বাংলাদেশ পন্থি
লিখেছেন লিখেছেন ইমরোজ ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৬:৫৪:৩৮ সন্ধ্যা
আমাদের দেশে লেখালেখির একটা নতুন স্টাইল শুরু হয়েছে, সবাই কে এখন লেখার সাথে এক ছটাক জাগরন লবন আর দুই চিমটে স্বাধীনতা চেতনার গুঁড় মিশাইতে হয় । নইলে আপনি নাকি ত্যানা প্যাঁচানো ব্যাকডেটেড দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজাকার !!! মাথায় টুপি আর মুখে দাঁড়ি থাকলে তো দুই দুইয়ে চার । আমরা এখন হলুদ মিডিয়ার স্বাধীনতায় হলুদান্নিত এক একটা হিমু ।
একটি টকশোর কথোপকথন এর একটা অংশ পড়া যাক ঃ
"নুরুল কবীরঃ- আওয়ামী লীগ কিসের চেতনার কথা বলে ?
হাসিনা তো সাবেক শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান রাজাকার নুরুকে এবারো নমিনেশন দিয়েছে . . .
আরাফাতঃ- আমার মনে হয় এখানে একটু ডাবল চেক করা দরকার। এই নুরু সেই রাজাকার নুরু না . ও-ই রাজাকার ৫ বছর আগেই মারা গেছে শুনলাম
রুবাইয়াত ফেরদোসঃ- না না, এই রাজাকার ই সেই রাজাকার। উনি আমার এলাকার লোক। গত আওয়ামী সরকারের আমলে তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি রাজাকার . তাকেই এবার আবার মনোনয়ন দিছে আওয়ামী লীগ। এখনো মরে নাই সে।
আরাফাতঃ- ও আচ্ছা, ঠিক আছে ! যাই হোক, যে চেতনার কথা আমরা বলছিলাম . . . . . .সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আওয়ামী লীগের ই . . . . ."
হুম্মম্মম্মম্মম কি বুঝলেন...... ঘুরায় ফিরায় সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং আও আমি লিগ
চেতনার ফেরিওয়ালা আর বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরা ৪২ বছর ধরে রাজাকার নামক বোগাস বু র জুজু দেখাচ্ছেন , নিজেদের সেকুলার আর পাকি বিরোধী বানিয়ে দেশপ্রেমিক তকমা লাগাচ্ছেন । উনাদের এই জুজু শুধু পাকি গোয়ালের বাসিন্দাদের জন্য! এমনটা যদি ভারত অথবা পশ্চিমা গোয়ালের সাথে হয় তবে তারা এসব নিয়ে মনে মনে মন কলা খান।
দেশকে বিভক্তির আগুনে ঠেলে দিয়ে তারা উত্তাপ নিচ্ছেন শীত নিবারণের। চেতনার নামে প্রতিপক্ষ নির্মূল করার এক মহান ব্রতে তারা ব্রতি । তারা এখন বিজয়পর্বে মাঠ গরম করে থাকেন, অথচ ৭১ এর ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন আত্মগোপনেরত। তাদেরকে দেখা গেছে কোলকাতার অভিজাত এলাকার হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে জমজমাট আড্ডায় ব্যস্ত। গরম কফির কাপে চুমুক দেয়ার সময় মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শিবিরগুলোতে অবস্থানরত হাজার হাজার তরুণের বেদনাহত চেহারাগুলো তারা একবারও দেখেছে কিনা তা আজও প্রশ্নই রয়ে গেছে। এইসব অপকর্ম ফাঁস করে দেয়ার হুমকিতেই কি নিহত হলেন কাজী জহির রায়হান ও স্টুয়ার্ড মুজিব ? তা আজও জানা হলনা ।
আবেগ, বাস্তবতা ও বিবেকের সুসামঞ্জস্যবিহীন যে কোনো জাগরন নাটকই পরবর্তিতে অনেক অপ্রিয় ঘটনা ঘটার অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। যেমন এখন করছে । যুক্তি বাস্তবতা সত্য ঘটনা এবং প্রেক্ষাপট না বুঝে নিজ নিজ পক্ষে ম্যাৎকার করিলেই দেশ প্রেমিক হওয়া যায় না । যারা নিজেরা চিন্তার গোঁড়ামিতে ভোগে, যারা গোল বলতে বুজেন ১৮০ ডিগ্রি ; তারা যে জাগরণ সামনে নিয়ে আসেন, তাকে বলা হয় ঘৃণাবাদ / আতংকবাদ। তা দিয়ে নবনিতা/ মুন্নি সাহা দের জয় করা যায় কিন্তু ৭১ এর ভাগ্য বঞ্ছিত শফর আলিদের কাছে পৌঁছা যায় না ।
আর একটা কথা, সবাইকে পাকপন্থি আর ভারত পন্থি বানিয়ে দিলে, একসময় বাংলাদেশ পন্থি খুজতে শাহাবাগের যাদুঘরে যেতে হবে ।
বিষয়: রাজনীতি
১২৩২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
উপরের এই সুত্র হইলো নিরপক্ষের সুত্র।
কিন্তু কথা হলো বিরোধী দল কি অপরাধ করেছে তার কোনো প্রমান দেওয়া না গেল ওরা অপবাদ দেয় কারণ চেতনা !
মন্তব্য করতে লগইন করুন