সাবধান!!! ‘কারবালার’ সত্যিকারের ইতিহাস শেখানোর নামে যারা আপনাকে রাজতন্ত্রের গোলাম বানাতে চাইছে-
লিখেছেন লিখেছেন সময়ের কন্ঠ ২১ অক্টোবর, ২০১৫, ০৫:৪৫:৫৯ বিকাল
মহররম মাস এবং আশুরার অনেকগুলো ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও ফজিলত আছে, এটা সত্য কথা। কিন্তু আশুরার দিন সবচাইতে মর্মান্তিক ও পৈচাশিক ঘটনাটা ঘটেছিল কারবালায়। ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থার বিপরীতে গিয়ে সাহাবী মুয়াবিয়া রাজতন্ত্র কায়েম করায় নবী দৌহিত্র হুসাইন তা সহ্য করেননি। তিনি বেরিয়ে পড়েন। মুনাফিক কুফাবাসীরাই তাকে প্রথম দাওয়াত করেছিল। কথা দিয়েছিল তারা সাথে থাকবে। কুফাবাসীর মুনাফেকীর কথা অনেক সম্মানীত সাহাবীরা আঁচ করতে পেরে হুসাইনকে কুফা যেতে নিষেধ করেছিলেন। তবে ঐসব সাহাবীরাও রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছিলেন। আর তা তো থাকতেই হবে। রাজতন্ত্র বা পরিবারতন্ত্র কোন ইসলামী ব্যবস্থা নয়। একদিকে কুফাবাসীর মুনাফেকী, অন্যদিকে ওবায়দুল্লাহ বিন-যিয়াদের নেতৃত্বে ইয়াজিদ বাহিনীর চরমতম নৃশংশতায় হুসাইন সপরিবারে শহীদ হলেন। এটা এতোই নৃশংস ছিল যে, হাজার বছর পরেও মুসলমানের চোখে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরে। অনেক নবী রসুল এবং সাহাবীরা হত্যার শিকার হয়েছেন। কিন্তু হুসাইনের প্রতি যে নৃশংসতা তা সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে। সাময়িকভাবে ইসলামী শক্তি পরাজিত হলেও, হুসাইনের রক্ত যুগে যুগে মজলুম মানুষকে মুক্তির পথ দেখাচ্ছে এবং রাজতান্ত্রিক পন্থার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে তুলছে। আর স্বভাবতই রাজতান্ত্রিক সরকার তাদের পক্ষে নানা দরবারী লোক যোগাড় করে তাদের প্রচারণা সে সময় থেকে আজ অবধি এক মুহুর্তের জন্যেও থামিয়ে রাখেনি। সেকালে মসজিদের খুতবায় হুসাইন এবং আলীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হতো। মানুষের সচেতনার কারনে সেটা এখন আর নেই। তবে দরবারী আলেমরা ঠিকই কৌশলে তাদের প্রচার অব্যাহত রেখেছে। আমাদের এই বাংলাদেশেও তাদের এজেন্টদের প্রচার থেমে নেই। দরবারী আলেমরা তাদের আলোচনার শুরুতে এমন একটা ভাব দেখান, যাতে মনে হয়, তারা হুসাইনের পক্ষের লোক, তাদের অন্তরে হুসাইনের জন্যে মায়া রয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা তাদের খোলস থেকে বেরুতে থাকে।
আজ এখানে কয়েকজন বাংলাদেশী দরবারী আলেম নিয়ে সামান্য ঈঙ্গিত পেশ করবো।
আবু আহমাদ সাইফুদ্দীন বেলাল
তিনি শিয়াদের কিছু শিরক বিদআতকে পুঁজি করে শিয়াদের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে কারবালার ইতিহাসকে খাটো করে ‘আশুরা ও কারবালা’ বইটি লিখেছেন। মুসলিম নামধারী এই কুলাঙ্গার তার উক্ত বইয়ের ৪০ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন, হিজরত ও জিহাদ ও বিপদে ধৈর্য্য ধারন তাদের (হাসান ও হুসাইন) ভাগ্যে জোটেনি, যা আহলে বাইতের অন্যান্যের নসীব হয়েছিল। (নাউজুবিল্লাহ) সে কারনেই নাকি শাহাদাতের মাধ্যমে তাদের ইজ্জত বাড়ানো হয়েছে। অথচ হিজরত এবং জিহাদ করেই তো হুসাইন জীবন দিলেন। এই কুলাঙ্গার তার উক্ত বইতে ইয়াজিদকে (রহঃ) বলে সম্বোধন করেছে।
ডাঃ জাকির নায়েক:
ইসলামের খেদমতে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি একজন ভালো বক্তা এবং একটি টিভি চ্যানেলের মালিকও বটে। সৌদির রাজশক্তি তাকে প্রায়ই রাজ মেহমান করেন। আর্থিক সমর্তন তিনি পেয়ে আসছেন। সম্প্রতি এই দাঈ তার এক বক্তৃতায় ইয়াজিদের নাম উচ্চারনের সময় তাকে ‘রাহমাতুল্লাহি’ বলে সম্বোধন করায় বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠে। ধীরে ধীরে মুসলমানদের কাছে তার বক্তব্যের গ্রহনযোগ্যতা কমে আসে। আকাশ থেকে মাটিতে নেমে আসার মত অবস্থা হয় তার।
আবদুল্লাহ বিন বাজ (সৌদি আরব)
Click this link
বিষয়: বিবিধ
২১৬৯ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গরম ভাতে বিড়াল বেজার।
বেজার মানে মনখারাপ। আমার জ্ঞান নেই আর আপনি জ্ঞানের ওয়াশরুম। ব্লকমারেন আমাকে।
আর রাফেজীয়াত কি ব্যাখ্যা করে জানালে ভাল হয়। আমার কোন আইডিয়া নেই।
রাফেজি বলতে আইম্মায়ে উলামা ঐ সকল আল্লাহর দুশমনদের বুঝিয়েছেন যারা সাহাবায়ে কিরামগণের ঈমানের উপর সন্দেহ পোষণ করে, উম্মাহাতুল মু'মিনীনগণের (রাযি.) চরিত্রের উপর কলঙ্ক আরোপ করে, খুলাফায়ে রাশেদার প্রথম তিন খলিফার খিলাফত অবৈধ মনে করে, ইমাময়্যিাতে (রাসূলের [সাঃ] পর ৫/৭/১২জন ইমাম দ্বীনের ব্যাপারে দায়িত্বশীল হওয়া, নিশ্বাস হওয়া, সাহিবে গঈব ও কাশফ হওয়া ইত্যাদি আরো আজাইরা ধারণা) বিশ্বাস করে, সাহাবী আমির মুআবিয়া (রাযি.)কে গালমন্দ করে, নিজেদের পরিচয় লুকাতে তাক্বিয়্যা (ইচ্ছাকৃত মিথ্যাচার) করে, আশুরায় মাতম করে, সারা বছরে পশ্চিম দিকে ফিরেও তাকায় না অথচ মুহাররাম মাস আসলেই "হায় হোসেন হায় হোসেন" করতে করতে নাভিশ্বাস তোলে, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।
শিআ বা রাফেজিদের পরিচয় ও আক্বিদা নিয়ে আমার একটি লেখা আছে, সেটা পড়লে বিস্তারিত ও দলীল ভিত্তিক ভাবে বুঝতে পারবেন।
আর আপনার আক্বিদা বা বিশ্বাস কি, তা দিয়ে কিছু আসে যায় না, উলামায়ে হক্ব নিরপেক্ষ ইতিহাসের নিরীক্ষে যা বলেন সেটাই গ্রহণযোগ্য। আর উলামায়ে কিরামগণের মতে, নিঃসন্দেহে ইমাম হুসাইন রাযি. সত্যের পথে অকুতভয় সিপাহসালার, জান্নাতের যুবকদের সর্দার, দ্বীনের পথে শহীদ। এতে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু কুফার উদ্দেশ্যে গমন যে তার ইজতেহাদি ভূল ছিলো এটাও স্পষ্ট। আর ইজতেহাদী ভুল মানে এই না যে ঈমান-আমল সব বিগড়ে গেলো, বরং এটা তাঁর মহত্বে কোন দাগ ফেলেনি।
অপর দিকে ইয়াজিদকে ইমাম হুসাইন হত্যার জন্য দায়ী করা যাবে না, কারণ ইয়াজিদের হুকুম ছিলো বাধা দেয়া, যুদ্ধ করা বা হত্যা করা নয়। এর প্রমাণ? এর প্রমাণ স্বয়ং ইমাম হুসাইনের কথাতেই আছে। তিনি তাঁর পূর্বের তথাকথিত সমর্থন (কুফার লোকজন) ও তার বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে দন্ডায়মান সেনাবাহীনির বিরুদ্ধে যে বদদু’আও করেন, তাতে বলেন: “হে আল্লাহ! আপনি যদি তাদের হায়াত দীর্ঘ করেন, তাহলে তাদের দলের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করে দিন। তাদেরকে দলে দলে বিচ্ছিন্ন করে দিন। তাদের শাসকদেরকে তাদের উপর কখনই সন্তুষ্ট করবেন না। তারা আমাদেরকে সাহায্য করবে বলে ডেকে এনেছে। অতঃপর আমাদেরকে হত্যা করার জন্য উদ্যত হয়েছে।”
কে এই শাসক? নিশ্চয়ই ইয়াজিদ বিনা অন্য কেউ নয়। যদি ইয়াজিদ ইমামের হন্তারক হতেন, কেন ইমাম তার বিরুদ্ধে একটি শব্দও বললেন না, উপরন্তু নিজের কাতেল ও ঠকবাজদের উপর ইয়াজিদের অসন্তুষ্টির দুআ করলেন? যদি সত্যি ইয়াজিদ ইমামকে হত্যা করতে চাইতো তাহলে তো এই কাজ যারা করেছে এবং যারা সাহায্য করেছে তাদের সে দু'হাত ভরে উপহারাদি দিতো। কেন তাদের উপর অসন্তুষ্ট হতে যাবে? একথা ছাটি পেটা মাথা মোটা রাফেজিরা না বুঝলেও সত্য সন্ধানিদের মাথায় ঢুকবে। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইম্যিয়া (র বলেন: সকল মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিকের ঐকমতে ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়া হুসাইনকে (রা হত্যার আদেশ দেয়নি। বরং উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদকে ইরাকে হুসাইনকে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে বাঁধা দিতে বলেছিল। এতটুকুই ছিল তার ভূমিকা। বিশুদ্ধ মতে তার কাছে যখন হুসাইন (রা নিহত হওয়ার খবর পৌঁছলে সে আফসোস করেছিল। সে হুসাইন (রা পরিবারের কোন মহিলাকে বন্দী বা দাসীতে পরিণত করেনি; বরং পরিবারের জীবিত সকল সদস্যকে সসম্মানে মদিনায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল।
এসব কিছুর আলোকে জমহুর উলামায়ে কিরামের অধিকাংশের বক্তব্য, "ইয়াজিদকে যেমন দ্বীনের পক্ষে বলা যাবে না, তেমনি দ্বীনের বিপক্ষেও বলা যাবে না। এটা ঠিক সে হুসাইনকে কতল করেনি কিন্তু আহলে বাইতের কষ্টের কারণ হয়েছে।...... তাই তার নামের সাথে রহমাতুল্লাহি আলাইহি বা লানাতুল্লাহ কোনটাই ব্যবহার করা যাবে না" (মিনহাজুল কারামা ফি মারিফাতিল ইমামা, সিয়ার আলামুল নুবালা, তাফসিরে কুরতুবি, সুন্নাহ লিল খিলাল, হাদিয়াতুশ শিআ ইত্যাদি)
আর এই মুনাফেক্ব কুফাবাসী কারা? এরাই বর্তমানে নিজেরে শিআনে আহলে বাইত নাম ফুটিয়ে চলা, আলী ও হুসাইনের শোকে বুক চাপড়ে লোক দেখানো শোক করা রাফেদির দল। (তাদেরই কিতাব নাহজুল বালিগাহ দ্রষ্টব্য)
এগুলোও নাকি আলেম!!! আর এদের কথাও মানুষ আমল করে! সেলুকাস!
কোরআনের কোথায় আছে সেটা কিন্তু বলে নাই। এসব কুলাঙ্গারের কারনেই সৌদিকে নাস্তিকের সংখ্যা বাড়ছে।
আবেগে না ভেসে বাস্তববাদী হন, অন্যের ছিদ্র খোঁজার আগে নিজের ছিদ্র খুজে বন্ধ করুন, সেটায় বেশি লাভ হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন