জাতীয় উন্নতি হয় কিসে?

লিখেছেন লিখেছেন মনির হোসেন ০১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৫৭:২৬ রাত

বাংলাদেশ নামক সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যমলা অপরূপ সোন্দর্যে ভরা এই দেশটি ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।আমার প্রশ্ন চিন্তাশীল ও বিবেকবান নাগরিকদের কাছে স্বাধীনতার এই ৪২ বছর পরে এসেও আমরা কি সমৃদ্ধময়, সুরক্ষিত, নিজস্ব কৃষ্টি-কালচার ও সার্বভৌম বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে পেরেছি? এখনো প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জনেরও অধিক লোক মারা যায়। সরকারী হিসেব মতে সামাজিক দ্বন্দ ও রাজনৈতিক সংঘর্ষে মানুষ মারা যাচ্ছে গড়ে ১২ থেকে ১৫ জন। নারী ধর্ষন, নারী নির্যাতন এদেশের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। এদেশের হাজার হাজার ছাত্র Honours ও Masters পাশ করে বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে দিনযাপন করছে। এখনো মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য নিরাপদে করতে পারছে না।যত্রতত্র চাঁদাবাজ, খুন আর সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে এদেশের সাধারণ জনগণ। ৭১ এর পূর্বে যদি এই ঘটনাগুলো ঘটত তখন না হয় পাকিস্তানকে দোষারোপ করা যেত। এখন কাকে দোষব? স্বাভাবিকভাবে কি রাষ্ট্রের দায়িত্বে যারা ছিল তারা এই অন্যায়-অবিচারের জন্য দায়ী নয়। মালয়শিয়া আমাদের থেকে ১০ বছর পরে স্বাধীনতা লাভ করে আমাদের থেকে কম প্রাকৃতিক সম্পদ পেয়েও, পৃথিবীর একটি সমৃদ্ধময় ও সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছে তাদের নেতৃবৃন্দ। আমাদের নেতৃবৃন্দদের তাদের কাজের সমালোচনা বা ব্যর্থতাগুলোর কথা বললেই ৭১ এর পরাজিত (যদিও তারা কখনো এককভাবে ক্ষমতায় আসেনি) শক্তির জন্য আমরা পারছি না। অথবা তাদের হত্যা করে জাতির কলংকমুক্ত করতে পারলেই এদশের উন্নতি হয়ে যাবে।আজও ৪২ বছরের (যদিও ৯০% মানুষ এখন আর বেঁচে নেই)পূর্বের কথা বলে জাতিকে দ্বিখন্ডিত করে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দেওয়া হচ্ছে।এটা কি দেশপ্রেমের নিদর্শন। নাকি জাতিকে ধ্বংসের এক গভীর ষড়যন্ত্র। পৃথিবীর এমন একটি দেশ কি পাওয়া যাবে, যেখানে দেশ ভাঙ্গনের ব্যাপারে অথবা যুদ্ধের ব্যপারে সমগ্র দেশের মানুষ এক হতে পেরেছে? চিন্তাগত এ বিভেদের পরেও, তারা কি উন্নতি লাভ করে নি? বাবার পাঁচ ছেলের প্রত্যেকে বাবার সিদ্ধান্ধে একমত নাও হতে পারে, তাই বলে কি বাবার প্রতি সন্তানদের ভালবাসা নেই। তারা কি বাবার শত্রু হয়ে গিয়েছে? তারা কি বাবাকে ভালবাসে না? দেশকে যদি বাবা ধরা হয় তাহলে এদেশের জনগণ তার সন্তানতুল্য।তাদের মধ্যেও মতামতের ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু প্রত্যেকেই তার দেশকে ভালবাসে।তাই জাতীয় স্বার্থে, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে, সার্বভৌম, সমৃদ্ধিময় ও শক্তিশালী দেশ গঠনের স্বার্থে আসুন আমরা দলীয় স্বার্থে উঠে দেশের কল্যানে নিজকে ও অন্যকে ভালবাসি।সবাইকে দেশের তরে কাজ করার সুযোগ করে দেই। তাহলেই জাতীর উন্নতি হবে। “একতাই বল” এই প্রবাদ বাক্যের বাস্তব প্রতিফলন তখনই ঘটবে।

বিষয়: রাজনীতি

১৫২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File