আসুন! আত্মসমালোচনার মাধ্যমেই এই রোজা থেকেই দায়িত্ব পালনে আরো সক্রিয় হই ।
লিখেছেন লিখেছেন আমি মুসাফির ৩০ জুন, ২০১৪, ০২:১২:১৩ দুপুর
আমরা মুসলিম, আমরা আল্লাহ ও তার দীনকে মেনে নিয়েছি, কেবল এটুকু কথা বলেই আমরা দায়িত্বমুক্ত হতে পারব না। বরং আমাদের এ চেতনাও থাকতে হবে যে, যে মুহূর্তে আমরা আল্লাহকে আপন প্রভু এবং তাঁর দীনকে নিজেদের জীবন বিধান বলে মেনে নিয়েছি ঠিক সেই মুহূর্ত থেকে আমাদের উপর এক বিরাট দায়িত্বও এসে পড়েছে। পরন্তু সে দায়িত্ব পালনের পন্থা কি, সে সম্পর্কে আমাদেরকে চিন্তা ভাবনা করতে হবে। কারণ, এতে আমরা ব্যর্থকাম হলে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই ব্যর্থ হয়ে যাবে। এর মন্দ পরিণতি থেকে আমরা কোথাও রেহাই পাবেন না।
এখানে প্রশ্ন আসে,
তাহলে মুসলমানের সে দায়িত্বটা কি?
তা শুধু আল্লাহ ও তাঁর ফিরিশতা, তার কিতাব, তার রাসূল ও পরকালের প্রতি আমাদের ঈমান আনা নয় অথবা তা শুধু আমাদের নামায পড়া, রোযা রাখা, যাকাত দেয়া এবং হজ্জ করার ব্যাপারেও নয়,
কিংবা তা বিবাহ, তালাক, উত্তরাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে কিছুটা ইসলামী বিধান মেনে নেয়াও নয়,
বরং এ সবের উর্ধ্বে এক বিরাট দায়িত্ব আমাদের উপর ন্যস্ত হয়ে থাকে। তা হচ্ছে এই যে, যে মহান সত্যের উপর আমরা ঈমান এনেছি, তার জীবন্ত সাক্ষীরূপে সারা দুনিয়ার সামনে আমাদেরকে দাঁড়াতে হবে।
কুরআন মজীদে ‘মুসলমান’ নামে আমাদেরকে একটি স্বতন্ত্র জাতির মর্যাদা দিয়েছেন,এর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে, আমরা সমস্ত মানুষের সামনে পুরোপুরি সত্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়াব।
وكذلك جعلناكم امة وسطا لتكونوا شهداء على الناس ويكون الرسول عليكم شهيدًا .
“আমি তোমাদেরকে এক মধ্যমপন্থী জাতি বানিয়েছি যাতে করে তোমরা লোকদের জন্যে সাক্ষী হও আর রাসূলও যেন তোমাদের জন্যে সাক্ষী হন।” (সূরাআল বাকারাহ-১৪৩)
জাতি হিসেবে এ হচ্ছে আমাদের আবির্ভাবের একমাত্র উদ্দেশ্য। ।এ উদ্দেশ্য পর্ণ করতে না পারলে আমাদের জীবন বৃথাই শেষ হয়েছে বলতে হবে। এ দায়িত্ব বস্তুত আল্লাহর পক্ষ থেকেই আমাদের উপর অর্পিত হয়েছে।
আল্লাহর হুকুম হচ্ছে-
يايها الذين امنوا كونوا قومين بالقسط شهداءلله
হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর জন্যে সত্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়াও।” (সুরা আন নিসা-১৩৫)
এ নিছক নীতিকথা নয়, বরং এ হচ্ছে কড়া নির্দেশ। আল্লাহ বলেন-
ومن اظلم ممن كتم شهادة عنده من الله .
“যার কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন সাক্ষ্য বর্তমান রয়েছে, সে যদি তা গোপন রাখে, তবে তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে? (সুরা বাকারা-১৪০)
অতঃপর এ দায়িত্ব পালন না করার ভীষণ পরিণতির কথাও আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। আমাদের পূর্বে ইহুদী জাতিকে এ সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল। কিন্তু তারা সত্যের কিছুটা গোপন আর কিছুটা তার বিপরীত সাক্ষ্যদান করেছিল।
এমনিভাবে তারা সামগ্রিকভাবে সত্যের পরিবর্তে বাতিলের সাক্ষীতে পরিণত হয়ে গেল।
ফলে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এক প্রচন্ড আঘাত দিয়ে সরিয়ে দিলেন এবং তাদের অবস্থা এ দাঁড়ালো যে,
وضربت عليهم الذلة والمسكنة وباءو بغضب من الله.
“লাঞ্ছনা- গঞ্জনা, অপমান, অধঃপতন ও দুরবস্থা তাদের উপর চেপে বসলো এবং তারা আল্লাহর গযবে পরিবেষ্টিত হয়ে পড়লো।” (সুরা আল-বাকারা-৬১)
আমরাও যদি এমন আচরন করি আমাদের জন্যও তেমনি আযাব আসবে এটাই স্বাভাবিক।
বিষয়: বিবিধ
১১৬৯ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অশেষ ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন