সমকালীন বিয়ে, স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ-অশান্তি, তালাক ও কিছু গোড়ার দৃষ্টিভঙ্গি এবং চক্ষুশীতলকারী পরিবারের ভিত্তি প্রসঙ্গে
লিখেছেন লিখেছেন আহমাদ আল সাবা ১৮ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:০৩:৫৫ সন্ধ্যা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
এখানে সংক্ষিপ্তাকারে দেওয়া হলো। বিস্তারিত এই পিডিএফ এ দেখুন – http://tinyurl.com/ot33rp2
বা এই লিংক এ – http://tinyurl.com/q3duah6
বিয়ে কেবল বিয়ে নয়, এটি আপনার প্রশান্তি, ভালোবাসা ও রাহমার প্রবহমান ঝর্ণাধারা। আপনার স্বামী/স্ত্রী ও আগত সন্তান-সন্তুতি আপনার চক্ষুশীতলকারী দু’নয়নের প্রশান্তি। আপনার জান্নাতে যাওয়ার দুনিয়ার সঙ্গী, জান্নাতের পথে সাহায্যকারী ব্যক্তি। আগত সুসন্তান জান্নাতের টিকেক। সুতরাং বিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও জীবনের একটা বড় প্রভাবক এবং এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জেনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ। এদিকটা যেন অশান্তির স্পর্শে কলোষিত না হয় সেদিকটা বিবেচনা করেই আমার এই লেখা।
কিন্তু আমাদের দেশের বর্তমান ইসলামী মন-মানসিকতাসম্পন্ন ছেলে-মেয়েদের মাঝে বিয়ে নিয়ে এক ধরণের ফ্যান্টাসি কাজ করে এবং বিয়ে নিয়ে কেউ পোস্ট দিলেই সেই ফ্যান্টাসি ঠাট্টারুপ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে বিবাহ নামক আল্লাহর এক ইবাদাতের উপর। এই ফ্যান্টাসি কুরআনের বিবাহের আয়াতে ‘সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমাহ’ এর উপরও আবেগের বস্তা নিয়ে পড়তে থাকে হতাশা ও ফ্যান্টাসির রুপ নিয়ে। একদিকে যেমন ইসলাম উপলব্ধির সমস্যা অন্যদিকে এ না বুঝার ফলেই বিয়ের কিছুদিন পর যখন ফ্যান্টাসি ফ্যাকাসে রুপ নেয়, তখন যেন জীবনের জীবন্ত রুপ এসিডের মত ধংসের কাজ দেয়।
প্রকৃত কথা হলো আমরা যেগুলোকে বিয়ের ক্ষেত্রে বা পারিবারিক জীবনে সমস্যা মনে করি সেগুলো আসলে সমস্যা নয় বরং সেগুলো মূল সমস্যার ফল!! সুতরাং আমরা যেখানে সমস্যাকেই চিহ্নিত করতে পারিনি সেখানে সমাধান না পাওয়াই স্বাভাবিক।
একজন নারী যেমন অধিকার সচেতন, পুরুষও তেমনি অধিকার সচেতন। একজন নারী যেমন ইচ্ছামত অধিকারের হাদীস শুনান, পুরুষও তেমন করে এবং কিছু ক্ষেত্রে আরো ভয়াবহভাবে। অথচ বিয়ের আগে দুজনাই ইসলামিস্ট ধরা হতো কিন্তু বিয়ের পরে এসব অধিকার আদায় নিয়েই সব অশান্তির মূল সমস্যা বলে বিবেচিত হয়। এদের প্রধান সমস্যাগুলো‘নিজেদের অধিকার’, ‘একজন আরেকজনকে হালাল-হারামের ফতোয়া’তে ফেলে ভুল প্রসঙ্গে নিজদের অধিকার আদায়ের চেষ্টা করা। এ অধিকার আদায় করতে গিয়ে একেজন আরেকজনের ইতিহাস টেনে এনে কত কিছুই করে যার বেশিরভাগ-ই কবীরা গুনারহর অন্তর্ভূক্ত। অধিকার আদায় করতে গিয়ে কতশত কবীরা গুনাহ করছে সেদিকে খবর নেই, অথচ তারা নাকি অধিকার আদায় করতে ব্যস্ত এবং ইসলামিস্টও বটে!!
বর্তমানে মুসলিম নারীবাদীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার ডিভোর্সের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে সেক্যুলার এবং মুসলিম উভয় সমাজে। এ সংখ্যার মাঝে যারা নিজেদেরকে ইসলাম প্র্যাক্টিজিং মনে করে এসব ছেলে-মেয়েদের মাঝেও বৃদ্ধি পাচ্ছে ডিভোর্স এবং পারিবারিক অসন্তোষ ও দ্বন্দ। এভাবে শেষে বিবাহ বিচ্ছেদ-ই শেষ হচ্ছে না, তারা উভয়ে তীক্ত কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে বের হচ্ছে এবং এগুলো আজকালকার সামাজিক সাইটগুলো সহজলভ্য হওয়ায় আর বিষয়গুলোও টনক নাড়ানি হওয়ায় ছোঁয়াচে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে যাচ্ছে অন্যদের মাঝেও।
কিছু নারী হয়তো হালাকায় যান বা নারী অধিকার সচেতন ফেইসবুক বা ব্লগ ফলো করে পড়েন। বাংলাদেশের কালচারটা এমন যেন কেউ কোনো সংগঠনে যুক্ত থাকা মানে সে প্র্যাক্টিজিং মুসলিম বা মুসলিমাহ!! এইটা একটা মনস্তাত্ত্বিক রোগে পরিণত হয়েছে। সংগঠনে যুক্ত বা পরিচিত যদি দুজন বিয়ে করেছে মানে তারা ফেরেশতা বিয়ে করেছে ধরে নেওয়া হয় অথচ সংগঠনের সিলেবাসে এবং ব্যক্তিতে ইসলামের কিরুপ অবস্থা তা তলিয়ে দেখার প্রয়োজনও পড়ে না।
নারী–পুরুষ নির্বিশেষে একটা কমন সাইকোলজিক্যাল রোগ হলো বিয়ের আগে নিজেরা নিজেদের কী কী অধিকার পাবে সেই দিকগুলো নিয়ে পড়াশুনা করে। তার স্বামী বা স্ত্রী কতটূকু পাবে সেগুলো না পড়ে নিজে কতটুকু পাবে সেই দলীলগুলো রেডি করতেই ব্যস্ত থাকে। ফলে তার নিজ স্বামী বা স্ত্রীর অবস্থা, সাইকোলজি ইত্যাদি বুঝতে চেষ্টাও করে না। ফলে নিজেদের অধিকার সংক্রান্ত আয়াত বা হাদীস প্রেক্ষাপটহীনভাবে, ভুল প্রসংগে, ইচ্ছামত ব্যবহার করতেও বাধা থাকে না আর অন্যেরতা পরখ করার বৃথা চেষ্টাও থাকে না।
আরেকটি দিক হলো এইরকম – ধরুন একজন ব্যক্তিকে ইসলামিস্ট দেখে বিয়ে দিলেন। কিন্তূ বিয়ের পর দেখা যায় বিভিন্ন সমস্যা। স্ত্রীর প্রাপ্য অধিকার ঠিকমত দেয় না, সময় ও সুযোগ থাকতেও স্ত্রীর ঘরের কাজে সাহায্য করে না, ভালোবাসা বৃদ্ধি পাওয়ার উপায় অবলম্বন করে না, স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য হলে ইচ্ছামত কটু কথা শুনিয়ে দেয় ঘরের কর্তা হিসেবে। আসলে এখান থেকে নারীবাদী মুসলিমা হওয়ার কারণ আছে কি কোনো? না। কারণ সে ইসলামের অধিকারগুলোও তো স্ত্রীকে দেয়নি। সে প্রকৃতই ইসলামপন্থী ছিলো না, আপনি যা দেখেছেন তা ওপরের অংশ, অন্তরের ঈমান বা তাকওয়া নয়। এই ব্যক্তির ইসলামিক লেভেল দিয়ে আর সকল ইসলামিস্ট মুসলিমদের ধুয়ে দিতে পারেন না। সুতরাং ফেইসবুকে কথা বলার আগে নির্দিষ্টতা-অনির্দিষ্টতা, এবং স্পেসিফিক কেসকে উল্লেখ করে লিখুন।
উভয়ের সমস্যাগুলো নিশ্চয় বুঝতে পারছেন এবং সমস্যার উদ্ভব ও সমাধানও সামনে আসবে সূরা জুমু’আ, সূরা মুনাফিকুন এবং সূরা তাবাগুনে ধারাবাহিক পদ্ধতিতে।
আমরা মনে করি মূল সমস্যা একজন আরেকজনকে অধিকার না দেওয়া, স্বামী-স্ত্রীর নামে মন্দ বলা, একে অন্যকে খোটা দেওয়া ইত্যাদি। আসলে এটি হলো অন্য কারণগুলোর ফল হিসেবে পরবর্তীতে সামনে আসে। এগুলোর মাধ্যমে সমস্যা, অশান্তি, দ্বন্ধ শুরু হয়; মূল কারণ এগুলো নয়। বরং এগুলো মূল কারণের উদ্ভোত প্রাথমিক সমস্যাবলী।
প্রকৃত সমস্যা ও সেগুলোর কারণসহ সমাধান তুলে ধরার চেষ্টা করব নিচে। সবচেয়ে বড় যে বিষয় সেটি হলো আল্লাহ এগুলোর মাধ্যমে কত নিখুতভাবেই না সমস্যার গোড়াগুলোকে চিহ্নিত করেই ক্ষান্ত হননি বরং সেগুলোর সমাধানগুলোকেও নিপুনভাবে তুলে ধরেছেন।
তালাক যেহেতু অশান্তি, দ্বন্দ ও এ দ্বন্দের চুড়ান্ত পথ, তাহলে এ পথের সমস্যাটাকে চিহ্নিত করতে পারলে মূল সমস্যাও পাওয়া যাবে। তাহলে চলুন এটি দিয়েই সমস্যার মূল কারণ অনুসন্ধান করা যাক।
সূরা বাকারায় তালাকের ব্যাপারে আলোচনার পর আল্লাহ সালাত হেফাযতের কথা বলেছেন (২৩৮নং আয়াত)।
তালাকের সাথে সালাতে কি এমন সম্পর্ক যে তালাকের পরে সালাত হেফাযতের কথা উল্লেখ করলেন আল্লাহ। এদের মাঝে যোগসূত্র কি? তালাকের পরেই সালাতের হেফাযতের কথার মাঝে ধারাবাহিক সম্পর্কটা কী?
এবার আসুন দেখি তালাকের আয়াতসমূহের সাথে সালাতের সম্পর্ক, প্রজ্ঞা এবং কুরআনের ধারাবাহিকতা ও পারস্পারিক সম্পর্ক (নাযম)।
বিবাহ মানে?
১। বিবাহ—একটি সম্পর্ক, কন্ট্রাক্ট
২। বিবাহের অনেকগুলো উদ্দেশ্যের মাঝে সুকুন,মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমাহ (প্রশান্তি, ভালোবাসা ও দয়া)
৩। আত্মীয়তার সম্পর্ক আল্লাহর সম্পর্কের সাথে সম্পৃক্ত (সূরা নিসা-১) এবং এটা আল্লাহর তাকওয়ার সাথে সম্পর্কিত যা সূরায় দুইবার বলা হয়েছে(যা রেয়ার কেইস)।
৪। তালাক মানে বিচ্ছিন্ন হওয়া।
আর সালাত?
১। সালাহ মানে সংযোগ—মানে সালাতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি করি। (সূরা মুজাম্মিল-২০)
২। সালাত আল্লাহর হক
৩। সালাতকে হেফাযত করা (সূরা বাকারাহ-২৩৮) মানে তাঁর সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখা। আর হেফাযত না করা মানে তার সাথে সম্পর্কের অবনতি।
৪। সালাত যাবতীয় মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে(=তাকওয়ার কাজ)
দুই জায়গার কমন বিষয় দেখুন
সামারিটা দেখার আগে আরো ভালোভাবে সালাতের উদ্দেশ্য, অর্থ, তাকওয়া উপলব্ধি আর আল্লাহর সাথে এসবের পারস্পারিক সম্পর্ক ভালো করে জানা থাকা দরকার।
১। দুই সম্পর্কের ভিত্তি আল্লাহ
২। এ সম্পর্ক তাকওয়ার ভিত্তিতে হয়
৩। অর্থাৎ আল্লাহr সাথে আপনার সম্পর্ক ভালো, সেই আল্লাহর সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে যেই সম্পর্কসমূহ রয়েছে (আত্মীয়তা, স্বামী-স্ত্রী), তাদের সাথেও সম্পর্ক ভালো।
৪। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ভালো নেই বা একদমই নেই(সালাতের গাফলতি বা না পড়া), সেই আল্লাহর সম্পর্কের ভিত্তিতে অন্যান্য সম্পর্কও ভালো নেই (বিয়েতে অশান্তি ও তালাক)
সুতরাং স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেবল টিপস দিয়েই হয় না। আল্লাহর সাথে দুজনার ভালো সম্পর্কের ভিত্তিতে হয়। এইটা ঐটা হালাল-হারাম বললেই সম্পর্ক উন্নত হয় না। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক উন্নত করতে হবে, তাঁর যাবতীয় বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে, তবে তাঁর সম্পর্কের ভিত্তিতে যেই সম্পর্ক(সূরা নিসা-১), তিনি ভালো রাখবেন। কেবল হালাল-হারাম ফতওয়াতে তাকওয়া বাড়ে না। আল্লাহর সাথে ভালো সম্পর্কের কারণে, তাঁর আদেশ-নিষেধ মানার কারণে তাকওয়া বাড়ে—তাঁর সাথে যাবতীয় বিষয়ের উন্নতি হয়।
সালাতের হেফাযত বা সালাতের মাধ্যমে আল্লাহকে দৈনন্দিন কমপক্ষে পাঁচবার স্মরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি আল্লাহর তাকওয়ায় পৌছে, তার হালাল-হারাম মেনে চলতে নির্দেশিকা পায় কোরআনের আয়াতসমূহে। তাহলে এই সালাতেই যার সমস্যা রয়েছে, তাহলে এই সালাতের মাধ্যমে যতগুলো উপকার পাওয়ার কথা সেগুলো পাবে কিভাবে?
যে ব্যক্তি আল্লাহর অধিকার আদায় করে না সেই ব্যক্তি তার সৃষ্টির অধিকার আদায়ের বদ্ধপরিকর হবে কিভাবে?
আরো অবাক করা বিষয় হলো বাসর রাত শুরু হয় স্বামী-স্ত্রী উভয়ের দু’রাকাত সুন্নাত সালাত দিয়ে!! সুবহানাল্লাহ। সালাত বা আল্লাহর স্মরণ বিয়ের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ যে আল্লাহর স্মরণ দিয়েই বুঝিয়ে দেওয়া হয় তোমাদের সৃষ্টি যেমন আল্লাহর হাতে, তোমাদের এই সম্পর্কের নতুন ধারাও আল্লাহর হাতে (সূরা নিসা-১) এবং তাই আল্লাহর সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ, রাহমা(সূরা রুম)-ও পেতে হবে আল্লাহর এই সালাত ও তাকওয়ার মাধ্যমে(সূরা রুম)।
সুতরাং একটা মূল সমস্যা তালাকের আইডেন্টিফাই করা গেল সেটা হলো – আল্লাহর সাথে সম্পর্কের ভিত্তি নড়বড়ে হওয়া এবং এ নড়বড়ের কারণে তার সৃষ্ট স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কও নড়বড়ে (অশান্তি, দ্বন্দ ও তালাক) হয়।
সমস্যারটি হলো তারা নিজেদের অধিকার আদায় নিয়ে এতো ব্যস্ত যে আল্লাহর অধিকার আদায়ে তাদের ভ্রক্ষেপ থাকে না। এবং সমস্ত সমস্যার উৎপত্তি এখান থেকেই যা আল্লাহ সূরা তাবাগুনেও আরো বিস্তারিত অন্য আরেকটি মূল সমস্যাসহব(১৪-১৮) সমাধানসহ তুলে ধরেছেন।
এর আগে আমরা দেখে নিই আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্কের ভিত্তি কেমন, স্বামী–স্ত্রীসহ সকল সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে আল্লাহ কোন অবস্থানকে তুলে ধরেছেন কুর’আনে। এই ভিত্তিকে বুঝতে পারলে অনেক বড় সমস্যাগুলো চিহ্নিত হবে এবং সমাধানও সহজ হবে। কারণ আমরা যদি ভিত্তি–তে না গিয়ে থাকি তবে সমস্যা হবেই। বিপরীতে ভিত্তিকে ঠিক রাখতে পারলে সমস্যা তো দূরের কথা বরং সুখ, প্রশান্তি–ই হবে সংসারের সংগী।
এজন্য আমরা প্রথমে সূরা নিসা(আয়াত-১)–তে যাবো যা (১) সৃষ্টির শুরু থেকে, (২) সম্পর্কের শুরু, (৩) ভিত্তি এবং (৪) এ ভিত্তিকে কেন্দ্র করেই যে সমস্ত অধিকার–চাহিদা চাওয়া–পূরণ হয়–এসবই বর্ণনা করেছেন আল্লাহ।
প্রথমে আয়াতগুলোর মাঝে এত গভীরে ও সুক্ষ্ণভাবে আল্লাহ এই বিবাহ ও সম্পর্কগুলোতে সুখের চাবিকাঠির বর্ণনা দিয়েছেন যে, এগুলো যদি গভীর দৃষ্টিতে না উপলব্ধি করি তবে এ সুখ পাওয়া একটু কষ্টকরই বটে। তবে যারা আল্লাহর সকল আদেশ-নিষেধ উপলব্ধি করে বিশুদ্ধ চিত্তে মানতে শুরু করেছে তারা এমনিতেই এগুলো পেয়ে যায়। তাই প্রথম সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে বিবাহ, সম্পর্ক ও এ সংক্রান্ত সকল আয়াত ও সূরাগুলোর গভীরে প্রবেশ করে নির্যাস নিয়ে আসা।
“হে মানব জাতি, তোমাদের রবের উপস্থিতির সর্বদা সতর্ক থাকো (ইত্তাকু রাব্বাকুম) যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একই আত্মা থেকে। এবং তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার সঙ্গী এবং তাদের দু’জন থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু নর ও নারী। ঐ আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো যার নামের বদৌলতে তোমরা দাবী-অধিকার চাও, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর নিবিষ্ট অবলোকনকারী” (সূরা নিসা-১)
ব্যাখ্যা – তাকওয়া-র শব্দে দুই ধরণের কথা এসেছে
১) রবের তাকওয়া
২) আল্লাহর তাকওয়া
তাকওয়া অর্থ সদা-সর্বদা এমন সচেতন থাকা যেন কেউ আমাকে দেখছে, খেয়াল রাখছে – এই উপলব্ধি ক্রমাগত সব সময় থাকা।
এভাবে রব শব্দের অর্থ – যিনি সৃষ্টিকর্তা, যিনি রিযিক দেন, দায়িত্ববান, লালন-পালনকর্তা। আয়াতের প্রথমে আল্লাহর তাকওয়া ব্যবহার না করে রবের তাকওয়া এই কারণে ব্যবহার করেছেন যে এই রব-ই একটি আত্মা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার সঙ্গী, তাদেরকে রিজিক দেন, তাদেরকে লালন-পালন করেন। সুতরাং সৃষ্টি, লালন-পালন, রিজিকদাতা হিসেবে প্রথমেই রবের তাকওয়া সর্বদা থাকা দরকার। সুতরাং যখন রবের তাকওয়া থাকবে, তখন সেই রবের সৃষ্ট মুখ দিয়ে গীবত করবো না, অন্যকে কষ্ট দেবো না মুখে খোটা দিয়ে, হাত দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর নামে বাজে কিছু লিখব না।
আবার পরে আল্লাহর তাকওয়া বলা হলো কারণ – আল্লাহর সকল গুণের রুবুবিয়াত যেমন রাব্ব আর এই সকল রুবুবিয়াতের সিফাতি নাম হলো আল্লাহ। অর্থাৎ আল্লাহ-ই সকল রুবুবিয়াতের ধারক। অর্থাৎ এখানে যেই তাকওয়াল্লাহ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এটা খুবই বিস্তৃত। আর এই শব্দটাই আল্লাহর কাছে ও পারস্পারিক সম্পর্কের চাওয়া-পাওয়ার দাবিতে দাবি হিসেবে আসে। সুতরাং বিস্তৃত শব্দের ব্যবহারে আল্লাহর তাকওয়ার বিস্তৃতিও কত বিশাল এটিও বুঝতে অসুবিধা হয় না।
এখানে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো – প্রথম রাব্বের তাকওয়া সীমিত সেটা রাব্ব এর মাঝে আর দিত্বীয় তাকওয়াল্লাহ শব্দ দ্বারা বিস্তৃত অর্থ বুঝায়। আর এ বিস্তৃত অর্থের তাকওয়া বা আল্লাহর তাকওয়া তখনই আসবে যখন পারস্পারিক বন্ধনের ক্ষেত্রে তাকওয়া অবলম্বন করবো। একারণেই আল্লাহর তাকওয়ার সাথে বাস্তবিক দৃষ্টান্ত দিয়েই বর্ণনা করেছেন যে আমার প্রকৃত ও বিস্তৃত তাকওয়ার বাস্তবিক উদাহরণ হবে ‘তোমাদের একে-অপরের কাছে দাবি-দাওয়ার’ মাধ্যমে-পারস্পারিক ডিলিং এর মাঝে তাকওয়ার অবলম্বন ।
সুতরাং বিবাহ যেহেতু আল্লাহর ইবাদাহ। একারণে আল্লাহর ইবাদাহতে আল্লাহর পদ্ধতিতেই বিবাহের সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমাহ খুঁজতে হবে। আল্লাহর ইবাদাহর উদ্দেশ্যগুলো আল্লাহর নিয়মেই (তাকওয়া, সালাত, ইবাদাহ) আসবে।
সুতরাং পরস্পরের যে দাবি ও অধিকার আদায়ের কথা আসবে—সেটা আসতে হবে আল্লাহর ইবাদাহ ও তাকওয়াকে কেন্দ্র করে। কারণ এই সম্পর্কে তোমরা দুজন-ই সৃষ্টি হয়েছো রাব্ব আর সম্পর্কের ইবাদাহর ভিত্তিও আল্লাহ আর তাই তোমাদের সৃষ্টিকর্তা রাব্ব ও ইবাদাহর (বিবাহ) ভিত্তি আল্লাহর তাকওয়ার মাঝেই সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমাহর চাবিকাঠি—কারণ তোমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং বিবাহের সম্পর্কের মাঝে সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমার সৃষ্টিকর্তাও একই উৎস=আল্লাহ। সুতরাং আল্লাহর ইবাদাহ ও তাকওয়া স্বামী-স্ত্রীর কারো ভালোভাবে না থাকা মানেও একে-অপরের অধিকার আদায়েও ঝামেলা হওয়াটাই স্বাভাবিক। যার স্বাভাবিক ফলসমূহ হলো দাম্পত্য জীবনে দ্বন্দ, কলহ, অশান্তি এবং শেষে তালাক না হলেও এই সমাধান না হওয়ায় উভয়ের কষ্টের ভেতরে জীবনের সমস্ত-ই বেদনায় ভরা।
এইখান থেকে বুঝতে পারি সম্পর্কের ভিত্তি আল্লাহ; স্বামী–স্ত্রী পরস্পর নয়। সুতরাং স্বামী বা স্ত্রী কেউ যখন অন্যের কাছে অধিকার চায়, অধিকার পায় না, পরস্পর যখন একে অন্যকে অধিকার দেয় না বা প্রসঙ্গহীনভাবে কোরআনের আয়াত বা হাদীস উল্লেখ করে— এইসবগুলোর সমস্যা তাকওয়া না থাকা, মূল ভিত্তিকে মৌল না রেখে গৌণ রাখার কারণে উভয়ের মাঝে একই আদলের ভিত্তি না থাকা ও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও দলীলের মাঝেও এ পার্থক্য সূচিত হয় এবং সকল সমস্যার শুরু হয়।
সমস্যার শুরু কোথা থেকে? নিজেদের ‘অধিকার সচেতনতা’ আর ‘আল্লাহর অধিকার’=তাকওয়া ভুলে যাওয়া- যার সম্পর্কের ভিত্তিতে নিজেদের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এবার আরেকটি সমস্যার মূল নিয়ে কথা বলা যাক ‘নিজ অধিকার সচেতনতা’ আর ‘অন্যের অধিকার নিয়ে চিন্তিত না হওয়া’।
নিজ অধিকার সচেতন বলতে কী বুঝায়? — কেবল নিজের জন্য প্রচেষ্টা, নিজের অধিকারের ব্যাপারে অধিক সচেতন হওয়া আর অন্যের অধিকারের ব্যাপারে চোখ না রাখা, আত্মকেন্দ্রিক হওয়া, “আমি”, “আমাকে” এবং “আমার” (I, Me and Myself ) নিয়েই চিন্তা-ভাবনা।
অর্থাৎ নিজের মনস্তাত্ত্বিক সুখ ও ম্যাটেরিয়ালিস্টিক দৃষ্টিভঙ্গিকেই ক্রমাগত প্রাধান্য হয়ে পড়ে আর অন্যের ব্যাপারে মাথা খাটানো বা তাদের ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিতে, সঠিকভাবে চিন্তা করার সময় থাকে না। এই “আমি”কে নিয়েই সর্বদা ব্যস্ত থাকতে হয় “আমার”। এজন্য এই “আমার” “অধিকার”কে তুলে ধরার জন্য যা কিছু করা দরকার করি – ঝগড়া, গীবত, নিজ স্বামী বা স্ত্রীর গোপনীয়তাকে অন্যের কাছে ফাঁস করা, কুরআন-হাদীসের প্রসংঙ্গহীন ব্যাখ্যা। অথচ এগুলো সবই ফরজের লংঘণ-সেগুলো তখন লক্ষ্যও হয় না- কারণ লক্ষ্য করতে গেলে অন্যের অধিকারের কথা চিন্তায় এসে যায় অথচ “আমার” ভূবন তো “আমি ও আমাকে” নিয়ে।
বিয়ের আগে চিন্তা থাকে আমি কেমন স্মার্ট ও সুন্দরী নারী/পুরুষ পাবো, বা মোহর কত দেবে আমাকে। তার দুনিয়াবী কুয়ালিটি কেমন। আবার বিয়ের প্ল্যানে থাকে বাসা ভাড়া, খাওয়া, কার্ড ছাপানো, দাওয়াত দেওয়া, কি কি দিতে হবে স্ত্রীকে এবং স্ত্রীদের পক্ষ থেকেও যুগের চাহিদা অনুযায়ী ডিমান্ড থাকে —এই প্ল্যানে কেবল বাদ থাকে বা সম্মুখে থাকে না আল্লাহ; যেই আল্লাহ এই সম্পর্ক সৃষ্টি করছেন, এই সম্পর্কে সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমাহর মালিক।
এই আত্মকেন্দ্রিক চিন্তা থেকে উদ্ভোত রুগ ও দাম্পত্য জীবনের যত অশান্তি-কষ্ট তেড়িয়ে আসে সেগুলোর মৌলিক সমাধান আল্লাহ দিয়েছেন তিনটি সূরায়।
সূরা মুনাফিকুনে ৯ ও ১০ নং আয়াত হলো এই সূরার পূর্বের সূরা (৬৩ ও ৬৪ নং সূরা)। অর্থাৎ ধারাবাহিক আকারে চলছে।
লক্ষ্য করুন সূরা মুনাফিকে ৯ নং আয়াতে বলা হচ্ছে “ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্তুতি আল্লাহর স্মরণ থেকে যেনো বিরত না রাখে”।
সূরা তাবাগুনেও বলা হচ্ছে ‘সন্তান-সন্তুতি, স্বামী-স্ত্রীদের থেকে কেউ কেউ শত্রু হবে’(যেমন আছিয়ার স্বামী ফিরাউন, নূহ (আলাইহিস সালাম) এর সন্তান)।
এবার লক্ষ্য করুন, আয়তগুলো সূরা মুনাফিকে। অর্থাৎ এখানে মুনাফিকদের আলামত বর্ণনা করা হয়েছে। তদ্রুপ অন্যান্য সূরাতেও মুনাফিকদের আলামত বর্ণনা করা হয়েছে বিস্তারিতভাবে(যেমন সূরা বাকারাহ,সূরা তাওবাহ)।
একজন মুনাফিক কেবল নিজের অধিকার সচেতনা নিয়ে চিন্তা করে। কেবল নিজের অধিকার সচেতনতা(স্বামী বা স্ত্রী যেই হোক) মানে আত্মকেন্দ্রিক হওয়া, নিজের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করা। মুনাফিকরাও ঠিক নিজেদের নিয়েই চিন্তা করতো। অর্থাৎ স্বামী বা স্ত্রী যখন কেবল নিজের অধিকার নিয়ে সচেতন হয় তখন এটা মুনাফিকের বৈশিষ্টের সাথেই যায়!! কারণ এরা কেউ অন্যের অধিকার নিয়ে চিন্তিত নয়। মুনাফিকদের একটা বৈশিষ্ট হলো কেবল নিজেদের সুবিধা নিয়ে চিন্তা করা এবং এ সুবিধা যেথায় পাওয়া যাবে, সে সেখানেই যাবে, সেভাবেই চলতে চেষ্টা করবে, সেভাবেই কুরআন-সুন্নাহর ব্যাখ্যা করবে(সূরা বাকারাহ-১৪)। মূল এজেন্ডা থাকে ‘নিজেদের সুবিধা’ আদায়। এভাবে নিজেদের অধিকার আদায় করতে গিয়ে যা খুশি তাই করার প্রবণতাও কাজ করে এবং এতে অন্যে অধিকার পাচ্ছে কিনা বা জুলুম হচ্ছে কিনা সেগুলো দেখার ফুসরতও থাকে না। এভাবে ব্যালান্সহীন হওয়ায় সকল সমস্যার উদ্ভব হয়।
এভাবে নিজেদের অধিকার আদায়কারী স্বামী-স্ত্রীরাও ঠিক একই ধরণের বৈশিষ্টসম্পন্ন হয়। ‘নিজেদের সুবিধা’কে (অধিকার বলে যাকে চিহ্নিত করে) পাওয়ার জন্যও কুরআন-সুন্নাহকে নিজেদের সুবিধা মত ব্যবহার করে ঠিক মুনাফিকদের মতই।
এবার এদের সমাধান দেখুন,
আল্লাহ দুই সূরাতেই সমাধান দিয়েছেন উদার হওয়ার জন্য- আত্মকেন্দ্রিকতা ছেড়ে দান করার জন্য। এজন্য অন্য সূরায় মুনাফিকদের বলাই হয়েছে তারা রাসূল ﷺ এর সাথে কথা বলতে আসলে যেন কিছু দান করে আসে!! কারণ তারা নিজেরা সময় নিয়ে নিজেদের সুযোগ-সুবিধা আদায়ে ব্যস্ত রাখবে আর অন্যদের অধিকারের সময় নষ্ট করবে ও তাদের অধিকার দেবে না তা যেন না হয়। এভাবে নিজের সুবিধারুপ অধিকার সচেতন স্বামী-স্ত্রীকেও একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সমাধানের জন্য যেন তারা কেবল নিজেদের অধিকার সচেতন না হয়, অন্যের দিকেও দৃষ্টি দিয়ে নিজেদের আত্মকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা, ম্যাটেরিয়ালিস্টিক চিন্তাচেতনা, মুনাফিকের বৈশিষ্ট থেকে মুক্ত থাকতে পারে এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে পারে নিজেদের গন্ডি থেকে আর এভাবে আল্লাহর দেওয়া সুখের চাবিকাঠিও পেতে পারে।
এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কমন বিষয় হলো – সূরা মুনাফিকে বলছে “আমি যা রিযিক দিয়েছি তা থেকে দান করো” সুরা তাবাগুনে বলছে স্বামী-স্ত্রী ও পারিবাকির সমস্যার সমাধানে আল্লাহ বলছেন “তোমরা আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় কর … নিজেদের কল্যাণের জন্য ব্যয় করো, আর যারা অন্তরের কার্পন্য হতে মুক্ত, তারাই সফলকাম”। সুতরাং আত্মকেন্দ্রিকতার ফলে যত সমস্যা, দ্বন্দ, অশান্তি ও কষ্টের সূচনা হবে, তার সমাধান আল্লাহ দিয়েছেন ‘তাকওয়া’ ও ‘ব্যয়’ করার উদার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।
আল্লাহর সাথে আমাদের সবার সম্পর্কের ভিত্তিকে কেন্দ্র করে সূরা নিসা–তেও দুইবার বলেছেন “আল্লাহকে ভয় করো”। অর্থাৎ সবগুলোতেই আল্লাহকে সম্মুখে আনা হয়েছে (সূরা নিসাতে তো দুইবার!!!!! সুতরাং সম্পর্কের ক্ষেত্রে আল্লাহর তাকওয়া–ই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ!!! সর্বাধিক!! আর আত্মকেন্দ্রিকতা থেকে বাঁচার একমাত্র পথ দান করা)। অথচ অধিকারের সময় আমরা আল্লাহকে আনি না, আনি নিজেদেরকে। আল্লাহকে ভয় করি না বলেই নিজেদের ইচ্ছামত আল্লাহর আয়াত এবং রাসূলের ﷺ হাদীসকে ভুলভাবে উপস্থাপন করি। সুবহানাল্লাহ! এভাবে যেই মালিকের কাছ থেকে সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমাহ পাবো তাকে ভুলে যাবার কারণেই অশান্তি, দ্বন্দ্ব ও কষ্টের মূল হয়ে দাঁড়ায়।
সূরা তাবাগুনের আয়াতগুলো (১৪,১৫ ও ১৬) একটু ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে দেখবো সমস্যার মূলকে সমাধানে আল্লাহ হেদায়াতের কি ফর্মুলা দিয়েছেন – এই আয়াতের প্রত্যেকটি শব্দ, এর পারিভাষিক অর্থ, কতগুলো ডাইমেনশনে এগুলো করা যায়—গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করুন – এখানে সমস্যার সমাধান কি নিখুঁত ও সুনিপুনভাবেই না আল্লাহ চিত্রায়িত করে বর্ণনা করেছেন! সুবহানাল্লাহ!! আর এই আয়াতগুলোর বিপরীতে আপনার দাম্পত্যে ও পরিবারে কিরুপ ফল আসতে পারে একটু গভীরভাবে তাকিয়ে দেখুন আজকের দিনের কিছু অশান্ত দাম্পত্য জীবন বা পরিবারে।
“তোমরা আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় করো, শুন, আনুগত্য করো, নিজেদের কল্যাণের জন্য ব্যয় করো, আর যারা অন্তরের কার্পন্য হতে মুক্ত, তারাই সফলকাম” (সূরা তাবাগুন-১৬)
আল্লাহকে ভয় করো / আল্লাহর ব্যাপারে সদা সতর্ক থাকো (ফা ইত্তাকুল্লাহ)- – সম্পর্কের ভিত্তিই এটি। যা উপরের কয়েকবার দেখানো হয়েছে। এবং আল্লাহর অধিকার সচেতন হলেই নিজেদের অধিকার আল্লাহর নির্দেশের ভিত্তিতে দুজনেই ঠিকঠাক মতো করবে। কারণ তাদের উভয়ের জবাবদিহিতার জায়গা একই আদলের জায়গা আল্লাহর কাছে। তাই একে অপরের প্রতি কোনোরুপ মন্দ করতে পারে না এই ‘আল্লাহর তাকওয়া’র অধিকারী ব্যক্তিরা।
তাকওয়াশীল ব্যক্তিরা তো নিজেদের অধিকার আদায়ের চাইতে আল্লাহর কোনো অধিকার লংঘন হয় কিনা সেটাই আগে দেখে আর এভাবে তার স্বামী বা স্ত্রীর কোনো অধিকারে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ লংঘন হচ্ছে কিনা দেখে। তাই নিজ স্বার্থরুপ অধিকারের আদায়ের নামে ‘তারা(স্ত্রীরা) তোমাদের(স্বামীদের) পোশাক আর তোমরা (স্বামীরা) তাদের (স্ত্রীদের) পোশাক’ মাড়িয়ে একে অন্যের নামে মন্দ বলবে না, গীবত করবে না অন্যের কাছে, খোটা দেবে না, স্বামী বা স্ত্রীর গোপন দোষ ফাস করবে না। এভাবে তারা পরস্পর একই ভিত্তি ‘তাকওয়া’র উপর থাকার কারণে সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমাহ-ও পায় ভালোভাবে।
এভাবে একটি মেয়ে মোহর কত দিতে হবে এভাবে না বলে বলবে আপনার কত স্বামর্থ আছে। কারণ মোহর স্বামীর স্বামর্থের বাহিরে যেন জুলুম না হয়, সেই তাকওয়াই হবে তার ভিত্তি। কারণ তাকওয়াশীল স্ত্রী জানে – রাসূল ﷺ কম মোহরের বিবাহ উত্তম বলেছেন এবং অর্থের ভেতর আল্লাহর সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমাহ রাখেনি, রেখেছে আল্লাহর তাকওয়া ভিত্তির সম্পর্কে ওপর।
তেমনি তাকওয়াশীল স্বামী চিন্তা করবেন একজন অপরিচিত মেয়ে তার পুরো পরিবার ছেড়ে আমার কাছে এসেছে, তার পরিবারে যেরুপ ভালোভাবে ছিল, এখন আমার দায়িত্ব তার সকল দিক দেখার, তাকে শান্তিতে রাখার।
এভাবে তাকওয়াশীল স্বামী-স্ত্রীর ভিত্তি হয় আল্লাহ আদল ও ইনসাফ, জুলুমের বিপরীতে শান্তির জন্য কাজ করা, নিজের অধিকারের চাইতে অন্যের অধিকার যেন লংঘিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। এই পরিবারে সুখ ও শান্তি ছাড়া অন্য কোনো উপাদান চিন্তা করতে পারেন?
তাকওয়াশীল ব্যক্তিরা জানে স্বামী বা স্ত্রীর মাঝে কোনো প্রকার ভুল পেলে সেগুলোকে কীভাবে আল্লাহ ও রাসূলের দেওয়া উত্তম পন্থায় ভালোবেসে সংশোধন করতে হবে। সেই সংশোধনের পথে থাকে একে অপরের জন্য ভালোবাসা, অপরের কল্যাণ কামনা, আল্লাহর জন্য একে অপরকে উত্তম পন্থায় সংশোধন করা। বিপরীতে যাদের মাঝে তাকওয়া থাকে না তাদের সংশোধনের ভাষা হয় টিটকারি করা, খোটা দেওয়া, গীবত করা, বুহতান করা, পূর্বের আরো ভুলকে এনে একে আরো খোটার বস্তুতে বিশালাকার রুপ দেওয়া।
তোমরা শ্রবন কর –কুরআনকে আল্লাহ মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করতে বলছেন অন্য যায়গায়, পাচ ওয়াক্ত সালাতে এটি বারবার পড়া হয়, কুরআনের অপর নাম ‘জিকির’-স্মরণ। আল্লাহ পড়তে বলেছেন, এটি নিয়ে চিন্তা করতে বলেছেন, গবেষণা করতে বলেছেন, জিকর করতে বলছেন, শ্রবণ করতে বলেছেন মনোযোগ দিয়ে। প্রশ্ন আসে এটার সাথে স্বামী-স্ত্রীর সমস্যার সমাধান কোথায়? ঐ যে উপরে আল্লাহর তাকওয়া নিয়ে এসে কুরআন মানতে শুরু করার জন্য যখন পড়তে শুরু করেছেন, আল্লাহর হারাম করা জিনিস থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবে বা সালাতে ইমামের স্বামী-স্ত্রীর অধিকার নিয়ে তিলাওয়াত শুনবে, আল্লাহর অধিকার জানতে শুরু করেছে – অথচ না পড়লে বা না জানলে কীভাবে মানবেন? যখনই আল্লাহর কোনো নির্দেশ পাবেন পাবেন তখনই সেটা মানার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবেন আর সমস্যার সমাধানও পাবেন। সমস্ত সমস্যার সমাধান আল্লাহ কুরআনে দিয়ে দিয়েছেন এবং এটি যে বারবার পড়বে, শ্রবণ করে সে সমস্যার সমাধানও পেয়ে যাবে। পাঠের সাথে সাথেই যখন স্বামী বা স্ত্রী বুঝবে সমস্যার মূল কোথায় এবং সমাধানই বা কোথায়। এভাবে সে কুরআন শ্রবণের মাধ্যমে, বারবার পাঠের মাধ্যমে জীবনের সকল সমস্যার সমাধানও পাবে এই কুরআনে। একারণেই আল্লাহ কুরআনকে বারবার পড়তে বলেছেন এবং যারা নিয়মিত পড়ে এবং তারা সমস্যাগুলো থেকে মুক্তির দিশাও পায়।
“তোমরা আনুগত্য কর” – আল্লাহ যখন বললেন (১৪ নং আয়াত) তোমরা পাতা উল্টিয়ে দাও- উপেক্ষা কর। স্বামী বা স্ত্রী অনেক আগের দোষ-ক্রুটি আনে না? হ্যা, আনে। কিন্তু তারা যখন কুরআন শুনবে, শ্রবণ করবে এবং এই ‘আনুগত্যের’ নির্দেশ পাবে এবং আল্লাহর আনুগত্য করতে শুরু করবে- তখন স্বামী বা স্ত্রী আর পূর্বের কোনো মন্দের কথা পূনরায় উপস্থাপন করবে না এবং আয়াতের অন্যান্য নির্দেশনাবলীর আলোকে ক্ষমা করে দিবে।
তাদেরকে ভালোবেসে ক্ষমা করে দাও, পাতা উল্টিয়ে দাও-দোষক্রুটি উপেক্ষা করো (আয়াত-১৪) – এর বর্ণনা মনে করি ভালোভাবে দেওয়া উচিৎ। অর্থাৎ স্বামী বা স্ত্রী পূর্বে ভুল করেছে, সেগুলোকে আর সামনে না আনা। কারণ আপনি পাতা উল্টালে কিন্তু আর পূর্বের বিষয়াবলী দেখতে পান না। আল্লাহ ঠিক এভাবেই বলেছেন – তোমাদের পূর্বে যত ভুল-ক্রটি হয়েছে সেগুলোকে আর কখনও সামনে নিয়ে এসো না, কারণ সেগুলো মিটে গেছে। কেবল উপেক্ষাই করতে বলেনি আরও বলেছে ভালোবেসে ক্ষমা করে দাও। এগুলো তাকওয়ার ফল—তাকওয়াহীন লোকেরা আল্লাহর দেওয়া এ গুণগুলোকে অসম্ভব বলেই মনে করবে। বিপরীতে তাকওয়াশীল লোকেরা আল্লাহর এ গুণগুলোকে দুনিয়া ও আখিরাতের সম্বল হিসেবে নেবে।
এবার লক্ষ্য করুন … পূর্বের বিষয় নিয়ে আসা — একটি সমস্যাকে অনেকগুলো সমস্যার দ্বারা চাতুর্মূখিক করে তোলা — রাগ বাড়িয়ে দেওয়া— পৃথিবীর অধিকাংশ বিষয়াবলী ছোট্ট থাকে এবং কেবল রাগ, কেবল রাগই একে ছোট্ট থেকে বড় করে তুলে—এবং বড় সংঘাত, অশান্তি, অসন্তুষ্ট, পাপ, অপরাধ—এবং ছোট্ট বিষয়ে রাগের কারণে ৯০ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়!!!!! অধিকাংশ খুনের ক্ষেত্রে খুন করার মত কারণ থাকে না এবং এতে কেবল রাগ ঢালার কারণেই ৯০% খুনের পারসেন্টেজ বাড়ে!!
সমাধান? ১৬ নং আয়াতে ফিরে যান – তাকওয়া। তাকওয়াশীল লোকেরা সমস্ত পাপ থেকে বেঁচে থাকে এবং অন্যকেও পাপের দিকে ধাবিত করে না, উত্তেজিত করে মন্দ পথে, আরো পাপের পথে ঠেলে দেয় না।
একারণেই আল্লাহ বলেছেন তোমরা পাতাকে উল্টিয়ে দাও যাতে এতে অন্য কিছু এসে একটি বিষয়কে আর বড় না হয় আর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো বলেছেনঃ “সেই সর্বাধিক শক্তিশালী কুস্তিগির যে রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে”।
সুতরাং রাগ নিয়ে একটা দুইটা গবেষণামূলক পেপার পড়ে দেখুন আবার আর আল্লাহর নির্দেশ, পেইজ উল্টিয়ে না দিলে কি হয় সেগুলোও পড়তে চেষ্টা করুন। সারা জীবনেও কাউন্সেলিং এর কাছে যাইতে হবে না, NEVER। সুতরাং তাকওয়াশীল ব্যক্তিরা কুরআন শ্রবণ করে, এ থেকে শিক্ষা নেয়, এগুলো মানতে থাকে, ঝগড়াকে বাড়তে দেয় না। বিপরীতে নিজ অধিকার আদায়কারী আল্লাহর অধিকার আদায়হীনা স্বামী বা স্ত্রীরা আগুনে ঘি ঢালতে থাকে আর অশান্তির বর্ষণও শুরু হয় পরিবারে।
“আর নিজেদের কল্যাণে ব্যয় কর, যারা অন্তরের কার্পণ্য হতে মুক্ত” – আল্লাহ আরেকটি মূল সমস্যার আইডেন্টিফাই করেছেন ‘আত্মকেন্দ্রিকতা’কে আর এটা থাকলে আপনি কেবল নিজেকে, কেবল নিজেকেই নিয়েই ভাবেন। আর আল্লাহ মেডিসিন দিলেন ব্যয় কর, অন্তরের কার্পণ্য হতে মুক্ত হও, নিজ থেকে বিস্তৃত হও, অন্যের অধিকার নিয়েও ভাবো, আত্মকেন্দ্রিক হইও না, ম্যাটেরিয়ালিস্টিক হইওনা, বরং নিজ থেকে আরো বিস্তৃত হয়ে যাও। এভাবে তোমার থেকে তুমি মুক্ত হও, কেবল তোমার চাওয়া-পাওয়াকে যেরুপ গডে রুপ দিয়েছো সেটা থেকে মুক্ত করো তোমার মনকে, তুমি আল্লাহর তাকওয়ার কাছে যাও, তাঁর কথা শুন, আনুগত্য কর, ব্যয় করো, নিজের দাসত্ব থেকে মুক্ত হও, এবং সফল হও। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। কত নিপুন বুননে আল্লাহ সফলতার দ্বারকে স্বামী-স্ত্রীর জন্য বুনে দিয়েছেন।
ব্যয় করার সাথে আপনার অবস্থান অনুযায়ী সুখী হওয়ার আরেকটি টিপস দিয়েছেন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর সেটি হলো – সুখী হতে চাইলে, নিম্ন কারো দিকে তাকানো।( সম্পদ কেন্দ্রিক চিন্তায় ওপরে তাকালে লোভ বাড়ে, নিচে তাকালে আমার সামান্য প্রাপ্তি-তেই কৃতজ্ঞতা ও প্রশান্তি আসে)
“আর তারাই সফলকাম” – আল্লাহ এখানে ‘ফা’ দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে পূর্বের বিষয়গুলো পালন করতে শুরু করতে থাকো, এবং এভাবেই তুমি স্তরগুলো পার হয়ে আসতে পারলে সফলকাম হবে অর্থাৎ বিবাহ ও পরিবারে ‘সুকুন, মুওয়াদ্দাতাহ ও রাহমা’ পেতে হলে এই শর্ত মোতাবেক-ই যেতে হবে। আল্লাহ কিন্তু বলেন নি কেবল স্বামী-স্ত্রীর বিষয়তেই সফলকাম হবে বরং তাকওয়ার গুন, কুরআন শ্রবণ, আনুগত্য, কার্পণ্য হতে মুক্ত হয়ে দান ইত্যাদি তো জান্নাতের পথে আল্লাহর সন্তুষ্টির একদম সিরাতাল মুস্তাকিমের পথে এবং এভাবে দুনিয়া ও আখিরাতে উভয়ের সফলতা অবশ্য অবশ্যই নিশ্চিত!!
যেই সম্পদ স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের জন্য আত্মকেন্দ্রিকতা তৈরি করে সমস্যা সৃষ্টি করে, স্বামী বা স্ত্রীকে এককেন্দ্রিক ও নিজ সুবিধা আদায়ে উদ্ভোদ্ধ করে, সেই সম্পদের মন্দ পরীক্ষা (আয়াত-১৫) থেকে সমাধানে দিলেন ব্যয় করা ও কার্পন্য হতে মুক্ত থাকা(আয়াত-১৬)।
প্রশান্তির সর্বোচ্চ চূড়া চক্ষুশীতলকারী স্বামী/স্ত্রীর এবং বংশধর চাওয়ার দোয়ার কথা মনে আছে? কিন্তু সেটা কিসের ভিত্তিতে?
আয়াতেই দেখে নিন চক্ষুশীতলকারী পরিবারের ভিত্তি – “হে আমাদের রব্, আমাদের জন্যে এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততী দান করুন যারা আমাদের চক্ষুশীতলকারী হবে ও আমাদের কে মুত্তাকিদের ইমাম বানিয়ে দিন”| (ফুরক্বান, আয়াত- ৭৪)
এর একটি উদাহরণ দেখতে চাইলে ইব্রাহীম (আলাইহিস সালাম) এর পরিবারের ইতিহাস ও কোরআনের আয়াতগুলোর তাফসিরের দিকে তাকাতে হবে। ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর স্ত্রীর সারাহর মরুভূমিতে আল্লাহর তাওয়াক্কুলে ওহীর নিঃর্শত আনুগত্য, পিতার প্রতি ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) এর ছোট্ট বেলায় কোরবানীর সময় আনুগত্য ও কীভাবে আল্লাহর নির্দেশ আরো ভালোভাবে পালন করতে পারেন সে ব্যাপারে পরামর্শও দিয়েছিলেন!! আর এই তাকওয়াশীল পরিবারে একটা ভিত্তি কি ছিল জানেন? ইব্রাহীম (আলাইহিস সালাম) এর দোয়া–
হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সালাত কায়েমকারী করুন এবং আমার বংশধরকেও সালাত কায়েমকারী করুন। …-(সূরা ইব্রাহীমঃ আয়াত ৪০-৪১)
সুতরাং চক্ষুশীলতাময় স্বামী/স্ত্রী ও বংশধর চাইলে তাকওয়া ও সালাত কত গুরুত্বপূর্ণ তা এমনিতেই টের পাওয়া যায়।
কারণ সালাত কায়েমকারীরা আল্লাহর সাথে এই সালাতের সংযুগের মাধ্যমে এমন পর্যায়ে পৌছায় যে তাকওয়াই তখন তাদের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায় এবং চক্ষুশীলতাময় পরিবারের জন্য এই তাকওয়াই যার ভিত্তি।
সুতরাং বিয়ের সমস্যা নিয়ে প্রাথমিকভাবে কারো কাছে গিয়ে কোনো লাভ নাই যদি তাকওয়া উন্নত না করা হয়। আমার অধিকার আদায় করে না বলে এই সম্পর্কে ফিরিস্তি দিয়ে কোনো লাভ নাই। কারণ অধিকার যে দিতে হবে এই বোধ বা জবাবদিহিতার উপস্থিতি বা তাকওয়া তাঁর নিকট উপস্থিত নাই।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো আমাদের দেশের যেকেউ স্বামী-স্ত্রী সংক্রান্ত কোনো বিষয় আনলে কেবল একজনকেই দোষারোপ করতেই দেখা যায় আর অধিকারের সমস্ত ফিরিস্তি দেওয়া হয় যে কী কী অধিকার বঞ্চিত এই স্বামী বা স্ত্রী অথচ সেখানে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক শক্তিশালী করার উপর খুব কমই আলোচিত হয় বা হয় না!!! এই অবস্থা যদি হয় আমাদের নারী-পুরুষ অধিকার চাওয়ার ফেইসবুকীয় বা ব্লগীয় স্কলার, তাহলে সমস্যা কোনো দিন মেটার সম্ভাবনাও আছে কিনা সেটাও দেখা উচিৎ, একটু তলিয়েই।
বিষয়: বিবিধ
১৯২৬ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সবটুকু পড়তে পারি নাই। তবে মোটামোটি পড়েছি। অনেক ভালো লেগেছে। জাযাকাল্লাহ খাইর
খুব সুন্দর বিশ্লেষণ,
দ্রুত/একবার পড়া যথেষ্ট নয়
লিংকদুটো আমাকে পছন্দ করলোনা
জাযাকাল্লাহ...
লিংক তো ঠিকই আছে দেখলাম। তবুও এখানে দেখতে পারেন alsabanow.wordpress.com
আর হ্যা, জাযাকাল্লাহ খাইর। আল্লাহ আমাদের কল্যাণ করুন।
জাযাকাল্লাহ বোন।
ভালো লাগল,ধন্যবাদ
সবাই তো জান্নাতে যাবে না ভাই। আমাকে জান্নাতে যেতে হলে এইটুকু আর্টিকেলের দীর্ঘতায় আলসেমি আসলে চলবে? আমাকে তাদের থেকে আরো বেশি ধৈর্যশীল ও কর্মঠ হতে হবে। হেদায়েতের পাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আলসেমি চলবে না কিন্তু বলে দিলাম
জাযাকাল্লাহ খাইর।
খুব গুরুত্বপূর্ণ লিখা! ধারাবাহিক হলে মনোযোগ সুরক্ষা হতো!
জাযাকাল্লাহ খাইর!
নাস্তিক, কমিউনিস্টরা পথভ্রষ্ট কিন্তু তারপরেও তারা কত ধৈর্য নিয়ে বড় বড় বই পড়ে। আর আমরা হেদায়েতের জন্যও কি তাদের থেকে বেশি ধৈর্য ও বেশি পড়ার আধ্যাত্বিক ক্ষমতা রাখি না?!
আমাকে জান্নাতে যেতে হলে এইটুকু আর্টিকেলের দীর্ঘতায় আলসেমি আসলে চলবে? আমাকে তাদের থেকে আরো বেশি ধৈর্যশীল ও কর্মঠ হতে হবে। হেদায়েতের পাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আলসেমি চলবে না কিন্তু বলে দিলাম
জাযাকাল্লাহ বোন।
http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/detail/10474/pushpagondha/57871#.VifcameIOUk
https://www.dropbox.com/s/e7a6hsvvpwps8zp/Final OrganizeHusband wife conflict.pdf?dl=0
মন্তব্য করতে লগইন করুন