মনটা কি আর বোবা পাখী সয়ে যাবে সব, এইবার তুমি বন্ধ কর নিষ্ঠুর উৎসব
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মাদ নেছার উদ্দিন ২১ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৫০:৪৫ সকাল
অতীত নিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে ছিলাম। বিশেষ করে একজন মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিল তার কথা বার বার মনে পড়ছিল। এই মেয়েটিকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম। আম্মুকে বলেছিলাম, বিয়ে যদি করতেই হয় এই মেয়েটিকেই বিয়েই করবো। দ্বিমত করেননি আম্মু। আম্মু বলেছিলেন, আমার ছেলের পছন্দই আমার পছন্দ। সেই মেয়েটি একসময় চলে গেলো আমার কাছ থেকে। ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি বার বার, কিন্তু, যে চলে গেছে তাকে তো আর ফিরে আনা সহজ নয়। এই মেয়েটির কথা মনে পড়তেই পড়ে গেলো স্বপ্ন ভাঙ্গার কথা। আনমনে লাগিয়ে দিলাম আসিফের একটা গান। আমি অতীতের কষ্ট নিয়ে চিন্তিত থাকলে আসিফ কিংবা মনির খানের গান শুনি। তখনো এর ব্যাতিক্রম হয়নি। চালু হয়েছে আসিফের সেই গান জ্বলে আগুন জ্বলে বুকে জ্বলছে আমার মন, ভালোবাসায় অগ্নিদগ্ধ তোমারি কারন। গানের এই কলিটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিলাম। ফ্রেন্ডসরা এইটা লাইকের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ রাখছে। আমি কোন জনপ্রিয় ফেসবুকার নয়। তাই ১০/১২ টা লাইকের মাধ্যমে শেষ। এরপরের কলিটি ছিল “মনটা কি আর বোবা পাখী সয়ে যাবে সব, এইবার তুমি বন্ধ করো এই নিষ্ঠুর উৎসব” আমি এই কলিটি আনমনেই লিখেছিলাম। কিন্তু, গানের এই কলিটি ছিল দেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিতপূর্ণ। পাঠকদের কমেন্টে এইটা স্পষ্ট। তাদের একজন কমেন্ট করলো, মনটা বোবা পাথরের চাইতেও শক্ত, তা না হলে সরকারের এতো নির্যাতন সহ্য করেও কিভাবে বেছে আছি। অন্যজন কমেন্ট করলো মনটাকে বোবা পাথরের মতই শক্ত করে রাখতে হবে। এখন আমাদের সামনে আমাদের ভাইদের নির্যাতন করছে, কিন্তু, আমি যখন এর প্রতিবাদ করবো তখন আমাকেও এই নির্যাতনের শিকার হতে হবে। নিজেকে তখন খুবই স্বার্থপর মনে হতে লাগলো। কিন্তু, কিছুই করার নাই। কলম ধরার সাহস হচ্ছিলো না। না জানি এই কলম ধরার কারনে রেজিস্টার্ড কিলারদের হাতে কখন খুন হতে হয়। না জানি কখন এই কলম ধরার কারনে রেজিস্টার্ড ক্রিমিনালদের অকথ্য নির্যাতনের শিকার হতে হয় আমাকে। আর আমার আম্মুর নিষেধ অনলাইনে বা মাঠে কোথাও রাজনীতি করা যাবে না। কিন্তু, কত সহ্য করা যায়। প্রতিদিন উঠেই দেখি কোথাও আমার ভাইয়ের লাশ উদ্ধার, কোথাও আমার ভাই রেজিস্টার্ড কিলারদের ক্রশফায়ারে জীবন দিয়েছে, কোথাও বা আমার ভাই অপহরণের কয়েকদিন পর তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই তালিকায় বাদ নেই অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রও। আজ সকালে টিভিতে দেখলাম এক মহিলা তার ঘরের মুরগির ডিম পর্যন্ত ভেঙ্গে ফেলেছে লাইসেন্সকৃত সন্ত্রাসীরা। তাই তিনি কাদছেন। এই বিষয়ে পুলিশ তথা লাইসেন্সপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীদের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি টিভি ক্যামেরার সামনে কথা বলেননি। তিনি কথা বলেননি। তিনি কথা বলবেন কি করে, কারন, তিনি এইসব সহ আরো শত শত অন্যায়ের নেতৃত্ব দিছেন। তাই আজ কলম ধরলাম, কারন এই নির্যাতন একদিন আমার উপরও আসতে পারে। আমার লেখার কারনে আমি লাইসেন্সপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের শিকার হবো জেনেও আজ ব্লগে আমার নিজ নামে লিখাটা লিখে গেলাম। আমি আজকে লেখা শুরু করলাম এবং যতদিন সম্ভব লিখে যাবো। আর পাঠকরা যখন দেখবেন ১৫দিনের মধ্যে ব্লগে আমার কোন লেখা নেই তখন আপনারা নিশ্চিত হয়ে যাবেন আমি লাইসেন্সকৃত সন্ত্রাসী বাহিনী ফুলিস, র্যাব, কিংবা ভারতীয় বিজিবি কতৃক অকথ্য নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আমি এই লেখার মাধ্যমে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে একটা অনুরোধ করছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা জানি আপনি এই দেশে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রাজনীতি করেন। আপনি এই দেশের জনগনের স্বার্থে কিংবা এই দেশের স্বার্থে রাজনীতি করেন না। তাই আপনি ভারত সেনা এনে এবং দেশের প্রশাসনে আপনার পছন্দকৃত লোক দিয়ে লাইসেন্সকৃত সন্ত্রাসী দিয়ে আপনার বিরোধী লোকদের হত্যা করছে ধীরে ধীরে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এইভাবে আমরা প্রতিদিন লাশের খবর শুনতে চাই না। আপনি যখন আপনার মতের বিরোধী সবাইকে মেরে ফেলবেন। তবে সবাইকে একসাথে মারুন। গনহত্যা চালান। আপনার পিতা ত্রিশ হাজার হত্যা করেছে, আপনি ত্রিশ লাখ হত্যা করুন। সেই তালিকায় নিয়ে নিন আমাদেরও। আপনার বাকশাল কায়েমের স্বপ্ন যেমনি পূর্ণ হবে, তেমনি এই দেশে আপনার দুর্নীতির বিরোধিতা করার মত আর কেউ থাকবে না। আর একটা পরামর্শ দিচ্ছি, আপনার বাবাকে যারা খুন করেছে তারা আপনার বাবার কাছের লোকজন, আপনার বাবার সাথে সন্ধ্যায় যারা একমত ছিল, রাতের মধ্যাহ্নে তারাই আপনার বাবার খুনি। এখন যাদেরকে আপনার পাশে রাখছেন, আল্লাহ না করুক কয়দিন পর তারা না জানি আপনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। আপনার কাছের কয়েকজন বাম নেতা সম্পর্কে আপনার বাবা যদি আপনাকে কোন প্রশ্ন করে আমার মনে হচ্ছে না আপনি সদুত্তর দিতে পারবেন।
বিষয়: রাজনীতি
১২৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন