ইবাদাত ;;;;;;;পর্ব (১)
লিখেছেন লিখেছেন আমি মুসাফির ০৮ জুলাই, ২০১৪, ০৫:৩৯:২১ বিকাল
ইবাদাতের অর্থ নিয়ে আমরা অনেক ভুল বুঝে থাকি আমাদের এর প্রকৃত লক্ষ্য উদ্দেশ্য জানা উচিত
وَمَا خَلَقۡتُ الۡجِنَّ وَالۡاِنۡسَ اِلَّا لِيَعۡبُدُوۡن
জিন ও মানুষকে আমি শুধু এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার দাসত্ব করবে। সুরা জারিয়াত আয়াত ৫৬।
এ থেকে নিঃসন্দেহে বুঝা গেল যে, মানুষের জন্ম,জীবনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আল্লাহ তাআলার ইবাদাত এবং বন্দেগী ছাড়া আর কিছুই নয় ।
এখন আমরা বুঝতে পারছি যে,ইবাদাত শব্দটির প্রকৃত অর্থ জেনে নেয়া কতটুকু জরুরী । এ শব্দটির অর্থ না জানলে যে মহান উদ্দেশ্যে আমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে তা কিছুতেই লাভ করা যাবে না আর যে বস্তু তার উদ্দেশ্য লাভ করতে না পারে তা ব্যর্থ ও নিষ্ফল ।
ইবাদাত আরবী "আবদ" শব্দ হতে উদ্ভুত হয়েছে। আবদ এর অর্থ দাস ও ওগালাম। অতএব ইবাদাত শব্দের অর্থ হবে বন্দেগী ও গোলামী করা।
যে ব্যক্তি অন্যের দাস সে যদি তার বাস্তবিকই মনিবের সমীপে একান্ত অনুগত হয়ে থাকে এবং তার সাথে ঠিক ভৃত্যের মত ব্যবহার করে,তবে একে বলা হয় বন্দেগী ও ইবাদাত। পক্ষান্তরে কেউ যদি কারো চাকর হয় এবং মনিবের কাছ থেকে পুরাপুরি বেতন আদায় করে,কিন্তু তবুও সে যদি ঠিক চাকরের মত কাজ না করে তবে বলতে হবে যে, সে নাফরমানি ও বিদ্রোহ করেছে।
তাই আমদেরকে জানতে হবে,মনিবের সামনে চাকরের মত কাজ করা এবং তার সমীপে আনুগত্য প্রকাশ করার উপায় কি হতে পারে?
প্রথমতঃ
বান্দাহ বা চাকরকে তার মনিবকে প্রভু বলে স্বীকার করতে হবে এবং মনে করতে হবে যে, যিনি আমার মালিক, যিনি আমাকে দৈনন্দিন রুজী দান করেন এবং যিনি আমার হেফাজত ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন তারই অনুগত হওয়া আমার কর্তব্য।
দ্বিতীয়তঃ
মনে বদ্ধমুল ধারণা করা যে, আল্লাহ ছাড়া কেহই আমার অনুগত্য লাভের অধিকারী নয় । সকল সময় মনিবের আনুগত্য করা, তার হুকুম পালন করা, তার অনুবর্তিতা মুহুর্তের জন্যও পরিত্যাগ না করা, মনিবের বিরুদ্ধে অন্য কারো কথা পালন না করা। গোলাম সব সময়ই গোলাম; তার একথা বলার কোন অধিকার নেই যে, আমি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মুনিবের গোলাম আর অন্যান্য সময় আমি তার গোলামী হতে সম্পুর্ন আযাদ ও মুক্ত।
তৃতীয়তঃ
মনিবের প্রতি সম্মান ও সম্ভ্রম প্রদর্শন এবং তার সমীপে আদব রক্ষা করে চলা । আদব ও সম্মান প্রকাশের যে পন্থা মনিব নির্দিষ্ট করে দিবেন তাই অনুসরণ করা।
এই তিনটি প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে যে কাজটি সম্পন্ন হয় আরবী পরিভাষায় তাকেই বলে ইবাদাত। প্রথমত, মনিবের দাসত্ব স্বীকার, দ্বিতীয়ত, মনিবের আনুগত্য এবং তৃতীয়ত, মনিবের সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষা করা।
আল্লাহ বলেছেন,
وَمَا خَلَقۡتُ الۡجِنَّ وَالۡاِنۡسَ اِلَّا لِيَعۡبُدُوۡنِ
এর প্রকৃত মর্ম হচ্ছেঃ আল্লাহ তাআলা জ্বিন ও মানব জাতিকে একমাত্র এ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন যে, তারা কেবল আল্লাহ তাঅলা্রই দাসত্ব করবে, অন্য কারো নয়, কেবল আল্লাহর হুকুম পালন করবে, এছাড়া অন্য কারো হুকুম অনুষরণ করবে না এবং কেবল তারই সামনে সম্মান ও সম্ভ্রম প্রকাশের জন্য মাথা নত করবে, অন্য কারো সামনে নয়। এ তিনটি জিনিসকে আল্লাহ তাআলা বুঝিয়েছেন ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ ইবদাত দ্বারা। আর যে সব আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইবাদতের নির্দেশ দিয়েছেন তার অর্থ এটাই।
আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এবং তার প্রর্ববর্তী আম্বিয়ায়ে কিরামের যাবতীয় শিক্ষার সার কথা হলোঃ "আল্লা তা'অবুদু ইল্লা ইয়্যাহু" অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করো না্।
চলবে
বিষয়: বিবিধ
৮৮০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর ও ভাল হয়েছে ।আল্লাহ আপনাকে এর উত্তম প্রতিদান দান করুন ।আমীন ।
আপনাকেও আল্লাহ অশেষ জাজা দিন ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন