আ ড্ডা # মু হা ম্ম দ ই উ সু ফ
লিখেছেন লিখেছেন মন সমন ০৩ আগস্ট, ২০১৪, ১১:১১:২১ সকাল
আড্ডা
মু হা ম্ম দ ই উ সু ফ
Email :
প্রেমের হাত ।
চোখ তুলে তাকালেন ফরহাদ খাঁ ।
আই রাডার সার্কিটে অন্তর্দৃষ্টির বিদ্যুৎ খেলে গেল ।
ভদ্রলোকের হাত ফরহাদ খাঁর হাতে, পুলকিত-অনুপ্রেরণায় আনন্দহাসিমুখে বসে গেলেন ভদ্রলোক চেয়ার টেনে ।
উনি বড় সাংবাদিক ।
দ্বিতীয় ডায়লগ দিলেন ফরহাদ ভাই । জমে গেল বাদশা হোটেলের আড্ডা ।
অভিজ্ঞতা, জ্ঞানের ডিস্ক চালু হলো ।
কবি, সাংবাদিক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীদের আনন্দবাসরে ভুলে গেল সবাই ... বিশ্রী, জটিল এক বিশ্ব-ব্যবস্থার মাঝে আমাদের জীবনসাঁতার ।
পার্লামেন্ট মনে হয় ভেঙ্গে দেবে ।
রাজনীতি-বোতামে চাপ পড়তেই মেধাহীন, প্রজ্ঞাহীন, ভণ্ড-চতুর নেতৃত্বের প্রতি প্রতীকী প্রতিবাদে আট ব্যান্ড রেডিও ফরহাদ খাঁর কানের কাছে পৌঁছে গেল । সঙ্গীতের নির্মল আনন্দে ডুবে যেতে চাইলেন তিনি । অঞ্জনদা বাধ্য হয়ে বিষয়পরিবর্তনে মনোযোগী হলেন ।
আমাদের একটামাত্র সমস্যা । সমস্যাটা মানসিক । আত্মপ্রতারণা । যা বলি, করি না ।
মাহমুদ ভাই জাতীয় সমস্যা নির্দিষ্ট করলেন ।
‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা’ প্রবন্ধ পইড়া মজা পাই না ভাইজান । সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আছে, কলমের স্বাধীনতা নাই, কী-যে ঘুঁটা কারবার । দলীয় এম.পি’র পত্রিকায় চাকরি করি, দলের কথা লেখি । মুক্তচিন্তায় চাকরি বাগাট্টা । ভিতরের দুঃখ কারে কই ?
আড্ডায় নবাগত সাংবাদিক পারভেজের কণ্ঠ ভেসে আসে । কয়েকজোড়া সহানুভূতির চোখ পড়ে তার দিকে ।
সমুদ্র-চোখে বাইরে তাকিয়ে ছিল জামালী । বাঊলভাব তার চোখে সেতার বাজায় ।
দুই নম্বর কালো টাকার চতুর ব্যবহারে মিডিয়া-ম্যানেজের প্রক্রিয়ায়/প্রভাবে অনেক কুলাঙ্গার কোকিল সাজতাছে । এই প্রক্রিয়ার নীট রেজাল্ট হলো সমাজে তীক্ষ্ণ-তীব্র সত্য উচ্চারণের বিবেকবান সচেতন নাগরিকের সংখ্যা খুবই অল্প ।
শব্দাঘাত চেতনাজগতে স্পার্ক করে যায় । কেউ একজন চায়ের অর্ডার দেয় । নীরব কিছু মুহূর্ত বিয়োগ হয় ।
জ্ঞানজগতে সমন্বয়ের অভাবই মানুষের সামগ্রিক ব্যর্থতার জন্য দায়ী । ধর্মতত্ত্ব, দর্শন, মনস্তত্ত্ব, সমাজবিজ্ঞান, সাহিত্য, বিজ্ঞান, অর্থনীতি – জ্ঞানের এই সকল শাখার সমন্বয়ের উপরই নির্ভর করে মানবজীবনের সাফল্য অর্জন, সন্তুষ্টি-শান্তি ও বিকাশ । সত্য-উপলব্ধির স্বচ্ছতা অর্জন যে কত কঠিন ব্যাপার তা এই কঠিন-কঠোর শ্রমের লাইনে যারা এসেছেন তারাই বুঝতে পারবেন । হাজার-হাজার বই পড়ে তথ্য-তত্ত্ব পাওয়া যায় সামান্য । সময় ও অর্থের কী বিপুল অপচয় । জ্ঞান-জগতের বিভ্রান্তি মানবজাতিকে কোন অন্ধকার গহ্বরে নিয়ে যাচ্ছে তা উপলব্ধি করতেই সক্ষম নয় অনেকে । খাঁদ্য-যৌনতা-ড্রাগে ডুবে আছে কত কোটি মানবসন্তান ।
চিন্তাশীল পাঠক-গবেষক মুন্সী ভাই দীর্ঘ উচ্চারণ করেন । চিন্তাজগতে নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি হয় ।
চায়ের পেয়ালায় চুমুক দেয় সকলে । হঠাৎ বাইরে হৈ-চৈ, দৌড়াদৌড়ি । ককটেল ফাটে । হোটেলের শাটার বন্ধ হয় । ফটো সাংবাদিক জীবনের রিস্ক নিয়ে দৌড়ে যায় শট নিতে । সাময়িক ছন্দপতন হলেও আসর আবার জমে ওঠে । নিত্যদৃশ্য । গা-সওয়া হয়ে গেছে ।
আদিরসের হার্ডডিস্ক খুলতে যায় রঞ্জিত ।
ফুড-সেক্সের জন্যেই বেঁচে থাকা ।
তীব্র-তীক্ষ্ণ প্রতিবাদ ওঠে এক কর্নার থেকে ।
এই দর্শনে কুকুর-মানুষে পার্থক্য রইলো কোথায় ? মানবজাতি ধরা খাইছে এই দুইটি
বিষয়ে । দান হিসেবে বিষয় দুইটিকে নিয়ন্ত্রিত-ভোগের জন্যে দেয়া হয়েছিল । অতিরিক্ত ব্যবহারে বিষ হইয়া গেছে । আসল টার্গেট আত্মিক উন্নয়ন থেকে অনেক দূরে সরে গেছে মানুষ ।
তাহলে উপায় কি ?
একজন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন ।
কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছে না । বিষয়বস্তুর গভীরতায় তন্ময়ভাব সকলের মধ্যে ।
কঠিন প্রশ্ন । খুবই কঠিন । সমস্যাটা এই যে, চেতনার জগতকে আয়না-স্বচ্ছ করতে চাইছেন কয়জন ? আগে তো আন্তরিক হতে হবে । ইচ্ছাশক্তির সাথে আন্তরিকতার সমন্বয় থাকলে, পরিশ্রমী হলে, সত্য-উপলব্ধির আনন্দজগতে যেতে পারবে মানুষ । এর বিকল্পে মানুষের জীবন ব্যর্থ, অশান্ত, লক্ষ্যহীন এবং দায়ী সে নিজে । কারণ সে চেষ্টা করেনি ।
১৮-০২-১৯৯৯
ঢাকা, বাংলাদেশ ।
বিষয়: বিবিধ
১২২৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন