অন্তু (ছোটগল্প)
লিখেছেন লিখেছেন বিকল কপোট্রন-এক্স রে ১০ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:৫৭:৪০ দুপুর
এই অন্তু, এখানে বসে আছিস কেন? শারমিন অন্তুর গা ঝাকি দিয়ে কথাটা বলল। অন্তু আর শারমিন ক্লাস ফোর এ পড়ে। ওরা একে অপরের বেস্ট ফ্রেন্ডও বটে। “বাবার জন্য খারাপ লাগছে রে”
অন্তুর বাবার শরীর টা ভাল নেই।
অন্তুর দিকে তাকালেই অন্তুর
বাবার চোখ টা ভিজে আসছে।
ছেলেকে খুব ভালবাসেন
তিনি। অন্তুর কাছে অন্তুর বাবাই
পৃথিবীর সেরা মানুষ। অন্তু
জানেনা ওর বাবার কি হয়েছে।
কিন্তু তবুও বুকের
মাঝে একটা শূন্যতা অনুভব করছে।
“দেখিস তুই এবার ফার্স্ট হবি, আর
আমাকে আম্মুর বকুনি শুনতে হবে”
শারমিন এর আম্মু অন্তু কে খুব
ভালোবাসে। অন্তুর জন্য
বাড়তি করে টিফিন
পাঠিয়ে দেয় শারমিন এর
কাছে। তবে নিজের সন্তান ভাল
করুক সেটা সব মা-ই চায়।
আর
একটা পরীক্ষা বাকি আছে অন্তুর।
অন্তুর মা কাঁদছে।
“বাবার জন্য কেদনা। দেখ
বাবা ঠিকই ভাল হয়ে যাবে।”
অন্তুর মা পরম মমতায় অন্তু
কে কাছে টেনে নিল। অন্তুর
মা শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
অন্তু কেমন যেন
একটা ধাক্কা খেল। কিন্তু কিছু
বুঝে উঠতে পারলনা।
পরীক্ষাটা আজ খারাপ হবে।
কিছুই লিখতে পারছেনা অন্তু।
শারমিন বুঝতে পারছে বিষয়টা।
শারমিন নিজের খাতা অন্তু
কে দেখার সুযোগ করে দিল। তবুও
মন মত পরীক্ষা হয়নি অন্তুর।
পরীক্ষা শেষ করেই অন্তু এনাম
মেডিকেল কলেজ এর
দিকে যাচ্ছিল। শারমিন
জিজ্ঞেস করল বাসায়
না যেয়ে কোথায় যাচ্ছিস?
“হাসপাতালে” ছোট্ট জবাব
অন্তুর। অন্তু
কে একা যেতে দিলনা শারমিন।
নিজেও গেল অন্তুর সাথে।
শারমিন এর চোখে জল। অন্তুর
দিকে তাকিয়ে দেখল ওর
চোখে জল নেই। শুধু বাবার নিথর
দেহের দিকে পাথর
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কেমন
যেন রোবট হয়ে গেছে চঞ্চল
ছেলেটা। অন্তু হয়ত
বুঝতে পারছেনা ওর প্রিয় মানুষ
কে হারিয়ে ফেলেছে,
চিরদিনের জন্য। অন্তুর ২ বছর
বয়সী বোনটি কিন্তু কিছুই
বুঝতে পারেনি।
আজ রেজাল্ট দিয়েছে। শারমিন
ফার্স্ট হয়েছে। অন্তুর মন খারাপ।
তবে সেকেন্ড হওয়ার জন্য নয়।
শারমিন হয়ত
সেটা বুঝতে পেরেছে। তাই ওর
মনটাও ভাল নেই।
প্রায় ৮ বছর কেটে গেছে। অন্তু
নামটা কেন দিলাম জানা নেই।
বিষয়: বিবিধ
১২৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন