আত্মসমালোচনার মাধ্যমে উন্নত চরিত্র গঠন করতে
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুব হাসান র ২৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০৯:৫৭:২৫ সকাল
কেউ প্রশংসা করলে আমাদের ভালো লাগে আর সমালোচনা করলে কষ্ট পাই। ইসলামের শিক্ষা হলো নিজের দোষগুলো নিজেই খুঁজে বের করে তা সংশোধনের চেষ্টা করা। অন্যের দোষ-ত্রুটি খোঁজার চেষ্টা না করা। কারণ নিজের দোষ-ত্রুটি নিজের সামনে প্রকাশ করার মাধ্যমে মানুষ তা জানতে পারে। ফলে তার হৃদয় ভালো কাজের দিকে আকৃষ্ট হয় এবং মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকতে পারে। তাছাড়া আত্মসমালোচনা দ্বীনের ওপর দৃঢ়তা অর্জনের সবচেয়ে কার্যকরী কার্যকারী । আপনি যদি একজন সত্যিকার মুত্তাকী হতে চান তা হলে নিজের ভুল গুলো খুটিয়ে খুটিয়ে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে নিজের মাথা নত করে আত্মসমালোচনা ও কান্নাকাটি করুন , আশা করা যায় আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে জা্ন্নাতে প্রবেশ করোতে পারেন। কুরআনে আল্লাহ পাক বলেছেন সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহ্ এর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে| আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্যধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার| সুতরাং পরহেযগার বা মুত্তাকী হওয়ার জন্য নিজের ভুল গুলো খুটে খুটে বের করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং যাবতীয় মন্দ কাজ থেকে ধুরে থাকতে হবে ।আপনি হাজার টাকা অসৎ পথে সিনেমা গানে যাত্রা পালায় ব্যয় করলেন অথচ আল্লাহর পথে ব্যয় করলেন না এ ব্যাপারেও হিসাব নেয়া হবে , কিভাবে পথে টাকা আয় করেছেন আর কি ভাবে ব্যয় করেছেন এ ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশনা হচ্ছে আর ব্যয় কর আল্লাহ্ র পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না| আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর| আল্লাহ্ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন| আরো বলা হয়েছে ব্যয় হতে হবে সঠিক মাধ্যমে ..
তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাও-যে বস্তুই তোমরা ব্যয় কর, তা হবে পিতা-মাতার জন্যে, আত্নীয়-আপনজনের জন্যে, এতীম-অনাথদের জন্যে, অসহায়দের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে| আর তোমরা যে কোন সৎকাজ করবে, নি:সন্দেহে তা অত্যন্ত ভালভাবেই আল্লাহর জানা রয়েছে| আত্মসালোচনার ব্যাপারে রাসুল সা: এর নির্দেশনা হচ্ছে..
হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বর্ণনা করেনঃ আমি একদিন রাসূলে আকরাম রাসূলুল্লাহ্ « সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সল্লাম » এর জীবনকথা এর পিছনে (কোন জানোয়ারের পিঠে) বসা ছিলাম। তখন তিনি আমায় বললেনঃ হে বৎস! আমি তোমায় কয়েকটি (গুরুত্বপূর্ণ) কথা শিখিয়ে দিচ্ছি। (খুব মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করো)। আল্লাহর নির্দেশাবলীর হেফাজত ও অনুসরণ করো, আল্লাহও তোমায় হেফাজত করবেন। আল্লাহর হক (সঠিকভাবে) আদায় করো। তাহলে তাঁকেও তোমার সঙ্গে পাবে। কখনও কোন জিনিস চাইতে হলে আল্লাহর কাছেই চাইবে। কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হলেও আল্লাহরই কাছে চাইবে। জেনে রাখো, সমগ্র সৃষ্টিকূল এক সঙ্গে মিলেও যদি তোমার উপকার করতে চায় তবে আল্লাহ তোমার ভাগ্যে যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তারা তার বেশি কোনো উপকার করতে পারবে না। পক্ষান্তরে তারা যদি এক সঙ্গে মিলে তোমার কোন ক্ষতি (বা অপকার) করতে চায়, তবে আল্লাহ তোমার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তার বেশি কোনো অপকার তারা করতে পারবে না। (জেনে রাখো কলম তুলে রাখা হয়েছে এবং কিতাবাদি শুকিয়ে গেছে। অর্থ্যাৎ তকদীর চুড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। তাতে আর কোনো পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের অবকাশ নেই।)ইমাম তিরমিযী এ হাদীসটিকে সহীহ ও হাসান হাদীসরূপে আখ্যায়িত করেছেন। তিরমিযী ছাড়া অন্যান্য হাদীসগ্রন্থে এই বক্তব্যের সাথে আরো সংযুক্ত হয়েছেঃ আল্লাহর অধিকার হেফাজত করো, তাহলে তাঁকে পাবে নিজের সামনে। সুদিনে আল্লাহকে স্মরন রাখো, তাহলে দুর্দিনে তিনি তোমায় স্মরণ করবেন। জেনে রাখো, যে জিনিস তুমি পাওনি, তা (মূলত) তোমার জন্য নয়। আরো জেনে রাখো, আল্লাহর মদদ রয়েছে সবরের সাথে। আর প্রত্যেক দুঃখের সাথে আছে সুখ।অতএব আমরা আল্লাহর পথে ফিরে আসি । এটাই আমাদের সঠিক পথ । আমীন
বিষয়: বিবিধ
১১২৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আত্মসমালোচনার প্রসার ঘটিয়ে আত্মোপলব্ধির মাধ্যমে নিজে কে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলতে- ইসলামে তাকিদ দেয়া হয়েছে বার বার।
অপরের মাঝে অপছন্দনীয় বিষয়গুলো থেকে সযত্নে নিজে কে মুক্ত রাখা আদর্শতার নমুনা।
অসাধারণ নান্দনিকতা পুর্ণ উপস্হাপনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহু খাইরান......।
মন্তব্য করতে লগইন করুন