নারী স্বাধীনতা নাকি ওপেন রিলেশনশিপ!!!
লিখেছেন লিখেছেন তুনীরের শেষ তীর ১৭ মার্চ, ২০১৪, ১১:৪৭:২৩ সকাল
এখনো অনেক মা-শ্বাশুরীরা ঘরের বউ শাড়ী না পড়াটাকে আড়চোখে দেখেন। ঘরের বউ ঘরের বউএর মতই থাকবে,শাড়ী পড়বে,শাড়ীর আঁচল দিয়ে ঘোমটা দিবে,পেট-পিঠ দেখা গেলেও সমস্যা নেই!! সালোয়ার কামিজতো ঘরের মেয়েরা পড়বে বউরা কেন??
এখন যদি বলা হয় শাড়ী ইন্ডিয়ান কালচার যা আমাদের ইসলামি কালচারকে অবশ্যই অবশ্যই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ম্যাচ করেনা।
তো আপনাকে শুনতে হবে, সালোয়ার কামিজও তো আমাদের কালচার না!!
আজব ব্যাপার!! বাঙ্গালীর আসলেই অকাজেও বিতর্ক করতে করতে স্বভাব এমন হয়ে গিয়েছে যে সামান্য বিষয়েই তর্ক করে!!
কোনটা প্রেফারেবল পর্দা মেইন্টেইন করার জন্য তা বোঝার জন্য অবশই খুব বেশি ঘিলুর প্রয়োজন হয়না।
বলার উদ্দেশ্য এইটা ছিলনা। বলতে চেয়েছিলাম আমাদের তথাকথিত নারী স্বাধীনতার পয়েন্টটির কিছু অসারতা নিয়ে যা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে উপলব্ধি করেছি।
সব কিছুর মতই নারী স্বাধীনতার ডেফিনিশনটাকেও ২ ক্যাটেগরীতে চিন্তা করা যায়...মডার্ণ ও ক্লাসিক্যাল বলব নাকি এনালগ ও ডিজিটাল বলব কনফিউজড।
১৪০০ বছর আগের সেই নারী স্বাধিনতার সংজ্ঞা ,
>জীবন্ত কন্যাশিশু কবর দেওয়ার প্রথা রহিত করে তাকে সুমহান মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে,
>প্রথম সন্তা্ন কন্যা হলে জননীর কাছে ফেরেশতার সুসংবাদ প্রাপ্তি,
>তার যথাযথ অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকার জন্য অভিভাবকদের সতর্ক করা হয়েছে,
>মেয়েদের মতামতের গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে যা আগে কখনোই ছিলনা,
>সম্পত্তিতে তার অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে,
>ছেলেদের মতই মেয়েদের জ্ঞান অর্জনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে,
>পর্দার মত সুন্দর বিধানের মাধ্যমে মেয়েদের নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে
জাহিলিয়্যাতের যুগে একটি মেয়ের কোন মুল্যই যেখানে ছিলনা সেখানে ইসলামই তাকে সুমহান মর্যাদায় অধিষ্টিত করেছে,করেছে একটি পরিবারের মধ্যমনি।
অথচ ১৪০০ বছরের আগের সেই অমুল্য বাণীগুলোই ব্যাকডেটেড!!!
নারী স্বাধীনতার আধুনিক সংজ্ঞানুযায়ী,
>একজন মেয়েকে অবশ্যই নাচ-গান পারতে হবে!
>টিশার্ট, টাইট জীন্স কখনো স্লীভলেস টপ্স পড়তে হবে!
>একাধিক ছেলেবন্ধু থাকতে হবে তানাহলেতো লাইফ ইমপসিবল!!
>বন্ধুতো ভাইয়ের মতই !!!তাদের সাথে হাতাহাতি , নাচানাচি করলে প্রবলেম কি??!!
>হাসবেন্ড থাকা স্বত্বেও ফ্রেন্ডের সাথে ঘোরাঘুরি! সমস্যা কি!! বন্ধুইতো!!
>বিভিন্ন দিবসে পেট পিঠ দেখিয়ে বাহারী শাড়ী পড়ে বন্ধুসমাজের মনোরঞ্জন করতে হবে!!
>দেশপ্রেমের লেবাস লাগিয়ে নোংরামিতে লিপ্ত থাকতে হবে!!
১৪০০ বছর আগে ইসলাম নারীর অধিকার আদায়ার্থে পুরুষের মতই নারীর জ্ঞান অর্জনকে বাধ্যতামুলক করেছিল, আর বর্তমান প্রগতিশীল সমাজ নানা প্রলোভন দেখায় জ্ঞান অর্জনের নামে!!
ছোটবেলায় রূপকথার গল্প পড়তে পড়তে রূপকথার রাজকুমারী হওয়ার স্বপ্ন দেখে অনেকেই......আর এখন চাকচিক্যময় বিজ্ঞাপন এর মডেলদের চোখ ঝলসানো গেট-আপ(কয়েক লেয়ার মেক-আপ!!!!) দেখতে দেখতে সারাদিন মাথায় ঘোরে মডেল হবার স্বপ্ন। এসবই আধুনিক নারীবাদীদের সাফল্য যারা ঘর থেকে মেয়েদের বের করে এনে অসম্মানের জায়গায় দাঁড় করিয়েছে।
গাছের ফুল আসলে গাছেই মানায়। যতই কারুকার্যমন্ডিত টবেই তা রাখা হোকনা কেন তা সেই সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে।
তুমি টপ্স জীন্স এর ডোন্ট কেয়ার মেন্টালিটি শো করো যখন কেউ বেহায়া বলে, তবে পর্দা করলে কেউ আনকালচার্ড বললে তখন কেন ডোন্ট কেয়ার মেন্টালিটি শো করতে পারনা!!!
ভদ্র মেয়েরা বাসাতেই টাইট জীন্স, টপ্স,টিশার্ট পড়তে লজ্জা পায় বাইরেতো দূরের কথা!! যে জিনিস যেখানে সেখানে পাওয়া যায় সে জিনিসের মুল্য তত কম। আধুনিক নারী স্বাধীনতা মেয়েদের পথের পণ্য বানিয়ে ফেলতে চায়!!
১৪০০ বছর আগের নারী স্বাধীনতা যেকোন মুল্যে নারীদের সতিত্ব রক্ষায় জোরদার করেছে আর নারী স্বাধীনতা যেকোন মুল্যেই নারীর সতিত্ব বিলীন করতে চায়!!!
আজকের তথাকথিত নারী স্বাধীনতা টার্মটাকে আমার কাছে ওপেন রিলেশনশিপের মতই মনে হয়...... যেখানে নাই কোন পার্সোনালিটি, নাই কোন স্বকীয়তা!!
নোংরামি কখনোই আধুনিক হতে পারেনা। বরং ইসলামই সুন্দর,ইসলামই আধুনিক।
হাতের আঙ্গুল ৫টি সমান নয়। বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ, বিলিয়ন বিলিয়ন চিন্তা ভাবনা... তারউপর শয়তানের প্ররোচনা...। কয়জনকে খুশি করতে যাবেন? তারচেয়ে বরং আপনার মুনিবকে খুশি করাটাই যথার্থ নয় কি???
বিষয়: বিবিধ
১৪০৭ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমরা সর্বক্ষেত্রেই যাতে ভুগছি তা হলো আত্মপরিচয়ের সংকট। আর যার সৃষ্টি করেছেন তাথকথিত বৈদিশিক বৃত্তিভোগি বুদ্ধিজিবি আর অর্ধশিক্ষিতি স্বদেশি হুজুর ও পির শ্রেনি।
মাশাল্লাহ সুন্দর পোষ্ট ভালো লাগলো।
(বাস্তব ঘটনা আমান বাড়ির পাশেই)
জাজাকাল্লা সুন্দর যুক্তিগত উপস্থাপনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন