দৈত্যের প্রাণ বধ

লিখেছেন লিখেছেন জেরিন সরকার ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:১২:৩৪ রাত

রূপকথার গল্পে এক দেশে এক দৈত্য ছিল, সেই দৈত্য প্রতিদিনই সকাল-দুপুর-রাত দেশের মানুষকে হত্যা করে খেয়ে ফেলতো। দেশের সব সাহসী মানুষ দৈত্যকে মারার চেষ্টা করেও মারতে পারলনা। দৈত্যের হাত-পা-মাথা কেটে দিলে আবার সব গজিয়ে যেত, শরীরকে দুইভাগ করে দিলেও আবার শরীর জোড়া লেগে যেত। যে তাকে মারতে যেত তাকেই সে খেয়ে ফেলত। তারপর একদিন এক সাধু আসল, সাধু সব শুনে বললেন কেউ তাকে আর মারতে যাবে না। এই বলে সে ধ্যানে বসল আর দেখতে পেলো দৈত্যের দেহে আসলে কোন প্রাণ নেই, পাহাড়ের ওপারে এক গুহায় দৈত্যের প্রাণ রাখা আছে, সেই প্রাণকে যদি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া যায় তবেই দৈত্য মারা যাবে। অবশেষে দৈত্যকে একদিকে ব্যস্ত রেখে অন্যরা পাহাড়ের গুহায় গিয়ে দৈত্যের প্রানকে আগুনে পুড়িয়ে দিল, এভাবেই দৈত্য মারা গেল।

কেউ যদি কম্পিউটারে "হাউস অফ ডেত" গেম খেলে থাকেন তবে দেখবেন, দৈত্যকে যতই গুলিকরা হোক না কেন দৈত্য কিন্তু মরবে না। যদি টার্গেট করা বুকের সেই নির্দিষ্ট যায়গায় গুলি করতে পারেন তবেই সে মরবে।

অনেক আওয়ামীলীগার প্রায়ই বলছেন, এভাবে হরতাল, অবরোধ করে আন্দোলন করে হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারবেন না। আমার কথা হলো নামাতে পারবেন না তা নয়, আসলে তিনি নামবেন না। দেশে যতই মানুষ মরুক আর যতই আগুন জ্বলুক তিনি কিন্তু ক্ষমতা ছাড়বেন না। দেশের সব মানুষ মরে ভুত হয়ে গেলেও অথবা সমগ্র দেশ ধ্বংস হয়ে গেলেও তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না। প্রয়োজনে তিনি ভারত থেকে জনগণ আমদানি করে বাংলাদেশে নাগরিক বানিয়ে দিবেন। অথবা দেশ ধ্বংস হয়ে গেলে তিনি বিদেশ পাড়ি দিবেন। আসলে দেশের প্রতি অথবা দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসা থাকলে তিনি ২৭ অক্টোবরেই ক্ষমতা ছেড়ে দিতেন। আমি নিশ্চিত, প্রকৃতপক্ষেই এভাবে আন্দোলনের মুখে তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না।

আমাদের রাজনীতিবিদদের খুজে বের করা দরকার ঐ দৈত্যের মতো হাসিনা ক্ষমতার উৎস আসলে কোথায়। তার দূর্বল যায়গা কোনটা। সেখানে আঘাত করতে পারলেই তাকে সরানো সম্ভব।

তার ক্ষমতার সুরক্ষা আসলে ভারত। সুতরাং বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের আন্তর্জাতিক লবিং আরও শক্ত করা দরকার। সবাই যদি ভারতকে চাপ দিতে পারে তবে কাজ হবে। চীন যদি ভারতকে অরুনাচল প্রদেশের সীমান্তে ব্যাস্ত করে তুলতে পারে, আর পাকিস্থান যদি কাশ্মীর সহ পুরো সীমান্তে ভারতকে ব্যাস্ত করে তোলে, তবে বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতে মাথা ঘামানোর পরিমান অনেকখানি কমে আসবে। ঠিক একই সময়ে যদি জাতিসংঘ সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ভারতের "র" এর রাহু থেকে মুক্ত করে, তবে সেনাবাহিনীই রাতারাতি ইয়াজউদ্দিনের মতো হাসিনাকে ক্ষমতা ত্যাগে ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধ্য করবে।

বিষয়: রাজনীতি

১২৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File