ইসলামে 'জ্ঞান' দর্শন
লিখেছেন লিখেছেন তালিমুল ইলম ২১ নভেম্বর, ২০১৩, ০৬:৫৬:১৪ সকাল
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানবজাতিকে এক বিশেষ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। আর সে বিশেষ উদ্দেশ্য পূরণের নিমিত্তে মানুষকে একদিকে প্রদান করেছেন বিশেষ সম্মান, অন্যদিকে, অর্পণ করেছেন মহান দায়িত্ব ও কর্তব্য। আল-কোর’আনের ঘোষণানুযায়ী সৃষ্টজগতের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানুষ হলো আল্লাহর-প্রতিনিধি (খলিফাতুল্লাহ); আবার, আল্লাহর সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সে হলো আল্লাহর বান্দা (’আব্দুল্লাহ)। মানুষ এই যে দ্বি-মাত্রিক সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ তা তার মধ্যে প্রদত্ত স্বাধীন-ইচ্ছার সচেতন চর্চার মাধ্যমেই কেবল অটুট রাখা সম্ভব। মানুষ যদি সচেতনভাবে তার স্বাধীন-ইচ্ছা তার প্রতিপালকের ইচ্ছার নিকট সমর্পণ না করে, তবে এর অর্থ দাঁড়ায়, সে আল্লাহকে তার প্রতিপালক/প্রভু হিসাবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে; ফলে, একদিকে সে নিজেকে আল্লাহর বান্দা হিসাবে যেমন দাবী করতে পারে না, অন্যদিকে, তেমনি পারে না সৃষ্টজগতের প্রতি আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে তার দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করতে।
মানুষ দৈহিকভাবে সৃষ্টজগতের সাথে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। সৃষ্টজগত যেমন বস্তু দ্বারা সৃষ্ট, নিত্য পরিবর্তন ও ধ্বংসশীল; তেমনি তার দেহও। বস্তু এর স্বাভাবিক প্রবণতাকে অনুসরণের মাধ্যমে মানুষের দেহকে পরিচালিত করতে চায়। কিন্তু মানুষের এই বস্তুগত দৈহিক অবয়বের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে আছে এক ঐশী, অপরিবর্তনশীল, অসৃষ্ট-অনন্ত আত্মা। এ আত্মার উৎস ঐশী হওয়ায় এটি স্বাভাবিকভাবেই ধাবিত হতে চায় এর ঐশী উৎসের দিকে। আর তাই এ আত্মার সুষ্ঠু পরিচর্যা ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমে মানুষের পক্ষে আল্লাহর সাথে প্রভু-বান্দার নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ থাকার ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব। আত্মার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি স্বাধীন-ইচ্ছা দ্বারা সুশোভিত। অন্যদিকে, আত্মা এক অনন্ত সম্ভাবনাকেও ধারণ করে। আত্মা তার স্বাধীন-ইচ্ছা চর্চা ও অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের অন্তর্নিহিত অনন্ত সম্ভাবনাকে বাস্তবতা প্রদানের মাধ্যমে আত্ম-অনুধাবনে সক্ষম হয়ে উঠে। আবার, বস্তুগত দেহের পুষ্টির উৎস যেমন বস্তু, তেমনি এ অ-দেহি আত্মার পুষ্টির উৎস হলো ঐশী। তাই মানবাত্মা যখন স্বাধীন-ইচ্ছা প্রয়োগের মাধ্যমে ঐশী উৎসের সাথে প্রতিপালক/প্রভু-বান্দার বন্ধনে আবদ্ধ থেকে আধ্যাত্মিকভাবে পুষ্টিপ্রাপ্ত হয়, কেবল তখনই এরূপ আত্মা বিশ্বজগতে আল্লাহর প্রতিনিধিত্বের বিশেষ মর্যাদা অর্জন করতে পারে এবং এ বিশেষ মর্যাদা হতে যৌক্তিকভাবে অনুসৃত দায়িত্ব-কর্তব্য পালনেও হয়ে উঠে সক্ষম। যদি এর বিপরীতটি ঘটে; অর্থাৎ মানবাত্মা যদি এর স্বাধীন-ইচ্ছা প্রয়োগ করে এর ঐশী উৎস হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে; তবে ধীরে ধীরে তার বস্তুগত দেহ তার আত্মিক শক্তিকে শুষে নেয়। ফলে, এরূপ আত্মা ধ্বংসশীল বস্তুর ন্যায় ধ্বংসও হয়ে যেতে পারে না, কেননা এটি অনন্ত, আবার ঐশী উৎস হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ফলে পুষ্টিপ্রাপ্ত হয়ে পরিপূর্ণতার দিকে ধাবিতও হতে পারে না। মানবাত্মার এমন পরিণতিকেই আল-কোর’আন জাহান্নাম হিসাবে ঘোষণা করে। আল-কোর’আনের ভাষায়:
فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ
“তাই ভয় কর সে আগুনকে যে আগুনের জ্বালানী হবে মানুষ এবং পাথর; যা প্রজ্জ্বলিত করা হয়েছে অবিশ্বাসীদের জন্য।”
আল-কোর’আন মানুষকে এ জগতে আল্লাহর প্রতিনিধি হওয়ার যে সাধারণ ধারণা ঘোষণা করে তা প্রতিটি মানুষের জন্য একটি প্রস্তাব হিসাবেই উপস্থাপন করে মাত্র। অর্থাৎ মানব-গর্ভে জন্ম হলেই মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি হয়ে যায় না, বরং এ জগতে মানুষের পক্ষে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব এমন এক মর্যাদা, যা অর্জনের বিষয়; প্রদত্ত নয়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে মানুষ যখন এ জগতে তার প্রকৃত অবস্থান, তার উৎস, স্থান-কাল-বস্তুর এ চতুর্মাত্রিক জগতে তার অবস্থানের উদ্দেশ্য, তার দায়িত্ব-কর্তব্য, তার স্বাধীন-ইচ্ছা হতে উদ্ভূত কর্মের চূড়ান্ত পরিণতি; মানুষ, এ বিশ্বজগত এবং উভয়ের স্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এবং এই তিনের মধ্যেকার পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সর্বোপরি মানুষ ও এ বিশ্বজগতের চূড়ান্ত পরিণতি ও গন্তব্য ইত্যাদি সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠে; কেবল তখনই সে হয় প্রকৃত জ্ঞানী। আল-কোর’আন এ সমস্ত জ্ঞানীব্যক্তিকে দৃষ্টিসম্পন্ন বলে অভিহিত করে; অন্যদিকে, যারা এ জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ তাদের তুলনা করে অন্ধের সাথে। আল-কোর’আনের ভাষায় :
هَلْ يَسْتَوِي الأعْمَى وَالْبَصِيرُ أَفَلا تَتَفَكَّرُونَ
“যারা অন্ধ তারা কি দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তির সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা-ভাবনা কর না?”
আবার আল-কোর’আনের বহুস্থানে এ জ্ঞানকে মানুষের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে বিভাজন সৃষ্টিকারী এমন এক চৈতন্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে যা অলঙ্ঘনীয়। আল-কোর’আনের ভাষায় :
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لا يَعْلَمُونَ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الألْبَابِ
“আপনি বলুনতো : যাঁরা জ্ঞানী এবং যারা অজ্ঞ তারা উভয়ে কি সমান হতে পারে? নিশ্চয় যাঁরা সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী কেবল তারাই উপদেশ গ্রহণ করে।”
এছাড়াও আল-কোর’আন ঘোষণা করে: যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে, তারা এমন কিছু প্রদত্ত হয়েছে যা সমাজের বৃহৎকল্যাণের দিকে প্রবাহিত। আল-কোর’আনের ভাষায়:
وَمَنْ يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلا أُولُو الألْبَابِ
“যাকে বিজ্ঞতা প্রদান করা হয়েছে, সে এমন কিছু কল্যাণপ্রাপ্ত হয়েছে যা উপচিয়ে পড়ে। নিশ্চয় গভীর জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তিরাই কেবল এ বার্তা অনুধাবনে সক্ষম।”
কিন্তু আল-কোর’আন তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জন করাকেই শুধু মহত্বের মাপকাঠী হিসাবে বিবেচনা করে না; বরং জ্ঞান হতে যৌক্তিকভাবে উদ্ভূত কর্ম, আচার-ব্যবহার এবং জীবন-যাপনের সার্বিক অনুশীলণের মাধ্যমেই কেবল একজন ব্যক্তি আল-কোর’আনের ভাষায় ‘হাকীম’ বা বিজ্ঞ হয়ে উঠতে পারে। অন্যথায়, কর্মহীন জ্ঞানীর অবস্থা দাঁড়ায় ভারবাহী গাধার ন্যায়, যে গ্রন্থের ভারী বোঝা বহন করলেও কখনো জানতে পারে না ঐ গ্রন্থগুলোতে কী আছে।
আল-কোর’আন এসকল জ্ঞানপাপীদের উদাহরণ দেয় এভাবে:
مَثَلُ الَّذِينَ حُمِّلُوا التَّوْرَاةَ ثُمَّ لَمْ يَحْمِلُوهَا كَمَثَلِ الْحِمَارِ يَحْمِلُ أَسْفَارًا بِئْسَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ لا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
“যাদের তাওরাত গ্রন্থের জ্ঞান প্রদান করা হয়েছে, কিন্তু তারা তাদের উপর (জ্ঞান হতে উদ্ভূত) অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়, তাদের উদাহরণ যেন গ্রন্থের ভারবাহী গাধার ন্যায় (যে গ্রন্থের তাৎপর্য অনুধাবনে ব্যর্থ)। কতই না নিকৃষ্ট এ সকল ব্যক্তির (জ্ঞানপাপীর) উদাহরণ, যারা আল্লাহর নির্দেশনাবলীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে; নিশ্চয় আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।
অন্যদিকে, ইসলাম জ্ঞানার্জনকে কোন প্রকার সংকীর্ণগণ্ডির মাঝে সীমাবদ্ধ রাখে না। ইসলাম মানুষের পক্ষে সম্ভাব্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় জ্ঞান আহরণকে করে উৎসাহিত। তাই ইসলামের দৃষ্টিতে জ্ঞানের পরিধিকে ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ গণ্ডিতে দ্বি-খণ্ডিত করা যায় না।
ইসলাম আল-কোর’আনের শিক্ষার মাধ্যমে একদিকে মানবজাতিকে এ পার্থিব জীবন-যাপনের সাথে সম্পর্কযুক্ত সবরকম সমস্যার সমাধানের উপযোগী করে তোলে; অন্যদিকে, এ জগতে স্রষ্টার খিলাফত বা প্রতিনিধিত্বের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের নিমিত্তে সময়ের অগ্রগতির সাথে ক্রমশ জটিলতর হয়ে উঠা অস্তিত্বের সঙ্কটে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রতিমুহূর্তে আল্লাহ হতে দিক-নির্দেশনাপ্রাপ্ত হওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন করে তোলে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে: ইসলামে জ্ঞান তথ্য নির্ভর নয়, বরং অভিজ্ঞতা নির্ভর। আবার এ জ্ঞান বস্তুজগতকে কেবল নতুন বিন্যাসে সাজাবার নিপুণতার মধ্যেই সীমায়িত নয়; বরং ঐশী সত্তার সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে বস্তুজগতকে আধ্যাত্মিকতা দ্বারা আবিষ্ট করার নিপুণতা দ্বারা ঐশ্বর্যমণ্ডিত। আর এই উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে জ্ঞান বাড়িয়ে দিতে তাঁর নিকট প্রার্থনা করতে আহ্বান করেন:
وَقُلْ رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا
“এবং প্রার্থনা কর: ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও।’”
এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে করণীয় সম্পর্কে আল্লাহ হতে নির্দেশনা গ্রহণের মাধ্যমে কার্য পরিচালনা করার নিমিত্তে একজন মুসলিম দৈনিক কমপক্ষে ১৭ বার সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট এই বলে প্রার্থনা করে:
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
“আমাদের তুমি সঠিক-পথ প্রদর্শন কর!”
জ্ঞানার্জন প্রসঙ্গে মুহাম্মদ (মহিমান্বিত হোক তাঁর ব্যক্তিত্ব)-এর বাণী
জ্ঞানার্জনের প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব রাসূল (স.)-এর বাণীর মধ্যেও অত্যধিক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর বাণীতে জ্ঞানবিহীন জীবন নির্জীব এবং অর্থহীন বলে বর্ণিত। জ্ঞান হলো মানব-মনের জন্য সর্বাধিক পুষ্টিদায়ক তথা উৎকর্ষ সাধনকারী এবং মানব অস্তিত্বের সর্বোচ্চ কার্যকরী ফল লাভ করতে জীবনভর জ্ঞান-সাধনা অপরিহার্য। রাসূল (স.) তাই বলেন: “দোলনা হতে কবর পর্যন্ত জ্ঞানার্জন কর!”
তদুপরি রসূল (স.)-এর নির্দেশে সকল মুসলিম নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন ফরজ বা অবশ্যপালনীয় কর্তব্য। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে চীন দেশে অর্থাৎ সুদূর কোন অঞ্চলে গিয়ে হলেও জ্ঞানার্জন করা অপরিহার্য। এ প্রসঙ্গে আরো বলা হয়েছে: “জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র।”
জ্ঞানার্জন এবং বিজ্ঞান অধ্যয়নে উৎসাহ ও উপদেশ দান প্রসঙ্গে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (মহিমান্বিত হোক তাঁর ব্যক্তিত্ব)-এর বাণী উল্লেখ করেছেন ঝুবফ অসববৎ অষর তাঁর ঞযব ঝঢ়রৎরঃ ড়ভ ওংষধস গ্রন্থে : সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে এক ঘণ্টাব্যাপী ধ্যান ও চিন্তা করা সত্তর বছরের নফল ও মোস্তাহাব ইবাদতের চেয়ে এবং বিজ্ঞজনের উপদেশ ও সিদ্ধান্তগুলো শ্রবণ করা এক হাজার শহীদের জানাযায় অংশগ্রহণের চেয়ে অধিকতর শ্রেয়, এমনকি দাঁড়িয়ে এক হাজার রাত্রির প্রার্থনার চেয়েও উত্তম।
জ্ঞানার্জন ইসলামী সমাজ, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয়জীবনে এক সর্বগ্রাহী ভূমিকা পালন করে আসছে। জ্ঞানকে ইসলামে মানবচরিত্রের শক্তির উৎস হিসাবে\ বিবেচনা করা হয়। জ্ঞান আত্মাকে আলোকিত করে, অজ্ঞতাকে দূর করে, মনকে পবিত্র করে, বুদ্ধিমত্তাকে শাণিত করে, ভ্রান্তি এবং ভ্রম হতে রক্ষা করে, কামনা-বাসনার উপর কর্তৃত্ব করতে শিখায়, পথভ্রষ্টতা হতে ফিরিয়ে এনে আল্লাহর প্রত্যাদেশ বা আল-কোর’আন-এর উপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে এবং নিজের উপর প্রত্যয় জন্মাতে সহায়তা করে।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন