তরুণ নেতার করুণ দশা ।
লিখেছেন লিখেছেন আমি মুসাফির ১৩ জুলাই, ২০১৪, ০২:০৩:০৬ দুপুর
রাজনীতি ব্যক্তি জীবনে, জাতীয় জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাজনীতি জীবনের সুখ-দুঃখ এবং জাতীয় উন্নতি ও অবনতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রাজনীতির কারণেই আমরা এখন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক। রাজনীতির কারণেই আমরা আবার আশাহত হই।
বর্তমানে দেশে যে মন্দ রাজনীতি চলছে, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের দৌরাত্ম্য যেভাবে বাড়ছে তাতে দেশের জনগণ রাজনীতিবিদদের ওপর বিরক্ত। অনেকেই বলছেন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সংস্কার না হলে, রাজনীতিতে মেধাসম্পন্ন নতুন রাজনীতিবিদদের আগমন না ঘটলে বর্তমান দুরবস্থা থেকে মুক্তি নেই।
বিরাজমান নেতৃত্বের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠলে মানুষ তো নতুনের আগমন চাইবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই নতুন ‘কাংখিত’ হবে তো? অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা বলতে পারি যে, শুধু নতুন চেহারা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, যদি না সেই চেহারার মধ্যে গুণগত পরিবর্তনের সামর্থ্য না থাকে। নতুন চেহারা যদি পুরাতন কথাই বলে এবং আচরণে পুরাতনদেরই প্রতিভূ হয়ে ওঠে, তাহলে তেমন নতুন দিয়ে কোনো নতুন অভিযাত্রা সম্ভব হবে কী?
পরিবর্তনের লক্ষ্যে আমরা নতুন নেতৃত্বের প্রতি আশাবাদী হতে চাই। তবে আশাবাদী হওয়ার মতো ভিত্তি তো রচনা করতে হবে নতুনদেরই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, তেমন শুভ লক্ষণ দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।
নইলে ‘সুচিন্তা ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত সেমিনারে নতুন প্রজন্মের অন্যতম নেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এমন বক্তব্য রাখবেন কেন? এমন বক্তব্যে যুক্তির বদলে বিদ্বেষ ভাবটাই প্রকাশ পায়।
এমনি নতুন প্রজন্মের বেশ কিছু তরুন বর্তমান রাজনীতিতে স্থান পেয়েছে তাদের বেশীর ভাগই এমন বক্তব্য রাখেন যা তাদের মুখে মানান সই না আবার কিছু তরুণ ভাল ভুমিকা রাখছে তবে অশ্রুতিকর কথাই যেন সরকারী তরুণ মন্ত্রী এমপিদের মুখ থেকে নিঃসৃত হচ্ছে যা একেবারেই কাঙ্খিত না।
আমরা জানি, রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ থাকে। প্রতিপক্ষের সাথে আচরণ ও মোকাবিলার ধরন থেকে রাজনীতিবিদদের মান উপলব্ধি করা যায়। যে রাজনীতিবিদ তথ্যভিত্তিক কথা বলেন, প্রতিপক্ষের যৌক্তিক সমালোচনা করেন, তিনি জনমনে স্থান করে নিতে পারেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের সমালোচনায় যদি অযৌক্তিক বক্তব্য এবং বিদ্বেষ ও বেপরোয়া মনোভাব প্রকাশ পায় তাতে সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদের ইমেজ নষ্ট হয় এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্ষতির মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
ব্লেম গেমের বর্তমান রাজনৈতিক বাতাবরণে আমরা নতুন প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের কাছে ওই ধরনের অনাকাংখিত আচরণ আশা করি না। আমরা জানি, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিভিন্ন দল থাকে, দলগুলোর শ্লোগান এক রকম হয় না। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ পছন্দ মতো শ্লোগান বাছাই করে এবং তাতে বৈচিত্র্যই লক্ষ্য করা যায়। এখন কোনো দল যদি নিজেদের পছন্দমত শ্লোগান বেছে নেয় তাহলে অন্যদেরও সেই একই শ্লোগান বেছে নিতে হবে রাজনীতিতে এমন কোনো কথা নেই।
সব দলেরই শ্লোগান, কর্মসূচি ও কর্মনীতি যদি একই রকম হয়ে যায়, তাহলে তো আলাদা আলাদা দল করার আর প্রয়োজন থাকে না। গণতন্ত্রের এই মূল কথাটি আমাদের নতুন প্রজন্মের নেতাদের উপলব্ধি করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১০৩২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন