নেতৃত্বহীন দেড়শ’ কোটি মুসলমান
লিখেছেন লিখেছেন আমি মুসাফির ০৭ আগস্ট, ২০১৪, ১২:২৬:৪৫ দুপুর
কাফের জগত আমেরিকার নেতৃত্বে একতা বদ্ধ। তাদের মাঝে যত রকমের মত বিরোধই থাক না কেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে তারা কিন্তু সবাই এক। তাদের একটা বিশ্ব নেতৃত্ব আছে।
আমাদের মুসলমানরা কিন্তু বিশ্বমানের তেমন কোন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে পারেনি। এরা যার যার দেশে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা করার তেমন একটা সাদামাটা নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন তবুও জনগণের তেমন সংশ্লিষ্টতা নেই।
সৌদী আরবকে সকল মুসলমান দেশ একটা মডেল হিসাবে মানলেও বিশ্বমানের মুসলিম নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয়নি। এদিকে ও আই সি নামক যে মুসলিম সংস্থাটি আছে তাদেরও মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার জন্য যেমন এগিয়ে আসার কথা তারাও ঘুমাচ্ছে। কাফির জগতের পক্ষে যেমন জাতি সংঘ কথা বলে ও আই সি তা বলতে সাহস পায়না ।
আমার প্রশ্ন তাহলে মুসলমান হয়ে কাফেরদের জুলুমের বিরুদ্ধে যদি কোন কথা বলার সাহসই না থাকে তাহলে মুসলমান নাম নিয়ে বেচে থাকার স্বার্থকতা কি এবং এতে আমাদের লাভই বা কি ?
আমি মনে করি বিশ্বমানের নেতৃত্ব মুসলমানদের মাঝে গড়ে তুলতে হবে নইলে এভাবেই মার খেতে থাকতেই হবে।
সারা বিশ্বেই মুসলমানরা মারা যাচ্ছে। কেউ মরছে আগ্রাসী শক্তির হাতে, কেউ স্বৈরশাসকদের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে। ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে মারা যাচ্ছে আরো বেশি মুসলমান। অনাহার, দারিদ্র্যের কারণেও অকালেই ঝরে যাচ্ছে বহু মুসলমানের জীবন।
কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই। এসব বন্ধে নেই কোনো যোগ্য নেতৃত্বও। বস্তুত বিশ্বের ১৬০ কোটি মুসলমান আজ নেতৃত্বাহীন।
নেতা হয়ে যারা দেশ শাসন করছেন তাদের বেশিরভাগই স্বৈরাচার, অপদার্থ, দুর্নীতিবাজ ও পাশ্চাত্যের পদলেহী, সর্বোপরি মুসলমান নামধারী মাত্র। ইসলামী চেতনা বড়জোর তাদের প্রাসাদের দেয়ালের শোভা বর্ধন করে, নিজেদের জীবনধারায় মহান এই ধর্মের কোনো প্রতিফলন ও চর্চা নেই।
বেশিরভাগই মুসলিম দেশের শাসকই জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছেন। তাদের পেছনে জনগণের কোনো ম্যান্ডেট নেই। মুসলিম বিশ্বের মুরব্বি সৌদি আরবের ক্ষেত্রে একথা যেমন সত্য, তেমনি সত্য বাংলাদেশসহ বেশিরভাগ দেশের ক্ষেত্রেই।
মুসলিম বিশ্বে গণতন্ত্রচর্চার অভাব বড়ই প্রকট। কোনো কোনো দেশে সংবিধানে গণতন্ত্রের কথা লেখা থাকলে বাস্তবে তার কোনো রূপায়ণ নেই।
এই যখন মুসলিম বিশ্বের শাসকদের অবস্থা তখন তাদের জনগণের উন্নতির আশা করা বাতুলতা বৈকি।
উন্নতি তো পরে, আগে দরকার বেঁচে থাকা। সেটাই এখন মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে দুশ্চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মুসলমানদের জীবন এখন পৃথিবীর সবচেয়ে কম দামি বস্তু। বিশ্বের সর্বত্র প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মুসলমান যুদ্ধ, রাজনৈতিক সহিংসতাসহ নানা মানবসৃষ্ট কারণ মারা যায়। অথচ মুসলিম বিশ্ব নীরব। জনগণেরও এসব মৃত্যু গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।
ফিলিস্তিনে ইহুদিদের হাতে মারা যাচ্ছেন অসহায় নারী-পুরুষ-শিশু। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে মুসলমানদের রক্তস্রোত থামছেই না। ইরাকের মুসলমানরা মরে রাস্তায় পড়ে থাকছে। সিরিয়ায় হাজার হাজার মানুষ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ক্ষমতার বলি হয়েছেন, হচ্ছেন। সুদান, মালি, নাইজেরিয়া, মিসর, লিবিয়ায় মুসলামদের জীবন যেন খেলনায় পরিণত হয়েছে। বসনিয়া ও চেচনিয়ায় মুসলমানদের অকাতরে জীবন দিতে হচ্ছে।
অথচ এসব বন্ধে মুসলিম দেশগুলোর নেতারা নির্বিকার। গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার নিন্দা জানানোরও সাহস দেখাতে পারেনি বেশিরভাগ মুসলিম প্রধান দেশের শাসকরা।
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১০৮১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইলমী (জ্ঞানের) দিক থেকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সাধারণ মুসলমানগণ তাদেরকেই নেতা বিবেচনা করে বিবৃতি, ফতোয়া ইত্যাদি আশা করেন। অথচ সার্বিক ভাবে প্রকৃত নেতৃত্ব থেকে মুসলিম বিশ্ব বহুদিন থেকে মাহরূম।
পার্থিব দিক বিবেচনা করলে ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের দীর্ঘমেয়াদী চক্রান্তের মোকাবেলায় আমাদের কিছু বক্তব্য, বিবৃতি, লেখনি বানের পানির মত ভেসে গেছে। ঠিক সেভাবেই ভেসে গেছে বিভিন্ন দেশে আমাদের রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দও। যেমন- মুরসী।
আর আদর্শিক অথবা ঐশ্বরিক দিক বিবেচনায় নিলে আমাদের প্রতিজন মুসলমান সেজন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়ী। আল্লাহ্ আমাদের ক্ষমা করুন।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন