প্রধানমন্ত্রীর কি হয়েছে ? আস্তিকতা বা নাস্তিকতা ও আমাদের প্রধানমন্ত্রী।
লিখেছেন লিখেছেন তানভীর আরিফ ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৬:১২:৪৮ সন্ধ্যা
প্রধানমন্ত্রীর কি হয়েছে ? আস্তিকতা বা নাস্তিকতা ও আমাদের প্রধানমন্ত্রী।
------------ তানভীর আরিফ ()
আস্তিকতা বা নাস্তিকতা এমনই একটি মনস্তাত্ত্বিক বিষয় যা নিয়ে লিখার সাহস বা দুঃসাহস কোনটিই আমার নেই। কিন্তু কিছু বিষয় আমাকে এমনভাবে ভাবিয়ে তুলেছে যার কারণে এই স্ট্যাটাস লিখতে বাধ্য হলাম। সরকারবিরোধী আন্দোলনের একটি পর্যায়ে কতিপয় বিপথগামী যুবকের কুরআন ও আল্লাহ্র রাসূল সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ লিখা ফেসবুক ও লেখকদের বিভিন্ন ব্লগে প্রকাশ পায়। এই লিখাগুলো তারা বিভিন্ন সময়ে লিখেছেন, যদিও অনেকে এগুলো তাদের লিখা নয় বলে দাবি করেছেন। ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে মুসলিমরা যেমন এই ধরণের লিখার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তেমনি ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী অন্য ধর্মের লোকজনও এই ধরণের লিখার বিপক্ষে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন।
এই ধরণের অবমাননাকর লিখার প্রতিবাদে সারাদেশ যখন অগ্নিগর্ভ রূপ লাভ করে তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেরীতে হলেও এই বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন, যে কমিটিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ হতে সংশ্লিষ্ট বিপথগামী লিখকদের একটি তালিকা বা তথাকথিত নাস্তিকদের একটি তালিকা হস্তান্তর করা হয়। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গঠিত উক্ত কমিঠির সুপারিশের ভিত্তিতে কয়েকজনকে গ্রেফতার ও করা হয়।
অবমাননাকর লিখার প্রতিবাদে যারা আন্দোলন করছিলেন তারা এবং তাদেরকে যারা সমর্থন জানিয়েছেন তাদের কেউ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্তিকতা বিষয়ে কোন মন্তব্য কোথাও প্রকাশ করেননি, অধিকন্তু তাঁর উদ্যোগ কামনা করেছিলেন যাতে কেউ এই ধরণের লিখা লিখে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে না পারে বা দেশকে কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে না পারে।
কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কি হয়েছে জানি না, বিগত কিছুদিন যাবত তিনি নাস্তিকদের ব্যাপারে করা অভিযোগগুলো নিজের কাঁধে নেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং খন্ডনেরও প্রচেস্টা চালাচ্ছেন। এই বিষয়টাতে তিনি এতটাই আবেগপ্রবণ হয়েছেন যে সংসদে, দলীয় সভায়, বিরোধী দলীয় নেত্রীর সাথে ফোনে, এমনকি বিভিন্ন মিডিয়ার সামনে তিনি স্ব-প্রনোদিত হয়ে নামাজ পড়েন কিনা? পড়লে দিনে কয় ওয়াক্ত পড়েন? কুরআন পড়েন কিনা? পড়লে কখন পড়েন? দিন কিভাবে শুরু করেন? ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আমার দুশ্চিন্তার বিষয়টা হল যাকে কেউ নাস্তিক হিসাবে আখ্যায়িত করল না বা যার আস্তিকতার বিষয়ে কোন সন্দেহ প্রকাশ করল না তিনিই বা কেন নিজেকে নাস্তিক নয় বরং উন্নতমানের আস্তিক প্রমাণের চেষ্টায় রত। দেশে হাজারো সমস্যা সমাধানের দিকনির্দেশনা দেওয়ার চাইতে নিজেকে আস্তিক প্রমাণ করা কি কারণে এত জরুরী হয়ে পড়ল? আমি নামাজ পড়ি এই কথা বারবার বলার মাঝে সাধারণ মানুষ নামাজির বৈশিষ্ট্য খুঁজে পায় না। বরং আমি মনে করি নেত্রীর এই বিষয়ে নিজে না বলে যারা নেত্রীকে চিনেন, উনার পরহেজগারি দেখছেন তারা বললেই কি বেশী ভাল হয় না।
“হযরত জুন্দব (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তার কৃতকর্মের সুনামের জন্য লোকসমাজে ইচ্ছাপূর্বক প্রচার করে বেড়ায়, আল্লাহ তাআলাও (কিয়ামতের দিন) তার কৃতকর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের জানিয়ে ও শুনিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ও প্রশংসা লাভের উদ্দেশ্যে কোন সৎ কাজ করবে, আল্লাহও (কিয়ামতের দিন) তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে দেবেন।” (সহীহ বুখারী)
বিষয়: বিবিধ
১০৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন