শুয়োরের বাচ্চা ষাঁড় জাফ্রিকবাল
লিখেছেন লিখেছেন শিকারিমন ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০২:৫৫:৪২ দুপুর
রাত এখনো ততো তীব্র হয়নি।কিন্তু এখানে আজকের রাতের তীব্রতা যেন খুব তাড়াতাড়ি এসে গেলো। চারদিকে শুনশান নীরবতা। ছোট্ট এই টিলার ঠিক উপরিভাগে তাদের থাকার ঘরটি । ষাঁড় জাফ্রিকবাল স্যারের কাঁচাঘুমটি ভেঙ্গে যায় কি এক খোয়াব দেখে । ধরফর করে শোয়া থেকে বসে পড়লো সে । অন্ধকারে হাতড়িয়ে দেখে পাশে স্ত্রী এখনো ঘুমুচ্ছে মরার মতো পড়ে। নাহ বেচারিকে ডাকার দরকার নেই। ঘুমাক তার মতো করে। শরীরে হালকা কাঁপুনি এসে লাগছে, ঠিক বুজতে পারছেনা ভয়ে না ঠান্ডায়। তাকিয়ে দেখে জানালার দিকে , আজো ভুল করে জানালা বন্ধ করেনি তার স্ত্রী শারমিন । কাঁপা শরীর নিয়ে এগিয়ে যায় জানালা বন্ধ করতে। কি আজব অঝোর বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে। আজকের দিন দেখেই মনেই হয়নি রাতের বেলায় এমন বৃষ্টি নামবে। জাফ্রিকবাল স্যারের বৃষ্টি দেখলেই মনে পড়ে যায় ওই দিনটির কথা। দুষ্ট ছেলেগুলো কেমন কাঁকভেজা করে ছেড়েছিলো তাকে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে। ধীরে পায়ে এগিয়ে ডাইনিং টেবিলের দিকে যায় সে।গলাটা শুকিয়ে গেছে ,একটু পানিখেয়ে গলা ভিজিয়ে নেবে।
ডকডক করে কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে নিলো।
চেয়ারে বসে ভাবতে লাগলো , এ কেমন স্বপ্ন দেখলো। লম্বা জুব্বা গায়ে পরা লোকগুলো দেখেই সে দৌঁড়াতে লাগলো। দৌড়াচ্ছে তো দৌঁড়াচ্ছে পিছনে তাকানোর ফুসরত নেই। আসলে লোকগুলো কি তাকে দৌড়াচ্ছে। না কি মনের ভয়ে সে পালাচ্ছে। সেটি ভাবার সময় এখন নয়। ওদের সামনে থেকে পালিয়ে বাচঁলেই হয়।জাফ্রিকবাল দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে পা পিছলে গড়িয়ে পড়লো একটা ময়লাভর্তি নর্দমায়। ময়লার বিশ্রী গন্ধে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। নর্দমার ময়লা কীট গুলো তার শরীর বেয়ে নাকমুখ দিয়ে শরীরের ভেতর ডুকে পড়ছে।কিছুই করার নাই বাঁচতে হবে। হঠাৎ চোখে পড়ল নর্দমার ময়লার ভিতর তার পাশেই থেকেই কিছু ভয়ানক বিশ্রী বিদকুটে কালো কুচকুচে প্রাণী এগিয়ে আসছে তার দিকে । হায় এখন কি হবে ,কোথায় এসে পড়লাম। কিভাবে বাঁচবো। মাথায় একটা বুদ্ধি এসে গেলো জাফ্রিকবাল স্যারের। এখন তাকে বিশ্রী প্রাণীগুলোর মতো হয়ে যেতে হবে।পা এবং হাত গুলোকে ভাঁজ করে উপুড় হয়ে গেলো জাফ্রিকবাল স্যার। ওদের মতো করে চারপায়ে হাঁটতে হাঁটতে প্রাণী গুলোর মাঝে মিশে গেলো। প্রাণীগুলোর মতকরে পা দিয়ে চেপে ধরে নর্দমার ভিতর ময়লা গোগ্রাসে গিলতে লাগলো।নর্দমার প্রাণীগুলো বুজতেই পারলোনা তাদের মাঝে এক মানুষরুপী প্রাণী ওদের পালে মিশে গেলো। প্রাণীগুলোর মতো গোগ্রাসে ময়লা গিলছে তো গিলছে, হঠাৎ গলায় কিছু একটা আটকে যাওয়ায় ঘুম ভেঙে গেলো জাফ্রিকবাল স্যারের। ঘুম ভেঙে দেখে বালিশের কভার আর তুলোয় তার মুখ ভর্তি হয়ে আছে। এ কেমন স্বপ্ন দেখলো। চেয়ারে বসে বসে সেটিই ভাবছে। এ কেমন বিশ্রী প্রাণীর বেশ ধরতে হলো তাকে। ভাবতেই শরীর রিরি করে উঠছে তার। দুটি হাত তুলে দেখে না ঠিকই তো আছে। কোথায় সে চারপায়া প্রাণী। কিছক্ষন আগের স্বপ্ন আর এখনকার তাকে মিলাতে পারছেনা। এগিয়ে যায় আয়নার দিকে , বিশ্বাস হচ্ছেনা নিজেকে। আয়নায় তাকে মিলাতে হবে। একই ঠিকই তো আছে। সেই সজারুর কাঁটার মতো নাকের উপরিভাগে একগুচ্ছ কেশরাজি।ঠিকতো আগের ষাঁড়ই আছি। নাহ হঠাৎ করে কিছুক্ষন আগে বন্ধ করে দেয়া জানালাটা একটানে খুলে গেলো। এক উদ্ভট তামাকের গন্ধে ভরে গেলো তার ঘরটা।পাইপ টানতে টানতে আবছা আলোয় তার পাশে এসে দাঁড়ালো এক আদিম মূর্তি। জাফ্রিকবাল স্যার তাকালো মুর্তিটির দিকে। চেনা চেনা লাগছে। মূর্তিটি তার দিকে মিটমিট হাসছে। হ্যাঁ আপনাকে আমি চিনতে পেরেছি, আপনিতো আমাদের নেশন পাপা।
ঠিকই ধরেছো। পাপা আপনি এতো রাতে এখানে। ওহে বৎস আমি সব দেখেছি উপর থেকে। দেখেছি তোমার স্বপ্নের পেরেশানি। জি পাপা এ কেমন বিশ্রী প্রাণীর প্রতিচ্ছবি দেখলাম আমার মাঝে। প্লিজ পাপা বলুন কি এই বিশ্রী প্রাণী। হুম বৎস তাকাও আবার আয়নার দিকে। জাফ্রিকবাল আবার তাকায় আয়নার দিকে। ওহ ইয়েস পাপা এই সেই প্রাণী। যার অবয়ব দেখেছি আমি আমার মাঝে। দয়া করে বলুন পাপা এই প্রাণীর অবয়ব যদি আমি হই, তাহলে সত্যিকারের আমি টা কে ??????? নেশন পাপা মুখভর্তি ধোঁয়া ছেড়ে গম্ভীর স্বরে বললো
জাফ্রিকবাল তুমি একটা শুয়োরের বাচ্চা।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ এদেরকে ঠিল দিতেছেন । শাস্তি যত পরে আসবে তা তত ভয়ংকর ও দীর্ঘস্থায়ী হবে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন