আসলে আমরা কি চাই?, কেন চাই?, আমরা কি চেতনাবোধ শুন্য হয়ে গেছি?... পর্ব-০১

লিখেছেন লিখেছেন সোহেল তানভীর ০২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:১৩:১১ রাত

আসলে আমরা কি চাই?, কেন চাই?, আমরা কি চেতনাবোধ শুন্য হয়ে গেছি?...

পর্ব-০১

১৯৯৬তে আওয়ামীলীগ কি করলো ইসলাম ধর্মের থেকে ফতুয়া নিষিদ্ধ করলো। নাস্তিক মুরতাদদের বাড়াবাড়ি শুরু হলো মাত্রাতিরিক্ত। জনগণ বলল এই আওয়ামীলীগকে দিয়ে দেশ এবং ইসলামের শান্তি আসতে পারে না। তাহলে কি করতে হবে? তখন বিএনপি-জামাতের সাথে সুর মিলিয়ে কিছু আলেম-উলামারা পর্যন্ত বলে উঠলো আজ মন্দের ভালো বেছে নিতে হবে এবং ইসলামের স্বপক্ষের শক্তিকে কোলে তুলে নিতে হবে। আসুন আমরা গ্রহন করে নেই বিএনপি-জামাত কে। কারন কি? তারা খুব খারাপ হলেও তারা মন্দের ভালো এবং তারা ইসলামের স্বপক্ষের শক্তি।

নিয়ে আসা হলো ৯১থেকে৯৬ সাল পর্যন্ত দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ, সেই ৯৬ এর নির্বাচনে ফেলুয়া বেগম খালেদা জিয়াকে।

এবার আসলো দেশে শান্তি। নিষিদ্ধ ফতুয়ার ব্যাপারে কোনো ভ্রুক্ষেপই করা হলোনা ২০০১ এর নতুন সরকারের মাধ্যমে। কি হলো?

এরপর আন্দোলন শুরু হলো তাসলিমা নাসরিনের নাস্তিকতার বিরুদ্ধে। বিএনপি-জামাত সরকারের সময় তাসলিমা নাসরিন বলেছিল ঃ কুরআন শরিফের সংশোধন করা দরকার। কুরআন শরিফের মধ্যে ভুল আছে। তার প্রতিবাদ যখন এদেশের জনগন করেছে, তখন জনগনের উপরে গুলি চালিয়ে আরমান নামের একজনকে হত্যা করে সেই বিএনপি-জামাত সরকার। এই তাসলিমা নাসরিনকে বিএনপি-জামাতের এক মন্ত্রীর বাড়িতে রেখে গোপনীয়তার সাথে কোর্টে হাজির করে নাটকীয়ভাবে জামিনের মাধ্যমে বিদেশ পাঠিয়েছিলো সেই বিএনপি-জামাত সরকার।

সেই সরকারের সময় তাদের তথ্যমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার স্ত্রী ব্যারিস্টার সিগমা হুদার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করেছিল। সেই মিছিলের শ্লোগান ছিল "দেহ আমার সিদ্ধান্ত আমার" (নাউজুবিল্লাহ)। এটা কোনো পতিতা ছাড়া বলতে পারে।

তথ্য মন্ত্রীর স্ত্রীর হাজার হাজার মেয়েলোক নিয়ে মিছিল করে কি প্রমান করেনা যে বিএনপি চাই এদেশে হারামজাদা তৈরি হোক। তা নাহলে কৈ সেই মিছিলে কোনো বাধা এসেছিলোনা কেন?

কিছু কিছু আহাম্মক মুসলমান আছে যারা বলে যে, বিএনপি ভালো। বিএনপি বিসমিল্লাহ বলে আর আওয়ামীলীগ বিসমিল্লাহ বলেনা।

আসুন আপনাদের কে বলি। মনে করেন দুইজন ব্লোক খায়। একজন বিসমিল্লাহ বলে খায় আর একজন বিসমিল্লাহ না বলে মদ খায়। আপনারা বলেন গুনাহ কার বেশি?

যে বিসমিল্লাহ বলে মদ খাই সে না? আরে সেতো কাফের হয়ে যায়।

এখন আপনারা বলুন বিএনপি-জামাত ২০০১-২০০৬ ইসলামের পক্ষে কোনো আইন পাশ করেছে?

বরং আওয়ামীলীগ বাংলাদেশের মানুষদের ধোঁকা দেবার জন্য তাদের ১৯৯৬-২০০১ এর শেষ সময়ে মদ এবং জুয়া বন্ধের বিল এনেছিল।

আর বিএনপি-জামাতের ২০০১ এর শুরুতে তারা এই বিলকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো।

আওয়ামীলীগ যে মদ জুয়া বন্ধ নিয়ে ধোঁকা বাজি কিভাবে করলো আপনাদেরকে বলি, তারা আবার ক্ষমতায় এসেও কিন্তু এই বিল পাশ করে নাই।

বিএনপি-জামাতের সময় আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া বলেছিলেন, আরবি শিক্ষার কোনো প্রয়োজন এদেশে নাই।

আপনারা বলুন আরবি ছাড়া কোনো মুসলমান মুসলমান থাকতে পারে?

এই নাজমুল হুদা আমেরিকায় গিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশে মৌলবাদীদের কোনো স্থান নাই।

তখন সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিলো, তাহলে আপনারা যে মৌলবাদীদের সাথে নিয়ে জোট করেছেন।

উত্তরে নাজমুল হুদা বলেছিলেন, এটা আমাদের রাজনৈতিক কৌশল।

স্বয়ং খালেদা জিয়া বাম পন্থিদের এক মিটিং -এ বলেছিলেন, মৌলবাদীদের এদেশে রাখা হবেনা। মৌলবাদীদের শায়েস্তা করা হবে।

এখন দেখেন ইসলামের মূল হলঃ কুরআন এবং হাদিস। যারা কুরআন এবং হাদিস মানেনা তারা কি মুসলমান থাকতে পারে?

এই বিএনপি-জামাত সরকার মদে পারমিট দিয়ে প্রতিটি দোকানে দোকানে মদ বেচা জায়েজ করেছিলো। যার দ্বারা ঘরে জারজ সন্তান তৈরি করার রাস্তা তৈরি হয়েছিলো হয়েছিলো।

কৈ জামাত ইসলাম নাকি ইসলামী দল, ইসলামের স্বার্থেই ইসলামী রাজনীতি করে তো কোথাই তাদের অবস্থান ছিলো মদে পারমিট দেবার সময়? কোথাই ছিলো তাসলিমা নাসরিনের বক্তব্যের সময়। ও জাঁতি তোমরা এমন এক জাঁতি হয়ে গেছো, তোমরা ধোঁকা খাও সবার থেকে একবার প্রকাশ্য নাস্তিক-মুরতাদদের থেকে। আবার খাও ইসলামের নামে আসা ইসলামের স্বপক্ষের শক্তি যাদের দ্বারা ইসলাম ধ্বংস হয় তাদের দ্বারা।

আর আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতো সকলেরই জানা। আবারও শুনি একই সুর ঠেকাও। কাদের ঠেকাবো নাস্তিক-বেইমনা ও তাদের দোষর আওয়ামিলীগকে।

কেনো?

- আরেকবার ক্ষমতায় আসলে তারা ইসলামকে রাখবে না, দেশকে ধ্বংস করে ফেলবে তাই। এদেশ থেকে ইসলাম নিঃশেষ হয়ে যাবে তাই।

কিন্তু এসব চিন্তাতো আগেও করেছি। ফলাফল কি হয়েছে? সবাই আমাদের পেটে, আমাদের চাওয়া-পাওয়ার মুখে ছাই ঢেলে দিয়েছে।

এখন এদেশ থেকে শুধু আওয়ামীলীগ নয়, বরং সাথে সাথে বিএনপি-জামাতকেও আমাদের সবার থেকেই প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

হায়রে বাংলাদেশের মানুষ বোকা মানুষেরা বার বার এই দুই রাজনৈতিক দলের গোলামী করবি আর তাদের ধোঁকাই পড়বি। আই এবার এইসব ধোঁকাবাজদের খপ্পর থেকে দেশ, ইসলাম, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কে রক্ষা করি।

আসুন বিকল্প চিন্তা করি, কোন জিনিস শান্তি দিতে পারে, কিসের মাধ্যমে শান্তি আসতে পারে?

বিষয়: বিবিধ

১১৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File