♥ শিয়া বিরোধী অপপ্রচারে সাবধান হইব,হুশিয়ার! সবাইকেই মরতে হবে so be careful √√♥
লিখেছেন লিখেছেন জিয়া্ মির্জা ২৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০২:০৫:৩৩ রাত
জাভিদ কায়সার কর্তৃক ইন্টারনেটে লেখা শিয়া বিরোধী অপপ্রচারমূলক একটি সাম্প্রতিক নিবন্ধের প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। তাই পুরো লেখাটি পড়েছি। লেখাটি পড়ে আমার যা মনে হয়েছে তা হচ্ছে, লেখক শিয়া মাযহাব্ সম্পর্কে যে অধ্যয়ন করেছেন তা এ মাযহাব্ সম্পর্কে সঠিক বিষয় জানার উদ্দেশ্যে করেন নি; তিনি শিয়াদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ানো ও সহিংসতা উস্কে দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় উপাদান খুঁজে বেড়িয়েছেন এবং সত্যাসত্য যাচাই না করে যা কিছু পেয়েছেন তা-ই গ্রহণ করেছেন ও অন্যদের পরিবেশন করেছেন, অথচ কারো মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য কেবল এতোটুকুই যথেষ্ট যে, যা শুনবে (বা পড়বে) যাচাই-বাছাই না করে তা-ই বিশ্বাস করবে ও প্রচার করবে। দৃশ্যতঃ লেখক নিজেকে একজন গবেষক হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তিনি লেখার ভিতরে যে সব তথ্যসূত্রের উদ্ধৃতি দিয়েছেন তাঁর ব্যবহৃত প্রত্যক্ষ তথ্যসূত্রের ফিরিস্তিতে সে সব অনুপস্থিত অর্থাৎ তিনি স্বয়ং সে সব তথ্যসূত্র অধ্যয়ন করেন নি, বরং অন্যদের লেখা থেকে (যে সব সূত্রের কথা তথ্যসূত্রের ফিরিস্তিতে উল্লেখ করেছেন) সে সব উদ্ধৃতি গ্রহণ করেছেন – যা একজন সত্যানুসন্ধানী প্রকৃত গবেষকের পরিচয় বহন করে না।
লেখাটিতে শিয়া মায্হাবের বিরুদ্ধে যে সব বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে একটি একটি করে তার প্রামাণ্য ও বিস্তারিত জবাব দিতে হলে একটি ছোটখাট বিশ্বকোষ রচনা করতে হবে।
অপপ্রচারের এই একটা সুবিধা যে, যতো সহজে অপপ্রচার চালানো যায় ততো সহজে তা খণ্ডন করা সম্ভব হয় না। ফলে কিছু লোক অবশ্যই তা দ্বারা বিভ্রান্ত হয়। গোয়েবলস্-ও এ বিষয়টি ভালোই জানতো, তবে গোয়েবলস্ এ বিদ্যা জানা ও ব্যবহারকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলো না।
যা-ই হোক,এখানে একটি বিষয় উল্লেখ না করলে ভুল ধারণার সৃষ্টি হতে পারে। তা হচ্ছে, আমি (অত্র নিবন্ধকার) শিয়া বা সুন্নী কোনোটাই নই, শুধু মুসলমান। ইসলাম সম্পর্কে আমার চিন্তাধারা সংক্ষেপে এই যে, ইসলামের আবেদন বিচারবুদ্ধি (‘আক্বল্)-এর কাছে। কারণ, বিচারবুদ্ধির বিচারে তাওহীদ, আখেরাত ও হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)-এর নবুওয়াতকে গ্রহণ না করলে কোনো অমুসলমান মুসলমান হতো না। স্বয়ং কোরআন মজীদ ‘আক্বলের ওপর বিরাট গুরুত্ব আরোপ করেছে এবং এ তিনটি বিষয়ের সপক্ষে ‘আক্বলী দলীল উপস্থাপন করেছে।
‘আক্বলের বিচারে তাওহীদ, আখেরাত ও হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)-এর নবুওয়াতকে গ্রহণকারী ব্যক্তি অনিবার্যভাবেই কোরআন অনুযায়ী চলতে বাধ্য। ‘আক্বল্ ও কোরআনের পরে মুসলমানের জন্য অকাট্য দলীল হচ্ছে মুতাওয়াতির্ হাদীছ ও ছ্বাহাবীদের যুগ থেকে শিয়া-সুন্নী নির্বিশেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর মধ্যে চলে আসা মতৈক্যভিত্তিক বিষয়গুলো।
এ চার দলীলের বহির্ভূত কোনো দলীল দ্বারা ‘আক্বাএদের শাখা-প্রশাখা এবং কোনো ফরয বা কোনো হারাম প্রমাণিত হতে পারে না। কারণ, আল্লাহ্ তা‘আলা নবীদের পাঠিয়েছিলেন মানুষের কাছে আল্লাহর সঠিক পরিচয় তুলে ধরা এবং আল্লাহর নির্ধারিত ফরয ও হারামগুলো জানানোর জন্য এবং উপযুক্ত পরিস্থিতি পেলে দ্বীনী হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্য। সুতরাং এটা সম্ভব নয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ছ্বাঃ) ‘আক্বাএদের কোনো যারূরী শাখা-প্রশাখা অথবা কোনো ফরয বা কোনো হারাম সম্পর্কে মাত্র দু’-চার জন ছ্বাহাবীকে জানিয়ে থাকবেন। সুতরাং খবরে ওয়াহেদ হাদীছ দ্বারা ‘আক্বাএদের কোনো যারূরী শাখা-প্রশাখা অথবা কোনো ফরয বা কোনো হারাম প্রমাণিত হয় না। [তাই হযরত ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহ্ঃ) খবরে ওয়াহেদ হাদীছ গ্রহণ না করে ভুল করেন নি। কারণ, খবরে ওয়াহেদ হাদীছ অকাট্য নয় এবং ইয়াক্বীন সৃষ্টিকারী নয়। কারণ, বানী উমাইয়াহ্ ও বানী আব্বাসের শাসনামলে লক্ষ লক্ষ মিথ্যা হাদীছ রচিত হয়েছিলো। রাসূলুল্লাহ্ (ছ্বাঃ) ইন্তেকাল করেন ১১ হিজরীতে, আর ইমাম আবূ হানীফাহ্ খলীফাহ্ উপাধিধারী ‘আব্বাসী কসাই মানছূরের কারাগারে শহীদ হন ১৫০ হিজরীতে। আর ইমাম বুখারী ইন্তেকাল করেন আরো ১০৬ বছর পরে ২৫৬ হিজরীতে। সুতরাং যতো কঠোরভাবেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই বাছাই করা হোক না কেন, বুখারী ও অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থে অসংখ্য জাল হাদীছ থাকার সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না।] তবে খবরে ওয়াহেদ হাদীছ ও অতীতের মনীষীদের মতামত কেবল উপরোক্ত চার অকাট্য দলীলের সাথে সাংঘর্ষিক না হওয়া সাপেক্ষে গৌণ (মাকরূহ্ ও মুস্তাহাব) ও প্রায়োগিক বিষয়াদিতে গ্রহণযোগ্য।
উপরোক্ত ফর্মূলা অনুযায়ী ইসলামকে জানতে গিয়ে ইসলামের কোনো মাযহাবের সকল চিন্তা, মত ও ফতওয়াকে সঠিক বলে মানতে পারছি না, যদিও উক্ত চার দলীল ভিত্তিক উপসংহার বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই শিয়া ইছনা ‘আশারীয়াদের (বারো ইমামী শিয়াদের) সাথে মিলে যায়। উদাহরণস্বরূপ এখানে স্রেফ আভাস হিসেবে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করছি, যেমন:
কোরআন মজীদে আহলে বাইতকে পরিপূর্ণভাবে পবিত্রকরণের উপযুক্ত গণ্য করা হয়েছে। [অন্য কারো সম্পর্কে এ কথা বলা হয় নি এবং উম্মাহর মতৈক্য অনুযায়ী আহলে বাইত হচ্ছেন হাযারত্ (‘হযরত’-এর বহুবচন) ফাতেমাহ্, ‘আলী, হাসান ও হুসাইন্ (‘আলাইহিমুস্ সালাম্)।] এছাড়া আমরা নামাযের মধ্যে আলে মুহাম্মাদের প্রতি অর্থাৎ রাসূলুল্লাহর (ছ্বাঃ) আহলে বাইতের প্রতি দরূদ পাঠাই, নচেৎ নামায ছ্বহীহ্ হয় না।
অন্যদিকে হাদীছে গ্বাদীর্ একটি মুতাওয়াতির্ হাদীছ – যাতে রাসূলুল্লাহ্ (ছ্বাঃ) হাজার হাজার ছ্বাহাবীর সমাবেশ আয়োজন করে তাতে এরশাদ করেন: “আমি যার মাওলা অতঃপর এই ‘আলী তার মাওলা।”
এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে, এখানে “মাওলা” মানে শাসক; এখানে শব্দটি “বন্ধু” অর্থে ব্যবহৃত হয় নি। কারণ, মুসলমানরা পরস্পরের বন্ধু এটা পূর্বপ্রতিষ্ঠিত বিষয়। তাই ‘আলীকে মুসলমানদের বন্ধু হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য এ ধরনের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন আল্লাহর রাসূলের (ছ্বাঃ) জন্য বেমানান। সুতরাং এখানে যে “শাসক” বুঝানো হয়েছে তাতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই।
এমতাবস্থায় (আয়াতে তাৎহীর, নামাযে পঠিত দরূদ ও হাদীছে গ্বাদীর্-এর পরিপ্রেক্ষিতে) আহলে বাইত্-এর পুরুষ সদস্যগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত ইমাম হোন বা না-ই হোন দ্বীন ও ঈমানের নিরাপত্তার জন্য মুসলমানদের উচিত ছিলো যথাক্রমে হাযারাত্ ‘আলী, হাসান্ ও হুসাইন (‘আঃ)কে খলীফাহ্ হিসেবে গ্রহণ করে নেয়া। হযরত ইমাম হুসাইন (‘আঃ)-এর পরে তাঁর বংশপরম্পরায় নয়জন ইমামের কথাও শুধু শিয়াদের হাদীছেই নেই, সুন্নীদের কতক হাদীছগ্রন্থেও আছে।
অন্যদিকে আহলে বাইতের ধারাবাহিকতায় আগত ইমামগণ ছিলেন নিজ নিজ যুগের পূতপবিত্রতম চরিত্রের অধিকারী জ্ঞানী ব্যক্তি এবং সুন্নী ধারার ইমামগণ ও দ্বীনী ওলামায়ে কেরাম তাঁদের ব্যাপারে ন্যূনকল্পে সতর্কতার নীতি অনুসরণ করেছেন এবং তাঁদের যে কারো সমালোচনা থেকে ও তাঁদের যে কারো প্রতি গুনাহ্ আরোপ থেকে বিরত থেকেছেন। অধিকন্তু তাঁরা হযরত ইমাম জা‘ফার্ ছ্বাদেক্ব্ (‘আঃ) সহ এ ইমামগণের কারো কারো ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। অর্থাৎ তাঁরা আহলে বাইতের ইমামগণের আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত ইমাম হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন নি।
এবার কতক মৌলিক বিধানের প্রতি দৃষ্টি দেয়া যাক।
কোরআন মজীদে বলা হয়েছে যে, ফেরৎযোগ্য তালাক্ব দুই “বার”, সুতরাং যে কথা বলেই তালাক্ব্ দেয়া হোক না কেন এক বৈঠকে দেয়া তালাক্ব্ ফেরৎযোগ্য “একবার” তালাক্ব্; রাসূলুল্লাহর (ছ্বাঃ) যুগে, প্রথম খলীফাহর যুগে ও দ্বিতীয় খলীফাহর শসনামলের প্রথম দিকে এক বৈঠকে “তিন তালাক্ব্ দিলাম দিলাম” বা “তালাক্ব্ দিলাম, তালাক্ব্ দিলাম, তালাক্ব্ দিলাম” বললে তা ফেরৎযোগ্য “একবার” তালাক্ব্ হিসেবে গণ্য হতো, সুতরাং দ্বিতীয় খলীফাহ কর্তৃক একে “তিন বার তালাক্ব্” গণ্য করার শর‘ঈ বৈধতা নেই।
অনুরূপভাবে মুত‘আহ্ বিবাহ রাসূলুল্লাহর যুগে, প্রথম খলীফাহর যুগে ও দ্বিতীয় খলীফাহর শসনামলের প্রথম দিকে চালু থাকার পর দ্বিতীয় খলীফাহ্ কর্তৃক তা নিষিদ্ধ করারও শর‘ঈ বৈধতা নেই। [তাছাড়া সূরাহ্ আন্-নিসা’র ২৫ নং আয়াতে মুত‘আহ্ বিবাহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি পূর্বাপর আরো কয়েকটি আয়াতের সাথে মিলিয়ে স্বতন্ত্র আলোচনার দাবী রাখে বিধায় এখানে সে সম্পর্কে আলোচনা থেকে বিরত থাকছি।]
কোরআন মজীদে “রাত হওয়া” (ইলাল্ লাইল্) পর্যন্ত রোযা রাখতে বলা হয়েছে, সুতরাং “সূর্যাস্তে” (ইলাল্ মাগ্বরেব্) ইফতার করা ঠিক নয়।
কোরআন মজীদে ওযূতে পা মাসেহ্ করার আদেশ দেয়া হয়েছে, ধোয়ার আদেশ দেয়া হয় নি। অবশ্য পুরো পা মাসেহ্ করতে হবে, নাকি আংশিক - এ বিষয়ে মতপার্ক্য আছে, কারণ, সংশ্লিষ্ট শব্দটি “আরজুলেকুম্” হলে আংশিক মাসেহ্ করাই যথেষ্ট এবং “আরজুলাকুম্” হলে আঙ্গুলের ডগা থেকে পায়ের টাখনু পর্যন্ত পুরোটা মাসেহ্ করতে হবে। তবে সতর্কতার নীতি হচ্ছে পুরো পা মাসেহ্ করা।
আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী এখানে পা ধোয়া-র অর্থ করার কোনো সুযোগই নেই, কারণ, “ওয়াও” দ্বারা দুই ক্রিয়াপদের আওতাধীন দু’টি বাক্যকে সংযুক্ত করা হয়েছে। যারা পায়ে ধুলা-ময়লা লাগার যুক্তি তোলেন তাঁরা আল্লাহর হুকুমের পিছনে মনগড়া কারণ খোঁজেন। ওযূর উদ্দেশ্য যদি ধুলাবালি দূর করা হতো তাহলে তায়াম্মুম্ ওযূ ও গোসলের বিকল্প হতো না। তবে ওযূ ও গোসলের পূর্বশর্ত হচ্ছে শরীরের যে কোনো স্থান থেকে যে কোনো ধরনের বস্তুগত নাপাকী দূর করা। সুতরাং পায়ে নাপাকী লেগে থাকলে আগে তা অপসারণ করে পা ধুয়ে নিতে হবে এবং ওযূর শেষ ফরয হিসেবে পা মাসেহ্ করতে হবে; ধুলাবালির কারণেও ওযূর আগে পা ধুয়ে নেয়া যাবে, কিন্তু শেষ ফরয হিসেবে পা অবশ্যই মাসেহ্ করতে হবে। আর জুতা বা মোযার ওপর মাসেহ্ বৈধ নয়, কারণ, আল্লাহ্ তা‘আলা পা মাসেহ্ করতে বলেছেন, জুতা বা মোযার ওপর – তা যে জিনিসেরই তৈরী হোক না কেন এবং যতো দীর্ঘ সময়ই পায়ে থাক না কেন – মাসেহ্ করার আদেশ দেন নি।
এগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অন্য বিষয়গুলোতেও উপরোক্ত চার দলীল থেকে বিশেষতঃ কোরআন মজীদের গভীর অধ্যয়ন থেকে সমাধান পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, রাসূলুল্লাহর সুন্নাত্ পুরাপুরি ও ছ্বহীহ আকারে কার কাছ থেকে পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে? যিনি জীবনে কখনো শিরক্ করেন নি, যিনি রাসূলুল্লাহর (ছ্বাঃ) পুরো নবুওয়াতী যিন্দেগীতে তাঁর সাথে ছিলেন, যিনি জ্ঞাননগরীর দরযাহ্ এবং আল্লাহ্ যাকে পরিপূর্ণরূপে পূতপবিত্র করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন; তিনি হলেন হযরত ‘আলী (‘আঃ)।
খোলাফায়ে রাশেদাহ সংক্রান্ত হাদীছ ছ্বহীহ্ কিনা এ প্রশ্ন যে কেউ করতে পারে, কারণ, কোনো হাদীছ-সংকলকের ওপরে অন্ধভাবে আস্থা স্থাপন করা আমাদের জন্য অপরিহার্য নয়, আর তিনি যদি নির্ভরযোগ্য হয়েও থাকেন তো সোয়া দু’শ’ বছরের রাভীগণের প্রত্যেকের নির্ভরযোগ্যতার নিশ্চয়তা দেবে কে? তারপরও যদি হাদীছটি ছ্বহীহ্ হয়ে থাকে তো প্রশ্ন হচ্ছে তা কা’দের প্রতি প্রযোজ্য? রাসূলুল্লাহ্ (ছ্বাঃ) কি চার খলীফাহর নাম বলেছেন? তিনি কি বলেছেন যে, আমার অব্যবহিত পরবর্তী চার খলীফাহ?
তেমনি ছ্বাহাবীর প্রচলিত সংজ্ঞা কি সঠিক? রাসূলুল্লাহর ছ্বাহাবী হিসেবে কাউকে গণ্য করার জন্য ঈমানের ঘোষণা সহকারে তাঁকে এক নযর দেখাই কি যথেষ্ট? নাকি আত্মিকভাবেও তাঁর সাহচর্য তথা ইখলাছ্বের সাথে তাঁর অনুসরণও অপরিহার্য? প্রচলিত সংজ্ঞা অনুযায়ী তাঁর যুগের মুনাফিক্বরাও কি ছ্বাহাবী নয়? অথচ কোরআন মজীদের বক্তব্য অনুযায়ী এ মুনাফিক্বদের সংখ্যা অনেক। তেমনি কোরআন মজীদের ঘোষণা অনুযায়ী মক্কাহ্ বিজয়ের দিনে যারা ঈমান এনেছে তাদের ঈমান আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় নি, অথচ তারাও ছ্বাহাবী হিসেবে পরিচিত। এমতাবস্থায়ও কি প্রচলিত সংজ্ঞার ছ্বাহাবীদের জীবন ও আমল পর্যালোচনাযোগ্য নয়? রাসূলুল্লাহ্ (ছ্বাঃ) যাদের হাত কেটেছেন ও যাদেরকে সঙ্গেসার্ করেছিলেন তারা কা’রা? হযরত ‘উছমানকে কি ছ্বাহাবীরা হত্যা করেন নি। হযরত ‘আলী (‘আঃ)-এর বিরুদ্ধে – যাকে শিয়া-সুন্নী সবাই বৈধ খলীফাহ্ হিসেবে স্বীকার করে – বিদ্রোকারী ও ফিতনাহ্ সৃষ্টিকারীরা কি ছ্বাহাবী ছিলেন না? জঙ্গে জামালে, বাছ্বরাহর যুদ্ধে ও জঙ্গে ছ্বিফফীনে কি ছ্বাহাবীরা ছ্বাহাবীদের হত্যা করেন নি? আল্লাহ্ তাআলা যেখানে হত্যাপরাধের শাস্তি বা ফিতনাহ্ সৃষ্টির শাস্তি ব্যতীত কোনো মানুষকে হত্যা করাকে গোটা মানব জাতিকে হত্যার সমতুল্য বলে ঘোষণা করেছেন সে ক্ষেত্রে উপরোক্ত হত্যাকারী ও নিহতরা সকলেই কি হক্বের ওপরে ছিলেন এবং সকলেই কি নাজাতপ্রাপ্ত?
কোনো অকাট্য দলীলে আছে কি কোনো ছ্বাহাবীর দোষ বর্ণনা করা (যদি সে দোষ থেকে থাকে) কুফরী এবং সে জন্য দোষ বর্ণনাকারীকে হত্যা করতে হবে? যদি তা-ই হয় তাহলে কোনো ছ্বাহাবীকে হত্যা করা কি? এবং হত্যাকারী সম্পর্কে কী হুকুম?
এ আলোচনা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত হলেও এখানে সূরাহ্ আল্-ফাতহ্-এর ২৯ সং আয়াতের উদ্ধৃতি দিতে ও সে সম্পর্কে আলোচনা করতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ, এ আয়াত অনুযায়ী নাকি ছ্বাহাবীদের কতকের সমালোচনার অপরাধে শিয়ারা কাফের হয়ে গিয়েছে। (!) আয়াতটিতে এরশাদ হয়েছে:
مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلا مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِمْ مِنْ أَثَرِ السُّجُودِ ذَلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَمَثَلُهُمْ فِي الإنْجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوَى عَلَى سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُمْ مَغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا.
“আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ এবং তাঁর সাথে যারা আছে, তারা কাফেরদের ওপর অত্যন্ত কঠোর ও নিজেদের পরস্পরের মধ্যে দয়ার্দ্র। (হে রাসূল!) আপনি তাদেরকে রুকূ‘রত অবস্থায় ও সিজদাহরত অবস্থায় আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি সন্ধান করতে দেখবেন। তাদের চেহারায় সিজদাহর চিহ্ন থাকে। তাওরাতে এর দৃষ্টান্ত রয়েছে এবং ইনজীলেও এর দৃষ্টান্ত রয়েছে। এর তুলনা হচ্ছে একটি চারাগাছ যা থেকে কিশলয় নির্গত হয়, অতঃপর তা শক্ত ও সুদৃঢ় হয় এবং স্বীয় কাণ্ডের ওপর মযবূতভাবে দাঁড়িয়ে যায়, এতে কৃষক আনন্দে আপ্লুত হয়ে যায়, (আল্লাহর ইচ্ছায় এরূপ ঘটে) যাতে কাফেররা অন্তর্জ্বালায় দগ্ধ হয়। তাদের মধ্যে যারা (সত্যিকারের) ঈমান এনেছে ও যথাযথ আমল করেছে আল্লাহ্ তাদেরকে মাগ্বফিরাত্ ও বিরাট প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”
এ আয়াতেই সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, যারা রাসূলুল্লাহ্ (ছ্বাঃ)-এর সাথে ছিলেন (অর্থাৎ প্রচলিত সংজ্ঞার ছ্বাহাবী) এবং বাহ্যিকভাবে যাদের মধ্যে উপরোল্লিখিত গুণাবলী ছিলো (যদিও প্রচলিত সংজ্ঞার ছ্বাহাবীদের প্রত্যেকের মধ্যে তা ছিলো না) তাঁদের মধ্যে সকলেই প্রকৃত ঈমানের অধিকারী ছিলেন না ও যথাযথ আমলকারীও ছিলেন না (অর্থাৎ একদল মুনাফিক্বও ছিলো)। এ কারণেই আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন: “তাদের মধ্যে যারা (সত্যিকারের) ঈমান এনেছে ও যথাযথ আমল করেছে” এবং আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁদের মধ্য থেকে কেবল এ ধরনের লোকদেরকেই “মাগ্বফিরাত্ ও বিরাট প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।” এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, প্রকৃত অর্থে রাসূলুল্লাহ্ (ছ্বাঃ)-এর ছ্বাহাবী ছিলেন তাঁরাই যারা কেবল বাহ্যিকভাবে নয়, আত্মিক ও আন্তরিক দিক থেকেও তাঁর সাথে ছিলেন এবং প্রকৃত ঈমান ও যথাযথ আমলের অধিকারী ছিলেন; কেবল ঈমানের “ঘোষণা” সহ তাঁকে এক নযর দর্শনকারী নয়।
বস্তুতঃ খুলাফায়ে রাশেদাহ্, আহলে সুন্নাত্ ওয়াল্-জামা‘আত্, ছ্বিদ্দীক্ব্, ফারূক্, যিন্-নূরাইন্, ইমামে আ‘যাম্, ছ্বিহাহে সিত্তাহ্, শিয়া, রাফেযী ইত্যাদি হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সৃষ্ট পরিভাষা মাত্র। [শিয়াদেরকে প্রথমে অন্যরাই “শিয়া” বলে অভিহিত করেন, বলতেন ‘আলীর শিয়া বা ক্ষুদ্র গোষ্ঠী।] আশ‘আরায়ে মুবাশশারাহর হাদীছ একটি জলজ্যান্ত মিথ্যা, কারণ, কোরআন অনুযায়ী আল্লাহ্ তা‘আলা সুনির্দিষ্টভাবে রাসূলুল্লাহ্ (ছ্বাঃ)কে পর্যন্ত জীবদ্দশায় বেহেশতের সুসংবাদ দেন নি।
‘আবদুল্লাহ্ ইবনে সাবা’ সম্পর্কে এতোটুকু বলাই যথেষ্ট যে, এটি একটি কাল্পনিক চরিত্র; এ নামে কোনো প্রকৃত ব্যক্তির অস্তিত্ব ছিলো না। ইবনে সাবা’র নামে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে তার প্রথম বর্ণনাকারী মাত্র এক ব্যক্তি – যার নাম সাইফ্ বিন্ ‘উমার্, যে ছিলো একজন মিথ্যাবাদী; বহু বিষয়েই তার বর্ণনাগুলোর একই বিষয়ে অন্যান্য বর্ণনাকারীদের বর্ণনার সাথে মিল নেই। বানী উমাইয়াহর স্বৈরশাসনের পৃষ্ঠপোষকতার লক্ষ্যে সে প্রচুর মিথ্যা রচনা করে নির্ভরযোগ্য লোকদের কাছ থেকে শুনেছে বলে মিথ্যা দাবী করে প্রচার করে। ‘আল্লামাহ্ সাইয়্যেদ্ মুরতাযা ‘আসকারী তাঁর ‘আবদুল্লাহ্ ইবনে সাবা’ নামক গ্রন্থে তার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন। তাছাড়াও এতো সব গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কিত বিষয়ে এক ব্যক্তির বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। তার নামে বর্ণিত কাহিনীগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করলেই এর কাল্পনিকতা সুস্পষ্ট হয়ে যায়। সে যুগের যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে গোটা মুসলিম জাহান চষে বেড়ানো এবং সরকার উৎখাতের বিদ্রোহের জন্য প্রকাশ্যে উস্কানি সৃষ্টি ও জনমত গঠনের তৎপরতা চালানো সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোথাওই বাধার সম্মুখীন না হওয়া এবং আবূ যার্, ‘আম্মার্ বিন্ ইয়াসার্, মুহাম্মাদ্ বিন্ হুযাইফাহ্, মুহাম্মাদ্ বিন্ আবূ বাকর্ প্রমুখ শীর্ষস্থানীয় ছ্বাহাবীর তার দ্বারা প্রতারিত হওয়া কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?
শিয়া-সুন্নী নির্বিশেষে হাদীছ-সংকলকগণ সুদক্ষ গবেষক ছিলেন না। তাঁরা তাঁদের স্বনির্ধারিত মানদণ্ডে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাদীছ বাছাই করে তাঁদের সংকলনে স্থান দিয়েছেন। ফলে বহু মিথ্যা হাদীছও এ সব সংকলনে স্থানলাভ করেছে। কোরআনে হ্রাস-বৃদ্ধির ধারণা সম্বলিত হাদীছ উভয় ধারার হাদীছ-গ্রন্থেই রয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা যেখানে নিজেকে কোরআন মজীদের সংরক্ষণকারী বলেছেন তখন এ হাদীছগুলোর কোনো মূল্য আছে কি? এ সব হাদীছের ভিত্তিতে সুন্নীরা যদি বলে যে, শিয়ারা কোরআনের বিকৃতিতে বিশ্বাসী এবং শিয়ারা যদি বলে যে, সুন্নীরা কোরআনের বিকৃতিতে বিশ্বাসী, তো তা উচিত হবে কি? তেমনি বিকৃত ‘আক্বীদাহ্ পোষণকারী ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠী শিয়া ও সুন্নী উভয় ধারার মধ্যেই রয়েছে। দুনিয়ার বুকে যা কিছু ঘটছে তার সবই, এমনকি জীবন-মৃত্যুও খাজা বাবার (পীর সাহেবের) ইচ্ছায় হচ্ছে, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ছ্বাঃ) এসে পীর সাহেবের সাথে কথা বলেন, নামায অন্তরে ক্বায়েম্ করতে হবে – শারীরিকভাবে নামায আদায়ের দরকার নেই, আল্লাহর শরীর আছে, গুনাহ্-ব্যভিচারও আল্লাহ্ ভাগ্যে লিখে রেখেছেন ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের বিকৃত ‘আক্বীদাহ্ পোষণকারী বহু গোষ্ঠী সুন্নীদের মধ্যে রয়েছে। এমতাবস্থায় গোটা সুন্নী সমাজকে এরূপ আক্বীদাহ্ পোষণকারী বলে অভিহিত করা উচিত হবে কি? তাহলে শিয়াদের ব্যাপারে তা উচিত হবে কেন?
কেউ যদি শিয়াদের তথা বারো ইমামী শিয়াদের সম্পর্কে জানতে চান তাঁর উচিত হবে এ ধারার বর্তমান যুগের মনীষীদের বই-পুস্তক অধ্যয়ন করা। এরপরও সন্তুষ্ট না হলে সর্বাধিক শিয়া অধ্যুষিত দেশ ইরানে গিয়ে সেখানকার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ও মাদ্রাসায় ‘আক্বাএদ্ ও আহকাম্-এর ক্ষেত্রে কী কী শিক্ষা দেয়া হয় তা সরেযমীনে দেখা যেতে পারে।
বস্তুতঃ অতীতের ফক্বীহ্, মুজতাহিদ, মুহাদ্দিছ, রাভী, হাদীছ-সংকলক, মুফাসসির ও ইতিহাসবিদগণের কেউই ভুল ও গুনাহের উর্ধে (মা‘ছূম্) ছিলেন না। তাই তাঁদের অনেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যে সব ফতওয়াবাযী করেছেন আমরা কি তার অন্ধ অনুসরণ করবো? আল্লাহ্ তা‘আলা কি আমাদেরকে তাঁদের অন্ধ অনুসরণ তরতে বলেছেন এবং তা না করলে কি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন? افلا تعقلون؟ (অতঃপর তোমরা কি ‘আক্বল্ প্রয়োগ করবে না?)
অতএব, আসুন, আমরা উপরোক্ত চার অকাট্য দলীলের নিঃশর্ত অনুসরণ করি এবং খবরে ওয়াহেদ হাদীছ ও মনীষীদের বক্তব্যকে উক্ত চার দলীলের মানদণ্ডে গ্রহণ-বর্জন করি। আর তা যতক্ষণ সম্ভব না হয়, উক্ত চার দলীল অনুসরণ করি এবং গৌণ বিষয়াদিতে যে যে মাযহাব ও মত অনুসরণ করে আসছি তা-ই অনুসরণ করি।
জিয়া মোহাম্মদ মির্জা
স্ক্রিপ্ট নুর হোসেন মাজিদি
(২১-১০-২০১৪)
পুনশ্চ :-
যখন ইসরাইল গাযা কে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছিল - তখনও আমরা শিয়া সুন্নি নিয়ে ব্যস্ত। সুন্নি হামাস শিয়া ইরানের সমর্থন পায় - এই অজুহাতে সুন্নি বিশ্বের কেউ হামাস কে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে নাই। এমন কি এরদোগানের তুরস্ক ও নয়।অথচ আশ্চর্যান্বিত হই এখন যখন পশ্চিমা রা তাদেরই তৈরী আই এস কে ড্রোন মারছে বম্নিং করছে - তখন কিন্তু সৌদি আরব, তুর্কি, কাতার ইউ এ ই সবাই এগিয়ে আসছে আমেরিকার পক্ষে। সৌদি গ্রান্ড মুফতি তো অলরেডি ফতোয়া ও দিয়েছেন যে আইএসাইএল এর বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরজ।তারা ইসলাম এর এক নম্বর শত্রু।মধ্যেখানে মারা যাচ্ছে শুধু নিরিহ মুসলমান।
আমাদের সবারই মতভেদ ভুলে ঐক্যের কথা বলা উচিত। এক আল্লাহ, এক রাসুল ও এক কুর'আনে আমরা সবাই বিশ্বাস করি। তাহলে আমাদের এক হতে অসুবিধা কোথায়??ডক্টর মাওলানা হাসান রুহানি যদি পারে আমরা কেন পারি না?
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
২৯০৪ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার বিশ্লেষন বেশ ভালো লাগলো; আমার মতে এদের সবার মতপার্থক্য শুধুই দুনিয়া ভোগের জন্য রাজনৈতিক অবস্থান!
পবিত্র হাদিস বর্ণনাকারী কোন এক স্তরে শুধু একজন হলে তাকে খবরে ওয়াহেদ বলে।
পোস্টের লেখক সুচতুর ভাবে আশারায়ে মুবাশশারা ও আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা ইত্যকার স্বীকৃত বিষয়ে মিথ্যাচার করেছেন। কথার ফুল-ঝুড়িতে বুখারীর মত হাদীস গ্রন্থ কে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস চালিয়েছেন।
শিয়াদের ইমাম বিষয়ে আকায়েদ দেখলে গোমরাহীর স্পষ্টতা সহজেই বুঝা যায়। ১২ ইমামের আকিদা সম্পন্ন শিয়াদের ১১ ফেরকাই কাফের বলে স্বীকৃত।
একমাত্র কাফের শিআ ব্যতিত তাদের বিরুদ্ধে কোন মুসলমানরা ভিন্নমত করতে পারে না।
যখন ইসরাইল গাযা কে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছিল - তখনও আমরা শিয়া সুন্নি নিয়ে ব্যস্ত। সুন্নি হামাস শিয়া ইরানের সমর্থন পায় -( অস্ত্র পায় খাদ্য পায় ইস্রাইল বিদ্ধংসী মিজাইল পায়,টানেল প্রযুক্তি পায়)- এই অজুহাতে সুন্নি বিশ্বের কেউ হামাস কে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে নাই। এমন কি এরদোগানের তুরস্ক ও নয়।অথচ আশ্চর্যান্বিত হই এখন যখন পশ্চিমা রা তাদেরই তৈরী আই এস কে ড্রোন মারছে বম্নিং করছে - তখন কিন্তু সৌদি আরব, তুর্কি, কাতার ইউ এ ই সবাই এগিয়ে আসছে আমেরিকার পক্ষে। সৌদি গ্রান্ড মুফতি তো অলরেডি ফতোয়া ও দিয়েছেন যে আইএসাইএল এর বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরজ।তারা ইসলাম এর এক নম্বর শত্রু।মধ্যেখানে মারা যাচ্ছে শুধু নিরিহ মুসলমান।
আমাদের সবারই মতভেদ ভুলে ঐক্যের কথা বলা উচিত। এক আল্লাহ, এক রাসুল ও এক কুর'আনে আমরা সবাই বিশ্বাস করি। তাহলে আমাদের এক হতে অসুবিধা কোথায়??ডক্টর মাওলানা হাসান রুহানি যদি পারে আমরা কেন পারি না?
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন।
সারা দেশে পীরপূজা, কবরপূজার নামে শিরকের ছড়াছড়ি। এসব কিন্তু শিয়ারা করছে না। যারা করছে তারা নিজেদের আবার 'আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত' বলে পরিচয় দেয়।
এমতাবস্থায় ঐ লোক সম্পর্কে আপনার ধারনা কি হবে?
আপনি আমার বক্তব্যের মর্মার্থ বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এই কথা দ্বারা আর কি বুঝবো? শিআদের সংজ্ঞাতেই তো আছে সাহাবা বিদ্বেষ। সাহাবাদের কাফের বলে মনে করেন না, অথচ নিজেকে শিআ দাবী করেন এমন একজন দেখার সৌভাগ্য আজ পর্যন্ত হলো না। যদি আপনার এমন কেউ জানা থাকে, অনুগ্রহ করে আমাকে জানাবেন।
Click this link
জিয়া মির্জা কোরআন হাদীসের কাছে তোমার এক গাদা যুক্তির কোন মূল্য মুসলিমদের কাছে নেই। লিংক দুটোতে যা্ও এবং মন দিয়ে পড়, ফিরে আসতে পার যদি কপালে হেদায়েত থাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন