নীতি হীনদের এ এক আজব নীতিমালা।

লিখেছেন লিখেছেন আমি মুসাফির ১১ আগস্ট, ২০১৪, ০৪:২২:৪১ বিকাল

পৃথিবীর যেসব দেশে গণতন্ত্র আছে, ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে, সেসব দেশ কেবলই সামনের দিকে এগিয়ে গেছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে।

আর পৃথিবীর যেখানে ফ্যাসিবাদ, যেখানে স্বৈরশাসন, যেখানে গণতন্ত্র নেই, মানুষের মৌলিক অধিকার নেই, ব্যক্তিস্বাধীনতা অপহৃত, সেসব দেশ কেবলই পিছিয়ে পড়েছে।

ভূতের পায়ের মতো এরা কেবলই পেছনে হেঁটেছে। হেঁটে হেঁটে এক একটি আলোকিত সমাজকে অনন্ত অন্ধকারের দিকে নিয়ে গেছে।

বাংলাদেশের দুঃসময়ে সত্য প্রকাশের ব্রত নিয়ে মিডিয়া সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। সরকারের অন্যায়, উৎপীড়ন, অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছিল।

ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এর ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হচ্ছিল।

সংবাদপত্রগুলোতেও ছবি ও খবর প্রকাশিত হয়। যে ছবি কথা বলে। যে ছবি জানান দেয়, সত্য কোথায় নিহিত আছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদী শক্তি আজ পর্যন্ত মিডিয়ার এই সত্য প্রকাশ বরদাশত করতে চায়নি।

২০০৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ হয়েছিল। তাতে ৫৭ জন চৌকস সামরিক অফিসারকে খুন করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে মিডিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এখন থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আর তা প্রচার করা যাবে না।

যেন কিছুই ঘটেনি; কিন্তু গোলযোগ বা সঙ্ঘাত বলতে আমরা কী বুঝব? নীতি অনুযায়ী গোলযোগ ও সঙ্ঘাতের খবর আমরা প্রচার করতে পারব না।

তাহলে কী প্রচার করব? যখন সরকারি নাশকতাকারীরা রেললাইন উপড়ে ফেলবে, ফিসপ্লেট তুলে ফেলবে, তখন আমরা আমাদের সম্প্রচার মাধ্যমগুলোতে কেবলই নাচ-গানের অনুষ্ঠান চালাতে থাকব। সেই সাথে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটি গাইতে হবে কি না সে ব্যাপারে অবশ্য সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা নেই।

আমাদের কাছে এই নীতির অর্থ দাঁড়ায় এই যে, পুলিশ বিরোধী মতাবলম্বীদের যেভাবেই দমন, নির্মূল বা নিশ্চিহ্ন করুক না কেন, সেটি মিডিয়া প্রচার করতে পারবে না।

তোবা গার্মেন্টে পুলিশ দরিদ্র, নিরীহ, সাধারণ গার্মেন্ট কর্মীদের ওপর যে হামলা চালাল, সে ধরনের ঘটনাও এখন থেকে আর প্রকাশ করা যাবে না।

বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কিছু প্রচার করা যাবে না : দারুণ।

ভারত যে তিস্তায় পানি দেবে না, বিনা শুল্কে নৌ ও সড়কপথ ব্যবহার করে করিডোর নেবে, প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা করবে, এ বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না।

একইভাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যেখানে বাংলাদেশী শ্রমিকেরা কর্মরত, সেখানে তারা নির্যাতনের শিকার হলেও সে কথা প্রকাশ করা যাবে না। কারণ তাতে ওইসব দেশের সাথে আমাদের বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে।

তাহলে দাঁড়ালাম কোথায়?

সমাজ, রাষ্ট্র, জনগণ, অত্যাচার, উৎপীড়ন, নিপীড়ন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, বিডিআর বিদ্রোহের মতো ঘটনা, র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবির চাঁদাবাজি, আটক বাণিজ্য অবাধে চলবে। নাগরিক টুঁ শব্দও করতে পারবে না।

বর্তমান গণপ্রতিনিধিত্বহীন সরকার সেটি চালু করতে চাইছে;

বিষয়: বিবিধ

৯৩৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

253284
১১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০১
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৪ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১০
198005
আমি মুসাফির লিখেছেন : ভাল লাগার জন্য আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File