♥ পবিত্র আশুরার দিনে শোক পালন না করার ভয়াবহ পরিনতি♥
লিখেছেন লিখেছেন জিয়া্ মির্জা ০৪ নভেম্বর, ২০১৪, ০১:২৬:৩১ দুপুর
আজ ১০ই মহররম (আশুরা)। কারবালার প্রান্তরে দুশ্চরিত্র জালিম শাসক ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়ার সেনাবাহিনীর হাতে ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর ৭২ জন সাথীর শাহাদাত দিবস। কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনা সবারই কমবেশি জানা আছে, এবং এ বিষয়ে ইন্টারনেটে প্রচুর লেখা রয়েছে, যা সার্চ করলেই পাওয়া যাবে। তাই সেই ঘটনার উপর আলোকপাত করছি না। কিন্তু ইয়াজিদপন্থীদের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে যারা জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে কারবালার মহিমাকে খাটো করার জন্য নানারূপ কথা বলছেন, বিশেষত এই দিনে শোক পালনের বিরোধিতা করছেন, ইন্টারনেটে তাদের নানামুখী অপপ্রচার ও হৃদয়হীন বাক্যের সয়লাব দেখে কিছু কথা লেখা নিতান্তই প্রয়োজন হয়ে পড়লো।
সহজ দৃষ্টিকোণ : কারবালার ঘটনা স্মরণ করে এইদিনে একদল মানুষ শোক প্রকাশ করছে। আরেকদল শোক প্রকাশকারীদের শোক পালনের বিরোধিতা করছে এবং এইদিনে ইসলামের ইতিহাসে আরো কী কী গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দের ঘটনা ঘটেছিলো, তা প্রচার করছে।
একটু ভিন্ন কথা থেকে আসি। নাস্তিকদের দৃষ্টিতে মুসলমানদের অনেক কর্মকাণ্ডই অর্থহীন ও অযৌক্তিক বলে মনে হয়। যেমন : "কবে কোথায় ১৪০০ বছর আগে মুহাম্মদ নামে এক ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটেছিলো, আর এখন তার জন্যে মুসলমানরা নিজের জান দিয়ে দিচ্ছে, দুনিয়ার আনন্দ ত্যাগ করে শুধু শুধু কষ্ট করছে।" কিংবা "কোনোদিন চোখে দেখে নাই, কিন্তু লোকের মুখে শুনে শুনে 'আল্লাহর' আদেশ মানতে গিয়ে জীবনের কত স্বাদ-আহ্লাদ থেকে শুধু শুধু নিজেকে বঞ্চিত করছে। এমনকি 'জিহাদ' করতে গিয়ে জান পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছে !"
সত্যিই, একজন নাস্তিক, যে কিনা আল্লাহকে চেনে না, যে কিনা নবীজি মুহাম্মদ (সা.)কে ভালোবাসে না, সে কী করে বুঝবে একজন মুসলিমের হৃদয়ে কতখানি ব্যথা জাগে, যখন মুহাম্মদের (সা.) নামে কেউ কটুক্তি করে ! যে আল্লাহকে চেনে না, সে কী করে অনুভব করবে খোদার আদেশে জীবন বিলিয়ে দেবার ব্যাকুলতা !
এবার ইয়াকুব (আ.) এর কথা বলি। তাঁর পুত্র ইউসুফ (আ.)কে সৎভাইয়েরা কুপের মধ্যে ফেলে দিয়ে এসে পিতাকে বললো যে ইউসুফকে বন্য জন্তু খেয়ে ফেলেছে। সেদিন থেকে ইয়াকুব (আ.) প্রতিদিন তাঁর পুত্রের জন্য কান্না করতে করতে, দুঃখে ও শোকে অন্ধপ্রায় হয়ে যান। সৎভাইদের কাছে নিশ্চয়ই সেটা খুব অযৌক্তিক ছিলো : এভাবে করে হারানো সন্তানের জন্য শোক করতে করতে অন্ধ হয়ে যাওয়া। কারণ ইউসুফ (আ.)কে তাঁর পিতা নবী ইয়াকুব (আ.) যেভাবে ভালোবাসতেন, ঈর্ষাপরায়ণ সৎভাইয়েরা সেভাবে ভালোবাসত না। পিতা তাঁর সন্তানকে যেভাবে চিনতেন, যেই দৃষ্টিতে দেখতেন, সৎভাইয়েরা সেভাবে চিনত না, সেই দৃষ্টিতে দেখত না। সুতরাং, ইউসুফ (আ.) এর জন্য ঈর্ষাপরায়ণ গুনাহগার সৎভাইদের হৃদয়ে কষ্টের অনুভূতি জেগে ওঠেনি। নবী ইয়াকুব (আ.) এর এই কান্নার মর্ম কিভাবে বুঝবে সেই সৎভাইয়েরা ?
পিতা ইমাম হুসাইন (আ.) এর জন্য তাঁর পুত্র ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) এত বেশি কান্না করতেন যে, তার সাথে কেবল ইয়াকুব (আ.) এর অশ্রুপাতেরই তুলনা চলে। তিনি এরপর মৃত্যু পর্যন্ত দিনের বেলা রোজা ও রাতের বেলা ইবাদত বন্দেগীতে পার করেছিলেন। কারবালার প্রান্তরে সংঘটিত নিষ্ঠুরতার স্মরণে তিনি এত বেশি কাঁদতেন যে সেই অশ্রুতে তাঁর দাড়ি ভিজে যেত, খাবারে মিশে যেত সেই অশ্রু।
কতটা ব্যথা, আর হাহাকার থেকে এই কান্না, সেটা কি বুঝবে ইয়াজিদি ইসলামের অনুসারীরা ? বরং একথা শুনে হয়তো তাদের পাষাণ হৃদয় উল্টো প্রশ্ন করবে : " তাহলে কি ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) নিষিদ্ধ দিনগুলোতেও রোজা রাখতেন ?" কিংবা "সারারাত জেগে ইবাদত বন্দেগী করলে আর সারাদিন রোজা থাকলে ঘুমাতো কখন ?" ইত্যাদি...।
..........................................................................................
কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (আ.)কে তাঁর ৭২ জন সঙ্গীসহ নিষ্ঠুরভাবে শহীদ করা হয়েছিলো। পিপাসার পানি বন্ধ করে দিয়েছিলো ইয়াজিদি বাহিনী। তৃষ্ণার্ত ইমামকে হত্যা করা হয়েছে নির্মমভাবে।
গলায় তীর মেরে হত্যা করা হয়েছে পিপাসার্ত ছোট্ট শিশুকে। ইমামের পবিত্র দেহের উপর ছুটিয়ে দেয়া হয়েছে ঘোড়া...। কর্তিত মস্তক নিয়ে যাওয়া হয়েছে জাহান্নামী ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়ার দরবারে। লাঞ্ছিত করা হয়েছে ইমাম পরিবারের নারী ও শিশুদের...।
কারবালার প্রান্তরের ঘটনা কেবল এটুকুই নয়। ইমাম হুসাইন (আ.) ও কারবালা যেনো এক দীর্ঘ উপন্যাসের ক্ল্যাইম্যাক্স, যেখানে এসে মুমিন মুসলিমের হৃদয় ভেঙে যায়, চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে, অনুপ্রেরণা আসে শাহাদাতের, সন্ধান মেলে আলোর। এমন এক উপন্যাস, যার শুরু মুহাম্মদ (সা.) এর জন্মের সময়ে, এবং যে উপন্যাসের শেষ গল্পটি রচিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী (আ.) এর আগমনের মাধ্যমে।
এই উপন্যাসটিই হলো প্রতিটি মুসলিমের জন্য সিরাতুল মুস্তাকিম, অথবা আল্লাহর রজ্জু (৩:১০৩)। যে রজ্জুর শুরুতে আছে ঐশী কিতাব আল কুরআন, এবং যে রজ্জুর বাকিটুকু রচিত হয়েছে আল্লাহর রাসূল (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের (আ.) মাধ্যমে (৩৩:৩৩)। যে রজ্জু আঁকড়ে ধরার কথা নবীজি (সা.) তাঁর বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে বলে গিয়েছেন (হাদীসে সাকালাইন)।
ইমাম হুসাইন (আ.) হলেন সেই পবিত্র আহলে বাইতের (আ.) অন্যতম ইমাম, যে আহলে বাইত (আ.) কখনো কুরআন থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না বলে আল্লাহ রাসূল (সা.) বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে ঘোষণা দিয়ে গিয়েছিলেন। অতএব,
যে মুসলিমেরা রাসূল (সা.) এর মুখের এই নিশ্চয়তায় আস্থা রাখতে পারে না,
যারা কুরআনে ঘোষিত আহলে বাইতের পবিত্রতার উপরে আস্থা রাখতে পারে না (৩৩:৩৩),
যারা আল্লাহ রাসূল (সা.) যা তাঁর নবুওয়্যাতের বিনিময়ে মুমিনদের নিকট দাবী করেছেন (৪২:২৩), সেই ভালোবাসা পোষণ করে না আহলে বাইতের (আ.) প্রতি,
যারা কুরআনের ব্যাখ্যা ও রাসূলের (সা.) সুন্নাহ আহলে বাইতের (আ.) কাছ থেকে গ্রহণ করে না;
বরং যারা আহলে বাইতের (আ.) নিষ্পাপ ইমামগণের (আ.) দোষত্রুটি অনুসন্ধান করে,
যারা জেনে বা না জেনে আহলে বাইতের (আ.) শত্রুদের পক্ষ অবলম্বন করে,যারা নামাজে আলে মুহাম্মাদের (সা.) উপর দরুদ প্রেরণ করে ও কাজের বেলায় বিরুদ্ধাচরণ করে,
যারা ইমাম হুসাইন (আ.) এর নামের সাথে 'ইমাম' শব্দটা উচ্চারণ করে কিন্তু যাদের অন্তর তাঁর আনুগত্য স্বীকার করেনি,
যারা আহলে বাইতের (আ.) গুরুত্ব ও পবিত্রতার নিশ্চয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েও আহলে বাইতের (আ.) সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে না ও ইমামগণকে (আ.) চেনার চেষ্টা করে না;
তারা ইসলামের ব্যাপারে যত নিষ্ঠাবানই হোক না কেনো, দুঃখজনকভাবে সেই নিষ্ঠা সহকারেই তারা ভুল পথে হাঁটবে এবং নিষ্ঠার সাথেই না জেনে ইসলামের ক্ষতি করে যাবে। তারা যেনো আল্লাহর হাতে মীযান উঠবার আগেই নিজেদের শুধরে নেন এবং ইসলামের প্রকৃত পথ অনুসরণ করে বৃহত্তর মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেন, সেই দোয়াই করি।
আর যেসব পাষাণ হৃদয় এই শোকের দিনে আনন্দের উৎস খুঁজছে, শোকের বিপরীতে নানান মাসলা মাসায়েল আবিষ্কার করছে কিংবা হাজির করছে নানান ইতিহাস, তাদেরকে তাদের মতই থাকতে দিন। তারা যদি ইমাম হুসাইন (আ.) এর প্রতি ইউসুফ (আ.) এর সৎভাইদের মত মনোভাব পোষণ করে, তবে যতই তারা নামাজে আলে মুহাম্মদের (সা.) উপর দরুদ প্রেরণ করুক না কেনো, সেই দরুদ ঐ সৎভাইদের লোকদেখানো কর্মকাণ্ডেই পরিণত হবে। যতদিন না তাদের এই পাষাণ হৃদয় গলবে, এবং যতদিন না তারা ইমাম হুসাইন (আ.)কে প্রকৃত অর্থে চিনতে পারবে ও ভালোবাসতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত আশুরার দিনে তারা এমন আচরণই করে যাবে। এবং ততদিন পর্যন্ত ইয়াকুব (আ.) ও ইউসুফ (আ.) এর মধ্যকার সেই ভালোবাসা তারা অনুধাবন করতে পারবে না, যেই ভালোবাসার অশ্রুপাত চোখকে অন্ধ করে দেয় ! ততদিন পর্যন্ত তারা ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) এর কান্নার মর্ম বুঝবে না। ততদিন পর্যন্ত পবিত্র ইমামগণের (আ.) সাথে তাদের ভালোবাসার সম্পর্কের সূচনা হবে না। ততদিন পর্যন্ত আহলে বাইতের ইমামগণ (আ.) তাদের কাছে কেবলই কিতাবে বন্দী কিছু ইতিহাস কিংবা বিতর্কের বিষয়বস্তু হয়ে রইবে, ভালোবাসার বস্তুর নয়।
অতএব, এই পবিত্র ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত পাষাণ হৃদয় মানুষদের প্রতি রুক্ষ হবেন না। বরং স্বর্গীয় ভালোবাসা-বঞ্চিত এই মানুষগুলির জন্যে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন, যেনো তারা সকল পিছুটান ও প্রেজুডিস মুক্ত হয়ে সত্যের কাছে পরিপূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করার দৃঢ়তা পায়। তারা যেনো সন্ধান পায় সেই আলোর, যে আলো স্রষ্টার সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। তাদের হৃদয় যেনো খুঁজে পায় ভালোবাসা : ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াবী ভালোবাসা নয়, ঐশী ভালোবাসা।
আল্লাহ যেনো আমাদের সেইসব মুসলিম ভাইদের হৃদয়কে এই ভালোবাসার পথ দেখান। এই আলোর পথে তারা যেনো হন আমাদের সহযাত্রী, সহযোদ্ধা, পথপ্রদর্শক। কাউকে বাদ দিয়ে নয়, কাউকে ফেলে নয়, বরং দুনিয়ার সকল মুসলিম যেনো এক উম্মাহ, এক দেহ, এক প্রাণ, এক আত্মা হয়ে খোদার আরশের নিচে শেষবিচারের দিনে আশ্রয় নিতে পারি, আশুরা হোক সেই স্বর্গীয় স্বপ্ন বাস্তবায়নের নবঃ সূচনা।
আমিন।
জিয়া মোহাম্মদ মির্জা
4 নভেম্বর 2014
স্ক্রিপ্ট :-Nure Alam Masud
বিষয়: বিবিধ
২৫৮৭ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
>>মহররমে শোক পালনের সময় নিজেকে রক্তাক্ত করা প্রসংগেঃ
''আমাদের জন্য অলংকার হও, অমর্যাদার কারন হয়োনা''
--ইমাম জাফর আস-সাদিক(আ)
''যারা তাতবীর করে তাদের ব্যাপারে আমি খুবই হতাশ''
--আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ আলী খামেনী।
''কিছু মানুষ মহররমে তলোয়ার, চেইন ইত্যাদি দিয়ে নিজেদের আহত রক্তাক্ত করে, যা শয়তান কে উৎসাহিত করে''
--আয়াতুল্লাহ মুহসিন আল-আমিন আল-আমলি।
''তলোয়ার, চেইন ইত্যাদি দিয়ে নিজেদের রক্তাক্ত করা, (শোক মিছিলে) ড্রাম, হর্ন বাজানো, যেমনটি আজকাল কিছু লোক কে করতে দেখা যায়; এগুলো অবশ্যই হারাম এবং ধর্মীয় আদর্শের পরিপন্থী''
--আয়াতুল্লাহ আবুল হাশাম ইস্পাহানী।
নোটঃ মহররমের শোক পালনের সময় কেউ কেউ নিজেদের কে ছুরি ইত্যাদি দ্বারা আঘাত করে রক্তাক্ত করে; সেটা কে তাতবির বলা হয়।
সমস্যা হচ্ছেঃ বর্তমানে দ্বীন কে অনুষ্ঠান সর্বস্ব করে নিচ্ছে মুসলিমরা। আশুরাও তেমনি একটি বিষয়। এর প্রকৃত গুরুত্ব ও মহিমা অনুধাবন না করে লোক দেখানো বিষয়াবলী প্রাধান্য পাচ্ছে সমাজে।
শুধু কারবালার ঘটনাই নয় আরো অনেক কারণেই আশুরার গুরুত্ব রয়েছে।
Jia Mirja ..
anyway জাজাকাল্লাহ ভাই।
আপনার সাথে আমি কোনভাবেই একমত হতে পরছিনা। ইয়াজিদ কোনভাবেই বৈধ শাসক ছিলেন না। তিনি সাহাবি ও ছিলেন না। আমি মুফতি ইব্রাহিম সাহেবের মতামত শুনেছি তাকে খলিফাও বলা হয়নি।
আপনি যে শীয়া তার স্পষ্ট হলাম। তবে জেনে রাখবেন
মুসলিমরা হাসান রাঃ কে ততটুকুই ভালোবাসে, যতটুকু যোবায়ের,উসমান,উমর,আলী,আবু বকরসহ সমস্ত সাহাবী রা:গণকে ভালোবাসে। মুসলিমরা ব্যাথিত উসমানকে বিদ্রহীরা হত্যা করার কারনে, ব্যাথিত উমরকে মসজিদে আততায়ী কর্তৃক শহীদ হওয়ার কারনে ঠিক তেমনিই ব্যাথিত হাসান রা: কে কারবালায় আততায়ী কৃর্তক শহীদ হ্ওয়ার কারনে। তাই বলে শোক প্রকাশ করতে হবে? এটা আপনাকে (শীয়াকে) কে বলেছে? আর সেটা হাসান রা: এর জন্যই কেন?
বাংলা সাহিত্যে ১০ ই মহররম নিয়ে বিশাল মার্সিয়া সাহিত্য গড়ে ওঠেছে । এসব কি এমনি এমনি গড়ে ওঠেছে ।
জান্নাতের যুবকদের সর্দার শহীদ হয়েছে । তার জন্য শোক করা যাবে না । আর তিনি কীভাবে শহীদ হয়েছেন - তা আলোচনা করা যাবে না । যারা এমন কথা বলছেন তারা কি আদৌ মুসলিম কি না সন্দেহ । অথচ তারা নিজেরােই শোক দিবস পালন করেন । এমন শোক দিবস পালন করার দলীল তারা কুরআন হাদিস ঘেটে দিতে পারবেন না । যেমন : ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সালের ঘটনা নিয়ে জামায়াত শিবিরের শোক মিছিল ও শহীদ দিবস পালন ।
নিশ্চয়ই এরা মুয়াবিয়া ইয়াজিদের জারজ বংশধর। তাই তো তাদের সেফ করতে বা সঠিক ইতিহাস ঢেকে রাখার জন্য এসব ইসলাম বিরোধী রাজতন্ত্রের দালালেরা মরিয়া হয়ে উঠে ।
মুয়াবিয়া ইসলামের খিলাফত ধংষ করে ৯০ বছরের উমাইয়া রাজতন্ত্র কায়েম করেছিল। এই সেই মুয়াবিয়া যে ইসলাম এর বৈধ খলিফা আলি (রা.)- এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৪৫ হাজার মুসলিম দের হত্যা করেছিল।
( বৈধ খলিফার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা কুফুরি) ।
এই সেই মুয়াবিয়া যে ইমাম হাসানের সাথে চুক্তি করেছিল তার মৃত্যুর পর ইমাম. হোসেন রা.- কে খলিফা করা হবে।
অথচ তিনি (শহীদদের সর্দার আমীর হামজা রা. - এর কলিজা চিবিয়ে খাওয়া মহিলা হিন্দার পুত্র হলেন মুয়াবিয়া )ওয়াদা ভংগ করে তার পুত্র ইয়াজিদকে পরবর্তী খলিফা মনোনিত করে যায়।
এই ঘটনা ও তার পরবর্তী ইতিহাস পড়া ও পঠণ জামায়াত - শিবির , আহলে হাদিস , সৌদি আরবের রাজতন্ত্রের সমর্থকরা ও ওহাবী সম্প্রদায় নিষিদ্ধ ঘোষনা করার পায়তারা করছে ।
এই মন্তব্য লেখার পর আমাকে শিয়া ঘোষনা করে গালি গালাজও করতে পারে ।
উল্লেখ্য আমি শিয়া নই । বাংলাদেশের প্রচলিত ইসলাম অনুসরণ করি । প্রচলিত ইসলাম বলতে হানাফী মাজহাবকে বুঝাচ্ছি ।
যখন ইসরাইল গাযা কে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছিল - তখনও আমরা শিয়া সুন্নি নিয়ে ব্যস্ত। সুন্নি হামাস শিয়া ইরানের সমর্থন পায় -( অস্ত্র পায় খাদ্য পায় ইস্রাইল বিদ্ধংসী মিজাইল পায়,টানেল প্রযুক্তি পায়)- এই অজুহাতে সুন্নি বিশ্বের কেউ হামাস কে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে নাই। এমন কি এরদোগানের তুরস্ক ও নয়।অথচ আশ্চর্যান্বিত হই এখন যখন পশ্চিমা রা তাদেরই তৈরী আই এস কে ড্রোন মারছে বম্নিং করছে - তখন কিন্তু সৌদি আরব, তুর্কি, কাতার ইউ এ ই সবাই এগিয়ে আসছে আমেরিকার পক্ষে। সৌদি গ্রান্ড মুফতি তো অলরেডি ফতোয়া ও দিয়েছেন যে আইএসাইএল এর বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরজ।তারা ইসলাম এর এক নম্বর শত্রু।মধ্যেখানে মারা যাচ্ছে শুধু নিরিহ মুসলমান।
আমাদের সবারই মতভেদ ভুলে ঐক্যের কথা বলা উচিত। এক আল্লাহ, এক রাসুল ও এক কুর'আনে আমরা সবাই বিশ্বাস করি। তাহলে আমাদের এক হতে অসুবিধা কোথায়??ডক্টর মাওলানা হাসান রুহানি যদি পারে আমরা কেন পারি না?
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন।
আফসোস
এই সেই মুয়াবিয়া যে ইসলামের খিলাফত ধংষ করে ৯০ বছরের উমাইয়া রাজতন্ত্র কায়েম করেছিল।
এই সেই মুয়াবিয়া যে ইসলাম এর বৈধ খলিফা আলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৪৫ হাজার মুসলিম দের হত্যা করেছিল।( বৈধ খলিফার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা কুফুরি)
এই সেই মুয়াবিয়া যে ইমাম হাসানের সাথে চুক্তি করেছিল তার মৃত্যুর পর ইমাম. হোসেনকে খলিফা করা হবে।অথচ এই মুনাফিকদের বাচ্চা রাক্ষসী হিন্দার জারজ পুত্র সেই চুক্তি / ওয়াদা ভংগ করে তার কুকুর পুত্র ইয়াজিদ কে নেক্সট খলিফা মনোনিত করে যায়।আর ইসলামে ওয়াদা ভংগ কারী মুনাফিক। তার স্থান জাহান্নাম এর সর্বনিম্ন স্তরে।এরা আল্লাহর কাছে কাফের ইহুদি খ্রীস্টানদের চেয়েও জঘন্য।( কারন কাফের ইহুদি নাসারারা জাহান্নাম এর সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে না)।
এসব মুনাফিক আর তাদের জারজ বংশধর ও দালাল দের চিনে রাখুন।নিজের ইমান বাচান।এদের খপ্পরে পড়বেন তো মরবেন ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন