জিন্স প্যান্ট আর পরা হলনা....

লিখেছেন লিখেছেন জোস্নালোকিত জ্যাস ২৪ অক্টোবর, ২০১৪, ০১:২৬:২৭ রাত

ফুল প্যান্ট পরা শিখচি বোধোদয় হওয়ার পর থেকে। তারও আগে পায়জামা পরতাম। পানজাবি পায়জামাই ছিল আমার পিচ্চিকালের পোষাক...

ছেলে বেলায় জিন্স প্যান্ট দেখে আমার হৃদয় কাদিত। বাপুরে কত্ত করে কইতাম একটা জিন্স প্যান্ট কিইনা দিতে! বাপু থান পিচ কেটে প্যান্ট বানায়া আনতো। তাই দেইখ্যা আমার কান্না আসিত। কত অভিমান যে করেছি তার ইয়ত্তা নাই। কতদিন যে জিন্স প্যান্টের জন্য না খেয়ে ঘুমাইতাম তার হিসাব নাই । বাপু মাঝেমধ্যে পাঞ্জাবির সাথে মেচিং মেচিং পায়জামা বানায়া আনতো! সেই দেখেতো আরও আগুন..

আমাকে টেইলার্সের কাছে নিয়ে যেত মাপ দিতে কিন্তু কাপড় নেওয়ার সময় সাথে নিত না। কারন আমার ধারনা ছিল যদি টেইলার্সের কাছে নেয় তাহলে জিন্স নয় এমনি প্যান্ট আসবে। এবং সেটাই হত, কিছুদিন পর সেই একই প্যান্ট, পাজামা...

ছোট বেলায় বন্ধুদের জিন্স প্যান্টে হাত ঢুকায়া দেখতাম কেমন লাগে। অনেক সময় অন্যের পকেটে হাত দিয়া ভাব লইতাম। বাড়ি এসেই যখন সেই অভিজ্ঞতা বাপুর গলা ঝুলায়া বলতলাম তখত শুধুই দুই লাইন বেরুত তাহার মুখ দিয়ে।আর তা হল___

"নামাজ হয়না, কবিরা গুনাহ হয়। "

তখন কিই বা বয়স ছিল আমার। তাই হয়তো অত কিছু বুঝবোনা, মাথায় ধরবেনা বলেই অল্প কথায় জওয়াব দিত। এমন নয় যে আমার বাপুর সেই সামর্থ্য ছিল না।

যাইহোক আজ অব্দি আমি জিন্স পরিতে পারিনি আর সেই ইচ্ছেও নাই। আজ বড় হয়েছি, নিজেই বুঝি ঠিক কি কারনে বাপু আমাকে জিন্স না পরার এত্ত কঠোর নসিহত দিত...

আজ পর্যন্ত এমন কোন জিন্স পরিহিত ব্যক্তি চোখে পরেনি যার গোড়ালির নিচে পর্যন্ত যায়নি। খালি ইলেক্ট্রিক্যাল মিস্ত্রী বাদে। তাছাড়া এত্ত চিপা কাপড়ে নামাজ হয়না। আজ মর্মে মর্মে বাপুর লাইন দুটির মানে উপলদ্ধি করি...

একেতো আমলের ক্ষতি তার উপর কবিরা গুনাহের উপাদান নিয়ে কেন যে জানাশোনা মানুষ গুলো টানা হেচড়া করে ! বিশেষ করে যারা ইসলামী আন্দোলন করে তাদের পান থেকে চুল খসলেই নানা কথাবার্তা চলে । এ বিষয়টি জেনেও কেন যে বিতর্কিত ' জিন্স' পরে এ যুগের ভাইব্রাদারেরা তা আমার মাথায় আসেনা....

___________________________

নিজের চরিত্র, জীবনাচরণই হচ্ছে উত্তম দাওয়াত। তাই আমাদের নিজের আত্বশুদ্ধির চেষ্টা আগে করে তারপর না হয় সমাজ বদলানোর কথা বলি।আল্লাহ আমাদের যাবতীয় ভুলভ্রান্তি থেকে হেফাজত করুক.....

বিষয়: বিবিধ

১৪৬৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

277713
২৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৪:২০
এলিট লিখেছেন : আসলে শিশুকাল থেকেই প্রশিক্ষন না দিলে কোন কিছুই ভালোভাবে শেখানো যায় না। ইসলামিক জীবনযাত্রায় আপনাকে অভ্যাস্ত করতে আপনার বাবার কঠোর অবস্থানের জন্য তাকে শ্রদ্ধা জানাই। সেই সাথে শখ-আহলাদ জলাঞ্জলী দিয়ে ইসলামের সাথে লেগে থাকার জন্য আপনাকেও জানাই অভিনন্দন।
তবে সামান্য জিন্সের প্যান্টের জন্য এতোটা কঠোরতার তেমন কোন দরকার ছিল না। জিন্স কাপড়ের সাথে ইসলামের কোন বিরোধীতা নেই। ইসলামের বিরোধীতা হল ওই প্যান্ট এর ডিজাইনের সাথে। সেক্ষেত্রে ঢিলা ঢালা জিন্সের প্যান্ট পাওয়া যায়। প্যান্টের নীচের দিকে কেটে ফেলে দিয়ে সেটাকে গোড়ালীর উপরে রাখা যায়। এতেও পছন্দ না হলে, ৩০-৪০ বছর আগে থেকেই বাজারে জিন্স এর কাপড় কিনতে পাওয়া যায় । সেই কাপড় কিনে নিজের পছন্দমতন ইসলামিক ডিজাইনের প্যান্ট বানানো যায়। সামান্য একটা জিন্স এর প্যান্টের শখ পুরন করার জন্য বিকল্প (ইসলামিক) ব্যাবস্থা ছিল।
277998
২৫ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:৩৩
বিন হারুন লিখেছেন : Rose Rose Rose Rose Rose
278001
২৫ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:৪২
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : ভালো লাগলো । আল্লাহ আমাদের যাবতীয় ভুলভ্রান্তি থেকে হেফাজত করুক.....

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File