ড ম্যান আমাদের রাজনৈতিক গুরু । হাউ ডিসগাস্টিং !! হি ইস নট সেক্সী আই মিন ক্যারিশমাটিক লাইক বঙ্গবন্ধু কিংবা জিয়া ।
সে বললঃ কি জানি !! কিন্তু ইনি সেই ব্যক্তি সাম্যবাদের আদর্শকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করে নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন ।
ইনি সেই ব্যক্তি যার সংসদ বা পার্লামেন্ট হচ্ছে ধানক্ষেত আর কল কারখানা। এই সংসদের সদস্যরা হচ্ছেন কৃষক শ্রমিক মেহনতি জনতা। বুর্জোয়া ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নেতা হওয়ার স্বপ্ন তার কখনই ছিল না ।
ইনি সেই ব্যক্তি যার ভাষণে লক্ষ লক্ষ খেঁটে খাওয়া সাধারন মানুষ সণ্মোহিত হতেন ।
ইনি সেই ব্যক্তি ১৯৪৯ সালে সোহরাওয়ার্দী ঢাকায় ফিরে এলে মুসলিম লীগের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে আওয়ামী লীগ নামের আজকের এই রাজনৈতিক বটবৃক্ষের চারাটি বপন করেন ।
ইনি সেই ব্যক্তি ১৯৫৭ সালে কাগমারি সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকদের 'ওয়ালাকুমুসসালাম' বলে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার বীজটি বপন করেছিলেন ।
ইনি সেই ব্যক্তি যার হাতে শেখ মুজিবর রহমান সহ অসংখ্য বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তির হাতেখড়ি ।
ইনি সেই ব্যক্তি যিনি ১৯৭০ সালে ৭ ডিসেম্বর বজ্র কন্ঠে বললেন ‘প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া, বলি অনেক হইয়াছে কিন্তু আর নয়’।
ইনি সেই ব্যক্তি যিনি ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সর্বদলীয় উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন।
ইনি সেই ব্যক্তি যিনি ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল কে শুকিয়ে ফেলার জন্য দায়ী ফারাক্কা বাঁধ তৈরির প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লং মার্চ করেছিলেন ।
তুমি বললেঃ হাউ ফানি !!! মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আর চেতনার আদর্শ লিপি পড়ার সময় দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানি স্যাররা তো তার কথা একবার ও বলেন নি । পাঠ্য পুস্তকেও তো উনার কথা পাওয়া যায়না ??
সে বিষণ্ণ কণ্ঠে বললঃ
এই আপোষহীন নেতার কথা বলে ধান্ধাবাজদের কি লাভ ???
উনার রাজনৈতিক আদর্শে অনুসারী হলে কি আলাউদ্দিনের চেরাগের মত ৫ বছরেই বিত্ত বৈভব শত গুন বেড়ে যাবে ?
উনার রাজনৈতিক আদর্শে অনুসারী হলে কি বিভক্তিমুলক একপেশে সাম্প্রদায়িক চেতনার ধান্ধা করা যাবে ?
উনার রাজনৈতিক আদর্শে অনুসারী হলে কি চ্যানেল আইয়ের হৃদয়ের চামড়া দেখানো বায়বীয় লাক্স স্বাধীনতা পাওয়া যাবে?
উনার রাজনৈতিক আদর্শে অনুসারী হলে কি "কেউ মারেনি ফেলানিদের" দালালী করা যাবে ??
উনার রাজনৈতিক আদর্শে অনুসারী হলে কি নিজে না বদলে অন্যকে শুধু ফাউ বদলানোর কথা বলা যাবে ??
আপসোস !! দেশের ইসলামপন্থীরা তাঁকে কমিউনিস্ট মনে করে সাচ্চা মুসলিম মনে করতেন না। আর পশ্চিমা রা বলতেন,‘প্রফেট অব ভায়োলেন্স’ বা ‘মাও অব ইস্ট ইনডিজগাইজ অব এ প্রিস্ট’।
তাইতো আমাদের দেশের নিরপেক্ষ নামধারী দলকানা বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, গবেষক অত্যন্ত সযত্নে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে উপরে তুলতে গিয়ে তার অবমুল্যায়ন করেছেন ।
তুমি আত্মসমর্পণের সুরে বললেঃ আমি উনার কথা জানতে চাই ।
সে স্মিত হেসে বললঃ তাই হোক !
ইন্টারনেট গুগল ঘেঁটে , আজ থেকেই না হয় শুরু হোক তোমার এই সত্যান্বেষণ । ফিকে হওয়া এই মজলুম লাল মৌলানা ফিরে আসুক তোমাদের মাঝে আরও উজ্জ্বল হয়ে । স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেই না হয় তার মত আরেকজন নিরসাত্থ জাতীয় কর্ণধারকে পাওয়ার বীজ টি বপন করি ।
বিষয়: রাজনীতি
১১১৭ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একটা হকি স্টেডিয়ামও ছিল গুলিস্তানে , জানি না সেটার নাম কি এখনও ভাসানীর নামে আছে কি না ।
আমরা তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত অত্যাচারিদের মনে রাখতেই বেশি উৎসাহি। মাটি ও মানুষের নিকট জনের কথা ভুলাই আমাদের কাছে আধুনিকতা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন