একদিনের মহান দেশপ্রেমিক
লিখেছেন লিখেছেন জেরিন সরকার ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:৩৭:০৯ রাত
সকালে হয়ত কেউ লাল-সবুজ রঙের পাঞ্জাবী, কেউ সেলোয়ার-কামিজ-ওড়না, কেউ লাল-সবুজ রঙের শাড়ী পরে মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছেন, দল বেঁধে মিছিল করেছেন। কিন্তু যে স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ছিল শোষন-বঞ্চনা মুক্ত, ক্ষুধা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার সেটির জন্য কি করেছেন? সকালে শহীদ মিনারে যাওয়ার সময় রাস্তার ফুটপাতে শীতে কাঁপতে থাকা বস্ত্রহীন পথ শিশুদের সকালে একমুঠো খাবার জুটেছে কিনা একবারও কি খোঁজ নিয়েছেন? আগের রাত্রে তো হাজার হাজার টাকার ফুল কিনে পুস্পার্ঘ তৈরী করেছেন, কিন্তু ঘুমানোর আগে কি একবারও কি খোঁজ নিয়েছিলেন আপনার বাড়ীর পাশে বস্তিতে কতগুলো মানুষ অভুক্ত আছে?
সারা বছর মুন্নি বদনাম, চিকনি চামেলি আর লুঙ্গি ড্যান্স মার্কা হিন্দি গান শুনবেন আর স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারী আর ১লা বৈশাখ এলেই বাংলা গান, এ কি রকম দেশপ্রেম ভাই? বাংলা কি তবে শুধু এই দিনগুলোর জন্যই?
সারাদিন মহল্লার মোড়ে বসে হাজার হাজার টাকা খরচ করে মাইকে মুজিবের ভাষন বাজিয়ে এলাকার মানুষে কান ঝালাপালা করে দিয়ে, বসে বসে সিগারেট ফুঁকিয়ে, গাঞ্জা টেনে, রাস্তাদিয়ে হেঁটে যাওয়া মেয়েগুলোর দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে মুখথেকে লালা ঝরিয়ে আর দেশাত্নবোধক গান শুনলেই দেশপ্রেম হয় না ভাই। লাল-সবুজ রঙের কাপড় পরে শহীদ মিনারে ফুল দিলেই দেশপ্রেম হয় না। পদ্মা সেতু, রেলওয়ে, হলমার্ক, ডেষ্টিনির টাকা চুরি করে দেশপ্রেম হয় না। রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে প্রহসনের নির্বাচন করে দেশপ্রেম হয় না। নিরন্ন মানুষকে অভুক্ত রেখে শহীদ মিনারে লাখ লাখ টাকার ফুল দিয়ে দেশপ্রেম হয় না।
ফুল কেনার টাকা গুলো দিয়ে অভুক্ত মানুষের জন্য কিছু খাবার কিনে তাদের খাওয়ালে আর সকালে শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের জন্য একটা স্যালুট দিলেও কিন্তু চলত। কিন্তু না, দেশের অভুক্ত মানুষগুলো খেতে পাক বা না পাক, একদিনে জন্য লাল-সবুজ রঙের কাপড় কিনে, শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে টিভি ক্যামেরার সামনে নিজের মুখ খানা না দেখালে কি আর কেউ জানবে যে, আমি কত বড় দেশপ্রেমিক!
বিষয়: বিবিধ
১১৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন